তিন টুকরো, তবু দীর্ঘ/মনীষিতা নন্দী
তিন টুকরো, তবু দীর্ঘ
মনীষিতা নন্দী
।।সৈনিক।।
সীমান্তে অতন্দ্র কাব্য করছি
ঠোঁটের ওপর ফুটিফাটা, দাঁতে দাঁত
মাঝে মাঝে কড়া নাড়ে হিমঘর
পায়ের তলায় শীর্ণ হৈ চৈ, কাছে ডাকে
অশ্রুজল থেকে গোগ্রাসে উত্তাপ খায়,
চিবুকে লেগে আছে বোধহীন হীরে, খাঁজকাটা
কিছুতেই থামব না, জোরে.....
আরো জোর ছুটে যাব
সবুজের ভীড় থেকে চড়াই উৎরাই,
গভীর গিরিখাত আর খাদ মিলমিশ,
তারপর দুধ সাদা গালিচা ছেড়ে
বুক কাঁপা সমকোণ বেয়ে
ঠিক যে'ভাবে নামে আমার ফুলশয্যা,
অপূর্ব ভোরে,
দূরত্বের দীর্ঘতম নথি রেখে,
একদিন .....
সে'ভাবেই পাখী হ'ব আমি।
।।বেড়াতে বেরিয়ে।।
যুদ্ধের অসুখ থেকে
অনামী নামে অস্ত্র সাজায় বোকাবাক্সের প্রহর।
কফিনে এই প্রথম ও শেষ বিঁধে থাকা
তারপর ক্ষত - বিভাজন, পরিবেশন,
লাল বাদামী কর্কট উৎসব।
একটা শিশু রঙ জন্ম নিলে
সহস্রাধিক বীজ - পেট ফেটে
চারা ফোটে, ফ্যাকাশে - কালো,
ক্রোমাটিড থেকে চুরি হয়ে
বেড়ে ওঠা রাস্তায় সবুজের অভিযান
স্তূপ করে আকন্ঠ - ভয়ের দেওয়াল লিখন।
পাথর থেকে পাথরে ঋজু খেলা
হাড়হিম বাতাস সকাল থেকে,
আকাশনীল ঝরণা, ধূসর ......
বিভূতির নীলচে শামুক, মনগড়া - নকল, বুকে ধরে।
শেষযাত্রা সমারোহে মেঘ জুটেছে
আজ আর নেই কোনো যানজট,
নেই হর্নের শীর্ণ শীৎকার
চারশো সিঁড়ি পেরিয়ে ভাসতে গিয়ে
নীচে দেখি জমায়েত,
বিন্দুর মতো দুমড়ে যাওয়া চারচাকা - গদি,
পথে ঘাটে জ্বলন্ত মাংসপিণ্ড,
ভালোবাসা অবধি হেঁটে যেতে এখনও অনেকক্ষণ।
।।কামড়।।
সকালবেলা চোখ মেলে দেখি,
মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আমার সন্তান,
শত-সহস্র আঙুল আমার দিকে,
যদিও জানি তাক করা
শেষ ও সসীমতম আঙুলটি আমার নিজেরই।
আমার বছর পঁচিশের সন্তান
বিদ্রোহে যার লাগাম ছিল না কোনো
কোটি বৈচিত্র্যের খাবার ও তরলে ফিরেও
শান্ত থাকেনি জিভ,
অশনি সংকেতের মতো
নেমে এসেছে মায়ের হারিয়ে যাওয়া....
ষাটোর্ধ্ব নিজের ভালো থাকার ইচ্ছেটুকু
ঠিক যেন অদৃশ্যের মতো অর্থহীন, দ্ব্যর্থহীন, অপরাধ
শেষ পর্যন্ত জিভ তাই ছুঁয়েছে বিষজল,
লঘু আদানপ্রদানে শনাক্ত হয়নি হতাশা,
স্বেচ্ছামৃত্যু নিতে পারিনি। আত্মহননও নয়।
এখন আমি বিনোদন মাধ্যমে মৃত্যু বিক্রি করি।
শোক-হতাশার টাকায় মুখে রং মেখে
মাড়িয়ে যাই রাজপথ।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴