সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon

বিজয়া দশমী : সেকাল ও একাল/পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়

বিজয়া দশমী : সেকাল ও একাল
পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় 

ত্রেতা যুগে লংকার রাজা রাবণ যিনি দেবাদিদেব মহাদেের বিশেষ ভক্ত ছিলেন এবং  যুগাবতার রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতাদেবীকে অপহরণ করেছিলেন। স্ত্রী  সীতাকে উদ্ধার করতে রামচন্দ্র শিব কে সন্তুষ্ট করবার জন্য পরমাপ্রকৃতি দেবী মহামায়ার অকালবোধনের আয়োজন করেছিলেন। কথিত আছে  শ্রীরামচন্দ্রের ভক্তিতে খুশি হয়ে দেবী দূর্গা তাঁকে বিজয়ী হওয়ার আশীষ প্রদান করেছিলেন। পুরানে বলা হয়েছে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে দূর্গা পুজো করলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল লাভ হয়। শরৎকালের শুক্লা দশমিতেই রামচন্দ্র রাবণকে বধ করেছিলেন। সীতাকে উদ্ধার করে রামচন্দ্র অযোধ্যা নগরীতে ফিরে আসার পর দেশ জুড়ে বিজয় উৎসব হয়েছিল, তখন থেকেই বিজয়া দশমী পালিত হয়ে আসছে। 

বিজয়া দশমীর দিনটিতে শৈশবে বেড়ে ওঠার দিনগুলো স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে।  শতাব্দী প্রাচীন গোবরডাঙ্গা জমিদার বাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর কথা খুব মনে পড়ে।  আজও চোখে  ভেসে  ওঠে  যমুনা  নদীতে   দলে দলে কচুরিপানা, মৃদু মন্থর গতিতে,  সগর্বে নীল  সাদা  ফুল  নিয়ে আকাশে  পেঁজা  তুলোর মেঘদের সাথে  একান্ত  মনে  রঙিন গল্প  জমিয়ে  পাড়ি দিত  ইছামতীর  দিকে ।  বিজয়া দশমীর  সন্ধ্যায় কুলুকুলু  বয়ে  যাওয়া  যমুনা নদীর নীরবতা ভঙ্গ করত ,  রেল ব্রিজ  এর উপর  দিয়ে ছুটে যাওয়া লৌহদানব,  বনগাঁ  লোকালের তীব্র    হুইসিল, আর  দুর্গা পুজো কমিটি গুলির  "আসছে বছর  আবার এসো মা গো " এই প্রার্থনাতে।  এরই মাঝে চলত প্রতিমা বিসর্জ্জন।  প্রতিমা বিসর্জ্জন দিয়ে আমরা ফিরে আসতাম পাড়ায়।  এখন সেই  পাড়া সংস্কৃতি কোথায় যেন উধাও হয়েছে। সেই আন্তরিকতার উষ্ণতা আর কোথাও নেই।  নেই গুরুজনদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম। হারিয়ে যেতে বসেছে সমবয়সীদের সাথে একে অপরের  কোলাকুলি। 

পুজোর আগেই কেনা থাকত গোছা ধরে  পোস্টকার্ড এবং ইনল্যান্ড লেটার। সমস্ত আত্নীয় পরিজনদের লেখা হত বিজয়ার প্রণাম এবং ছোটোদের জন্য  আশীর্বাদের চিঠি।  ডাক পিয়ন এসে দিয়ে যেতেন পোস্টকার্ড, ইনল্যান্ড লেটার ও শারদীয় সংখ্যার ক্ষুদ্র পত্র পত্রিকা।তোড়জোড় চলতো বিজয়া সম্মিলনের প্রস্তুতি ও গান, নাচ, নাটকের মহড়া।

ধীরে ধীরে আত্মপ্রকাশ ঘটলো ডি,জে'র। ডি, জে'র আওয়াজে আজ আর  দু'দন্ড শান্তি পাওয়া যায় না। অসুস্থ মানুষজন, বৃদ্ধ মানুষেরা ( বিশেষ করে যারা হৃদরোগে ভুগছেন)  তাঁদের কাছে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে সঙ্গীত।  এ যেন নিজেরাই চাঁদা দিয়ে নিজেদের মৃত্যুদূতকে আহ্বান করা। বিসর্জনের সময় চটুল হিন্দি গান, গানের থেকেও তার বাজনা থাকে কয়েকগুণ  বেশি।  তার সাথে কুৎসিত নাচ ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি। 

আমাদের পাড়া সংস্কৃতিতে সন্ধ্যার পর বাড়ি ফেরা নিষিদ্ধ ছিল। পাড়ার জ্যাঠা কাকারাই জানতে চাইতেন, অন্ধকার হওয়ার পরও আমরা  কেন বাড়ির বাইরে আছি। এখন আর একথা বলা বা শোনার কেউই অবশিষ্ট নেই। 

পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় গতবছর শারদোৎসবের পাঁচ দিন মোট ৬০০ কোটি টাকার দেশি মদ বিক্রি হয়েছে। এখন বিসর্জনে যথেচ্ছ ধুমপান,  মদ্যপান এবং ডি, জের হিন্দি গানের  ফলে  ঘটে চলছে নানা ধরনের অঘটন। যা একেবারেই বাঞ্চনীয় নয়।

দুর্গা প্রতিমা মন্ডপের মধ্যে থাকা কালীনই দর্পন বিসর্জনের আগেই মোবাইলের ওয়াটস এপ এ আসতে থাকে শুভবিজয়ার প্রণাম, আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা। মোবাইল গ্যালারি ভরে যাওয়ার আশঙ্কায় চলতে থাকে মা'য়ের সুন্দর সুন্দর ছবিগুলো ডিলিট করার ধুম।

 আমাদের শৈশবে কলাপাতার ওপর বেলের কাঁটা দিয়ে একশ আটবার "দুর্গা " নাম লেখা, মা'য়ের পায়ে বই, খাতা, ডাইরি ছোঁয়ানো, নীল অপরাজিতা ফুলের গাছ ও ফুল স্পর্শ করা, নীলকণ্ঠ পাখির ছবি দেখা,  সবটা অধরাই থেকে যায়।

ত্রেতা যুগে লংকার রাজা রাবণ যিনি দেবাদিদেব মহাদেের বিশেষ ভক্ত ছিলেন এবং  যুগাবতার রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতাদেবীকে অপহরণ করেছিলেন। স্ত্রী  সীতাকে উদ্ধার করতে রামচন্দ্র শিব কে সন্তুষ্ট করবার জন্য পরমাপ্রকৃতি দেবী মহামায়ার অকালবোধনের আয়োজন করেছিলেন। কথিত আছে  শ্রীরামচন্দ্রের ভক্তিতে খুশি হয়ে দেবী দূর্গা তাঁকে বিজয়ী হওয়ার আশীষ প্রদান করেছিলেন। পুরানে বলা হয়েছে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে দূর্গা পুজো করলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল লাভ হয়। শরৎকালের শুক্লা দশমিতেই রামচন্দ্র রাবণকে বধ করেছিলেন। সীতাকে উদ্ধার করে রামচন্দ্র অযোধ্যা নগরীতে ফিরে আসার পর দেশ জুড়ে বিজয় উৎসব হয়েছিল, তখন থেকেই বিজয়া দশমী পালিত হয়ে আসছে। 

বিজয়া দশমীর দিনটিতে শৈশবে বেড়ে ওঠার দিনগুলো স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে।  শতাব্দী প্রাচীন গোবরডাঙ্গা জমিদার বাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর কথা খুব মনে পড়ে।  আজও চোখে  ভেসে  ওঠে  যমুনা  নদীতে   দলে দলে কচুরিপানা, মৃদু মন্থর গতিতে,  সগর্বে নীল  সাদা  ফুল  নিয়ে আকাশে  পেঁজা  তুলোর মেঘদের সাথে  একান্ত  মনে  রঙিন গল্প  জমিয়ে  পাড়ি দিত  ইছামতীর  দিকে ।  বিজয়া দশমীর  সন্ধ্যায় কুলুকুলু  বয়ে  যাওয়া  যমুনা নদীর নীরবতা ভঙ্গ করত ,  রেল ব্রিজ  এর উপর  দিয়ে ছুটে যাওয়া লৌহদানব,  বনগাঁ  লোকালের তীব্র    হুইসিল, আর  দুর্গা পুজো কমিটি গুলির  "আসছে বছর  আবার এসো মা গো " এই প্রার্থনাতে।  এরই মাঝে চলত প্রতিমা বিসর্জ্জন।  প্রতিমা বিসর্জ্জন দিয়ে আমরা ফিরে আসতাম পাড়ায়।  এখন সেই  পাড়া সংস্কৃতি কোথায় যেন উধাও হয়েছে। সেই আন্তরিকতার উষ্ণতা আর কোথাও নেই।  নেই গুরুজনদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম। হারিয়ে যেতে বসেছে সমবয়সীদের সাথে একে অপরের  কোলাকুলি। 

পুজোর আগেই কেনা থাকত গোছা ধরে  পোস্টকার্ড এবং ইনল্যান্ড লেটার। সমস্ত আত্নীয় পরিজনদের লেখা হত বিজয়ার প্রণাম এবং ছোটোদের জন্য  আশীর্বাদের চিঠি।  ডাক পিয়ন এসে দিয়ে যেতেন পোস্টকার্ড, ইনল্যান্ড লেটার ও শারদীয় সংখ্যার ক্ষুদ্র পত্র পত্রিকা।তোড়জোড় চলতো বিজয়া সম্মিলনের প্রস্তুতি ও গান, নাচ, নাটকের মহড়া।

ধীরে ধীরে আত্মপ্রকাশ ঘটলো ডি,জে'র। ডি, জে'র আওয়াজে আজ আর  দু'দন্ড শান্তি পাওয়া যায় না। অসুস্থ মানুষজন, বৃদ্ধ মানুষেরা ( বিশেষ করে যারা হৃদরোগে ভুগছেন)  তাঁদের কাছে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে সঙ্গীত।  এ যেন নিজেরাই চাঁদা দিয়ে নিজেদের মৃত্যুদূতকে আহ্বান করা। বিসর্জনের সময় চটুল হিন্দি গান, গানের থেকেও তার বাজনা থাকে কয়েকগুণ  বেশি।  তার সাথে কুৎসিত নাচ ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি। 

আমাদের পাড়া সংস্কৃতিতে সন্ধ্যার পর বাড়ি ফেরা নিষিদ্ধ ছিল। পাড়ার জ্যাঠা কাকারাই জানতে চাইতেন, অন্ধকার হওয়ার পরও আমরা  কেন বাড়ির বাইরে আছি। এখন আর একথা বলা বা শোনার কেউই অবশিষ্ট নেই। 

পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় গতবছর শারদোৎসবের পাঁচ দিন মোট ৬০০ কোটি টাকার দেশি মদ বিক্রি হয়েছে। এখন বিসর্জনে যথেচ্ছ ধুমপান,  মদ্যপান এবং ডি, জের হিন্দি গানের  ফলে  ঘটে চলছে নানা ধরনের অঘটন। যা একেবারেই বাঞ্চনীয় নয়।

দুর্গা প্রতিমা মন্ডপের মধ্যে থাকা কালীনই দর্পন বিসর্জনের আগেই মোবাইলের ওয়াটস এপ এ আসতে থাকে শুভবিজয়ার প্রণাম, আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা। মোবাইল গ্যালারি ভরে যাওয়ার আশঙ্কায় চলতে থাকে মা'য়ের সুন্দর সুন্দর ছবিগুলো ডিলিট করার ধুম।

 আমাদের শৈশবে কলাপাতার ওপর বেলের কাঁটা দিয়ে একশ আটবার "দুর্গা " নাম লেখা, মা'য়ের পায়ে বই, খাতা, ডাইরি ছোঁয়ানো, নীল অপরাজিতা ফুলের গাছ ও ফুল স্পর্শ করা, নীলকণ্ঠ পাখির ছবি দেখা,  সবটা অধরাই থেকে যায়।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                          software development company in siliguri,no 1 software
                          development company in siliguri,website designing company
                          in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                          in Siliguri website design company in Siliguri, web
                          development company in Siliguri