সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
28-April,2024 - Sunday ✍️ By- শঙ্খনাদ আচার্য 205

বঙ্গের একজন সাধারণ ভোটকর্মীর চিঠি/শঙ্খনাদ আচার্য

বঙ্গের একজন সাধারণ ভোটকর্মীর চিঠি
শঙ্খনাদ আচার্য
  
প্রিয় বঙ্গবাসী,
                       আপনারা ভীষণরকমভাবে অবগত যে প্রথম দফার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আসমুদ্র হিমাচলে বেজে গেছে অষ্টাদশ লোকসভা ভোটের দামামা। উত্তরের তিন কেন্দ্র -কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে ভোট পর্ব সম্পন্ন হবার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গও সামিল হয়েছে ভারতীয় গণতন্ত্রের এই সর্ববৃহৎ উৎসবে। বিগত বছরগুলোতে বাংলায় ভোট মানেই সংবাদ মাধ্যমে আমরা হিংসা ও হানাহানির ছবি বারবার ফুটে উঠতে দেখেছি। এখানে ভোট এলেই টেলিভিশন কিংবা মোবাইলের স্ক্রিনে কখনও ভেসে উঠেছে রক্তাক্ত মানুষের চেহারা, কখনও আবার ভূলুণ্ঠিত হতে দেখা গিয়েছে গণতন্ত্রের হাতিয়ার 'ভোট বাক্সকে'। কোথাও দেখা গিয়েছে স্বজন হারার কান্নার ছবি, আবার কোথাও দেখা গিয়েছে শ্মশানের নিস্তব্ধতা। কিন্তু বাংলার ভোট মানে কী শুধুই তাই? নির্বাচন মানে কী শুধুই  যন্ত্রণা, আক্ষেপ আর উৎকণ্ঠা? তবে কী গণতন্ত্রের উৎসব থেকে বাঙালির প্রাপ্তির ভাঁড়ার সত্যিই শূন্য? অন্তত আমার মতো অনেক ভোট কর্মীই এক্ষেত্রে একমত হবেন না, হলফ করে বলতে পারি। উদ্বেগজনক ও বেদনাদায়ক এই ঘটনাগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ঘটে ঠিকই, কিন্তু তা কোনোভাবেই বাংলার সার্বিক নির্বাচনের চিত্র নয়। তাইতো প্রত্যেকবার এই নির্বাচনকে ঘিরেই বাংলার প্রতিটি প্রান্তে তৈরি হয় নানান সুখস্মৃতি।
     নির্বাচন শুধুই জনপ্রতিনিধির জন্ম দেয় না, জন্ম দেয় অনেক আন্তরিক সম্পর্কেরও। তা নাহলে, কর্মসূত্রে কোচবিহারের বাসিন্দা সুদূর মুর্শিদাবাদের যুবক কেনই বা প্রান্তিক মহকুমা শহর দিনহাটার মানুষের জন্য রাতে শোয়ার বিছানা তৈরি করে দেবেন? কেনই বা হলদিবাড়ির যুবক কর্মজীবনের শেষ লগ্নে দাঁড়িয়ে থাকা জোড়াই-এর প্রৌঢ়ের জন্য রাত জেগে বসে থাকবেন শুধু তার ভাগের কাজ শেষ হয়নি বলে? কেনই বা ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ভিনরাজ্যের নিরাপত্তাকর্মীরা অভিভাবকের মতো ভরসা দিয়ে বলবেন "আপ চ্যায়েন সে সো জাইয়ে স্যার। হাম হ্যয় না"? কেনই বা সেল্ফ হেল্প গ্রুপের বীরাঙ্গনারা বৈশাখের তপ্ত দুপুরে না খেয়ে বসে থাকবেন শুধুমাত্র পোলিং-অফিসাররা মধ্যাহ্নভোজন করেননি বলে? অনেকেরই মনে হতে পারে এগুলো তো নির্বাচনের কাজে জড়িত প্রত্যেকেরই দায়িত্ব ও কর্তব্যের অঙ্গ। শুধুই কী তাই? তাহলে তো এদেশে দায়িত্ব বা কর্তব্যে গাফিলতির ছবি কখনও ধরাই পড়ত না। আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দায়িত্ব বা কর্তব্যের উর্ধ্বে উঠে ভোটকেন্দ্রে তৈরি হয় কিছু আন্তরিক সম্পর্কের, যে ছবি কোনো গণমাধ্যমে প্রচারিত হয় না। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে প্রায় দুটো দিন একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কখন যে অচেনা অজানা মানুষগুলোর মধ্যে এই সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে তা বোঝা বড় দায়। যে সম্পর্কের রেশ 'অমোচনীয় কালির' মতো রয়ে যায় বহুদিন, এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে তার মেয়াদ হয় 'ভোটার লিস্টের মার্কড কপির' লাল দাগের মতো, আজন্ম। সেই সম্পর্ক ভোটকর্মীদের মধ্যেকার হোক বা ভোটকর্মী ও নিরাপত্তাকর্মীর, কিংবা প্রাণভয়ে বুথ ত্যাগী ভোটকর্মীর সঙ্গে আশ্রয়দাতা স্থানীয় বাসিন্দার মধ্যেকার সম্পর্কই হোক না কেন। এইসব আত্মিক সম্পর্কের কারণেই তো ভোট শেষে সেকেন্ড পোলিং অফিসার ছুটে যান তার টিমের জন্য মিষ্টি পান আনতে, তরুণ সেক্টর অফিসার রাত বারোটায় ফোন করে খোঁজ নেন প্রিসাইডিং অফিসার নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছেছেন কিনা? এভাবেই বঙ্গে ভোট আসে ভোট যায়, কিন্তু ভোটকেন্দ্রে তৈরি হওয়া এই আন্তরিক সম্পর্কগুলো অন্তরালেই রয়ে যায়।
ইতি
এই বঙ্গের একজন সাধারণ ভোট কর্মী

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                          software development company in siliguri,no 1 software
                          development company in siliguri,website designing company
                          in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                          in Siliguri website design company in Siliguri, web
                          development company in Siliguri