তুমি রবে নীরবে (২)/পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়
তুমি রবে নীরবে (২)
পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়
"চলে যাব
একদিন ঠিক চলে যাব
স্বজনের চৌকাঠ থেকে ।"
- তুষার বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রিয় প্রাবন্ধিক অনিন্দ্য এভাবে হারিয়ে যাবে ভাবতে পারি নি। তাতাসি পত্রিকার প্রকাশ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বন্ধু অনিন্দ্য। সেই আমন্ত্রণ এতটাই আন্তরিক ছিল তা লিখে প্রকাশ করতে পারব না।
উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের একত্রিত করেছিলেন "রোববারের সাহিত্য আড্ডা" র আয়োজকেরা। সেই আয়োজনে হঠাৎই আশঙ্কার মেঘ দেখা দিয়েছিল। ধূপগুড়িতে একটা সামান্য বিষয়নিয়ে মনোমালিন্যের বাতাবরণ তৈরী হয়েছিল। রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসেছিল পুলিশ ক্যাম্প। এখানে সেখানে র্যাফ-এর বাহিনী। ধূপগুড়ির বড় রাস্তায় জ্বলে উঠেছিল আগুন। পরদিন সকালে আমি ও অমিতাভদা যখন সেই ধোঁয়ামাখা ছাইয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম,ভয়ে শিউরে উঠেছিলাম।
এসব খবর আগের দিনই জেনেছিলেন অনিন্দ্য। ফোন করে জানিয়েছিল সে সব কথা। কিন্তু তার আন্তরিক আমন্ত্রণ রক্ষা করতে আমি ও অমিতাভদা ছুটে গিয়েছিলাম বীরপাড়ায়।
জুবিলী ক্লাবে পৌঁছতেই সাদরে বরণ করে নিল অনিন্দ্য। সাথে ছিল কথাকার গীর্বাণী চক্রবর্ত্তী, সাগরিকা কর্মকার, কবি দেবাশীষ ভট্টাচার্য এবং অন্যেরা। ডুয়ার্সের সবুজ উপত্যকার কবি তুষার বন্দ্যোপাধ্যায় সম্মাননা পেলেন কবি বেনু সরকার। বেনুদা'র স্মৃতি চারণায় মূর্ত হয়ে উঠলেন কবি তুষার বন্দ্যোপাধ্যায়। সহজ উঠোনের পক্ষ থেকে কবি অমিত কুমার দে, কবি কৃষ্ণ চন্দ্র দাস, পৈলা সাঞ্জির কথা খ্যাত শুক্লা রায় সহ অন্যান্য কুশীলবেরা পরিবেশন করলেন কবি তুষার বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে অসাধারণ গীতি আলেখ্য। আমরা কবিতা পাঠ করলাম। সকল কবি বন্ধুদের কবিতা পাঠ শুনলাম।
মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতিতে আমরা খেতে বসলাম। ঢেঁকি শাক এবং কাসুন্দিতেও লক্ষ্য রেখেছেন প্রিয় মানুষটি। খাবারের টেবিলেই দেখলাম প্রাবন্ধিক রাজীব দে রায়, শ্বেতা ভট্টাচার্যকে। তারা ধূপগুড়িতে রাস্তা জ্যামে আটকে পড়েছিলেন। অনিন্দ্য ওদেরকেও বরণ করে নিলেন।
বাড়ি না ফেরা অবধি ফোনে খবর নিয়েছিল অনিন্দ্য। আজও তার হাসিমাখা মায়াভরা মুখটা ভেসে ওঠে।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴