শরৎ গাঁথা শারদগাথা/অর্পিতা মুখার্জী চক্রবর্তী
শরৎ গাঁথা শারদগাথা
অর্পিতা মুখার্জী চক্রবর্তী
আনন্দের হাট বসেছে এক
আঁখি এসে সুধোয় সে কোন দূর
মন বলে আমিও দেব পাড়ি
ইচ্ছেতরী ভাসিয়ে অচিনপুর।
শরৎ নামে প্রাণখোলা সেই হাট
মনকাড়া এক নীল চাদোয়ায় বসে
ইচ্ছেমতো মেঘের বিকিকিনি
পেঁজা তুলোর মেঘ পাহাড়ে ভেসে।
সবুজ ঘাসে শিশির বিকোয় ভোরে
পাতার ফাঁকে আলোর দরাদরি
অরুণ আলোর মুক্তো দানার শিশির
চড়া দামে ফুরোয় তাড়াতাড়ি।
মন মাতানো গন্ধসুধার টানে
শিউলি হাটে চলছে বেচাকেনা
কমলা-সাদা পাপড়ি মেলা খুশি
মাটির কাছে, মাটির ঋণে চেনা।
ওই যে দূরে কাশের বনে ভিড়
শরৎ বাতাস দাম বলে যায় হাটে
সম্মতিতে হেলিয়ে মাথা সবাই
ছড়ায় আলো দুধসাদা সেই মাঠে।
ভরা হাটে পদ্ম বেচাকেনা
স্থল ও জলে সমান দামে দামী
হৃদকমলের পাপড়ি মেলে দিয়ে
সুখ সায়রে কিনতে তাকে নামি।
ভাঙা হাটে শালুক বিকোয় রাতে
সদ্য ফোটা কুসুমকলির টান
রাতজাগা এক মনকেমনের সুরে
দেয়া নেয়ায় অযুত অভিমান
মায়াবী চোখ আবেগী মন মিলে
স্নিগ্ধ প্রহর দরদ যখন বাটে
নিসর্গ আর আঁখির তারায় তারায়
বিক্রিবাটা শান্ত শরৎ হাটে।
হাটের মাঝে নূপুর বাজে শুনি
এগিয়ে আসে আলতা দুটি পা
হঠাৎ কোথায় শঙ্খ ওঠে বেজে
মন বলে 'ওই আসছে দেখো মা।'
আকাশ মেঘে মায়ের হাসিমুখ
শিশির ছোঁয়া মায়ের পায়ের পাতা
শিউলি ফুলে কেশের শোভা ঝরে
কাশ হাওয়া দেয়, পদ্ম হাতে গাঁথা।
আলুক শালুক সব অভিমান ভুলে
প্রস্ফুটিত মা সায়রের মনে
দোলা লাগে ধানের খেতের বাঁকে
পালতোলা ওই মিঠে হাওয়ার টানে।
শরৎ হাটে আলোর ছটা ঝরে
মাকে ঘিরে এক উঠোনে বসি
ভাগ করি নিই সেই সুমধুর ক্ষণে
শারদীয়ার মিলনমেলার খুশি।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴