স্নেহান্ধ রাজা রাণী : রক্ষা হল না নারীর সম্মান/কবিতা বণিক
স্নেহান্ধ রাজা রাণী : রক্ষা হল না নারীর সম্মান
কবিতা বণিক
খেলার প্রতিযোগিতার আয়োজন চলছে। দুইদল প্রস্তুত। অগণিত মানুষে ঠাসাঠাসি রাজসভা। মন্ত্রীগণ, অমাত্য গণ , সভাসদ গণ , আত্মীয় জনেরাও উপস্হিত। কি হয় কি হয়! দুই দলের মধ্যে পাশা খেলা হবে। পাণ্ডবের পক্ষে খেলবেন যুধিষ্ঠির। অন্ধ রাজা- রাণীর সন্তান গণের জ্যেষ্ঠ পুত্র দুর্যোধন কৌরব পক্ষে খেলবেন। তিনি ঘোষণা করলেন তার মামা শকুনি যিনি কূটনীতি বিশেষজ্ঞ তিনি কৌরবের পক্ষে দুর্যোধনের হয়ে খেলবেন। আর পাণ্ডব পক্ষে সত্যবাদী নিষ্ঠাবান যুধিষ্ঠির পাশা খেলায় দক্ষ বলে আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান তিনি নিজেই খেলবেন পাণ্ডবের পক্ষ হয়ে। তিনি তাদের সখা সুহৃদ শ্রীকৃষ্ণকে ডাকলেন না। আর শকুনি যখন যুধিষ্ঠিরকে খেলায় আহ্বান করল তখনও শ্রীকৃষ্ণকে জানাননি। কারণ যুধিষ্ঠির জানতেন শ্রীকৃষ্ণ তাকে এখানে পাশা খেলতে দেবেন না। এখানে তাঁর পাশা খেলার লোভ তিনি সামলাতে পারেন নি। যুধিষ্ঠির স্বত্বগুণী মানুষ হলেও প্রকৃতির রূপ , রসের মোহে তাকেও লোভের অর্থাৎ রজোগুণের প্রভাবে পড়তে হয়েছিল। যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণকে না ডেকে বরং প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিলেন যে তিনি যেন এই সভাগৃহের বাইরে থাকেন। অহংকার এবং অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাশের সাথে যুধিষ্ঠির পাশা খেলতে বসেছিলেন।শ্রীকৃষ্ণ বাইরে অপেক্ষা করতে করতে ভাবছিলেন কেউ যদি তাঁকে একবার ডাকেন তিনি ভেতরে যাবেন। যুধিষ্ঠিরের আত্মবিশ্বাসের চাইতে লোভ বেশী কাজ করেছিল। এদিকে শকুনির জয়ের নেশা আর যুধিষ্ঠিরের হারার নেশা মহামতি বিদুরকে অসহ্য মনোকষ্টে ফেললে তিনি অন্ধ রাজা ধৃতরাস্ট্রকে এই খেলা বন্ধ করতে বললেন। কিন্তু সত্যিই অন্ধ সেই রাজা বিদুরের কথায় কর্ণপাত করলেন না। বরং বিদুরের সম্মানে আঘাত দিয়ে অনেক কটুকথা বললেন। অন্ধ রাজার কানও বুঝি তখন শ্রবণশক্তি হারিয়েছে। এদিকে যুধিষ্ঠির সেখানে রাজ্য হারিয়ে ভাইদেরও একের পর এক বাজি রেখে হারানো ও শেষে নিজেকে বাজি রেখেও হেরে গেলেন যুধিষ্ঠির। এদিকে কপট শকুনি বললেন - যুধিষ্ঠির ! তোমার এখনও অবশিষ্ট ধন বাকি আছে। তোমার প্রিয়তমা পত্নীকে বাজি রেখে এবার পাশা খেল। আত্ম অহংকারী যুধিষ্ঠির দ্রৌপদীর রূপ গুণের বর্ণনা করে যখন বাজি রাখলেন , সাথে সাথেসভা জুড়ে ধিক্কার ধ্বনি শোনা যেতে লাগল। আবার এরই মধ্যে অন্ধ-রাজা জিজ্ঞাসা করছেন -শকুনি কি জিতেছে? আর ধর্মপুত্রের স্ত্রী দ্রৌপদীকে বাজি রেখে খেলতে তার কুললক্ষীর প্রতি সামান্যতম অসম্মান বোধও বোধগম্য হয়নি। লোভে মোহে তিনি পৌরুষত্ব হারিয়েছিলেন। স্ত্রী একজন নারী , তিনি তার স্ত্রী দ্রৌপদীকে ভরা রাজসভায় বাজি রাখলেন। অন্য ভাইয়েরা দাদার কথার সম্মান রাখল আর স্ত্রী বলে তার সম্মানের দাম দিল না! সামান্যতম লজ্জা, সম্মান, সম্ভ্রম বোধ থাকলে তিনি শ্রীকৃষ্ণকে ডাকতেন। দুর্যোধনের ভয়ংকর সেই ঘোষণা শুনে আজও লজ্জায় মাথা নীচু হয়ে যায়।পাণ্ডবরা রাজ্য সম্পদ সব হারানোর পর দুর্যোধন ঘোষনা করলেন পাণ্ডব পক্ষের শ্রী, সৌভাগ্যের অধিকারিণী পাঞ্চালীকে বাজি রেখে যদি জিততে পারে তাহলে তাদের হারানো রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন। এতেও কুন্তীদেবীর জ্যেষ্ঠ পুত্র ধর্মরাজের বিবেক জাগ্রত হয় নি। পাশা খেলতে ভালবাসেন খুবই কিন্তু ছল চাতুরি করতে তো পারেন না আর ধরতেও পারেন না। মহামতি বিদুরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় দুর্যোধনের জতুগৃহ চক্রান্ত ধরতে পেরেছিলেন। কিন্তু এই রাজসভায় সবার সামনে শকুনির চাল বুঝতে পারলেও ধরে ফেলতে পারছেন না। তাই বিদুর বললেন , যুধিষ্ঠির যেখানে নিজেই আগে হেরে বসেছেন সেখানে দ্রৌপদীকে বাজি রাখার তার অধিকারই নেই। কিন্তু দুর্মতি দুর্যোধন বিদুরকে “ দাসীপুত্র “ বলে অপমান করে দ্রৌপদী কে ধরে নিয়ে আসতে হুকুম দিলেন। দ্রৌপদী তাদের দাসীর কাজ করবে সে কথা খুবই নোংরা ভাবে জানিয়ে দিলেন। তবুও যুধিষ্ঠির ডাকলেন না শ্রীকৃষ্ণকে। নিজেই খেলে গেলেন দ্রৌপদীর শেষ সম্মান টুকু বিসর্জন হওয়ার অপেক্ষায়। গান্ধারী যিনি রাজমাতা, একজন মা— চোখ থাকতেও অন্ধ বা স্নেহান্ধ , তাইতো দ্রৌপদী তারই পরিবারের কন্যাসমা কুলবধুর অসম্মানের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না। একজন নারী আর একজন নারীর প্রতি এমন ব্যবহার খুবই লজ্জাজনক। ধৃতরাস্ট্র যেন শুধু অন্ধ নন, তিনি বধির ও। তার পুত্র বিকর্ণ দ্রৌপদীর পক্ষে কথা বললেন তখনও রাজা চুপ থেকেছেন। এদিকে কর্ণ থামিয়ে দিলেন বিকর্ণকে। অন্ধ রাজা- রাণী চুপ হয়ে বসেছিলেন। মহামন্ত্রী বিদুর নিজের অপমানের তোয়াক্কা না করে তিনি তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার দৃষ্টি দিয়ে দুর্যোধনকে তার পাপকাজ ও তার অনিবার্য ধ্বংসের কথা জানালেন। দুর্যোধন সভায় থাকা দুঃশাসনকে আদেশ করলেন দ্রৌপদীকে ধরে আনতে দুঃশাসশন যখন দ্রৌপদীর চুলের মুঠি ধরে প্রকাশ্য রাজসভায় টেনে আনলেন , গায়ের কাপড় খুলে নিচ্ছিলেন , অন্ধ ধৃতরাস্ট্র নিঃশব্দে তা উপভোগ করছিলেন।দ্রৌপদীর কান্না, হাহাকার , সভায় উপস্হিত প্রতিজনের কাছে প্রাণ উজার করা সম্ভ্রম ভিক্ষে, নীরব অন্ধ রাজার বিকৃত রুচির উপভোগ করাকে যেমন দর্শাচ্ছিল তেমনি একজন মা, একজন নারীর নীরবতা আজও সবাইকে অবাক করে।
দুর্যোধন যে নিয়মে শকুনিকে পাশা খেলতে বলেছিলেন তাদের হয়ে তাহলে সেই নিয়ম মত শ্রীকৃষ্ণ ও শকুনির সাথে যদি পাশা খেলা হত তাহলে খুব সহজেই অনুমেয় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধই হত না অথবা তার রূপ ভয়াবহ কিছু হত না।
যুধিষ্ঠির ডাকেননি শ্রী কৃষ্ণকে তার ভাইয়েরাও ডাকেননি। দ্রৌপদী দেখলেন রাজা-রাণী, অমাত্যগণ সকলেই নীরব , দ্রৌপদী প্রশ্ন তুললেন - শকুনির শঠতার প্রসঙ্গ ছেড়ে দিলেও শকুনির জেতাটা কি ন্যায় সঙ্গত? যুধিষ্ঠির যদিও আগেই হেরে গিয়েছেন তবুও দ্রৌপদীর ওপরে তো আরও চারজনের অধিকার আছে। তাই শকুনি কখনওই এই ভাবে জিততে পারেন না। ভীষ্ম দ্রৌপদীর প্রশ্নের উত্তরে বলছেন , যুধিষ্ঠির নিজেই বলছেন তিনি হেরেছেন । একবারও যুধিষ্ঠির বলছেন না যে এই খেলায় শঠতা আছে। তাহলে আমার কি বলার আছে? যুধিষ্ঠিরের হার অথবা জিতের কথা বলতে পারব না ঠিকই কিন্তু আমি বেশ বুঝতে পারছি কুরুবংশের ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী। ভীষ্মের এই কথা শোনার পরও সভাসদরা দেখলেন বিদুর ও কর্ণের সত্য কথা বলার ফলে তারা যে অপমান সইলেন ফল স্বরূপ সবাই চুপ করেই গেলেন। দ্রৌপদী দেখলেন শেষ রক্ষা বুঝি আর হল না। আর কোন উপায় নেই। একমাত্র তিনিই শেষ ভরসা। তখন স্মরণ করলেন বিপদ-তারণ মধুসূদন শ্রীকৃষ্ণ কে। যে মুহূর্তে দ্রৌপদী স্মরণ করেছেন শ্রী কৃষ্ণকে তৎক্ষণাৎ তিনি দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষার ব্যবস্হা করলেন। কাপড় যুগিয়ে গেলেন কৃষ্ণাকে । স্হানটি যে সবচেয়ে বড় সভা- রাজসভা। অসম্মানটাও জঘন্য নিকৃষ্টতম যে - কারও মাতা, কারও স্ত্রী, কারও কন্যা তিনি। তাকে রাজ সভায় বিবস্ত্র করা হচ্ছে। অন্ধ রাজা তার বিকৃত রুচিতে অন্তরে এই দৃশ্য উপভোগ করে আনন্দ পাচ্ছেন। তাইতো চুপ করে থেকে গেলেন সমস্তক্ষণ। অন্ধ রাজার লোভ, ক্রোধ বাইরে থেকে বোঝা যায় না। যেটা তার পুত্রদের হর্ষোল্লাসের নোংরা শব্দ প্রয়োগের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে। আর রাজমাতা গান্ধারী? তিনি কি তার পুত্রদের শুভাকাঙ্খী? সে কারণেই বোধ হয় দ্রৌপদীর করুণ আর্তি গান্ধারীর মাতৃ হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারেনি। চাপা পরে গিয়েছিল শকুনি, দুর্যোধন, দুঃশাসন প্রভৃতির পৈশাচিক হর্ষোল্লাসের মধ্যে।
রাজসভায় অসভ্যতা যত বাড়ছে এদিকে ভীমের মেজাজও ততই চড়তে লাগল। এরই মধ্যে কর্ণের প্রোরচনায় দুর্যোধন দ্রৌপদীর দিকে কুৎসিত ইঙ্গিত করলেন সাথে সাথে ভীমসেন লাফ দিয়ে সভার মধ্যস্হলে গিয়ে প্রতিজ্ঞা করে বললেন দুর্যোধনের উরু তিনি গদার আঘাতে ভাঙবেন আর দুঃশাসনের রক্ত পান করবেন। ভীমের রুদ্ররোষে সভায় একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হল। নানারকম উৎপাত, দুর্লক্ষণ দেখা দিলে গান্ধারী ভয়ে বিদুরের সাথে গিয়ে ধৃতরাস্ট্রকে বোঝালেন । বিদুর এবারেও খুব ভয় পেলেন জ্ঞাতি শত্রুতার হানাহানির ফল চিন্তা করে। গান্ধারী আর বিদুরের বোঝানোর ফলে যত না ভয় পেয়েছেন ধৃতরাস্ট্র তার চেয়ে অনেক বেশী ভয় পেয়েছেন ভীমসেনের রুদ্ররোষকে। জোর দিয়ে ধৃতরাস্ট্র ছেলেদের বললেন শোন তোমরা ! বন্ধুত্বপূর্ণ খেলা না খেলে নিয়ম ভেঙে ও এক নারীর অপমান করে তোমরা তোমাদের সর্বনাশ ডেকে এনেছ। যুধিষ্ঠির নিজেকে হেরেছেন যখনই তখনই দ্রৌপদীর ওপর অধিকার হারিয়েছেন। ফলে তোমাদের জেতাটা একেবারেই মূল্যহীন। ধৃতরাস্ট্র এবার বিদুরের পরামর্শে দুর্যোধনকে গালাগাল দিয়ে , ছেলেদের ধমক দিলেন ও পাণ্ডবদের পাশাখেলার হার থেকে মুক্ত করেদিলেন। দ্রৌপদীকে বর দান করতে চাইলেন। প্রথম বরে দ্রৌপদী তার জ্যেষ্ঠ স্বামী যুধিষ্ঠিরকে দাসত্ব থেকে মুক্তি চেয়ে নিলেন। দ্বিতীয় বরে ভীম, অর্জুন, নকুল, সহদেবকে দাসত্ব থেকে মুক্তিচেয়ে নিলেন। এবারে তৃতীয় বর দিতে চাইলেন অন্ধ রাজা । দ্রৌপদী প্রত্যাখ্যান করে বললেন তৃতীয় বরের কোন প্রয়োজন নেই। দুটি বরই যথেষ্ট। লোভ মানুষের ধর্ম নষ্ট করে। অন্ধ লোভী রাজা পুত্রবধুর কাছ থেকে এমন উক্তি শুনেও কোন চেতনা হয়নি। পাণ্ডবরা ইন্দ্রপ্রস্হে ঢোকার আগেই ধৃতরাস্ট্র লোক পাঠিয়ে আবার তাদের ধরে আনলেন। কারণ দুর্যোধন ধৃতরাস্ট্রকে বোঝালেন , দ্রৌপদীর অপমান তারা কিছুতেই ভুলতে পারবেন না। প্রতিশোধ নিতে তারা মরিয়া হয়ে উঠবে। তাই আবার পাশা খেলব এবং শর্ত হবে বারো বছরের বনবাস ও এক বছরের অজ্ঞাত বাস। সুতরাং খেলা শুরু হল। রাজ আদেশ অর্থাৎ ধৃতরাস্ট্রের আদেশ। এবার অবশ্য ধর্মপুত্র পাশা খেলার লোভে আসেন নি এসেছেন ধৃতরাস্ট্রের ইচ্ছাকে সম্মান জানানোর জন্য। কপট শকুনির দুরন্ত চালে যুধিষ্ঠির হারবেন তা তো বলাই বাহুল্য । এবারও হারলেন। পাণ্ডবেরা পাঁচ ভাই , দ্রৌপদী তৈরি হচ্ছেন বনবাসে যাবার জন্য। যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন, নকুল, সহদেব ভয়ংকর সব প্রতিজ্ঞা করলেন কৌরবদের ধ্বংস করার জন্য। দ্রৌপদীও প্রতিজ্ঞা করেছেন তিনি তার কেশ ততদিন বাঁধবেন না যতদিন না দুঃশাসনের রক্তে তার কেশ ধোবেন। এই সব ভয়ানক প্রতিজ্ঞা শুনে ধৃতরাস্ট্র বিদুরের কাছে বললেন যে - তোমার ধর্ম বোধ ও প্রজ্ঞা অসামান্য। তোমার কাছে কৌরব ও পাণ্ডব দুজনেই সমান । তাই তুমি বল কি উপায়ে সব কিছু ঠিক হবে? এদিকে সঞ্জয় বলছেন মহারাজ! পাণ্ডবদের তাড়িয়ে বনবাসে পাঠানোয় সবই তো এখন আপনার করতলগত। এমন আনন্দের দিনে আপনি এত ব্যকুল হচ্ছেন কেন? ধৃতরাস্ট্র বললেন পাণ্ডবরা এক একজন মহাবীর। তাদের বন্ধু , পারিবারিক সম্বন্ধী রাজারাও খুব শক্তিশালী। ওরা তো প্রতিশোধ নেবার প্রতিজ্ঞা করেছে। তাইতো এই ব্যকুলতা। বিদুরের উপদেশ তো ধৃতরাস্ট্রের পছন্দ নয়। কারণ বিদুর বলছেন ফিরিয়ে দিন ওদের হারানো রাজ্য। এ খেলা তো ধর্ম বিরুদ্ধ। আর দুর্যোধন, কর্ণ, শকুনি আত্মসমর্পণ করুক, দুঃশাসন ক্ষমা চেয়ে নিক ভীম, দ্রৌপদীর কাছে। কারণ ক্রুদ্ধ ভীম, অর্জুন কি করতে পারেন সেই ভয় ও দেখালেন। শুনে ধৃতরাস্ট্র বললেন বিদুর! তুমি একই কথা বার বার বল। এতে মনে হয় তুমি পাণ্ডবদের ভাল চাও আর আমাদের অনিষ্ট চাও।আরও কিছু কটু কথা বলায় বিদুর মনের দুঃখে পাণ্ডবদের কাছে গেলেন। এদিকে ধৃতরাস্ট্র ভয় পাচ্ছেন পাঞ্চালীকে রাজসভায় যেভাবে অপমান করা হয়েছে এতে পাণ্ডবদের মিত্রপক্ষ পাঞ্চালরাজ, যাদবেরা এর প্রতিশোধ নিতে ছাড়বে না।
ধৃতরাস্ট্র বিদুরকে পাণ্ডবদের পক্ষে যেতে দিতে চান না। বিদুরের মত ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ, রাজনীতি বিশেষজ্ঞকে তিনি তার রাজসভায় রাখতে চান। তাই শোকে যণ্ত্রনায় কাতর হয়ে সঞ্জয়কে বললেন বিদুরকে নিয়ে আসতে। সঞ্জয় গেলেন বিদুরকে আনতে। বিদুর দাদার স্নেহান্ধতা যেমন সহ্য করতে পারেন না তেমনি তাকে অতিক্রম করতেও পারেন না। তাই সঞ্জয়ের কাছে দাদার অসহায়তার কথা শুনে তার দাদা ধৃতরাস্ট্রের এবং ভরতবংশের ভবিষ্যতের চিন্তা করে চলে এলেন। ধৃতরাস্ট্র বিদুরকে পেয়ে এটুকু নিশ্চিন্ত হলেন যে বিদুরের রাজনৈতিক বুদ্ধি বা পরামর্শ পাণ্ডবদের কোন কাজে আসবে না। বিদুরকে স্নেহালিঙ্গনে জড়িয়ে শান্তি লাভ করলেন।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴