সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
শুক্লা রায়-এর আলোচনায় মৈনাক ভট্টাচার্য-র বই 'ভাস্কর্যের আঁতুড়ঘর'

শুক্লা রায়-এর আলোচনায় মৈনাক ভট্টাচার্য-র বই 'ভাস্কর্যের আঁতুড়ঘর'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর আলোচনায় মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস-এর কাব্যগ্রন্থ 'শস্য দানার রঙ'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর আলোচনায় মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস-এর কাব্যগ্রন্থ 'শস্য দানার রঙ'

মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস-এর আলোচনায় কবি রানা সরকার-এর কাব্যগ্রন্থ 'সবান্ধব স্বদেশে আছি'

মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস-এর আলোচনায় কবি রানা সরকার-এর কাব্যগ্রন্থ 'সবান্ধব স্বদেশে আছি'

অনিন্দ্য সেনগুপ্ত-র আলোচনায় কবি সন্তোষ সিংহ-র বই 'জিরানকাট ও অনন্ত খেজুর গাছ'

অনিন্দ্য সেনগুপ্ত-র আলোচনায় কবি সন্তোষ সিংহ-র বই 'জিরানকাট ও অনন্ত খেজুর গাছ'

অলক পর্ণা সেনগুপ্ত ব্যানার্জী-র আলোচনায় সৌগত ভট্টাচার্য-র বই 'হুজুগ রায়ের পা'

অলক পর্ণা সেনগুপ্ত ব্যানার্জী-র আলোচনায় সৌগত ভট্টাচার্য-র বই 'হুজুগ রায়ের পা'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনায় ড: অমিত কুমার দে সম্পাদিত 'ডুয়ার্সের হাজার কবিতা'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনায় ড: অমিত কুমার দে সম্পাদিত 'ডুয়ার্সের হাজার কবিতা'

সুকান্ত নাহা-র আলোচনায় উমেশ শর্মা-র 'রেনীর তরাই ডুয়ার্স '

সুকান্ত নাহা-র আলোচনায় উমেশ শর্মা-র 'রেনীর তরাই ডুয়ার্স '

শুক্লা রায়-এর আলোচনায় সুকান্ত নাহা-র বই 'সাঁঝদিয়ার চুপকথা'

শুক্লা রায়-এর আলোচনায় সুকান্ত নাহা-র বই 'সাঁঝদিয়ার চুপকথা'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনায় মনীষিতা নন্দীর কবিতা সংকলন

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনায় মনীষিতা নন্দীর কবিতা সংকলন "অন্তক্ষরণ'

23-February,2025 - Sunday ✍️ By- সুকান্ত নাহা 38

সুকান্ত নাহা-র আলোচনায় উমেশ শর্মা-র 'রেনীর তরাই ডুয়ার্স '

সুকান্ত নাহা-র আলোচনায় উমেশ শর্মা-র 'রেনীর তরাই ডুয়ার্স '

আজ যে দুয়ারভূমি বা ডুয়ার্সের ভূ-প্রকৃতি, নৈসর্গিক সৌন্দর্য , চা-বাগান‌ ও নৃতাত্ত্বিক বৈচিত্র্য নিয়ে আমাদের গর্বের শেষ নেই সেই ভূখণ্ড কিন্তু ১৬০ বছর আগেও আমাদের ছিল না। আজকের জলপাইগুড়ি লাগোয়া ময়নাগুড়ি, দোমোহনি, পশ্চিমে কালিম্পং, পূর্বে বক্সা, আলিপুরদুয়ার ছাড়িয়ে ওদিকে আসামের অনেকটা জায়গা জুড়ে ছিল ভুটানের কব্জায়। ভুটানের সাথে যাতায়াতের আঠারোটি দুয়ার বা দ্বার, ইংরেজরা যাকে বলত Doors, যা থেকে ডুয়ার্স শব্দটি এসেছে, সেই দুয়ারের ভেতর দিয়ে ভুটানি হানাদাররা এই অঞ্চলে ঢুকে লুঠপাট চালাতো। ভুটানের হানাদার বাহিনীর সাথে কোচবিহার রাজার হামেশাই সংঘর্ষ লেগে থাকত। সম্পত্তি লুঠ, বলপূর্বক নারী অপহরণ, হত্যা কোনো কিছুই বাদ যেতো না।  

১৭৭২ সালে ভুটান কোচবিহার রাজ্য আক্রমণ করে অধিকার করে নেয়। কোচবিহারের রাজা বাধ্য হয়ে ভারতের ব্রিটিশ সরকারের কাছে সামরিক সাহায্য প্রার্থনা করেন। ব্রিটিশ সেনাপ্রধান ক্যাপ্টেন জোন্স সসৈন্যে কোচবিহারে আসেন এবং যুদ্ধ করে ভুটান সৈন্যদের  তাড়িয়ে দেন। ১৭৭৪ সালে ওয়ারেন হেস্টিংসের মধ্যস্থতায় ইঙ্গ-ভুটান চুক্তি সম্পন্ন হয়। ব্রিটিশ ভারতের করদ রাজ্যে পরিণত হয় কোচবিহার। ভুটান পূর্বে রংপুরের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য বৈকুন্ঠপুর ও কোচবিহারের মধ্যে করিডর প্রার্থনা করে। ব্রিটিশ কোম্পানি ১৭৭৪ সালে বৈকুন্ঠপুরের ৭৭টি মৌজা ও কোচবিহারের কিছুটা অংশ‌ ভুটানকে উপহার দেয়। এর ফলে আমবাড়ি ফালাকাটা, ক্রান্তি, জল্পেশ, ভোটপট্টি, এবং কোচবিহারের চেচাখাতা সহ বিস্তির্ণ অংশ ভুটানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এর পেছনে ব্রিটিশ সরকারের সুপ্ত উদ্দেশ্য ছিল তিব্বতের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের পথ সুগম করা। 

কিন্তু তারপরেও শান্তি বজায় থাকেনি। বিভিন্ন কারণে ভুটানের সাথে তিক্ততা বাড়তে থাকে। অসমে ভুটানি অত্যাচার বন্ধ করতে ব্রিটিশ সরকার অসম দখল করে ভুটানকে বাৎসরিক দশ হাজার টাকা কর দিতে রাজি হন। একই ভাবে ১৭৮৪ সালে আমবাড়ি ফালাকাটা ব্রিটিশ সরকার নিজেদের কব্জায় করে ভুটানরাজকে বাৎসরিক কর দিতে শুরু করে। কিন্তু তা সত্বেও ভুটানি অত্যাচার বন্ধ হয় না। ইংরেজ সরকার ভুটানকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তাদের আগ্রাসন থামে না। বরং বাড়তে থাকে। ফলে বিরক্ত ইংরেজ সরকার কর প্রদান বন্ধ করে দেয়‌। তৎপরবর্তী কালে ভুটানের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট ভুটানে তার প্রতিনিধি অ্যাশলে ইডেন সাহেবকে পাঠান।

১৮৬৩ সালের নভেম্বর নাগাদ ইডেন সাহেবের নেতৃত্বে শান্তি মিশন ভুটান যাত্রা করে। এই মিশনের ভুটান যাত্রা, ভুটান রাজার সাথে কথা বলা, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ভুটান রাজার দরবারে ইডেনের সঙ্গী সাথীদের সাথে খারাপ ব্যবহার ক্যা হয়।  অপমানিত মিঃ ইডেন তার লোক লস্কর নিয়ে ফিরে আসেন।
এর ঠিক পর পরেই ইংরেজরা ভুটানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

১৮৬৪ সনের নভেম্বর নাগাদ শুরু হলো সমরাভিযান। কর্ণেল রিচার্ডসন,কর্ণেল পুঘ মেজর গঘ, ব্রিগেডিয়ার ডান্সফোর্ডের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সেনা যুদ্ধ শুরু করে। ১৮৬৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ ফোর্ট উইলিয়ামের ৫৪ নং রেজিমেন্টের দায়ীত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর চিকিৎসক সার্জেন রেনীকে ৮০ নং রেজিমেন্টের সাথে যোগ দিতে বলা হয়। এই রেজিমেন্টের সাথে কলকাতা থেকে সাহেবগঞ্জ,কারাগোলা, পূর্ণিয়া, কিষাণগঞ্জ, চোপরা হয়ে জলাপাহাড়ে পৌঁছন। ১৮৬৫ সালে যুদ্ধ সমাপ্তি ও ইঙ্গ-ভুটান চুক্তি সম্পাদন পর্যন্ত রেনী রেজিমেন্টের সাথে উত্তরের বিভিন্ন জায়গায় যান। যুদ্ধ  সমাপ্তির পর সার্জেন রেণী চারমাসের ছুটিতে দেশে ফিরে যান। তাঁর ইচ্ছে ছিল‌ ভুটান নামক আজব দেশের কথা নিজের দেশের মানুষকে জানানো। সেই লক্ষ্যে ভুটানের সাথে ব্রিটিশ রাজের বৈরিতা, বিভিন্ন সময়ে ইঙ্গ-ভুটান যুদ্ধের বিবরণ, যুদ্ধক্ষেত্রের  অভিজ্ঞতা, যাত্রাপথের বিবরণ, সমরাভিযান  কালে নানান মানুষের সঙ্গে তার পরিচয় সহ তৎকালীন তরাই-ডুয়ার্সের ভৌগলিক বিবরণসহ একটি রচনা লিপিবদ্ধ করে ফেলেন। ১৮৬৬ সালে সার্জেন রেনীর  " ভুটান অ্যান্ড দ্য স্টোরি অব দ্য ডুয়ার ওয়ার" বইটি লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়। আর এই বইটির বাংলায় ভাবানুবাদ আমাদের হাতে পাওয়ার সৌভাগ্য হয় বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও গবেষক শ্রী উমেশ‌ শর্মার লেখা " রেনীর তরাই ডুয়ার্স" বইটির মাধ্যমে। বর্তমান লেখায় উপরিউক্ত যা কিছু বিবরণ তুলে ধরলাম তা ঐ বইটি পাঠ করেই জেনেছি।

রেনীর লেখা বইটিতে আছে ২২টি অধ্যায়। বহু মূল্যবান ছবিসহ ৪০৭ পৃষ্ঠার এই বইটির পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ করলে বাংলাভাষায় একটি মূল্যবান আকরগ্রন্থ হতো। এ প্রসঙ্গে উমেশবাবু মুখবন্ধে লিখেছেন," বাংলায় সম্পূর্ণ বইটি অনূদিত হলে মনস্ক সাধারণ বাঙালি পাঠক নিঃসন্দেহে উপকৃত হতেন।... বর্তমান লেখক কোনো পৃষ্ঠপোষকের সহায়তার আশ্বাস না পেয়ে ওই মহাগ্রন্থ অনুবাদ করতে এবং গ্রন্থাকারে প্রকাশ করতে সাহসী হয়ে উঠতে পারেননি। তাই তরাই ও পূর্ব পশ্চিম ডুয়ার্সের পটভূমির প্রাসঙ্গিক অংশটুকুর ভাবানুবাদ করে তিনি বাংলার মনস্ক পাঠককে ওই গ্রন্থটির রসাস্বাদনে প্ররোচিত করতে উদ্যোগী হয়েছেন মাত্র।" 

কিন্তু ১৫৯ পৃষ্ঠার এই বইটিতে উমেশবাবু  রেণীর রচনা থেকে প্রাঞ্জল‌ ভাবানুবাদের মাধ্যমে ভুটান সহ ডুয়ার্স অঞ্চলের তৎকালীন সমাজ জীবন, রাজনৈতিক ও ভৌগলিক চিত্র যেভাবে তুলে ধরেছেন তা অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক। বিবরণগুলো পড়তে পড়তে তৎকালীন সময়ের একটা স্পষ্ট ছবি যেন চোখের সামনে ফুটে ওঠে।

ডুয়ার্স নিয়ে পড়াশোনায় যারা আগ্রহী এবং সাধারণ পাঠকের কাছে এই গ্রন্থ নিঃসন্দেহে মূল্যবান এবং সুখপাঠ্য হয়ে উঠবে তার হলফ করে বলা যায়।

রেনীর তরাই ডুয়ার্স 
ভাবানুবাদ: উমেশ শর্মা
প্রকাশক: এখন ডুয়ার্স 
দাম : ২৫০ টাকা।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                          software development company in siliguri,no 1 software
                          development company in siliguri,website designing company
                          in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                          in Siliguri website design company in Siliguri, web
                          development company in Siliguri