পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় -এর আলোচনায় পার্থ সারথি চক্রবর্তী -এর কবিতার বই "যে দুরত্ব অনতিক্রম্য"
পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় -এর আলোচনায় পার্থ সারথি চক্রবর্তী -এর কবিতার বই "যে দুরত্ব অনতিক্রম্য"
"অরণ্য রাতের জ্যোৎস্না মেখে
যখনি ভাবি হারিয়ে যাব কোথাও
হারিয়ে যাব দিকশূন্যপুরের উদ্দেশ্যে
কোথা থেকে বেজে ওঠে এক সন্তুর!
সুর তোলে বয়ে যাওয়া নদীটির বুকে।"
একটা মায়াবী স্বপ্নমাখা ছবি আমাদের মানসচোখে ভেসে ওঠে। এমনই সুন্দর সুন্দর দৃশ্যপট আঠাশটি কবিতা ঝকঝকে ছাপা হয়ে হাতে এল কবি পার্থ সারথি চক্রবর্তীর। কবির জন্ম অবিভক্ত জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সে, অধুনা আলিপুরদুয়ার জেলায়।
সমকাল ও প্রকৃতি তার কবিতার উপাদান। তাই তাঁর কলমে উঠে এসেছে সাবলীল উচ্চারণ। নিঁখুত শব্দচয়ন তার প্রতিটি কবিতাকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে, -
"মানুষের কাছে নিরাময় খুঁজেছি
এক অবাধ্য অসুখের শান্ত নিরাময়।
গাঢ় অন্ধকারের শেষে যে ঊষার আলো,
সকালে ফোটা ফুলের স্নিগ্ধতা
সেই পেলবতা খুঁজেছি বারবার।"
বর্তমানে সমাজজীবনে নেমেছে অবক্ষয়ের ঢল তার মধ্যে থেকে শান্ত নিরাময় খুঁজেছেন কবি। একটা সময়ের দলিল হয়ে রয়ে গেল তার কবিতা। কোথাও তাঁর মনে হয়েছে কবি মনের চাওয়া পাওয়ার অনেক বাধা, অনেক দূরত্ব, যে বাধা, যে দূরত্ব বোধ করি অনতিক্রম্য। একটা হতাশার ব্যঞ্জনা কবির কলমে ফুটে উঠেছে।
নিষ্ঠুর উন্মাদ সমাজ উঠে এসেছে কবি পার্থ সারথির কলমে। এইসব অবক্ষয়ের চিত্র কবির শ্বাসরুদ্ধ করে তুলেছে এবং তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
কবি তাঁর কবিতার বইটি ডুয়ার্সের জঙ্গল এবং তার বৃক্ষরাজি ও প্রাণীদের উৎসর্গ করেছেন। 'তোমার জন্য একা হই', 'চা রমণী', 'আত্মার টান নাকি চির শত্রুতা', 'ডাউন মেমোরি লেন', 'হারিয়ে যাওয়ার আগে', 'সিলভার লাইনিং' -এই কবিতাগুলোতে কবি সোজা সাপটা এবং অল্প কথায় অনেক কিছু বলবার চেষ্টা করেছেন, যা আগামী প্রজন্মের কবিদের উৎসাহিত করবে এবং পাঠক সমাদৃত হবে।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴