সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
15-September,2024 - Sunday ✍️ By- সুদীপা দেব 288

বিজ্ঞানসাধক এক প্রণম্য নারী/সুদীপা দেব

বিজ্ঞানসাধক এক প্রণম্য নারী
সুদীপা দেব

বিজ্ঞান ভালোবেসে তার প্রতি নিয়োজিত প্রাণ এক অসামান্য নারীর জীবনে আজ আমরা আলোকপাত করছি।
১৮৬৭ সালে ৭ই নভেম্বর পোল্যান্ডের ওয়ারশ্ শহরে জন্ম ছোট্ট মানিয়ার।  জার্মানি অস্ট্রিয়া এবং রাশিয়া দ্বারা পোল্যান্ড তখন অধিকৃত। পোল্যান্ডের ওয়ারশ্  শহর ছিল রাশিয়ার উপনিবেশ। নানা অছিলায় রাশিয়ার জার শাসকরা পোল্যান্ড বাসির ওপর  অকথ্য অত্যাচার চালাত। ছোটবেলা থেকেই মানিয়ার মনে দেশপ্রেম জায়গা করে নিয়েছিল। পোল্যান্ডের স্কুল গুলিতে জার ভাষায় পড়াশোনা করতে বাধ্য করা হতো। তারপরও শিক্ষকরা লুকিয়ে পোল ভাষায় শিক্ষাদান করতেন। মানিয়ার  পিতা ছিলেন ব্লাদিশ্লাভ  শ্ ক্লোদভাস্কি তিনি পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন। পরে ওয়ার্শর একটি কলেজে গণিত এবং পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ছিলেন। চূড়ান্ত দেশভক্তির কারণে তাঁকে  এই পদ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং মাইনে অর্ধেক করা হয়। ফলে পরিবারের ওপর নেমে আসে চরম আর্থিক কষ্ট। মা বানিশ্লাভা ছিলেন উচ্চশিক্ষিতা বুদ্ধিমতী সুগায়িকা ও পরোপকারী। তিনি ওয়ারশর একটি প্রাইভেট  গার্লস স্কুলে শিক্ষিকা ছিলেন। মা এবং বাবার অনারম্বর জীবনে মানিয়া উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন খুব ছোট্ট বয়স থেকেই। মাত্র নয় বছর বয়সে বড় দিদি এবং এগার বছর বয়সে মায়ের মৃত্যু পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসে। তা সত্ত্বেও বিজ্ঞানমনস্ক পিতার সান্নিধ্য, ছাত্র বয়স থেকে মানিয়া বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকেন। অত্যন্ত মেধা এবং স্মরণশক্তির অধিকারী মানিয়া স্বর্ণপদক নিয়ে স্কুল ফাইনাল পাশ করেন। একদিকে নারী এবং অন্যদিকে পোল্যান্ডের পরাধীনতা , মানিয়ার উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা বন্ধ। কি করবেন তিনি দ্বিধার মধ্যে ছিলেন। এরই মধ্যে দেশের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত যুবকরা ভাবলেন দেশভক্তির সাথে সাথে জ্ঞানের সাধনা জ্ঞানের আলো মানুষকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তারা তৈরি করলেন 'ভাসমান বিশ্ববিদ্যালয়'। রুশ পুলিশের নজর এড়িয়ে জায়গা বদল করে এখানে পড়াশোনা হতো বলে এরূপ নাম দেওয়া হয়। উৎসাহী ছাত্রছাত্রীদের পদার্থবিদ্যা রসায়ন জীববিদ্যা শরীরতত্ব সমাজতত্ত্ব ইত্যাদি বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় পড়ানো হতো।
মানিয়া এবং তার দিদি ব্রনিয়াও এখানে যোগদান করেন। ব্যক্তির উন্নতি ছাড়া সার্বিক উন্নয়ন স্থাপন করা অসম্ভব। এই ভাবনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মানিয়া প্রচুর পড়াশোনা করলেন। তবে কারিগরি কাজে উপকরণের অভাবে অনেক ক্ষেত্রে তিনি আশানুরূপ ফল পাননি।
বিজ্ঞান সাধনার প্রতি অদম্য ইচ্ছা তাঁকে ক্রমাগত হাতছানি দিতে থাকে। তিনি এবং ব্র্নিয়া প্যারিস যেতে উৎসাহী হলেন। তার জন্য প্রয়োজন প্রচুর অর্থ। তিনি ছাত্র পড়িয়ে টাকা জমানো শুরু করলেন। কিন্তু এই সামান্য অর্থে দুই বোনের বিদেশে পড়া সম্ভব নয়। তাঁর বয়স তখন সতের ব্রনিয়া একুশ। নিজের জমানো টাকা সব দিয়ে স্নেহশীলা দিদি  ব্রনিয়াকে  প্যারিস পাঠালেন চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রি লাভ করতে। দিদি প্যারিস যাবার পর আরো বেশি টাকার প্রয়োজন। তিনি  সৃজসুকিতে এক ধনী পরিবারের গভর্নেসর  কাজ নিলেন ৫০০ রুবেলের পরিবর্তে। এছাড়াও এই গ্রামের  মানুষকে জ্ঞানের আলো দেবার চেষ্টা করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সরকারি ফতোয়া অমান্য করে গোপনে পোল ভাষায় শ্রমিকদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা দিতে লাগলেন।
 কাজের ফাঁকে নিজের পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে লাগলেন। এই সময় তাঁর জীবন এক মোড় নেয়। তিনি যে বাড়িতে থাকতেন সেই বাড়ির বড় ছেলে কাসিমি এগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র ছিলেন। এদের দুজনের মধ্যে হৃদয় বিনিময় হয় কিন্তু পরিবারের চাপে সে সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। তিনি অপমানিত বোধ করেন। এখানে কাজ ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবেন। কিন্তু ব্রনিয়াকে টাকা পাঠানোর জন্য সব সহ্য করে তিনি গভর্নেসর কাজটি ছেড়ে দেননি।
ব্র্নিয়া প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি প্যারিস যাবার প্রস্তুতি নেন। আরো পড়াশোনায় মন দিলেন এবং ভর্তি হলেন প্যারিসের সরবন বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান শাখায়। মানিয়া নিজের নাম বদলে নাম নিলেন মেরী। আর্থিক সংগতি না থাকার জন্য মেরী অত্যন্ত কষ্ট করে একটি ছোট্ট  স্যাঁতস্যাঁতে ভাড়া বাড়িতে অর্ধাহারে দিন কাটাতেন এবং ততোধিক নিষ্ঠার সঙ্গে পড়াশোনার কাজ চালাতেন। এত কৃচ্ছ সাধন পড়াশোনার  প্রতি অত্যধিক পরিশ্রমের জন্য তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তেন। এমনকি কখনো অজ্ঞানও হয়ে যেতেন।
মেরী 1893 সালে পদার্থ বিজ্ঞানে প্রথম হন।
রেজাল্ট এর পর তিনি বাবার কাছে আসেন ছুটি কাটাতে। এবার তাঁর প্যারিস ফিরে যাওয়ার মতো অর্থের সংস্থান ছিল না। এদিকে প্যারিস ফিরতে না পারলে তাঁর বিজ্ঞান সাধনার  সমাপ্তি হয়ে যাবে। তিনি খুব উৎকন্ঠায় পড়লেন। বহু খোঁজ করার পর তাঁর এক স্নেহভাজন ব্যক্তি স্কলারশিপের ব্যবস্থা করেছিলেন। পরবর্তীতে স্কলারশিপের  পুরোটাই  তিনি ফিরিয়ে দিয়ে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
সরবন বিশ্ববিদ্যালয় তিনি গবেষণামূলক কাজ নিয়ে গভীর মনোনিবেশ করেন কিন্তু গবেষণাগারের সীমাবদ্ধতা মেরীর কাজের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। উন্নত গবেষণাগারের খোঁজ করতে থাকেন।
গবেষণার এক বিশেষ ধাপে গিয়ে তরুণ বৈজ্ঞানিক পিয়ের কুরির সঙ্গ লাভ করেন। পিয়ের এত মেধা সম্পন্ন নারীর সহচর্য কখনো লাভ করেন নি। মেরির প্রতিভা এবং বিজ্ঞানের প্রতি একাগ্রতা পিয়েরকে মুগ্ধ করে। দুজনের ভালো বন্ধুত্ব স্থাপন হয়। 
একদিন পিয়ের মেরীর বাসস্থানে গিয়ে প্রচন্ড রকম ব্যথিত হন। মেরীর চিলেকোঠার জীর্ণ অবস্থা এবং প্রচন্ড ঠান্ডা ঘরে কিভাবে একজন তেজস্বিনী বিজ্ঞান দরদী মহিলা বাস করছেন ভেবে অবাক হন। মেরীর জীবন বোধ এবং বিজ্ঞানের প্রতি একাগ্রতা, পিয়েরকে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করেছিল এবং মেরীর প্রতি শ্রদ্ধা বাড়িয়ে দিয়েছিল। পিয়ের মেরীকে জীবন সঙ্গী হিসেবে চাইলেন। ইতিমধ্যেই পিয়ের আবিষ্কার করেছেন–কোয়ার্টজ পিজো ইলেক্ট্রোমিটার এবং কুরি স্কেল।
প্রথম প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হবার পর পুরুষের প্রেম সম্পর্কে মেরীর মনে অবিশ্বাস জন্ম নেয় এছাড়া তিনি ছিলেন গরিব এবং নিজের দেশে ফিরে যাওয়া সংকল্প। তাই পিয়েরের প্রস্তাবে তিনি সম্মতি দিতে পারেননি। অবশেষে অনেক আলোচনার পর মেরী দ্বিধা কাটিয়ে পিয়েরের জীবনে প্রবেশ করলেন কোন ধর্মানুষ্ঠান ছাড়াই। এবার তিনি হলেন মেরী কুরি।
বিজ্ঞানী বেকেরেল আবিষ্কার করলেন  তেজস্ক্রিয় মৌল ইউরেনিয়াম। বেকরেলের আবিষ্কার বিজ্ঞান মহলে  গৃহীত না হলেও মেরী এবং পিয়ের তাঁর থিসিস পেপার মনোযোগ দিয়ে পড়লেন 'ইউরেনিয়ামের বিকিরণ উৎপত্তি কোথায় এবং এর তেজস্ক্রিয় বিকিরণের নিয়ম কি?'– ডক্টরেট ডিগ্রীর জন্য এই বিষয়কেই তিনি বেছে নিয়েছিলেন। শুরু হলো নতুন দিগন্ত উন্মোচনের রহস্য ভেদ। 
এই গবেষণার জন্য প্রয়োজন হলে একটি স্বতন্ত্র ল্যাবরেটরি। অনেক চেষ্টার ফলে পেলেন একটি গুদামঘর। ঘরটি অত্যন্ত অনুপযোগী কিন্তু তাঁর অদম্য উৎসাহ ধৈর্যের কাছে হার মানল সব বাঁধা। ইউরেনিয়াম নিয়ে বিভিন্ন ভাবে কাজ করলেন, তার ধর্ম সম্পর্কে সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন। বুঝলেন ইউরেনিয়াম থোরিয়ামও রশ্মি বিকিরণ করে এদের নাম দিলেন রেডিও একটিভ এলিমেন্ট। 
মেরী গবেষণা যখন আবিষ্কারের দোরগোড়ায় ,  পিয়ের নিজের গবেষণা স্থগিত রাখলেন। এগিয়ে এলেন মেরীকে সাহায্য করতে। কুরি দম্পতি আবিষ্কার করলেন ইউরেনিয়ামের থেকেও চারশো গুণ বেশি শক্তিশালী একটি মৌল।
 মাতৃভূমির নাম স্মরণ করে মেরী তার নাম দিলেন পোলোনিয়াম। মেরীকে  ফরাসি বিজ্ঞান একাডেমি ৩৮০০ ফ্রাঙ্ক পুরস্কার দিলেন। এই প্রথম কোন মহিলা  এই পুরস্কার পেলেন তবে পুরস্কারের খবর তাঁকে সরাসরি না জানিয়ে চিঠি দেওয়া হলো পিয়েরকে।
মেরী আবিষ্কারের নেশায় মেতে রইলেন। আবিষ্কার করলেন আরো একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ রেডিয়াম। রেডিয়ামের আনবিক ভর জানতে চেয়ে ফরাসি বিজ্ঞান মহল রেডিয়াম আবিষ্কার প্রশ্ন চিহ্নের সামনে আনলেন। রেডিয়ামের আণবিক ভর নির্ণয় করা প্রচুর ব্যায় সাপেক্ষ পরীক্ষা। কারন রেডিয়াম প্রকৃতিতে স্বতন্ত্র ভাবে থাকতে পারে না। কোন লবণের সাথে যৌগ হিসেবে থাকে।  একমাত্র পিয়েরের উপার্জনে সংসার খরচ এবং গবেষণার খরচ সমস্ত চালানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও প্রয়োজন ছিল উন্নত গবেষণাগার। তা পাওয়া না গেলে নানান প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে তারা উচ্চমাত্রার এই গবেষণায় নামলেন। জার্মান রসায়ন বিজ্ঞানী উইলিয়ামহেল্ট অস্টোয়ার্ড তাদের প্রতি সহৃদয় হলেন। তারপর বিজ্ঞানী বন্ধুর সহায়তায় ভিয়েনা বিজ্ঞান একাডেমীর প্রস্তাবে  অস্ট্রিয়া  সরকার দশ টন পিচব্লেন্ড(রেডিয়ামের যৌগ) উপহার দিলেন গবেষণার জন্য। 
প্রায় দু বছর ধরে অক্লান্ত ভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিশ্রম সাধ্য কাজ করে গেলেন। জীবনপণ লড়াই করেও আর্থিক সংকুলান কিছুতেই হয়ে উঠছে না। পিয়ের বাধ্য হয়ে পলিটেকনিক কলেজে চাকরি নিলেন। তাদের গবেষণা ফ্রান্সে স্বীকৃত না হলেও বিদেশের বিজ্ঞানীরা এর গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন। এরই মধ্যে অপ্রত্যাশিত সুযোগ এলো জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিয়েরকে পদার্থবিজ্ঞানে অধ্যাপনার আমন্ত্রণ জানায়। বেতন বছরে দশ হাজার ফ্রাঙ্ক সাথে গবেষণার জন্য উন্নত ল্যাবরেটরি এবং দুজন সহায়তাকারী। এছাড়া মেরীকে উপযুক্ত পদে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি। পিয়ের রাজি হলেন। কিন্তু বিশুদ্ধ রেডিয়াম শোধনের কাজ প্রায় শেষ মুহূর্তে। এখন দেশ ছাড়লে তাঁর গবেষণার ক্ষতি হবে। জেনেভা যাওয়ার ভাবনা পরিবর্তন করলেন। যোগ দিলেন সরবনের একটি  শাখায় শিক্ষকতা পদে এবং মেরী  হায়ার নরমাল স্কুল ফর গার্লসের শিক্ষকতা চাকরি নিলেন। মেরী ছিলেন এই পদে নিযুক্ত প্রথম মহিলা।
দীর্ঘদিন তাঁদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম সহ্য হলো না। রেডিয়াম থেকে ক্রমাগত নির্গত তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ফলে মেরীর ওজন অস্বাভাবিক কমে যায় আঙুলে ভয়ানক ক্ষতের সৃষ্টি হয়। মেরী ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেন। রেডিয়াম এর আক্রমণে পিয়েরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে লাগলো। সারা শরীরে বড় বড় ফোঁড়ার ক্ষত এবং ব্যথা। যন্ত্রণায় রাতভর ঘুমাতে পারতেন না  ল্যাবরেটারি নোট বই থেকে শুরু করে সমস্ত জিনিস তেজস্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
দীর্ঘ চার বছর নিরলস পরিশ্রমের পর রেডিয়ামের সঠিক আণবিক গুরুত্ব এবং ওজন নির্ণয় করতে পেরেছিলেন মেরী। রেডিয়াম আবিষ্কার জগতে আলোড়ন ফেলে দিল। বিজ্ঞানীদের কাছে এর গুরুত্ব অপরিসীম। তাঁরা সারা পৃথিবী জুড়ে অভিনন্দিত হন। মেরী প্রথম মহিলা যিনি বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রী পেলেন।
 ১৯০৩ সালে বেকেরেল এবং পিয়েরের নাম নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করা হয়। মেরী একজন মহিলা বলে তার কাজে স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত করা হয় । পিয়ের  দুঃখ প্রকাশ করে চিঠি লেখেন- মেরীর সব রকম যোগ্যতা রয়েছে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির। অবশেষে পদার্থবিদ্যার অত্যন্ত প্রভাবশালী এক বিজ্ঞানীর  ভূমিকায়  বেকেরেল, পিয়েরের সাথে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কারের সম্মানে ভূষিত হলেন মেরী কুরি। 
তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ফলে পিয়ের গুরুতর অসুস্থ হলেন এবং কয়েক বছর রোগ শয্যায় থেকে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নিলেন। 
মেরী একটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন ।  বিজ্ঞানী লর্ড কেলভিন বললেন সীসা  এবং হিলিয়ামের একটি যৌগ হলো রেডিয়াম। মেরি কোন বিতর্কে জড়ালেন না। চার বছর পর আবার মেরী ধাতব রেডিয়াম নিষ্কাশন করেন। চিকিৎসা এবং শিল্পের প্রয়োজনে তেজস্ক্রিয় পদার্থ গুলি নির্ভুলভাবে বিচ্ছিন্ন করার প্রয়োজন হলে মেরী অভূতপূর্ব পদ্ধতিতে তা করলেন। তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল দেশ-বিদেশে তিনি সম্মানিত হতে লাগলেন। 
১৯১১ সালের রসায়নে নোবেল পুরস্কারের জন্য আবার মেরী কুরির নাম প্রস্তাব করা হয়। এর আগে কোন বিজ্ঞানী দুবার নোবেল পুরস্কার পাননি। বিজ্ঞানী আইনস্টাইন মেরীর নাম অত্যন্ত সম্মানের সাথে নিতেন। ফরাসি বিজ্ঞান একাডেমী সভ্য পদে সমস্ত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তিনি মহিলা বলে সেই পদ থেকে তিনি বঞ্চিতই হলেন। 
জীবদ্দশায় মেরী দেখিয়ে দিয়েছিলেন পরাধীন দেশের নাগরিক এক নারী, পুরুষ শাসিত সমাজ এবং চূড়ান্ত আর্থিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নিজের মেধা এবং কাজের প্রতি একাগ্রতা অভীষ্ট লক্ষ্যে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। ১৯৩৪ সালে ৪ জুলাই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                          software development company in siliguri,no 1 software
                          development company in siliguri,website designing company
                          in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                          in Siliguri website design company in Siliguri, web
                          development company in Siliguri