হাট/রুমি নাহা মজুমদার
হাট
রুমি নাহা মজুমদার
অনেকদিন পর আবার সেই জমায়েত। চারিদিকে খুশি খুশি ভাব । আবার একসাথে যেন গোলটেবিল ঘিরে হি হি , হৈ হৈ। খোশমেজাজ, পাট করা জামা কাপড় থেকে সুরভিত সুগন্ধি যেন ভাসিয়ে নিয়ে যায় মন। কিন্তু ভাসলে চলবে না। বিকেলের বৈঠকি শুরু হয়েছে; প্রায় সকলেই চলে এসেছে। কিছু জনের আসা বাকি - হয়তো ইতিমধ্যেই হাজির হবে। গোলটেবিলের চারিদিকে পাতা রয়েছে কাঠের চেয়ার, বেতের চেয়ার, সোফা, মোড়া, জলচৌকি, বেঞ্চি... কোন কিছু যেন বাদ নেই। এর মাঝেও কিছু ফাঁকা জায়গায় ফরাস পাতা কেউ একজন বয়জ্যেষ্ঠ বলে উঠলেন, "নাও শুরু করো - কেউ ধরো গান ।উদ্বোধনী টা হয়ে যাক।" এরই মাঝে যাদের বেশ কিছুদিন আগে ছুটি নেওয়া হয়ে গেছে তারাও এখানে হাজির। হবে না! জীবনের মন্ত্র যাদের মনের গভীরে , তারা কি আর না এসে পারে? তাদের দেখে কিন্তু অনেকেই হতবাক। কেউ কেউ বলছে - আরে তুমি ! আরে অমুকদা? কখন আসা হল ?
তারপর, আর কি !
কাঁধে-পিঠে একটু হালকা চাপড়, কুশল বিনিময়। খবর সব ভালো তো ?
চলছে আরকি ।
এইসব টুকিটাকি। তারপর, লেখালেখি কতদূর?
না, এখন ভাসলে চলবে না । থিতু হয়ে বসার পালা এখন। প্রত্যেকের লেখা পাঠ হবে। মন দিয়ে শোনার জন্য সকলে বসে আছে। সকলের চোখে মুখে এক অদ্ভুত দীপ্তি। ঘরময় যেন তার প্রভা। অপূর্ব! আজ সকলেই পড়বে শেষ পর্যন্ত যতটুকু সারা জীবনের পাঠ। কাজই তো কথা বলে। পাঠ শেষে হাততালি । কখনো জোরে কখনো মৃদু। আহা, সাধু! সাধু! বলে কেউ কেউ। কখনো নীরবতা। নীরবতাও যেন অনেক কথা। ভেতরে ভেতরে আসলে সকলেই নীরব। কায়াহীন প্রাণগুলো মুক্ত এখন। হাট বসেছে কৈলাস পারে। কবিতা হাট।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴