সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
সুদীপ ভট্টাচার্য-র আলোচনায় ডঃ রূপন সরকারের বই 'তিস্তাপারের জলপাইগুড়ি, শহরের ইতিহাস (১৮৬৯-২০০১)'

সুদীপ ভট্টাচার্য-র আলোচনায় ডঃ রূপন সরকারের বই 'তিস্তাপারের জলপাইগুড়ি, শহরের ইতিহাস (১৮৬৯-২০০১)'

কবিতা বণিক-এর আলোচনায় সাহিত্যিক  অশোক কুমার গঙ্গাপাধ্যায়-এর বই ‘গোধূলি বেলার দিনরাত্রি'

কবিতা বণিক-এর আলোচনায় সাহিত্যিক অশোক কুমার গঙ্গাপাধ্যায়-এর বই ‘গোধূলি বেলার দিনরাত্রি'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর আলোচনায় অমিত কুমার দে-এর কাব্যগ্রন্থ  'বিসমিল্লার সানাই চৌরাশিয়ার বাঁশি'

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর আলোচনায় অমিত কুমার দে-এর কাব্যগ্রন্থ 'বিসমিল্লার সানাই চৌরাশিয়ার বাঁশি'

ভাস্বতী রায়-এর আলোচনায় অমিত কুমার দে-র বই 'বৃষ্টি আমায় নিবি'

ভাস্বতী রায়-এর আলোচনায় অমিত কুমার দে-র বই 'বৃষ্টি আমায় নিবি'

দেবদত্তা বিশ্বাস-এর আলোচনায় শৌভিক রায়-এর 'চেনা উত্তর অচেনা উত্তর'

দেবদত্তা বিশ্বাস-এর আলোচনায় শৌভিক রায়-এর 'চেনা উত্তর অচেনা উত্তর'

ভাস্বতী শ‍্যামচৌধুরী-র  আলোচনায় নির্মলেন্দু  চট্টোপাধ্যায়-এর বই 'অন্তরঙ্গ দার্জিলিং'

ভাস্বতী শ‍্যামচৌধুরী-র আলোচনায় নির্মলেন্দু চট্টোপাধ্যায়-এর বই 'অন্তরঙ্গ দার্জিলিং'

অর্পিতা মুখার্জী চক্রবর্তী -এর আলোচনায় শৌভিক রায় -এর বই 'বোকামির এককাল'

অর্পিতা মুখার্জী চক্রবর্তী -এর আলোচনায় শৌভিক রায় -এর বই 'বোকামির এককাল'

অমিতাভ গোস্বামী-র আলোচনায় অমিত কুমার দে-র 'রাজেশ্বরী তুমি'

অমিতাভ গোস্বামী-র আলোচনায় অমিত কুমার দে-র 'রাজেশ্বরী তুমি'

রণজিৎ কুমার মিত্র-র আলোচনায় অভিজিৎ দাস-এর বই 'তিস্তা উৎস থেকে মোহনা'

রণজিৎ কুমার মিত্র-র আলোচনায় অভিজিৎ দাস-এর বই 'তিস্তা উৎস থেকে মোহনা'

ভাস্বতী শ‍্যামচৌধুরী-র আলোচনায় নির্মলেন্দু চট্টোপাধ্যায়-এর বই 'অন্তরঙ্গ দার্জিলিং'

ভাস্বতী শ‍্যামচৌধুরী-র  আলোচনায় নির্মলেন্দু  চট্টোপাধ্যায়-এর বই 'অন্তরঙ্গ দার্জিলিং'  

দার্জিলিং সবারই  প্রিয়, ও যে পাহাড়ের রানী, প্রকৃতি দরাজ হাতে সাজিয়েছে ওকে। তাইতো একসময় অভিজাত বাঙালিরা   হাওয়া বদলের জন্য দার্জিলিঙকেই বেছে  নিয়েছিলেন। তাই অনেক বিখ্যাত মানুষের  পদধূলি পড়েছিল, তাদের নিয়ে অনেক গল্প আছে এই শহরে। এছাড়াও আছে অনেক ইতিহাস। আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা দার্জিলিঙে। তাই শহরটাকে বড় ভালোবাসি।
 আমাদেরই এক প্রিয় দাদা ডক্টর নির্মলেন্দু  চট্টোপাধ্যায় যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে ইলেকট্রিক্যালের অধ্যাপক ছিলেন।  ফেসবুকে দার্জিলিঙের অনেক অজানা  গল্প লিখতেন। এই লেখাগুলির মধ্যে অনেক তথ্য থাকত যা আমরা দার্জিলিঙে থেকেও কোনদিন জানতে পারিনি। ওই লেখাগুলো পড়ে আমরা সমৃদ্ধ হতাম। সেই সঙ্গে মুগ্ধ হয়ে যেতাম এই বয়সে উনার স্মৃতিশক্তি দেখে। উনার ভাই অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায় আমার খুব ভালো বন্ধু, ওকে  প্রায়ই বলতাম দাদার এত ভালো ভালো লেখাগুলো তোরা বই আকারে প্রকাশ  করছিস না কেন? বই প্রকাশিত হলে আগামী প্রজন্মের হাতে এই অমূল্য গ্রন্থ তুলে দিতে পারব। তারা এই বই পড়ে  অতীতের দার্জিলিঙের একটা পরিষ্কার ছবি পাবে। একদিন সত্যি সত্যি বইটা প্রকাশিত হল, নাম হল "অন্তরঙ্গ দার্জিলিং"। উপহার  স্বরূপ আমি বইটা দাদার কাছ থেকে পেলাম। ওটা পেয়ে আমি খুবই খুশি হয়েছিলাম। এটা আমার খুবই প্রিয় বই। বইটা আমি সব সময় পড়ি এবং অতীতের দার্জিলিংকে খুঁজে পাই। সহজ উঠোনের জানুয়ারি মাসের বিষয় হচ্ছে প্রিয় বই নিয়ে আলোচনা। আমি তাই আমার এই প্রিয় বইটাকেই বেছে নিলাম আলোচনার জন্য। 
এই  বইটার মধ‍্যে পুরনো দার্জিলিঙকে খুঁজে পাওয়া যায়। এমন অনেক জায়গা আছে আমরা বহুবার গেছি, কিন্তু তার ইতিহাস সম্বন্ধে কিছুই জানিনা, লেখক সেসব জায়গার ইতিহাস সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। যেমন মহাকাল মন্দির। এই মন্দির মহাকাল পাহাড় বা অবজারভেটারি  হিলে অবস্থিত, এর উচ্চতা ৭১৬৩ ফুট। এখানেই ১৭৬৫ সালে তৈরি করা হয়েছিল বুদ্ধ মন্দির বা গুম্ফা। এই গুম্ফার প্রধান লামা ছিলেন দোর্জে। তিনি ছিলেন  সিকিমের রাজার প্রতিনিধি শাসক। তাই এই অঞ্চলকে দোর্জে শাসিত অঞ্চল বলা হত। সেই জন্যেই এই অঞ্চলের নাম হয়েছিল দার্জিলিং। লিং কথার অর্থ বজ্র। উঁচু  জায়গাতে বজ্রপাত ঘটার সম্ভাবনা বেশি ছিল। এই তথ্য থেকেই দার্জিলিং নামের   ইতিহাস পাওয়া যায়।
এইভাবেই আরো অনেক জায়গার ইতিহাস ওনার বইতে চমৎকারভাবে বর্ণিত হয়েছে, যেমন ক্যাপিটাল থিয়েটার। ব্রিটিশ আমলে এই বাড়ি তৈরি হয়। এই বাড়ি দার্জিলিঙের ঐতিহ্য বহন করে এসেছে। এটা ছিল দার্জিলিঙের টাউন হল। টাউন হলের   সঙ্গেই তৈরি হয় টাওয়ার ক্লক, যার উচ্চতা ১০০ ফুট। ব্রিটিশ প্রথা মেনে চারদিকে চারটি ঘড়ি লাগানো হয় যা শহরের সমস্ত  দিক থেকে দেখা যায়। এই ক্লক টাওয়ারের বিশেষ কাঠের তৈরি আচ্ছাদনের উপর তৈরি হয়েছিল পতাকা দ্ন্ড। একসময় এই পতাকা দণ্ডে উড়ত ইউনিয়ন জ্যাক, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতীক। স্বাধীনতার পরবর্তী যুগে  ভারতের জাতীয় পতাকা ওড়ে। এই হলে সিনেমা হত। এই ঐতিহ্যময় বিল্ডিং এর বিশদ বিবরণ এই বইতে আছে।


বিখ্যাত অভিযাত্রী শরৎচন্দ্র দাসের বাড়ি "লাসাভিলা" এটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে।  ডালি ছাড়িয়ে ঘুমের কিছু আগে পাহাড়ের উপরে সুসজ্জিত কাচে ঘেরা বাড়িটি।বাড়িটার আশেপাশেই নিচে উপরে কোথাও বসতি ছিল না অভিযাত্রী শরৎচন্দ্র দাস   ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে পাশ করেছিলেন তখন বি- ই কলেজ হয়নি। কিন্তু তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং না করে অভিযাত্রী হয়েছিলেন তার পুঙ্খানুপুঙ্খ  ইতিহাস এই বইতে  লেখক বর্ণনা করেছেন।
এই গ্রন্থের লেখক আরো অনেক জায়গার বিবরণ দিয়েছেন, তারমধ্যে বার্চহিল অন্যতম। এটা ছিল একটি দৃষ্টিনন্দন স্থান  যেখানে ছিল ফুলের বাহার আর সবুজের  সমারোহ। এখন সেখানে চিড়িয়াখানা ও  এভারেস্ট বিজয়ী তেনজিং নোরগের  মাউন্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট হয়েছে। এখন জায়গাটা পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
এছাড়াও লেখক দার্জিলিং এর অনেক জায়গার ঐতিহাসিক বিবরণ দিয়েছেন। যেমন দার্জিলিং গর্ভমেন্ট হাইস্কুল, মহারানী গার্লস স্কুল, এবং স্বামী অভেদানন্দ  মহারাজের তৈরি বেদান্ত আশ্রম ও বিদ্যালয়ের কথা।
এইভাবে ওনার লেখার মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ আমলের তৈরি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ছবির মতন দার্জিলিঙকে দেখতে পাই। এখানকার সহজ সরল মানুষদের সঙ্গে লেখকের একটা নিবিড় সম্পর্ক ছিল তা খুব সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে। এই শহরে স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির পদধূলি পড়েছিল। যেমন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, ভগিনী নিবেদিতা স্বামী বিবেকানন্দ, কালাজ্বরের ওষুধ আবিষ্কর্তা উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী, জগত বিখ্যাত  বৈজ্ঞানিক জগদীশচন্দ্র বসু, মার্টিন বার্ণের    অধিকর্তা স্যার বীরেন মুখার্জি, এমনকি রবীন্দ্রনাথও কিছুকাল দার্জিলিঙে কাটিয়েছিলেন। তখন দার্জিলিঙে অনেকগুলো স্যানিটোরিয়াম তৈরি হয়েছিল। যক্ষ্মা ও মধুমেহ অসুখের প্রকোপ কমানোর জন‍্য। অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিরাই স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য এসেছিলেন। আবার অনেকে গ্রীষ্মকালে বেড়াতেও আসতেন।
স্বামীজি ডায়াবেটিসের প্রোকোপ কমানোর জন‍্য ডাক্তারের নির্দেশে চারবার দার্জিলঙে এসেছিলেন, মোট ৯১ দিন ছিলেন, ৮৭ দিন ছিলেন "বলেন ভিলায়" প্রখ‍্যাত উকিল  মহেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। আর চারদিন ছিলেন বর্ধমান রাজার বাড়ির  "রোজ ব্যাংকে"। ভগিনী নিবেদিতা দার্জিলিঙে এসেছিলেন স্বাস্থ্য উদ্ধারে  জগদীশ চন্দ্র বসু ও অবলা বসুর সাথে ওনাদের বাড়ি "রায় ভিলা"তে ছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত হিল ডাইরিয়া হয়ে  দার্জিলিঙেই ওনার দেহাবসান হয়।দার্জিলিং শ্মশানে ওনাকে দাহ করা হয়। পরবর্তীকালে স্বামী অভেদানন্দের প্রচেষ্টায় দার্জিলিং শ্মশানে তাঁর স্মারক গড়ে ওঠে। লেখকের প্রাঞ্জল ভাষায় এই সব কিছুই বর্ণিত হয়ছে। এই বইতে ওনার একটা  কবিতা আছে যার মধ্যে দিয়ে দার্জিলিঙের প্রতি ওনার অনুভূতি ও গভীর ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। ওই কবিতাটার কয়েক লাইন তুলে দিলাম ___   
"দার্জিলিং, আমার ভালোবাসা,
দূর থেকে ছুঁড়ে দেওয়া আমার চুম্বন 
তোমায় ছুঁতে না পেরে ভেসে যায় উড়ন্ত চিলেদের ডানায় 
রডোডেনড্রনের পরাগে পরাগে 
প্রজাপতিরা গেয়ে ওঠে ধেউসির সুর"
"ভাই তেওয়ারো ভাইলো.।"
লেখক তার মনের মাধুরী দিয়ে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন দূর পাহাড়ের ছোট্ট শহর দার্জিলিং এর ছবি। আমি মনে করি এই বইটি কেবলমাত্র দার্জিলিং এর অধিবাসীদের নয়, যারা দার্জিলিংয়ে যেতে চান, দার্জিলিঙকে জানতে চান সেই পর্যটকেরাও অনুপ্রাণিত হবেন।

প্রকাশক
অরিন্দম দেবনাথ  
সৌজন‍্যে
জয়ধ্বক প্রকাশন

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                          software development company in siliguri,no 1 software
                          development company in siliguri,website designing company
                          in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                          in Siliguri website design company in Siliguri, web
                          development company in Siliguri