সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon

মোরে আরো আরো দাও প্রাণ/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

মোরে আরো আরো দাও প্রাণ
মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

হলুদ বুকের কাঠগোলাপ ফুটেছিল যেন তোড়ায় সাজানো ফুলদানিতে।আসলে তো খরখরে অমসৃণ দৈত‍্যের মত গাছটার শরীর সে কোন কালের কোন অসীমের এক মানুষের কথা মনে করিয়ে দেয় বার বার,আর তিনি মনে পড়াবেন কি,জীবনে জীবন জড়িয়ে যায় তাঁকেই যখন উচ্চারণ করি সুরে কবিতায় নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে কিংবা তাঁর জীবনের নারীদের আশপাশ থেকে যখন আলো এসে পড়ে,মনে হয় এইতো আমি।
কখনো প্রিয় বিদেশিনী প্রিয় নামকরণ তাঁর 'বিজয়া'।কি অদ্ভুত জীবনের বিভিন্ন দ্বারপ্রান্তে মুখোমুখি কবি কতকি অভিজ্ঞতা,জীবন পাঠ নিয়ে শিখেছেন বিপুল বৈভব অর্জন করেছেন তার ইয়ত্তা নেই।শেষজীবনের দ্বারপ্রান্তে ছবি বা রঙ তুলির কালেও।
লেডি রাণু মুখোপাধ‍্যায়...তাঁর সঙ্গে পত্রাবলীর বিরাট ঐশ্বর্য তৈরি করেছে পত্র সাহিত‍্য পর্ব।গড়ে ওঠা সম্পর্ক থেকে কতনা কবিতা, গান আর নাটক।কবিগুরুর সচেতন সত্তা ষাটোর্ধ জয়সিংহ আর বালিকা অপর্ণাকে পেয়েছে মঞ্চ ইতিহাসে।কোন ক্ষুদ্রাংশকেই অপ্রয়োজনীয় মনে করেননি কবি।শিশুকালের যে অতৃপ্ত মাতৃস্নেহ সুধা সারাজীবন যেন তার আকাঙ্ক্ষায় পা রেখেছেন,খুঁজেছেন অনন্ত অজস্র দেশ কালে সেই মুখের আতপ্ত স্নেহ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা আর খুলতে চেয়েছেন অচলায়তনের বন্ধ কপাট।সেই মনের সন্ধানে এক জায়গায় স্থির থাকেনি তাঁর মন।পৃথিবীর বিভিন্ন কোণের পরিচয় তাঁর য়ুরোপ যাত্রীর ডায়ারি হোক কিংবা জাপান যাত্রীর ডায়ারিতে বিধৃত।আরো কতনা ভ্রমণ লিপি যার শেষ নেই কোন।অবিভক্ত বঙ্গের প্রকৃতি কখন উঠে এসেছে কবির ছিন্ন পত্রাবলীর ছত্রে ছত্রে।
ভালবেসেছেন পাহাড়,বার বার ছুটে এসেছেন এ প্রান্তে।শুধু কি শরীর রক্ষা! মংপুতে মৈত্রেয়ী দেবীর শান্তি নিবিড় ছায়ায় কত লেখালেখি।কত আদিবাসী মানুষ এসে জন্মদিনে প্রণাম করে গেছেন তাঁকে।কবি খুশি হয়েছেন
'স্বর্গের কাছাকাছি' বইয়ের ভূমিকায় মৈত্রেয়ী দেবী লিখেছেন, 'রবীন্দ্রনাথ নিজেকে দান করতে পারতেন অজস্র ধারায়।তাঁর জীবন থেকে স্বত:উৎসারিত আনন্দধারা ঝরে পড়ত অবিরল অবিশ্রান্ত- যার যেমন অঞ্জলি সে তেমন করে পূর্ণ করে নিয়েছে।'
মৈত্রেয়ী দেবীর বাবার কাছে কতনা চিঠি লিখেছেন কবি।সেসব চিঠিতে সামাজিক প্রেক্ষাপট,বাধাবিঘ্ন, নানা ঐতিহাসিক ঘটনা উঠে এসেছে। সেসব চিঠির সূত্র ধরে মৈত্রেয়ী দেবী ফিরে গেছেন অতীতে।কবিগুরু যেন তাঁকে ডাক দিয়েছেন কোন আনন্দলোকে, যেখানে পৌঁছলে বর্তমানের ক্ষয় ক্ষতি,লাঞ্ছনা বা দাহ সব জুড়িয়ে যায়, মৈত্রেয়ী দেবীও ঠিক সেভাবেই সাড়া দিয়েছেন,প্রবেশ করেছেন পিতা সুরেন্দ্রনাথ দাসগুপ্তকে লেখা কবিগুরুর চিঠির অতীত সময়ে অথচ চিরন্তন অস্তিত্ত্বে।
মৈত্রেয়ী দেবী এও উল্লেখ করেছেন,"যখন ক্ষত বিক্ষত মন নিয়ে চিঠিগুলি খুলে খাতা নিয়ে বসেছি,রক্তপাত বন্ধ হয়ে গেছে।'তখন তৃষিত হৃদয় ফিরে,সুধাসাগর তীরে'-সে সমুদ্র স্থান-কালের দিক্ চিহ্নহীন,সংসার কলুষ স্পর্শের বাইরে।"
এইযে বেদনা, বিষণ্ণতা অন্ধকার সবটুকু পরিস্থিতি থেকে বার বার নির্বাণের পথ দেখিয়েছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ।
'...আমারে তুমি করিবে ত্রাণ এ নহে মোর প্রার্থনা/তরিতে পারি শকতি যেন রয়।/আমার ভার লাঘব করি নাইবা দিলে সান্ত্বনা,/বহিতে পারি এমনি যেন হয়। (ব্রহ্ম সংগীত,গীতাঞ্জলি)
কবির বানী হয়ে ওঠে বার বার নিজস্ব একান্ত আত্মার সম্পদ আর প্রার্থনা হয় সর্বজনীন।কবিগুরুর অস্তিত্ত্বেই তাঁর চেতনা।
 ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো, রাণু, কিংবা মৈত্রেয়ী দেবীর মত আরো বহুজনের সান্নিধ‍্যে যাঁরা কবির স্নেহের,প্রেমের কাছাকাছি একীভূত সারাজীবন,যুগ থেকে যুগান্তরে এই কবিই তো হাত বাড়িয়ে আছেন।অতীত থেকে বর্তমান দাঁড়িয়ে আছেন ঋজু বটবৃক্ষের মত।সমস্ত কাজ,সকল কষ্ট যন্ত্রণা,সমস্ত নীরবতায় ঠিক এমনি করেই অন্তর বলে -
'দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ওপারে/আমার সুর গুলি পায় চরণ,আমি পাইনে তোমারে।'
 অকারণে চোখ ভেজে।স্পর্শ পাই কার!সেইতো চিরচেনা শাশ্বত শৈশব ধরে এগিয়ে যাওয়া দু:সাহসী কিশোর প্রেম আর মানুষের স্পর্ধায় যৌবনে পা দেওয়া, সেই তো সবসময় তিনি পাশে আছেন বলেই হলদে বুকের কাঠগোলাপ আজো মনের দিকে দিকে প্রতিষ্ঠিত,আজো সকল কাজ সকল পদার্পণে মহাকবি বন্ধু হয়ে দাঁড়ান। সহজেই উন্নত গ্রীবা মন্দ্র মধ‍্যলয়ে দৃঢ়তায় উচ্চারণ করে, "সকল গর্ব দূর করি দিব,/তোমার গর্ব ছাড়িবনা।"(ব্রহ্ম সংগীত)
এক ই ভাবে উচ্চারণ সেই ব্রহ্মসংগীতে সুরে স্বরে একাত্মতায়..."গরব মম হরেছ, প্রভু, দিয়েছ বহু লাজ।/কেমনে মুখ সমুখে তব তুলিব আমি আজ/তোমারে আমি পেয়েছি বলি মনে মনে যে মনেরে ছলি/ ধরা পড়িনু সংসারেতে করিতে তব কাজ।/কেমনে মুখ সমুখে তব তুলিব আমি আজ।"
 
চিরবন্ধু, চির পরম নির্ভর কবিগুরু জীবনের সান্ত্বনা নিভৃতের আলয়, সমস্ত প্রেমে ডুবে যাওয়ার আশ্রয়।ভালোবাসি কবি...

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                          software development company in siliguri,no 1 software
                          development company in siliguri,website designing company
                          in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                          in Siliguri website design company in Siliguri, web
                          development company in Siliguri