চৈত্রের মনখারাপকে/ভাস্বতী রায়
চৈত্রের মনখারাপকে
ভাস্বতী রায়
সেদিন ছুটির দিন ছিল, দুপুরে স্নানের পর ছাদে কাপড় মেলতে গিয়ে ভেজা চুল থেকে গামছাটা খুলতেই সেই ছেলেবেলায় তোমার দাবদাহে নদীতে অনেকটা সময় স্নান করার পর যেমন অনুভূতি হত, অবিকল সেই অনুভূতি হল।
এক লহমায় ছোটবেলার তোমায় খুঁজে পেলাম চৈত্র। কত সময় কটিয়ে দিতাম শুধুমাত্র রুক্ষসুক্ষ ধূলোমাখা গাছগুলো দেখে। ছুটির দুপুরগুলো নিজেকে অপু মনে হত।
এখন আর ছুটির দুপুরে জানালার পাশে দাঁড়ালে ধূলো মাখা গাছ কিংবা খাঁ খাঁ দুপুর কোনওটাই দেখার সুযোগ হয় না। চারদিকে অট্টালিকায় হাঁসফাঁস। হাওয়া গলবার জায়গা নেই, গাছ তো অনেক দূরের কথা। এখন চৈত্র এলে চারদিকে সেলের ঘটা, পয়লা বৈশাখে নতুন জামাকাপড়ে সেজে ওঠা। আগেও ছিল নিশ্চই, হয়তো সবাই কিনতে পারত না, এখনও সবাই পারে না। কি জানি কেন সেদিন এই সেলের বাহার দেখে ছবির মতো ভেসে উঠল সেই মেয়েটির ছবি, যার স্কুল ইউনিফর্মই ছিল বাইরে বা যে কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার একমাত্র পোশাক, আর সেই লিকলিকে লম্বা ক্লাস এইটে পড়া ছেলেটি বাকি বন্ধুরা সবাই যখন ফুল প্যান্ট পরে স্কুলে আসত আর কাপড় কেনার অভাবে পুরোনো ক্লসের হাফ প্যান্টে লজ্জায় জড়োসড়ো হয়ে ক্লাসে ঢোকা।
অনেকগুলো বছর কেটে গেছে। চৈত্র সেল পয়লা বৈশাখ একই রকম আছে, তুমিও বদলাওনি চৈত্র, শুধু বদলে গেছে সময়। সেই সব জায়গায় স্কুল ইউনিফর্ম পরা মেয়েটির আর হাঁফ প্যান্ট পরা ছেলেটির এখন জামাকাপড়ে ঠাসাঠাসি করে আলমারি। পরবার সময় বা উপলক্ষ খুঁজেই পায় না এখন আর..…..।
তোমার অপু
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴