নবীনাদের ভালোবেসে/জয়িতা রায় চৌধুরী মল্লিক
নবীনাদের ভালোবেসে
জয়িতা রায় চৌধুরী মল্লিক
প্রিয় নবীনা,
আজ তোমাকে মন খুলে দু-চার কথা লিখব বলে বসেছি। একটা সময় তো ছিলই যখন মন খুলে লেখা চিঠির আদান প্রদান চলত। পাতার পর পাতা চিঠি লিখেও মনে হত 'হইল না শেষ'। আজ বহুদিন হল সেইসব চিঠি-ময় দিনগুলো এক বুক অভিমান নিয়ে কোথায় যে ভেসে গেছে!
আজ বহুদিন পর যখন চিঠি লেখার সুযোগ এল, কি আনন্দ যে হল! তোমার কথা প্রায়ই ভাবনায় আসে আজকাল। খুব ইচ্ছে হয়, তোমার সাথে দুটো কথা বলতে। কিন্তু সেভাবে তো বলা হয়ে ওঠেনা, তাই আজ তোমার জন্য এই চিঠি। জানিনা তোমার হাতে ঠিকঠাক পৌঁছবে কিনা, তবু আশায় বুক বেঁধে লিখতে শুরু করলাম।
তোমার এগিয়ে চলা আমাকে মুগ্ধ করে, নবীনা। কাজে কর্মে যখন নিজেকে প্রমাণ কর, কোনো দিক থেকেই পিছিয়ে নেই তুমি, বিশ্বাস কর আমি ভীষণ গর্ব আর আনন্দ অনুভব করি। তোমার এই মাথা উঁচু করে চলা, অসম্মান-অবহেলা গুলোকে হেলায় গুঁড়িয়ে এগিয়ে চলতে পারা, আমাকে শান্তি দেয়। তোমার পূর্বসূরিরা ইচ্ছে থাকলেও নানা বিধি নিষেধের জালে আটকে, তাদের ইচ্ছে গুলি পূরণ করে উঠতে পারেনি। কিন্তু তুমি যখন বিধি নিষেধ ভেঙে নির্দ্বিধায় তোমার মূল্যবান ইচ্ছেগুলো পূরণ করে মাথা উঁচু করে এগিয়ে চল, খুশিতে মন ভরে যায়।
কিন্তু মাঝে মাঝে খুব ভয় হয়, নবীনা, জানো।
যখন তুমি এগিয়ে চলতে গিয়ে অনুকরণে মত্ত হও, ঠিক তখনই ভয়টা আসে। সব হারিয়ে নতুন করে পিছিয়ে পড়া দেখবার ভয় চেপে ধরে আমাকে। তুমি তো নবীনা, আমার চাইতে অনেক ছোট। তাই নানা অভিজ্ঞতা থেকে তোমাকে বলি, কাউকে অনুকরণ করে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকা যায় না। জীবনের যে কোনও ক্ষেত্রে তোমার স্বচ্ছন্দ বিচরণ, হার না মানা মনোভাব, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকলের সাথে চলতে পারা, নিজের মত করে বাঁচা, এসবই তোমাকে এনে দেবে সম্মান, ভালোবাসা। অনুকরণে এ সম্মান ধূলিসাৎ হয়ে যায়। তবে কারো ভালো কিছু গ্রহণ করলে নিজেকে সমৃদ্ধ করা হয়, তাই তা অবশ্যই গ্রহণ কর।
নিজেকে কু-সংস্কার মুক্ত রেখ। উদার মানসিকতায় ভরপুর থেক। তোমার চলার দীর্ঘ পথ জুড়ে আমার শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রেখে দিলাম। ভালো থেক।
ইতি- প্রবীণা
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴