পার ক্যাপিটা/মনীষিতা নন্দী
পার ক্যাপিটা
মনীষিতা নন্দী
নিরাপত্তা বলয়ের ভেতর বসবাস
একটা - দুটো - তিনটে - চারটে...
শেষ নেই, শেষ কথা নেই, কেউ নেই;
ধ্বস্ত ক'রে দেবার মতো কালজয়ী স্পর্শ
পাকানো গল্পের ফুলকুমারী সেজে
চোখ উলটে ঝুলে থাকে মগডালে,
আড়ালে আবডালে কেবল ফিসফিস,
চিবিয়ে চিবিয়ে মেপে নেওয়া চাহনি,
মুখের ভেতর গুঁড়িয়ে যাওয়া
পানপাতা - চুন - সুপুরি মাখামাখি,
ঠোঁটের কোণ ঘেঁষে গড়িয়ে যায়
জন্ম-জন্মান্তরের গুঁড়ো মেশা কশ, তরল লাল,
নিয়মিত লজ্জার মাথা খেয়ে, হজম ক'রে,
ডুব দেয় ও' বাড়ীতে, মেয়ের কপালে কিংবা হাতে
তন্ন তন্ন ক'রে খুঁজে বেড়ায় লাল রঙ, সাদা রঙ;
কি ব্যস্ততাতেই না কাটে সারাটা দিন, সত্যি!
কেন্দ্র বলয়ের নিশ্চিন্ত ঘেরাটোপে অতিকায়ত্ব,
সপ্তাহ জুড়ে, মাসে মাসে, নতুন শাড়ী,
হাল ফ্যাশনের গয়না, নিত্যনতুন মেকওভার,
অনলাইন শপিং বাক্সে উধাও তিলধারণের জায়গা;
ডেইলি ভ্লগস, রিলস; মুহূর্তে ইন্সট্যা জমে ক্ষীরদই;
দূরত্বের বলয় আরও দূর থেকে দূর,
বিচ্ছিন্ন দ্বীপে জাহাজ চালায় ওরা,
রাজপথ ঘিরে বসে থাকে প্রজন্ম,
মন - বুক বিঁধে দেয় ভবিষ্যতের চাকা,
বিপণন যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসে
একটার পর একটা বুর্জোয়া পুতুল।
অন্যদিকে, হাত পেতে দিলেই টাকা, ঘর, রেশন,
বদলে নিরঞ্জন, চেতনা , স্বাভিমানী স্বর,
টুকরো বিবেক, খুচরো আবেগ...
অসাম্য জলে রোজ দু'বেলা খাবি খেতে খেতে
পেট - ভরপুর শান্তির ললিত বাণী।
চুঁইয়ে পড়েনা সম্পদ - ভার, প্রয়োজনও স্থিতিশীল,
খুশীতে ফেটে পড়ে আগামী,
মার খাবেনা আর পড়ে পড়ে, বরঞ্চ ঘুরে দেবে দু' ঘা;
হাজার টাকা থেকে পনেরো দিন অন্তর
দুটো পঞ্চাশের 'লিপিসটিক্', সাথে
বাসুর দিদির কাছে 'বিশ' টাকার মেহেন্দী,
জমবেও বেশ খানিক,
চালের কৌটোর নীচে, দেখবে না কেউ;
দেখলে নুড়ো জ্বলবে মুখে;
এ মাসে তাজুর বিয়ে, হেব্বি সাজগোজ...
বাংলা অভিধানের এক পৃষ্ঠায়
চারটে মাত্র অক্ষর হয়ে জ্বলজ্বল ক'রে
'উপার্জন' নাম ও মরীচিকা মালা।।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴