লজ্জারূপেণ/মনীষিতা নন্দী
লজ্জারূপেণ
মনীষিতা নন্দী
মেয়েটা বড় হয়ে যাচ্ছে,
হঠাৎ ঝড় এলে যেভাবে
ওলটপালট হয় সব সবুজ,
ঠিক তেমন, ঐ নীলচে সবুজ কামিজে
অতীত ক্ষতচিহ্ন আর জ্বালাপোড়া;
আয়তনে এখন কম পড়ে পরাভব।
আলমারি ঠাসা জামাকাপড়
অবিশ্বাসী গন্ধে আটকে আসে নিঃশ্বাস;
মেয়েটা বেড়ে উঠছে, বাড়তে বাড়তে
ভুলে যাচ্ছে মাত্রাজ্ঞান - সীমা - পরিসীমা।
কখনও রাস্তায় চলতে ফিরতে
ওরা আঙ্গুল তুলে শিখিয়ে দেয়
কোথায় থামতে হ'বে, কিংবা
ঠিক কতটা বেড়ে ওঠার পর
দশদিক ছুঁড়ে দেবে রঙবেরঙের দাঁড়িপাল্লা,
ওজনদরে নিক্তিতে গুণে নেবে
সবটুকু বাড়তি মাংসপিন্ডের হিসাব।
মেয়েটা বেপরোয়া বেড়ে উঠছে,
আবেদনের ভাঁজে ভাঁজে চলকে পড়ছে
অবাধ্য মেদের ডেলা পাকানো বুক - কোমর - উরু
এতদিন কি ঘুমিয়েছিলে?
নাকি, কেবল ফসিল থাকা নাটক??
উপড়ে ফেলতে ইচ্ছে হয় সব,
সব কান্না, সব দীর্ঘশ্বাস - আঘাত
উপযাচক উপরোধ - উপদেশ,
খুঁচিয়ে খুবলে গিলে খেতে থাকা
ভালো চাইবার ছদ্মরূপী রাক্ষস-স্বর।
বড় হয়ে যাচ্ছে, বেড়ে উঠছে সবকিছু,
আলোর গতিতে ছুটে যায় তিনটে কাঁটা
হিংস্র টিকটিক রাতভর,
এ' নম্বর থেকে ও' নম্বর,
পিঠের ওপর চেপে বসে থাকে ভবিষ্যতের বেতাল,
বাড়তে বাড়তে রং বদলের দিনকাল,
নিরুদ্দেশে সে কোন্ প্রাগৈতিহাসিক তন্বী;
ওয়ার্ডরোবে তখনও লাল - নীল - হলদে - কমলা,
কাকে ছেড়ে কাকে বেছে নেবে সে?
মেয়েটা বড় হয়ে যায় শুধু;
অপারগ - অক্ষম - মুখ চুন,
রং বাছাবাছি খেলায় ঝরাপাতা - মেঘ,
ক্ষমতাচ্যূত আসনের ধারাবাহিক স্খলন চলছে
আলমারি ঠাসা জামাকাপড়ের সুতোয়
ভীড় করে দলা দলা মহামারী।।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴