ভাস্বতী রায়-এর আলোচনায় অমিত কুমার দে-র বই 'বৃষ্টি আমায় নিবি'
ভাস্বতী রায়-এর আলোচনায় অমিত কুমার দে-র বই 'বৃষ্টি আমায় নিবি'
কবি অমিত কুমার দে আমার কাছে কবি হিসেবে পরিচিত হওয়ার আগে একজন শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। ২০০১ সালে ক্লাস ইলেভেনে ওনার কাছে পড়তে যাই আর আমার ক্লাসরুমের শিক্ষগুরু না হয়েও একজন আদর্শ শিক্ষক এর জায়গায় করে নিয়েছেন। ওনার কবিতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়ি ২০২০ সাল থেকে সহজ উঠোনের সংস্পর্শে এসে। আমি পড়তে ভালোবাসি বরাবরই, তবে কবিতার প্রতি আকর্ষণ ছিল না, সব ধরনের গল্প উপন্যাস আমাকে টানত। স্যারই একদিন আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন ওনার "পঞ্চাশ পর্যটন শেষে মধুকরী ধান", "বিসমিল্লার সানাই চৌরশিয়ার বাঁশি", "বোধিবৃক্ষ ছুঁয়ে এক চিরভিক্ষুক" এই তিনটি বই। এই বই তিনটি পড়ে আমার প্রথম কবিতার প্রতি অনুরাগ জন্মে। তারও বেশ কিছুদিন পর স্যার এর একটি সাক্ষাৎকারে 'বৃষ্টি আমায় নিবি" বইটির উল্লেখ পাই এবং দু একটি কবিতা শুনে বইটি পড়বার ইচ্ছা প্রকাশ করলে স্যার বইটি আমায় দেন। সে সময় সম্ভবত স্যারের কাছে একটি বা দুটি কপিই ছিল।
এই বইটিতে কবি তাঁর কবিতাগুলোকে অন্তমিল ও অন্ত-অমিল এই দুইভাগে ভাগ করেছেন। আমি প্রথম কবির অন্তমিলের কবিতা পড়বার সুযোগ পাই এই বইটিতে। প্রতিবারের ন্যায় এই বইটি পড়েও ভালোলাগায় আবিষ্ট হই, বিস্ময়াভিভূত হই কবির সৃষ্টিতে। কবিতা কবির নিজের মনের কথা প্রকাশ জানতাম। কিন্তু এই বইয়ে - " টানবি বুকে টানিস-/বুঝবো তখন আমাকে তুই সত্যি কত জানিস্। "একটি বাঁশি আমার আছে, একটি নিবি তুই/ আমরা দুজন কল্পনাতে অনেক কিছু ছুঁই।"কেমন আছি ? --- কি হবে এই প্রশ্ন করে?/এখন বাঁচা কপাট - খোলা বদ্ধ ঘরে।” এই লাইনগুলো আমার আপনার প্রত্যেকের কথা।
২৫০০ কবিতায় -
"নার্সারীতে শিখবে শিশু কোয়ান্টাম এর নীতি
গ্রহে গ্রহে ছড়িয়ে যাবে ইন্টারনেট প্রীতি
শুক্রে হবে চড়ুইভাতি - স্যাটেলাইট ভাড়া
একটি পলক কাটবে না তো ইন্টারনেট ছাড়া।"
কবি বিংশ শতাব্দীতে বসে পঁচিশ শ' শতাব্দীর যে চিত্র দেখতে পেয়েছেন তার বাস্তবায়িত রূপ আমরা দেখতে শুরু করেছি। বইটিতে কখনও দেখতে পেয়েছি কবির বৃষ্টির প্রতি প্রেম, পাহাড়ের প্রতি প্রেম, কখনও মানবীর প্রতি প্রেম আবার কখনও কখনও কবি তুলে ধরেছেন সমাজের চরম বাস্তবতাকে। আর কবির অসামান্য শব্দ চয়ন কবিকে অনন্য করে তুলেছে।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴