চাঁদের আবাসে/চিত্রা পাল
চাঁদের আবাসে
চিত্রা পাল
এই তো কাছেই অথচ যাওয়া হয়নি। এবার মনস্থির করে বেরিয়ে পড়লাম। না,না খুব দূরে নয় মানে দার্জিলিং অবধিও যেতে হবে না, তার আগে সোনাদা স্টেশনে নেমে পড়া। এবার খুলেই বলি, আমরা গিয়ে ছিলাম মন্ডাকোঠি চা বাগানে। এক অঘ্রাণের সকালে বেরিয়ে পড়লাম। দার্জিলিং যাবার পথে কার্শিয়াং ছেড়ে একটু এগোলেই সোনাদা স্টেশন। সোনাদা খুব সুন্দর শহর, কিন্তু আমরা চলেছি মন্ডাকোঠি ওখান থেকে তিন চার মাইল দূরে সোনাদা থেকে নীচে। আগেকার দিনে এখানে আসতে হলে বা কারোর আসার কথা থাকলে বাগান থেকে ঘোড়া পাঠিয়ে দিত আসবার জন্য। আর স্থানীয় মানুষজন যাতায়াত করত ওই ঘোড়ার পিঠে মালপত্র উঠিয়ে দিয়ে পায়ে হেঁটে। এখন ঘোড়ার পরিবর্তে গাড়িতেই পাড়ি দিলাম। রেল স্টেশন ছাড়িয়ে বাঁ দিকের পাহাড়ি পথে বেশ লাগল যেতে। বাগানে ঢুকে একটু এগিয়েই ম্যানেজারের বাংলো, সেটাই আমাদের গন্তব্য স্থল।
দার্জিলিং-এর পুব দিকে কার্শিয়াং-এর উপত্যকায় এই মন্ডা কোঠি চা বাগান। এক অপরূপ নিসর্গ দিয়ে ঘেরা এই অঞ্চল। যখন চাঁদ ওঠে পুব আকাশে তার জ্যোৎস্নায় ভেসে যায় এ বাগান, বাগান সংলগ্ন অরণ্য উপত্যকা, বন বনানী সব। চাঁদের আলোয় ভেসে যাওয়া স্থান, তাই স্থানীয় ভাষায় এ জায়গার নাম মন্ডা কোঠি, মানে চাঁদের আবাস। শুধু নিভৃতে প্রকৃতির মাঝে অবকাশ কাটানোর এক মনোরম স্থান।
সকালে ঘুম ভাঙে পাখিদের কলকাকলিতে। বাংলো একটু উঁচুতে হওয়ায় সেখান থেকেই দেখা যায় চারপাশ। উঁচু নীচু সবুজ চা বাগান ঘেরা চারপাশ। দূরে নদী বয়ে চলেছে তার কলধ্বনি শোনা যায়। শুনলাম আরও দূরের ওই পাহাড়টা পেরোলেই মিরিক। এটা পাহাড়ের পুবদিক বলে একেবারে ভোরে সুর্যোদয় দেখা যায়। কাছাকাছি সোনাদায় আছে কিছু দ্রষ্টব্য। তবে কোনও কথা না বলে শুধু সবুজের সংগ পেতে চাইলে এর জুড়ি নেই।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴