সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
শুক্লা রায়-এর আলোচনায় মৈনাক ভট্টাচার্য-র বই 'ভাস্কর্যের আঁতুড়ঘর'

শুক্লা রায়-এর আলোচনায় মৈনাক ভট্টাচার্য-র বই 'ভাস্কর্যের আঁতুড়ঘর'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর আলোচনায় মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস-এর কাব্যগ্রন্থ 'শস্য দানার রঙ'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর আলোচনায় মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস-এর কাব্যগ্রন্থ 'শস্য দানার রঙ'

মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস-এর আলোচনায় কবি রানা সরকার-এর কাব্যগ্রন্থ 'সবান্ধব স্বদেশে আছি'

মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস-এর আলোচনায় কবি রানা সরকার-এর কাব্যগ্রন্থ 'সবান্ধব স্বদেশে আছি'

অনিন্দ্য সেনগুপ্ত-র আলোচনায় কবি সন্তোষ সিংহ-র বই 'জিরানকাট ও অনন্ত খেজুর গাছ'

অনিন্দ্য সেনগুপ্ত-র আলোচনায় কবি সন্তোষ সিংহ-র বই 'জিরানকাট ও অনন্ত খেজুর গাছ'

অলক পর্ণা সেনগুপ্ত ব্যানার্জী-র আলোচনায় সৌগত ভট্টাচার্য-র বই 'হুজুগ রায়ের পা'

অলক পর্ণা সেনগুপ্ত ব্যানার্জী-র আলোচনায় সৌগত ভট্টাচার্য-র বই 'হুজুগ রায়ের পা'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনায় ড: অমিত কুমার দে সম্পাদিত 'ডুয়ার্সের হাজার কবিতা'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনায় ড: অমিত কুমার দে সম্পাদিত 'ডুয়ার্সের হাজার কবিতা'

সুকান্ত নাহা-র আলোচনায় উমেশ শর্মা-র 'রেনীর তরাই ডুয়ার্স '

সুকান্ত নাহা-র আলোচনায় উমেশ শর্মা-র 'রেনীর তরাই ডুয়ার্স '

শুক্লা রায়-এর আলোচনায় সুকান্ত নাহা-র বই 'সাঁঝদিয়ার চুপকথা'

শুক্লা রায়-এর আলোচনায় সুকান্ত নাহা-র বই 'সাঁঝদিয়ার চুপকথা'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনায় মনীষিতা নন্দীর কবিতা সংকলন

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনায় মনীষিতা নন্দীর কবিতা সংকলন "অন্তক্ষরণ'

23-February,2025 - Sunday ✍️ By- শুক্লা রায় 60

শুক্লা রায়-এর আলোচনায় সুকান্ত নাহা-র বই 'সাঁঝদিয়ার চুপকথা'

শুক্লা রায়-এর আলোচনায় সুকান্ত নাহা-র বই 'সাঁঝদিয়ার চুপকথা'

"ব্যালকনির খাঁচার ভেতর থেকে মেঘলা আকাশটাকে ধীরু জ্যাঠার মলিন ধুতির মতো দেখাচ্ছিল।" সম্পূর্ণ উপন্যাসজুড়েই ছেয়ে থাকল এমনই এক মলিন বিষণ্ণ আকাশ। শেকড় ছিঁড়ে বেড়িয়ে পড়া কর্মহীন মানুষদের অসহায় অভিপ্রয়াণ। আমরা যারা বাইরের জগতের মানুষ, চাবাগান ঘিরে আমাদের একটা রোম্যান্টিকতা কাজ করে। বাগানের সৌন্দর্য, বাগানের বাবু শ্রেণির মানুষদের জীবন-যাপন -সবকিছু মিলে অসীম কৌতুহল। সেই আমাদের জন্যই যেন বাগানিয়া মানুষদের বাস্তবতার চুড়ান্ত রূপ ঔপন্যাসিক সুকান্ত নাহা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন। সাহিত্য তো চলমান জীবনেরই প্রতিচ্ছবি। জীবনকে বাদ দিয়ে সাহিত্য হয় না। 'সাঁঝদিয়ার চুপকথা' তার ব্যতিক্রম নয়। লেখক নিজে চাবাগানের ভেতরের মানুষ হওয়ার সুবাদে এই জীবনটাকে তিনি জেনেছেন নিজের মতো করে। শুধু জানা বললে ভুল হবে হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছেন। 
উপন্যাসটি শুরু হয়েছে একটি সিনেমা তৈরিকে কেন্দ্র করে। সিনেমা বানাতে গিয়ে সাঁঝদিয়ার অতীত জীবন ঘুরে ফিরে এসেছে গল্পে, কথায়। কেননা সিনেমার সাবজেক্টই হল সাঁঝদিয়ার অতীত। উপন্যাসের নায়ক ঋতম মিত্র ও নায়িকা চিত্রাঙ্কনা সাঁঝদিয়ার উপর একটি সিনেমা তৈরি করতে সাঁঝদিয়ার মাটিতে পা রাখে। এদের দুজনের পর্যবেক্ষণ ও পর্যটন ঘিরেই উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ আবর্তিত হয়। ঋতম মিত্রের বাবা প্রলয় মিত্র। প্রলয় মিত্রের বেড়ে ওঠা সাঁঝদিয়ায়। তারপর বন্ধ বাগান থেকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতকে সঙ্গে নিয়ে একে একে বাগান বাবুদের বাগান ছেড়ে চলে যাওয়া। কেউ বা অন্য কোনো বাগানে কাজ পেয়ে গেলেন, কেউ শেষ জীবনে বাড়ি বাড়ি কাপড় ফেরী করছেন। কর্মহীন বাগানের বাবু শ্রেণির একদিকে চরম আর্থিক দুর্দশা, অনটন, অন্যদিকে ইমেজ ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে না পারার টানাপোড়েন অপূর্ব ভাবে উপন্যাসে ফুটে উঠেছে। টানটান পটভূমিতে উপন্যাস এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে। পুরো উপন্যাসটি লেখা হয়েছে অতীতকে কেন্দ্র করে। চাবাগানের স্বচ্ছল আনন্দময় জীবনের পাশাপাশি বারবার উঠে এসেছে বাগান বন্ধের পরের অন্ধকারময় জীবনের ছবি। বাগানের দুই শ্রেণির মানুষের পাশাপাশি সহাবস্থান। বাসা লাইনের বাবু শ্রেণি এবং সাধারণ শ্রমিক শ্রেণি। বাবুদির জীবনের বিভিন্ন টুকরো টুকরো ছবি ধরা পড়েছে উপন্যাসটির পাতায়। দুর্গা পুজো, খেলাধুলা পড়াশুনা সবকিছু। এমনকি দরাজ কন্ঠের খালি গলায় গানের যে আমেজ সেই ছবিও আমরা পেয়ে যাই। 
"সেই অফিস ঘরটা নেই। নেই মোহন ওরাওঁ -এর বেড়ার গায়ে মাটি লেপা ছনের ঘরটা। উধাও হয়ে গেছে ঘরের পেছনের অতবড় চিলৌনি গাছটাও। সন্ধে নামতেই যেখানে জিন-চুড়েলরা নাকি মিটিং বসাতো।" সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে গেছে পরিবেশ, চেনা চালচিত্র। তবু মানুষ ফিরে ফিরে আসে মাটির টানে পুরনো ভিটেয়। 
এরপরেই ধীরে ধীরে একের পর এক বাগান বন্ধ হতে থাকে। আনন্দ ও উচ্ছ্বলতায় কাটানো মানুষগুলি অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ডুবে যেতে থাকেন। বাগানগুলি বন্ধের পেছনের কারণগুলিও খুব সুক্ষ্মভাবে লেখক দেখিয়েছেন। পুরোটাই 'রণ' -র ডায়েরি থেকে। উপন্যাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র এই রণ বা রণজয়। তাকে  ব্যতিক্রমী এবং রহস্যজনক চরিত্র। উপন্যাসের এই  রহস্যজনক মানুষটিই তার ডায়েরিতে লিখে রেখেছেন বাগান বন্ধের কারণগুলি। 
"রণ -র ডায়েরীর লেখায় ধরা পড়ে একটা  প্রাণবন্ত বাগান কীভাবে হাতবদল হতে হতে মৃত্যুর খাতায় নাম লেখায়, 'বাগানটা ফের হাতবদল হল। এ যেন ম্যারাথন রেসের বাটন। গ্রোয়ার্স টি কোম্পানি ছেড়ে দেয়ার পর দাশগুপ্তরা কিনেছিল। কিছুদিন চুষে ছিবড়ে করে দিয়ে শেষে তলে তলে মালিকানা হস্তান্তর করে সরে পড়ল। এখন 'পারেখ টি কোম্পানি নামে কলকাতার কোনোও এক ভুঁইফোঁড় ফাটকাবাজ ব্যবসায়ী সংস্থা, রাতারাতি মালিক হয়ে বসেছে। এদের চা সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। এরা ডুয়ার্সের দুটো বাগান কিনেছে। কিন্তু কোনোটাই ঠিক মতো চালাচ্ছে না। কারখানার যন্ত্রপাতি বদল হবে বলে পুরনোগুলি সরিয়ে নিচ্ছে কায়দা করে। তলে তলে কোম্পানির শেয়ার বেচে দিচ্ছে................।"
উপন্যাসটি শুরু হয়েছে একটি সিনেমা নির্মাণের পটভূমি থেকে। এর সঙ্গে ধীরে ধীরে যুক্ত হয়েছে নানা চরিত্র। ঋতমের বাবা প্রলয় মিত্রর বাল্যবন্ধু বিটিস, আসলে ব্রটিশ উচ্চারণগুণে বিটিশ। তার পূর্বপুরূষদের ঝাড়খন্ড থেকে এগ্রিমেন্ট বা চুক্তি করে চা বাগানের শ্রমিক হিসেবে এদেশে আসা এবং তারপর এখানেই বাগানের মাটিতে শেকড় গাঁথা। তাদের জীবনের সারল্য ও দারিদ্র নিপুণ দক্ষতায় তুলে ধরেছেন লেখক। রণজয়ের সঙ্গে তার পরিবারের সম্পর্কের টানাপোড়েন, নক্সালপন্থি রণজয়কে পরিবারের বুঝতে না পারা উপন্যাসটিতে অন্যমাত্রা এনেছে। উপন্যাসের বাবুশ্রেণির জীবনযাপনের পাশাপাশি শ্রমিকশ্রেণির চিত্রটিকেও স্পষ্ট করেছেন লেখক তাঁর উপন্যাসে। সেজন্য উপন্যাসটি সমসাময়িক কালের একটি নির্ভরযোগ্য দলিল হয়ে উঠেছে ক্রমশ।
শেষমেশ উপন্যাসটি শেষ হয় সিনেমা নির্মাণের মধ্য দিয়েই। গল্পের নায়ক ও নায়িকা নতুন পুরনো সবার সাক্ষাৎকার ও নানা উপাদান সংগ্রহ করে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন। সাঁঝদিয়ার হারিয়ে যাওয়া জীবন নিয়ে নির্মিত হয় সিনেমা। পর্দায় ভেসে ওঠে পঞ্চমায়া ছেত্রির জীবন। লেখক বর্ণনা দিয়েছেন "পঞ্চমায়া ছেত্রির শান্ত, ভাবলেশহীন মুখের বলিরেখায় সাঁঝদিয়ার অতীত ঘুমিয়ে থাকে। তুমি যদি সেই ঘুম ভাঙাতে চাও, সে ঘুমিয়ে যাবে শামুকের মতো।"
সহজ সরল পঞ্চমায়া ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে থিতু হলেও বন্ধ বাগানের সেই কালো দিনগুলোর কথা ভুলতে পারেনি। অথচ সে ভুলে যেতে যায়। আর আমরা বাইরের সখের পর্যটকগণ বাগান নিয়ে এক ফ্যান্টাসির জগতে বিচরণ করি। এখনও। পঞ্চমায়া ছেত্রি -তাকে নিয়েই সিনেমা এগোতে থাকে। "ধীরে ধীরে পঞ্চমায়ার জীবনের গল্প ফুটে উঠতে থাকে চলচ্চিত্রে। শেষরাতের তারারা তখনও জেগে আছে আকাশে। নদীচর ধরে সারবেঁধে হাঁটা শুরু করেছে কিছু মানুষ। নদী, ঝোরা পার হয়ে তারা এগোতে থাকে। বড় আপন, চিরচেনা চায়ের গাছগুলোকে পেছনে ফেলে অনেক দূরের বাগানের অচেনা মাটি, অচেনা গাছগুলোর সামনে হাত পেতে দাঁড়াতে।" 
সিনেমা ও তাঁর নির্মাণটুকুতেই যদি উপন্যাসটা থেমে যেত তাহলেও কিছু বলার ছিল না। কিন্তু লেখক শেষটা টেনেছেন অন্যভাবে। সেটুকু নাহয় পাঠকদের জন্য তোলা থাক!
উপন্যাসটি ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই ভালো লেগেছে। কারণ উপন্যাসটিতে একটা সময় উঠে এসেছে নিপুণভাবে। সাহিত্যগুণের পাশাপাশি জানার আগ্রহও বাড়িয়ে তুলবে সুধী পাঠকের মনের ভেতর। বইটি আরো পাঠকপ্রিয় হোক এই কামনা করি।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                          software development company in siliguri,no 1 software
                          development company in siliguri,website designing company
                          in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                          in Siliguri website design company in Siliguri, web
                          development company in Siliguri