সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য-এর আলোচনায় শৌভিক রায় -এর বই 'গ্রীন করিডোর'

ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য-এর আলোচনায় শৌভিক রায় -এর বই 'গ্রীন করিডোর'

রীনা মজুমদার-এর আলোচনায় শৌভিক রায়-এর 'মুজনাইয়ের বালক'

রীনা মজুমদার-এর আলোচনায় শৌভিক রায়-এর 'মুজনাইয়ের বালক'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় -এর আলোচনায় দেবপ্রসাদ রায় -এর বই 'ডুয়ার্স থেকে দিল্লি'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় -এর আলোচনায় দেবপ্রসাদ রায় -এর বই 'ডুয়ার্স থেকে দিল্লি'

পড়ে যা বুঝেছি/শ্যামলী সেনগুপ্ত

পড়ে যা বুঝেছি/শ্যামলী সেনগুপ্ত

মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস-এর আলোচনায় উমেশ শর্মা-র 'নেখানেখির জগতত্ ভাসিতে ভাসিতে'

মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস-এর আলোচনায় উমেশ শর্মা-র 'নেখানেখির জগতত্ ভাসিতে ভাসিতে'

শ্রুতি দত্ত রায়-এর আলোচনায় শাঁওলি দে-র 2b কন্টিনিউড

শ্রুতি দত্ত রায়-এর আলোচনায় শাঁওলি দে-র 2b কন্টিনিউড

অর্পিতা মুখার্জি চক্রবর্তী-র আলোচনায় অশোক কুমার গঙ্গোপাধ্যায়-এর 'পুনরুত্থান'

অর্পিতা মুখার্জি চক্রবর্তী-র আলোচনায় অশোক কুমার গঙ্গোপাধ্যায়-এর 'পুনরুত্থান'

মনীষিতা নন্দী-র আলোচনায় সিদ্ধার্থ শেখর চক্রবর্তী-র  'নিরুদ্দেশ সংবাদজুড়ে নাবিকের দল'

মনীষিতা নন্দী-র আলোচনায় সিদ্ধার্থ শেখর চক্রবর্তী-র 'নিরুদ্দেশ সংবাদজুড়ে নাবিকের দল'

কবিতা বণিক-এর আলোচনায়  ডঃ রতন বিশ্বাস-এর 'পাহাড়ে রবীন্দ্রনাথ'

কবিতা বণিক-এর আলোচনায় ডঃ রতন বিশ্বাস-এর 'পাহাড়ে রবীন্দ্রনাথ'

সুকান্ত নাহা-র আলোচনায় রাজর্ষি দত্ত-র LEAF TWO AND BUD ONE

সুকান্ত নাহা-র আলোচনায় রাজর্ষি দত্ত-র LEAF TWO AND BUD ONE

26-January,2025 - Sunday ✍️ By- মনীষিতা নন্দী 84

মনীষিতা নন্দী-র আলোচনায় সিদ্ধার্থ শেখর চক্রবর্তী-র 'নিরুদ্দেশ সংবাদজুড়ে নাবিকের দল'

মনীষিতা নন্দী-র আলোচনায় সিদ্ধার্থ শেখর চক্রবর্তী-র  'নিরুদ্দেশ সংবাদজুড়ে নাবিকের দল'

তুঁতে মলাটের অবাধ মাঠে খেলে বেড়ায় কবির শব্দেরা। এক - একটি শব্দ যেন এক - একটি জ্বলন্ত আখর। মাঠের ওপর দিয়ে, আশপাশের জঙ্গল জুড়ে উড়ে বেড়ায় জোনাকি। মনের কোণে ধিকিধিকি জ্বলে। যে কখনও অন্ধত্ব দেয়না, সেই উজ্জ্বল বিবেক পোকাকে উৎসর্গ ক'রে শুরু হয়, কবির অক্ষর যাপন, কবিতা কথা। অতৃপ্তি, অনস্তিত্ব, না দেখা, অদেখা, যাকে ছোঁয়া যায়না, অনুভবে থাকে, তাকে বড্ড বেশী উপলব্ধির আর্তি, কবির 'আবছায়া' কবিতায়। প্রত্যাশাগুলো ছোটোগল্পের মত ডালপালা বাড়িয়ে, ছুঁয়েও না ছুঁয়ে, দেখেও না দেখে, থেকেও না থেকে, আরও স্পষ্টভাবে শুনিয়ে যায় আবছায়া সুর। রঙ, রূপ, রস, গন্ধ, আলতো আদরে জড়িয়ে নিয়েও উন্মুক্ত ক'রে দেয় বারবার। আদৌ সে মুক্তি কি চাই আমার? কি জানি! প্রশ্ন থেকে যায় আমৃত্যু। জীবনের বুক জুড়ে কখনও নির্বাসন, কখনও উদযাপন। কান্নার অক্ষরে লেখা। "ফেলে আসা চিঠি" র ভেতর ছেড়ে যায় মায়া সংলাপ। 'বিবস্ত্র' কবিতাটির ভেতরে আবার অন্যরকম কিছু প্রশ্নবিন্দু। 'সভ্যতা', 'ভদ্রতা', গোছের কিছু বিশেষ্যপদ ঘিরে আমাদের যে সামাজিক নির্মাণ, যে গতানুগতিক চেহারার একটা প্রাক্ ধারণা থেকে যায় অবচেতনে, সে' ছবি কি আক্ষরিকভাবেই আমাদের প্রত্যাশার তেমন 'সত্য' নিরাপত্তা বলয় বা আবরণের অন্য নাম হয়ে উঠতে পারে? নাকি সবটুকুই মোহ? নগ্ন ভুল? যে সমাজ প্রতিনিয়ত নকল মোহের ঘেরাটোপে বেড়ি পরিয়ে, মুখোশের আড়ালে, মেরুদন্ড কেটে, বেচে, তাঁবেদার তৈরির কারখানা হয়ে ওঠে, তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে লজ্জা লেখা থাকে। এ কবিতায় উন্মুক্ত হয় পরিসর। আয়নায় দাঁড়িয়ে অন্তরের অন্তঃস্থল বেয়ে বয়ে যায় লজ্জার নদী। কবির কলমে বন্যারাতের অসহায়তা ফুটে ওঠে "বন্যারাতের পরে" কবিতায়। মেঘ - বন্যা - ঝড়ের প্রকট রোম্যান্টিক রূপের আড়ালে লুকিয়ে থাকে যে দুর্বিষহ কান্না, অসহায়তা, অন্তহীন অপেক্ষা, দারিদ্র্য, ত্রাণের জন্য হাহাকার, অন্ন - বস্ত্রের হাহাকার, স্বজন হারানোর, এমনকী, মাথার ছাদটুকুও হারিয়ে ফেলার তীব্র বেদনা, এই সবটুকু দিয়ে এই কবিতায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন কবি। অক্ষর ফুলে যেন কান্নার মালা গাঁথা হয়। "আবহাওয়া খবরে মেঘেদের ছবি। বাবা ফিরবে কিনা জিজ্ঞেস করছেনা কেউ। একবুক জল এখন। ঘরে।" 'জোনাকি' কবিতায় কবির অন্তর্দৃষ্টিতে জোনাকি জ্বলে ওঠে। "আমার স্বপ্নে তুই সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলি ভিড়ে; জোনাকি, আমি একদিন অন্ধ হ'ব।" সেই প্রতীকী আশ্রয়ে পরম আলোর দিশা পেতে কবি ডুব দিতে চেয়েছেন, গভীর অন্ধত্বে, গহিন  অন্ধকারের পরম গহ্বরে। "শীতের কবিতাগুচ্ছ" তে কবি এমন এক শীতের গল্প বলেছেন, যে শীত চুরি ক'রে নিয়েছে সবটুকু উত্তাপ, সবটুকু জীবনীশক্তি, উদ্দীপনা। চুরি হওয়া উত্তাপের শূণ্য পূরণে জমছে একবুক অভিমান। কিন্তু শীতের ঘন বাতাস তো ক্ষণস্থায়ী। "বাতাস ঘন হয়, বিকেল ফুরিয়ে আসে তাড়াতাড়ি। ভারী পোশাকের পুনর্জন্ম। আবার চলেও যায়। আনমনে।" সবটুকুই চক্রাকার পরিবর্তন্তে....। শুধু অভিমান ব্যথাটুকু স্থায়ী হয়ে সত্যের ভার হয়ে থেকে যায় আজীবন। শীতে ভোরের এই কুয়াশার বর্ম কিংবা হালকা রোদের বর্ম, কবির কথায়, "নবজন্ম হোক প্রকৃতির ধারণায়। বর্ম আমাদের আনন হয়ে ওঠা ভুল।" "বন্যারাতের পরে" কবিতাটির মত 'যাত্রী' কবিতাতেও প্রকট বাস্তব কখনও গল্প লেখে, চোখের কোণে, কালির বুকে। প্রবল বৃষ্টি থেকে বন্যা কখনও ক্ষতের ঝঞ্ঝা আনে, আবার এই প্রকট বাস্তবের পথেই বৈরিতা দেখা যায়, বিস্ময়ে, এ'ভাবে; "বৃষ্টি আর কবে হ'বে জিজ্ঞাসা!" সোঁদাগন্ধের আশায় হাহাকার ক'রে মরে যাচ্ছে  "শীর্ণকায় কাঁধে ধরা মায়ের আফশোসের গন্ধ"। ঝড়ের প্রতিরূপ হয়ে আসে যে মেয়েটি, তার "মলিন সালোয়ারে লেগে রয়েছে বাবার ওষুধ, ভাইয়ের টিউশন ফি দেবার তাগাদা।" উদাসী হাওয়ায় হারানো বসন্ত আয়না খুঁজে ফেরে। যে বিপুল ভার সে শরীরে বহন ক'রে চলে, তার নাম মেঘ। এই মেঘ বৃষ্টি আনেনা। ফাঁকা বুকে "গন্তব্যে নেমে পড়লে ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে। দৃষ্টি ঘুরিয়ে। অবিশ্রান্ত সপ্তলা স্রোতে বসে রইল। যেতে হ'বে বহুদূর। যাত্রীহীন। সম্ভেদে জন্ম নেবে আরও কিছু মেঘ।" 'অচেনা' কবিতায় নিজেকেই যেন নিজের অস্তিত্বের বিষয়ে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়, বড্ড অচেনা ঠেকে। সমাজের সর্বাধিক বৃহত্তর অসুখ; "কেউ অবিরত বিক্রি করে যাচ্ছে নতজানু মেরুদন্ড।" বৈচিত্র্য হারিয়ে সমসত্ত্ব মিশ্রণ তৈরির যে খেলায় লিপ্ত হয়েছি আমরা, তাও কবির কথায় ফুটে ওঠে, "সবাই একভাবে অপেক্ষায়। একই বানানে লেখা সবার শোক। পরাজয়।" ভেতরে ছটফট ক'রে মরে আমার জন্মকালের ছেড়ে যাওয়া অস্তিত্ব, আমার বিবেক। "সাহস থাকলেই শহীদ হওয়া যায়। আয়না দেখলেই রাস্তা হওয়া যায়।" প্রাণপনে মাথা উঁচু ক'রে দাঁড়াতে চেয়েও, হতাশা, সংকটের অস্তিত্ব, আটকে দেয় স্তরে স্তরে। একলা হয়ে কবি নিরন্তর ছুটছেন মেরুদন্ডের খোঁজে। আয়না তাড়া করছে তাঁকে। "আমি হাতড়িয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছি পিঠের হাড়। মেরুদন্ড বানাব।" "রঙিন চোখ" কবিতায় সম্পর্কের তত্ত্বকথা, সত্য ও বাস্তবের মাঝে মাথাকুটে মরছে। ঠিক যেন পেন্ডুলামের সরল‌ দোলগতি। প্রেম, পুরুষ, ভালোবাসা নিয়ে যে ফ্যান্টাসি, যে স্বপ্ন, যে মোহাচ্ছন্নতা থাকে, তাকে যদি সত্য হিসাবে ধরি, তবে বাস্তব থেকে তার দূরত্ব বিপুল। তাই কবি বলেন, "পুরুষ স্বপ্নে যাকে দেখো, আমি নই তেমন দেখায়। দূরত্ব বাড়লে সেতু হ'বে, আমি নই এমন আশায়।" তবুও শেষ অংশে বাস্তব থেকে সত্যে উন্নীত হ'বার আলোকময় দীপ্তি ফুটে ওঠে। প্রত্যাশা ফুরোয়না। "একদিন ঠিকই চেনা হোক। মনের কথা শুনবে এসে। রঙিন সেদিন সন্ধে চোখ। ভালোবাসা বুঝবে বসে।" জীবনের প্রতি পরতে পরতে যে'ভাবে অবসাদ লেখা থাকে, কবিতার যাপনে সেই অবসাদ বিন্দুগুলোকেই যেন নতুনভাবে একটু একটু পরখ ক'রে দেখার ও গোপন ঘরের অবচেতনায় ডুব দেবার প্রক্রিয়া চলতে থাকে। "প্রতি দোকানের নাম পড়া হ'ত যে'ভাবে, ঠিকানা সহ, মায়ের পাশে বসে রিকশায় যেতে যেতে, তেমনি অবসাদ পড়ছি।"  (কবিতা : অবসাদ)। অবসাদের ডালপালা চিনতে চিনতে যখন গলা অবধি আটকে আসে, মনে হয়, কবিতা নয়, খাতায় কলমে যেন "আমি বিষাদ লিখছি।" কষ্ট কথা লেখা বইয়ের ফেরিওয়ালা কবি বলেন, "মনখারাপ কিনবে আকর্ষণীয় ছাড়ে?" 'সম্ভেদ' কবিতায় বহতা নদীর মত জীবনকে ভালোবেসে নৌকো সাজিয়ে তোলেন কবি, হৃদয়পাতায় আঁকেন নিভৃত চাকা। সকল কালোর ভেতর থেকে স্মৃতির সরণি বেয়ে শান্তি সাজিয়ে কবি লেখেন; "ছায়াদীর্ঘ হ'বে বলেই সন্ধে, মনজুড়ে, স্মৃতিসৌধে শিখা সাজিয়েছি। দানলহ। চেনা পথে নদী আসবে জানতে, বালুচরে। মৃত তাই যে নৌকো বানিয়েছি। কর্তব্য।" জীবনের শেষ পর্যায়কে পাহাড়ের উচ্চতার সাথে তুলনায় কবি বলেন, "পাহাড়ে রাত নামে বড় তাড়াতাড়ি।" অর্থাৎ জীবন সায়াহ্ণের আঁধার কথা "দুর্বল রোদের নিরুদ্দেশ ঠিকানায় চিঠি পড়ে। লালখামে।" মৃত্যুকথা যখন আসে, "আগুন জ্বালিয়ে শান্ত হয় কেউ কেউ। পুরোনো ছবি ছাই হ'তে দেখে।" জন্মকথার পূর্বে কোনো এক মৃত্যু পরবর্তী ক্ষেত্র ধরে "পাহাড় থেকে নেমে আসে যে মানুষটা। সে ওপরে ওঠেনি। সে রাত দেখেনি। আগুন জ্বালায়নি।" "উড়ে যাক" নামক এই কবিতার শেষ ধাপে কবি দেখতে পান, "নতুন জন্ম। উড়ে যাক এবার। গর্ভে।" জন্মান্তরের কথা ভেসে আসে। নাম ভূমিকার কবিতায় মেঘকন্যাকে চিঠি লেখেন কবি। নাবিকেরা পাড়ি জমিয়েছেন নিরুদ্দেশের পথে। মেঘের সাথে নিভৃত আলাপচারিতায় কবি "তিস্তা অক্ষরে কুয়াশা" লেখেন, "লিখেছিলাম জলরঙের আলাদা সন্ধের কথা।" নিভৃতের মায়াময় রূপ ক্রমশঃ স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যখন দিকে দিকে "নিরুদ্দেশ সংবাদ জুড়ে নাবিকের দল", একলা কবি আর মেঘ কিংবা মেঘ আর কবি, মিলেমিশে একাকার "মেঘকন্যার জন্মদিনে।" দীর্ঘ দ্বৈতযাপনের স্বপ্ন লেখে "ঝরাপাতার দিন" কবিতা। অ্যালবাম, কুঞ্চিত চামড়া, মাসমাইনের খরচ, আক্ষেপ, শাড়ির ভাঁজ, জমে ওঠা গ্যালারী, যৌথ সকাল - রাতের ঝরাপাতা দিনের মধুমাখা গল্প লেখে। "একদিন একসাথে বুড়ো হ'ব। আক্ষেপ মুছতে মুছতে। গ্যালারি জমতে জমতে।" এরই রেশ নিয়ে বিপরীতমুখে হেঁটে যায় 'আমরা' কবিতাটি। দু'টি প্রাণের মিলে যাবার পথে আঁকে টুকরো টুকরো ছেদ। ফিরে পাবার প্রবল আকুতি হেরে যায় অভিমান ও শব্দযুক্তিতে। স্বেচ্ছায় মুক্তির পথ খুঁজে নিতে নিতে বন্ধুতা ইতিহাস লেখে। "নাবিকের ভিন্ন নদে, বন্ধু ছিলাম একদা ইতিহাসের দূরবিনে ......... আমরা হেরেছি কাগুজে প্রেমের ঋণে।" প্রেম, মুগ্ধতা, ভালোলাগা বুকে, 'শব্দহীন' থেকে 'জন্ম অপচয়' করেন যে "দুর্বল পুরুষ", 'ইচ্ছে' আর 'সুযোগ' - এর দোহাই দিয়ে সে যেন আজ "চোখ নামিয়ে" একের পর এক অক্ষরে ভরিয়ে তোলেন কবিতার খাতা। কবিই কি কবির কাছে সেই "দুর্বল পুরুষ"? এমন নানা প্রশ্নচিহ্নে ভরে ওঠে দুই মলাটের প্রাণ। "অসম্ভব প্রেমে কথা হারাত দুর্বল পুরুষ। আমি এখনও শব্দহীন থাকি।" একইভাবে "ছেঁড়া পাতার কবিতা"ও অব্যক্ত, নিঃশব্দ, অক্ষরহীন মেঘের মত নিশ্চুপ ভালোবাসার কথা বলে। দুর্বোধ্য এই প্রকাশ ভঙ্গিমা যেন আরো স্পষ্ট ক'রে তুলছে অনুভবকে। "অক্ষরহীন ভালোবাসায় শব্দ লেখা জোর কার? এমনি ক'রেই ভালোবাসা একমাত্ৰ শর্ত।" জীবন তো শুধু জীবন নয়, জ্যামিতি - পরিমিতির হাজারো নক্সা, কাটাকুটি। সময়ের সাথে অগোছালো হয় সব; সব সুন্দর অসুন্দরের নির্মাণ মিলেমিশে একাকার হয়ে দুঃখময়তার এলোমেলো ভিড়ে মুছে - ধুয়ে দেয়, কত না অধ্যায়! একজীবনের ভেতরেই হাজার হাজার জন্ম, ছেড়ে আসা, ভুলে যাওয়া, মৃতের স্তূপ। মুহূর্তে মুহূর্তে স্মৃতিছবি আর সতত সুখের হৃদয় নিংড়ে নেবার ছোঁয়া, কাঁটা হয়ে বেঁধে। ভেতরঘর উথালপাথাল করে কান্নায়, ভেঙে গুঁড়িয়ে, ভুলে থাকার কোনাকুনি দাগে এ যেন ধারাবাহিক মোড় পরিবর্তনের পালা। "কোনাকুনি দাগ টেনে রাস্তা বেরোল যত, পৃষ্ঠা ভরে কাটাকুটিতে, শুরুর ইচ্ছেটা মৃত।" 'অচেনা' কবিতার মতই "মিছিলের শেষ প্রান্তে" কবিতাতেও কবি মেরুদন্ড বিহীন সমাজের ভেতর ন্যুব্জ 'আমি' দের খুঁজে বেড়ান। হারিয়ে যায় কথা, অক্ষর; ভিড়ের ভেতর মিশে যেতে যেতে আমরা ক্রমশঃ যেন মিছিল হয়ে গল্পকথায় রয়ে যাই। দ্রোহ আর কবিতা মিশে যেতে পারেনা, গদ্যের বোঝা বহন ক'রে চলে। দগ্ধ অক্ষর মুক্তি পায়না কবিতায়। "দর্শক শব্দ চাইলে আমরা নির্বোধ হই, বিদ্রোহ জেদ চাইলে আমরা দূরত্ব হই, আমরা কবিতা হইনা।" 'জীবন' কবিতার অনুষঙ্গে "নতুন পুরুষ" কবিতাতেও মুহূর্তে মুহূর্তে ছেড়ে আসা, ভুলে থাকা, হারিয়ে যাওয়া, ক্ষত - ক্ষতিকে বুকে ক'রে থাকার কথা বলেন কবি। এই ছেড়ে দেওয়াগুলোকে হেরে যাওয়া বলে মনে হ'লেও এতেই লুকিয়ে থাকে আক্ষরিক বেঁচে থাকার গল্প। কবির নিজেকে "নতুন পুরুষ" নামে চেনার কথা শুনি এ'ভাবে; "কিছু পাহাড় ভুলে যেতে হয়। ফিরতি পথে। কিছু হেরে যাওয়া বাঁচিয়ে তোলে।" 'অপ্রেম' কবিতায় বারবার অস্ফুট প্রেম, না বলা অনুরাগ, ভালোলাগা, অক্ষর রূপ নেয়। কবিতা হয়, পদ্মপাতায় জলের মত; বৃষ্টি ভেজা শহর জুড়ে, নীল চুড়িদারে কিংবা নিওন আলোর নক্সায় কবি আলতো ছুঁয়ে দেখেন প্রেমকে। প্রেম - অপ্রেমের দোলাচলে কবি বলেন, "মনে করো, আজ তোমার জন্মদিন। মনে করো আজ সিক্ত হবার কিশোরীবেলা। অযথা।" "ছেঁড়া সুতো" কবিতায় স্মৃতিপট নিয়ে খেলা করেন কবি। "ভোরবেলার মনখারাপ" বুকে আগলে লেখেন, "সোজা হেঁটে যাই। কমা ও দাঁড়িতে।" ছেড়ে আসা সুতোর ব্যথা বুকে লেখা হয়, ভালোলাগার সুর - আলাপে, নতুন কোনো কবিতা। "ছেঁড়া সুতো" রা কবিতাক্ষর হয়ে পাতায় পাতায় আঁকে; "আয়না থামেনি কবিতা তখন। সময় শেখেনি ভালোলাগার সুর - আলাপ। দিন গড়িয়ে যাক। আমরা সুতো ছেড়ে আসি।" 'পুনর্জন্ম' কবিতায় কবির ব্যাকুল চাওয়া, বিষাদের প্রলেপ হয়ে আসুক মায়ের ছোঁয়াটুকু। "মা কে দেখিনা কোথাও। মাথায় একবার হাত বুলিয়ে বলুক, আবার শুরু কর।" 'বেলাশেষে' কবিতায় সকল দ্বন্দ্ব - বিরোধ - ভয় - মান - অপমানবোধ, ঠেলে, দূরে ফেলে, আঁধার ঘরে ডুব দিয়ে কবি খুঁজে আনতে চান সেই প্রাচীন আয়না, যার চোখে চোখ রাখা হয়নি বহুদিন, বলা হয়নি কত না কথা! এ যেন ছাইচাপা সেই বিবেকবোধ, যা আত্মানুসন্ধান ও আত্মোপলব্ধির ডালপালাকে ডানা মেলে আকাশ ছাড়িয়ে যেতে দেবার দামাল ইচ্ছের কথা ব্যক্ত করে। হোক না বেলাশেষে, তবুও "আজ ভাঙা সময়ের টুকরো, কুড়িয়ে নেওয়া যায়। কোঠরে কোঠরে লিখে ফেলা যায় আবাহনী। আজও আয়নার জন্মদিন। অগোচরে।" "দু'টি শিশু স্তবক" কবিতার শরীরে লুকিয়ে আছে নিষ্পাপ অবচেতনার শিশুমনের সাথে কথোপকথন। যুগ-যুগান্ত ধরে ভেতর ঘরের এই সরল শিশু প্রতিটি ব্যক্তি জীবনের অদেখা সারল্যের একমেবাদ্বিতীয়ম্ নিয়ন্ত্রক; "সবাই একইরকম দেখতে। আমার শিশুর মত। মা - রা ডাকছে শুধু আলাদা নামে। আলাদা ভাষায়।" 'ইচ্ছে' কবিতায় প্রেমকে জুড়ে নিতে চান কবি, সেই স্মিতহাসির সাথে, যার বুকে লুকিয়ে থাকে, শতজনমের কথকতা, অনুচ্চারিত দীঘল - গভীর অনুরোধ - উপরোধ। অভিমান, অক্ষর, আয়না, প্রহর দিয়ে প্রেমের রঙে রাঙিয়ে তুলতে চান মনের মলিন ক্যানভাস। "মলিন সে হাসিতে ক্যানভাস আঁকতে চাই ...... হাসবে একটু এবার আমার জন্যে?" "হারিয়ে যাওয়া ভাইয়ের জন্মদিনে" বিদেহী স্পষ্ট হ'তে থাকে বুকের ভেতর। নিথর শরীর আগুন রঙে মিলে যাবার পরই হয়তো নতুন রূপকল্পে, নতুন সত্যে, নতুন পরাজয়ের আনন্দে "ফিরে আসবে ঠিক। ভাইয়ের সন্ধ্যাপ্রদীপ।" 'মৃত্যু' কবিতায় "অবেলার পরিযায়ী" রা নিরাশ্রয়ে মৃত্যু লেখে "একদিন। প্রতিদিন।" 'বিরহী' কবিতা জুড়ে হলদে বিচ্ছেদে ঘুরে বেড়ায় হাজারো প্রশ্নচিহ্ণ। 'পথে' কবিতায় সকল বাধা এড়িয়ে চরৈবেতি মন্ত্রে কবি বলেন, "পায়ে পায়ে সর্ষে ফেলি। ঠিকানা গুনতে - চলতে হ'বে বলেই তো ম্যাপে হাত। ঠিকই পৌঁছে যাব পথেই নামতে। এবার হাঁটি। ছেড়ে দিই অজুহাত।" 'নতজানু' কবিতায়, অহংকে লালন করার উল্টো পথে হাঁটে ভেতরঘর, পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে। আমার 'আমি' র প্রকৃত অস্তিত্ব মিশে থাকে ভীড়ে; ছোটো হ'তে হ'তে ধুলায় লুটিয়ে খাদের ভেতর গড়িয়ে যাওয়া এক অনুভব হয়ে "ফিরে আসি ধীরে ধীরে মানুষের ভিড়ে। ঘড়ি দৌড়োয়। ধুলো জমে আবার। পাহাড় থেকে পাথর গড়িয়ে পড়ে অবলীলায়। জীবনে বারবার ছোটো হ'তে হয়।" জন্মানোর দাগে লুকিয়ে বাজে গত জন্মের ক্ষতের দাগ, কষ্টকথা ব্যথা। তাইতো "ফিরে পেতে কিছু সুখ উল্লাসে সন্ধে ছিল। ফিরেছিল নিরুৎসাহী যৌবনের রাগে। ফিরে যেতে কিছু প্রেম আদরে মিথ্যে ছিল। ফিরেছিল অনাগ্রহী জন্মানোর দাগে।" দুঃখ যাঁর, তিনি শিল্পী। ভেতরের চিত্রপটে কষ্টকথার নুড়িপাথর কুড়িয়ে, বাঁচিয়ে, জমিয়ে, লিখবেন তিনি "ছাড়িয়ে নিক পুরোনো অ্যালবামের শ্যাওলা।" হারিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ যাপন প্রত্নকথা হয়ে উঠে আসবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম, কালের গর্ভ থেকে। পুড়তে পুড়তে সংক্রামিত হোক ভালোবাসা। "তুমি চিতা সাজিয়ে নাও। পরাজিত হাতে। ভালোবাসা বেঁচে যাক, শ্মশানবন্ধুদের কাছে।" (কবিতা : শ্মশানবন্ধু)। "হলুদ বেলুনে" কবিতাতে এক - একটা হলুদ বেলুন যেন এক একটা 'আমি' কে নিয়ে উড়ন্ত; জীবনের আনন্দ-বসন্ত সমাগমে অদৃশ্য নিয়তি - পরিণতির ভাস্কর্য্য বুকে। বারবার ভেঙে দিয়েও এক - একটা ক্ষত নতুন ভাবে টেনে হিঁচড়ে তুলে ধরে। বড় আঘাতের বিনিময়ে উপহার মেলে নতুন এক - একটা দূরবিন। মনোজগতের রহস্য খুঁজে চলার উৎসবে "দূরবিন কেনা দরকার খুব ক'রে। দূরের লেখাগুলো সব পড়ে ফেলা দরকার। একদিন। সবটা বুঝে ফেলা দরকার।" যে দূরবিন ভেদ ক'রে স্পষ্ট উজ্জ্বল হয় সামনের পথ, তার খোঁজই জীবনভর। "মাথার ওপর দিয়ে একগুচ্ছ হলুদ বেলুন উড়ে গেল। আমি মুখ নামিয়ে পুরোনো ক্ষতে দূরবিন খুঁজছিলাম।" ক্রমশঃ বিলিয়ে দিতে দিতে নিঃস্ব হয়ে যাবার মাঝে আছে এক অপার জিতে যাবার রেশ। সিঁড়িভাঙা অঙ্ক কষতে কষতে, সহজ কথা খুঁজতে খুঁজতে কত না ছেড়ে আসা জীবনে! অযথা উত্তর খোঁজবার কোনো দায় নেই। তার চেয়ে বরং উদ্ভাসিত হোক কবির স্বর। 'অযথা' য় তাই বলেন তিনি, "জলরঙে স্পষ্ট করবনা পাকদন্ডী ............ বিয়োগ ক'রে নিঃস্ব হয় শুধু কবিরা।" "সিক্ত হ'বার দিনে" ভবিষ্যতের বৃষ্টি - সংকট রুখতে, ব্যাগের ভেতর মেঘ সঞ্চিত রাখেন কবি। আরো আরো বৃষ্টি - প্রেমে আসন্ন দিনগুলিতেও ভিজতে চেয়ে, বর্ষাতি মেখে তিনি তুলে রাখতে চান বাড়তি সিক্ততা। আবহাওয়া পূর্বাভাসে মনোনিবেশ ক'রে "ভিজতে চেয়ে অব্যক্ত ভালোবাসা ছেলে, সংবাদে সংবাদে খুঁজে দেখে, রোববারে রোববারে মেঘ বেঁধে।" 'উৎক্রম' কবিতায় আলোর ভেতর ভেতর স্পষ্ট হয় ছোটো ছোটো কালো রন্ধ্র, ঠিক যেন ভালোবাসা বুকে ফুটে উঠেছে ঘৃণা ফুল। একই জীবনে কতবার জন্ম! যেমন "প্রতিবার প্রেমে নতুন জনম", প্রতি আঘাতের সাথে জড়ানো প্রত্যাঘাত, নতুন যাপন - জন্মকথা, নতুন শেখা, নতুন ভুলে নতুন পাত্রে ভরে থাকা অভিজ্ঞতা। আরো স্পষ্ট হোক সে কষ্টকথা, কালো দুঃখ-ব্যথার গান। কবি জিইয়ে রাখেন "ফেরত আসবার জেদ, মাংসপিন্ডে বেঁধে। হাজারবার লক্ষবার। জন্মাব আবার। মৃত জরায়ুর জন্মে।" ঘড়ির কাঁটায় সময়ের যতই এগোয়, দিন কেটে যায়, আমরা বড় হইনা আদৌ, বড়র মত দেখায়। ভেতরের শিশু আরো বেশি কেঁদে ওঠে, জেগে ওঠে। বাইরে থেকে যাকে এগিয়ে যাওয়া দেখায়, তা যেন আসলে প্রতিমুহূর্তে পিছিয়ে গিয়ে আরও বৃহদাকারে সব হারানো স্মৃতিঘুড়িকে ভোকাট্টা ফিরে পাওয়া। স্মৃতির ভিড়ের ভেতর বিন্দুর মত মিলিয়ে যাওয়া অর্থাৎ মৃত্যুতে এগিয়ে যাওয়া নয়, মৃত্যুর দিকে পিছিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ সত্যে ও সর্বকঠিনে ঝাঁপ দিতে যাওয়া। "ধীরে ধীরে পিছিয়ে যাই, এগিয়ে যাবার নাম ক'রে। পেছন ফেরার রকম অনেক - এক এক ক'রে সরে যায় পুরোনো বাড়ি। জ্যোতিষরেখা। উঠতি অংশের দলিল। প্রথম জয়ের গন্ধ। আমরা পিছিয়ে যাই।" কোনো বৈজ্ঞানীক যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই এ যেন অতীত পথের সময় পরিভ্রমণ কিংবা টাইম ট্রাভেলের গল্প। শুধু অতীত নয়, একটা সত্যের উদযাপন, যেখানে 'দাগ' যেন ব্যক্তি বিশেষে একই নিয়তি অর্থাৎ পরম সত্য মৃত্যুর ছবি আঁকে। "একই দাগে পা রাখবে কেউ। ঠিকানা খুঁজে বেড়াবে কেউ। আপোশ ক'রে হারবে কেউ।" 'জ্বর' কবিতায় কবি বলেন, "অনেক অনেকদিন জ্বর হয়না," অর্থাৎ জ্বর এখানে সেই হারানো পরিতৃপ্তির সুর, যেখানে লেগে থাকে মায়ের ছোঁয়া, মা - মা গন্ধ আর অলস দুপুরে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি ভেজা জানালা। সবকিছুকে প্রতিহত করার মত জোরের উপাদান শরীরে আর জ্বর আনেনা। বহিরঙ্গের অসুখ আটকাতে, কোথায় যেন জলপট্টি, পুরোনো প্রেসক্রিপশন, মায়ের স্মৃতি, অলস দুপুরে সাবুগেলা বিছানা; সবটাই আস্তে আস্তে দূরে সরে যেতে থাকে। ছেলেবেলা মরে যায়। নিষ্পাপ মনখারাপেরা ডানা মেলেনা আর। জ্বরের এবার ছুটি। "এখন আর ইলশেগুঁড়ি, জানালা ধোয় না। অনেক অনেক দিন জ্বর হয়না।" 'ধান' কবিতার গ্রামীণ চিত্রকল্পেও হু - হু ক'রে ঘিরে ধরে ছেলেবেলা, স্মৃতিকথা, মায়ের কথা, বাবার কথা, না বলা বাকী কথায় মনখারাপের নদী বক্ষে জেগে ওঠা বিন্দু বিন্দু ভালোলাগা। "বাবা বলেছিল শেখাবে ধানগাছের ভাষা। মাটির অক্ষরে। একদিন।" 'নত' কবিতাতেও উড়ে বেড়ায় অন্তরাত্মার বিবেক বেলুন। মাটির কাছাকাছি থাকতে চাইবার ইচ্ছে হয়ে থাকে, নতুন নতুন বিন্যাস, আত্মকথন, ভেতর ঘরে ডুব সাঁতারের বিপুল আকাঙ্খা। অপারঙ্গম 'আমি' র কালো ডালপালাদের চিনে নিতে নিতে কবি বলেন, " মোহনা ঢের দেরি। সমুদ্রের বন্ধু হ'তে সময় আছে অনেক। গল্প হয়ে উঠবার। তবু পাহাড় ভাঙার কথা হয় আমাদের। ফানুস হ'বার।" সৃষ্টির খিদে, স্বপ্ন আছে, একবুক সমুদ্রের মত, পথগুলো মিলে যেতে যেতে কেটে যায় সহস্র জন্ম, তবু ফানুস সাজার ইচ্ছে রয়েই যায় সুচেতনে, অবদমিতের রূপে পাখী হ'তে হয়। বাইরে থেকে এ'সবটুকু যদি পরাজয় বলে ধরি, তবু তা অসীম। পুরোনোর ঘরে নকল নতুন তেমনভাবে ঠাঁই পায়না। "অনুবাদ হয়না পরাজয়ের অন্তে। নতুন মানুষ হবার। অবনমিত অহংকারের। হৃতমান হয়েছে যতবার, ভিত্তি তৈরি করেছি।"
পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় জমে আছে কত কথা, ভাবনা, কত দিক - দিগন্ত! "শেষ নাহি যে, শেষকথা কে বলবে?" কবির কলম নিয়ে অক্লেশে হেঁটে চলে বেড়ায়, মৃত্যু, বিবেক, প্রেম, স্মৃতি, নস্ট্যালজিয়া, বন্ধুত্ব, বৃষ্টিকথা, দারিদ্র্য, যুদ্ধ, দ্রোহ, কাব্য - ইত্যাদি নানান অক্ষর প্রসঙ্গ - পরিসর। নাবিক, বেলুন, জ্বর, মেঘ, মায়ের গন্ধে মোড়ানো ছেলেবেলা, এমন সব শব্দ ও শব্দবন্ধেরা এক-একটি প্রতীক হয়ে, কবিতার রঙে রঙিন ক'রে তোলে অনুভব। সম্পূর্ণ যাপনে পরিতৃপ্তি - অতৃপ্তি পাশাপাশি হেঁটে যায়। পঞ্চাশটি কবিতা জুড়ে মনোজগতের ধূসর - নীল, মহাসমারোহে অসীম আকাশে ঝড় তোলে। ফেলে যায় প্রশ্নচিহ্ন। কবিতানুরাগী মনন - মস্তিষ্কে বইটি যে আবশ্যিকভাবেই যথেষ্ট আরাম ও আনন্দের শান দিয়ে যাবে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।।
                        অক্ষরসংলাপ প্রকাশন 
                             মূল্য : ১৭০ টাকা

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                          software development company in siliguri,no 1 software
                          development company in siliguri,website designing company
                          in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                          in Siliguri website design company in Siliguri, web
                          development company in Siliguri