নতুন করে পাব বলে/উমা দাস সরকার
নতুন করে পাব বলে
উমা দাস সরকার
প্রিয় চৈত্র মাস,
সারা ঘরময় দুপুর এখন, খট্ খট্ খট্ শব্দ করে মাথার উপর সিলিং ফ্যানখানা ঘুরছে।এই শব্দ আমার ঘরের অন্যান্য জিনিসের সাথে এমন ভাবে মিশে গেছে তা আার বিরক্তিকর শোনায় না। ফ্যানখানা এমন শীতল বাতাস ছরাচ্ছে যে আমার সাথে সাথে ঘরের বাকি আসবাবপত্র এমনকি ঘরের পর্দাগুলো তার ঐটুকু দোষ ঢাকা দিয়ে রেখেছে।
বিছানার একপাশে জামাকাপড় এর স্তুপ, প্রতিদিন ধোঁয়া কাঁচা করে এদের এখানেই রাখার নিয়ম।এর আকার খুব একটা ছোট নয়, আবার কখনো বাড়ে আবার কমে। খুব সৌভাগ্য হলে এদের মধ্যে কেউ কেউ আলনায় বসার সুযোগ পায়।
পাশেই কিছু বইখাতা কলম পেন্সিল ছড়ানো এরা এদের জীবনের অনেকটা সময় এই ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাটায়। যদিও তাদের জন্য ঘরে একটা টেবিল বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবু দায়িত্বহীন হলে যা হয়!
একটা সূঁচ-সুতোর বাক্স আর একটু হলে খাটের নীচে পড়ে যাবে। গোল ঢাকনা তার আসল রঙ হারিয়ে এখন খানিকটা কালচে নীলার মতো দেখতে হয়েছে। ভেতরে লাল, সাদা, নীল, হলুদ, সবুজ, কালো, খয়েরী আর গোলাপীও আাছে। আমি সচরাচর সাদা বা কালো ব্যবহার করি। বাকিরা কেন আছে জানা নেই। হয়তো সবার একসাথে মানিয়ে গুছিয়ে চলতে হয়, তাই পড়ে থাকা! ছোট বড়ো মাঝারি সব মিলে সাতটা সূঁচ। রং-বেরঙের বোতাম আর একটা অর্ধেক ব্লেড - এই বস্তুটাকে আমি ভীষণ ভয় পাই। চাইলে ব্লেডকে সহসাই তুমি অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগাতে পারো। তবে সুতো কাটার জন্য অনেক ভালো দাঁতের থেকে। সেলাই-বোনাইতে আমার হাত খুব কাঁচা। তবু গোল বাক্সটা যত্নে গুছিয়ে রাখা।
জানালা দিয়ে নিম গাছটা দেখতে বেশ লাগে।কদিন আগেই কেমন মনমরা হয়ে ছিল গাছটা আর এখন নতুন নতুন সবুজ পাতায় আবার ভরে উঠেছে। নিমের হাওয়া শরীরের জন্য অনেক উপকারী এই উপদেশ দিয়ে দিয়ে গাছটাকে এতখানি বড়ো করেছি, এখন সারাক্ষণ এখানে শালিক, চড়াই, ময়না, ঘুঘু, কাঠঠোকরা আরও নাম না জানা কত পাখিরা এসে আামার সাথে গল্প করে।সব মন কেমনের গল্প।
অনেক চিঠি লেখা হয় রোজ, শুধু মাত্র অলসতার কারণে পোস্ট করা হয় না। চৈত্রের দুপুরগুলো পেরিয়ে এক নতুন বৈশাখে নববর্ষে নিজেকে যেন আরও নতুন করে জানতে পারি বুঝতে পারি আরও নতুন করে নিজেকে ভালোবাসতে পারি।
ইতি
মৃণাল।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴