সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
16-February,2025 - Sunday ✍️ By- সুনীতা দত্ত 26

সুনীতা দত্ত-র আলোচনায় কবি পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত-র বই 'ভিজিয়ে মদে অলীক ভালোবাসা'

সুনীতা দত্ত-র আলোচনায় কবি পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত-র বই 'ভিজিয়ে মদে অলীক ভালোবাসা' 

আমার শহর ধুপগুড়ি। তখন শহর বা মহকুমা শহর নয় বলা যায় গ্রাম থেকে শহর হয়ে ওঠার প্রাক্কালে এক অসাধারণ মানুষের, এক কবির সংস্পর্শে এসেছিলাম। অনেকদিন প্রায় দুই যুগ আগের কবিতার ডায়েরী ঘাঁটতে ঘাঁটতে খুঁজে পেলাম ধুপগুড়ির মাটির কবির হাতের লেখা, যাতে আমি তাঁর ছন্দ - মাত্রা শেখা ছাত্রী। যারা কবিতা ভালোবাসেন তারা হয়তো অনুমান করে বুঝে গিয়েছেন আমি কার কথা বলতে চাইছি। হ্যাঁ আধুনিক বাংলা সাহিত্যের উত্তরবঙ্গের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র যার নাম আমার কাছে "রঘু কাকু", তাঁকে সাহিত্য জগত পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত নামে জানে। আধুনিক কবিতায় তাঁর লেখা, কবিতা প্রেমীদের বিহ্বল করে তোলে, করে তোলে নিসর্গ প্রেমী। তাঁর লেখনি শক্তি উত্তরবঙ্গে তাঁকে বেঁধে রাখেনি, করে তুলেছে সার্বিক।  তাঁর লেখনীর প্রতিটি লাইন গভীর অর্থবহ। যখন তাঁর সাথে দেখা হত, সেই সময় তাঁর কবিতার অর্থ আমার অনেকটাই বোধগম্য হত না। বয়সের সাথে সাথে তাঁর রচনা আমায় অদ্ভুত এক শূন্যতায় ভরিয়ে তুলেছে। তিনি কবিতায় বলেছেন, "-লাফিয়ে উঠলো আকাশ/ মাধুরী লতার কুসুমিত রঙ আমাকে ক্লাসিক ভালোবাসা দাও/ আমি বিদিশার আধুনিকতায় আকাশের নীলে নিখুঁত মিশব/ এক এক ঝাপটা বৃষ্টি মাখব।"
তাঁর অনেক কাব্যগ্রন্থ, তাঁর কবিতা তাঁর সামনে বসে তাঁর মুখ থেকে শুনেছি, উপলব্ধি করেছি তাঁর আদ্যোপান্ত সরল এক মনুষ্যত্বের রূপরেখা। পুরানো বইয়ের সারি থেকে খুঁজে নিয়ে পড়লাম তাঁর কাব্যগ্রন্থ , "ভিজিয়ে মদে অলীক ভালোবাসা"। 'মধুনিশি’ -র কবিতাগুলি বিশেষ ভালোলাগার। তবে এই মুহূর্তে সে বইটিকে খুঁজে পেলাম না।  "ভিজিয়ে মদে অলীক ভালোবাসা" কাব্যগ্রন্থে কবি তাঁর লেখা এক থেকে ১২৭ টি ছন্দবব্ধ পংক্তি লিখেছেন। নিজেকে অনেকটা মেলে ধরেছেন। তিন নম্বর পংক্তিতে লিখেছেন, "একটু বেশি নজর দিলে ওদের হিংসা উথলে ওঠে, আমি তো ছাই বেনুকুঞ্জে,  আমার রাত্রি কাটছে গোঠে।" কখনো আবার বলেছেন, "কী অপরাধ দেখলে আমার/ হে পৃথিবী আয়ুষ্মান। তোমার খোলা মধুশালাটির/ সঙ্গে আমি গাইছি গান।" আরেক জায়গায় তিনি তাঁর সমালোচকদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, "নিন্দে দিয়ে আমায় ডুবাক / নিন্দে যারা করছে করুক/ হলফ করে বলতে পারি/ এতেও ওদের ভরছে না বুক।"
অলীক ভালোবাসার আবহাওয়া তৈরি করে সুরাসক্ত করেছেন অগণিত পাঠককুলকে। তাঁর লেখা বাস্তবের তালে তাল মিলিয়ে গুটিগুটি পায়ে ছন্দবদ্ধ হয়েছে। এই কাব্যগ্রন্থের নামের কবিতাটিতে লিখেছেন -"ভিজিয়ে মদে অলীক ভালোবাসা, অন্তরলীন বলেন দার্শনিক। আমি ভাবি মদের ঘরে বসে, দশটা নারী আমায় তুলে নিক।" করুণ উপলব্ধি দিয়ে অবলোকন করেছেন গৃহস্থালির হিসেব সেটা ফেলে আবার দিল দরিয়া হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন, তাঁর কল্পিত প্রমোদ নগরে, বয়সিনী চাঁদকে তার রচিত অধরা মাধুরীর কাহিনী শুনিয়েছেন -"গূঢ় কোন অর্থ হবো, একবার নারী হবো আমি, একবার চাঁদ হব, একবার শূন্য হব জানি।" নারীর লাবণ্য রূপ মায়ায় তিনি পার্থিব রসবোধ খুঁজে পেয়েছেন তাই তিনি ঘুমন্ত নারী চোখে স্বপ্ন এনে দিতে চেয়েছেন। আরেকটি ছত্রে তিনি লিখেছেন, "তোমার কঠিন অসুখ আমি দুহাত দিয়ে ছুঁই, শ্বেত করবীর ফুসফুসে দাগ, কি দিয়ে তা ধুই।"
বইটির প্রত্যেকটি ছত্র যেন আবহমান কাল ধরে পৃথিবীর বুকে গ্রথিত হয়ে আছে - খুঁজে নিয়েছেন শুধু একজন, তিনি আমাদের ক্লাসিক আইডল 'রঘু কাকু।' তাঁর মতো লেখকের, কবির, কবিতার সঠিক মূল্যায়ন,  রূপায়ণ করতে পারলাম কিনা জানি না তবে তাঁর কবিতার ফানুসে ডুবিয়ে নিজেকে শুদ্ধ করে দিলাম একবার। তাঁরই সৃজনের ভাষায় শেষ করি, "ওই তো মেঘে সৃষ্টি রেখা, ওই তো মেখে শ্বাস, মনের মতো জোৎস্না পেলে, সজ্জা কোমল ঘাস।"

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                          software development company in siliguri,no 1 software
                          development company in siliguri,website designing company
                          in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                          in Siliguri website design company in Siliguri, web
                          development company in Siliguri