বসন্ত আসে
বসন্ত আসে
অলক পর্ণা সেনগুপ্ত ব্যানার্জী
-------------------------------------
প্রুনিং করা চায়ের গাছে পাতা বের হয়নি এখনও, নাকি সবুজ ছিঁটে লেগেছে তা এই বাসরাস্তা থেকে চোখে মাইনাস সিক্স পাওয়ারের চশমা পড়ে বোঝা যায় না, কিন্তু ওই যে দূরে আগুন রঙের ফুল ফুটিয়ে মাথা তুলে দাঁড়ানো গাছটা কি চোখে না পড়ে যায়!! পলাশ!! বসন্ত যে!! সেই ধূ ধূ দুপুর আর উদাস করা বিকেলের দিনগুলো ফিরে এসেছে আবার। বসন্তে প্রথম প্রেমে পড়েছিল যে কিশোরী মাঝবয়সে এসে তার স্মৃতি হৃদয়ের গতি দ্রুত করে আরো। তারপর স্মৃতিরা সার বেঁধে আসতে থাকে, ধাবমান বাসের চৌকো জানলার ফ্রেম থেকে সরে যায় ফুটন্ত পলাশ। ওরা থেকে যায়, অ্যাকুরিয়ামের লাল, সোনালী, কালো রঙের মাছের মতো মনের মাঝে ভাসে, ডোবে, খেলে বেড়ায়। হলুদ পাখিটাও বাগানের দারচিনি গাছের ডালে বসে প্রতিবারের মতোই ডাকাডাকি করে বলতে আসে, বসন্ত যে!! আর তখনই বুকের মধ্যে এক বিন্দুর মতো চিনচিনে ব্যাথা জানান দেয় তার কথা, আছে আছে সে এখনও আছে… যে যত ই বলুক, জীবন যতই ক্ষুধার্ত গদ্যময় হয়ে যাক কিংশুক আগুন ছড়ায়, সারা বছর চুপটি করে থাকা হলুদ পাখিটা এ বসন্তেই ডেকে ওঠে। আর মন মনেই রাখে না বয়সটা হেমন্তের পথে, শুধু পাতাবিহীন গাছগুলোর মাঝে উজ্জ্বল লাল ফুলে ভরা গাছটা ফ্রেমবন্দি হয়ে যায়। ফ্রেমবন্দি হয়ে থাকে প্রাত্যহিকতার ধূসর দিনগুলোর অনেক আগে সদ্য যুবক যে অপেক্ষায় থাকত ওর হস্টেল থেকে ফেরার। তারপর?? দীর্ঘ শীত গ্ৰীষ্মের বেলা পার হলেও বসন্ত আসে… আসেই।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴