তোমারে করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা/গৌতমেন্দু নন্দী
তোমারে করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা
গৌতমেন্দু নন্দী
আমার কাছে রবীন্দ্রনাথ সাগরের এক ছবি
ঢেউ এ ঢেউ এ তৈরী হয় শত সহস্র কবি।
আমার কাছে রবীন্দ্রনাথ সৃজনের এক আকাশ
গল্প, কবিতা, কাব্য, গানে অসীম তাঁর প্রকাশ---
সীমার মাঝে অসীম তিনি। আমাদের সমস্ত সৃষ্টি, সৃজনের প্রেরণা, আমাদের প্রাত্যহিক জীবন যাপনে তাঁকে আজও বাঁচিয়ে রেখেছি স্মরণে, মননে, উচ্চারণে এবং তিনি আমাদের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল।
তাঁর কথা -সুরের বিস্তীর্ণ সংগীতের পারাবারে সুখে,দুঃখে, উৎসব--উদযাপনে ভেসে চলেছি যুগ থেকে যুগান্তরে। খুঁজে চলেছি রূপ সাগরের অরূপরতন। এই সন্ধান, কালের প্রবাহে চিরন্তন ও চিরকালীন।
"সহজ পাঠ"এর শিশুমন থেকে তিনিই চলে যেতে পারেন পরিণত মনস্কদের "রক্তকরবী"তে। একটাই জীবনে আশি বছরের জীবনকালে তিনি তাঁর সৃজন-ঝুলিতে ভরে নিয়েছেন অসংখ্য বছরের সাহিত্য, সংস্কৃতির কর্ম-সৃষ্টি আর আমাদের জন্য, উত্তর প্রজন্মের জন্য রেখে গেছেন চিন্তা-সূত্র।
স্ত্রী,পুত্র,কন্যা সহ নিকট পরিজনদের পর পর অকাল প্রয়াণের পরও বিয়োগ- যন্ত্রণা নিয়ে কীভাবে বিপন্নতা, বিষণ্নতার মধ্যেও সৃষ্টিশীল থেকে অনড় মহীরুহর মতো তিনি দাঁড়িয়ে থেকেছেন?!
ভাবতে গেলেই তাঁকে কল্পনা করেছি "ঈশ্বর"রূপী মানবের মতো। তাঁকে স্থান দিয়েছি হৃদয়ের মণিকোঠায়।ভারতবর্ষের সভ্যতা, সংস্কৃতি, আধুনিকতার রূপকারও তিনি। মূর্ত থেকে বিমূর্ত ভাবনা-বোধের পাঠ আমাদের দিয়েছেন তাঁর সৃষ্ট শিল্প-চিত্রের মাধ্যমে। আমাদের জীবন-যন্ত্রণার উপশম তিনি। সুখে, দুঃখে আমাদের সবসময়ের সঙ্গী।
কবিকে আমরা বলতে পারি ---" সুখের মাঝে তোমায় দেখেছি, দুঃখে তোমায় পেয়েছি, পেয়েছি প্রাণ ভরে..."
গোটা দেশ, বিশ্ব, কবিগুরুর চিন্তা, চেতনা, সৃষ্টি, সৃজন, সংগীতের স্পর্শে সমৃদ্ধ এবং ধন্য। তাঁকে নির্দিষ্ট কোনও "কাল"এর গন্ডি দিয়ে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়, "বহু যুগের ওপার হতে"ও তিনি "সমকালীন"।
বর্তমানে সভ্যতার সংকটে ধর্মের বিভাজনে, মূল্যবোধহীন সমাজ-জীবনে,এলোমেলো রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মানবধর্ম, মানবতাবাদের পূজারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই আমাদের পথপ্রদর্শক, তিনিই আমাদের আলোক সারথি -
"বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো
সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমারও...."
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴