দূর পাহাড়ে সূর্য টা তখন ডোবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। হাইওয়ের ধারে এই রেস্টুরেন্টের ছাদে আনমনে বসে ছিল অন্বেষা… একা। এই মায়াবী পরিবেশটা খুব প্রিয় ওর। আকাশ যেন আবীর খেলছে একটু পরেই চরাচর ডুবে যাবে অন্ধকারে তখনো ও বসেই থাকে , অবশ্য যেদিন ও একাই থাকে।
অন্বেষা মেহরোত্রা জন্মসূত্রে বাঙালি । এ তল্লাটের অন্যতম বড় চা বাগানের কর্মকর্তা সরতাজ মেহরোত্রার স্ত্রী । বাগানে সবার “বড়া মেমসাব”। অন্বেষার সঙ্গে সরতাজের আলাপ জলপাইগুড়ি শহরে, তরাই- ডুয়ার্সের চা বাগান নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়েছিল অন্বেষা, খুব সুন্দরী না হলেও ওর এক আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব আকৃষ্ট করত সহজেই। স্তাবকের সংখ্যা গুনে রাখা ছাড়া সেরকম কোনো আকর্ষণ ওর নিজের তরফ থেকে কারো প্রতিই ছিল না, কিন্তু সরতাজ মেহরোত্রা এক ঝড়ের মতো এসে ওকে উড়িয়ে নিয়ে গেল যেন। দুই বোনের মধ্যে ও বড়, বড় মেয়েকে পাঞ্জাবী পাত্রের সাথে বিয়ে দেওয়া নিয়ে একটু আপত্তি ছিল ওর বাবা মায়ের কিন্তু অন্বেষার আবেগ এবং যুক্তি দুইয়ের কাছে টেকা মুশকিল। সরতাজ মেহরোত্রার বাড়ি থেকে কোনো আপত্তির সুযোগ ই ছিল না। নিজের জীবনের ওপর কারো হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করেন না “হিলভিউ টি গার্ডেনের” বড়াসাব।
প্রথম প্রথম চা বাগানে এসে অবাকই হয়ে গিয়েছিল অন্বেষা!! এ যেন প্রায় রাজার জীবন, সবাই হুকুম পালনের জন্য একপায়ে খাড়া হয়ে আছে। খুব অস্বস্তি হত ওর। কিন্তু এই সতের বছরে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এই সতের বছরে অভ্যস্ত হয়েছে অনেক কিছুতেই, ছোট্ট একটি চাকরি আঁকড়ে থাকা বাবা এবং সারাজীবন নিজের সংসারকেই বিশ্বসংসার জেনে আসা মা, এই নিয়ে ছা-পোষা মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে অন্বেষা, কিন্ত নিজের জীবন যাপনের উচ্চাশা ছিল ওর চিরকালের তাই নিজেকে চেহারায়, ব্যক্তিত্বে, শিক্ষায়, সচেতনভাবেই আকর্ষণীয় করে তুলেছিল সাথে ছিল ওর গান, সরতাজেরর সাথে দেখা না হলে হয়ত ওর জীবনটা অন্য খাতে ব ইত। তবে এ জীবনকেও অন্বেষা উপভোগ করছিল ওর প্রিয় বাটার স্কচ আইসক্রীমের মত। কিন্তু কোথা থেকে যেন এক অপরিচিত সুর এসে কেটে দিচ্ছে পরিচিত ছন্দ!! বিয়ের ঠিক দুবছরের মাথায় একমাত্র ছেলে বিক্রমের জন্ম। ছেলের আটবছর বয়স হতে না হতেই সরতাজ আর অন্বেষা ছেলেকে পাহাড়ের একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছে। ভাল এজুকেশন তো বটেই স্ট্যাটাস সিম্বলের ব্যাপারটাও তখন খুব বড় ব্যাপার ছিল ওদের কাছে।
প্রায় প্রতি শনিবার বিভিন্ন ক্লাবে পার্টি, গসিপ, একটু আধটু নির্দোষ ফ্লার্টিং, ড্রিঙ্কস, এই নিয়ে উদ্দাম জীবন ওদের। বাপের বাড়ির সাথে যোগাযোগ বলতে কখনো সখনো ফোন। আর কোনো কাজে জলপাইগুড়ি গেলে একঘন্টার জন্য একটু ঢুঁ মেরে আসা। দুবার বাগান বদলে আরও ক্ষমতা নিয়ে সরতাজ মেহরোত্রা আবার এই হিলভিউ টী গার্ডেনেই ফিরে এসেছে। টিলার মাথায় বিশাল বাংলো, যেদিকে চোখ যায় সবুজ চায়ের গাছ, পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে গেলেই নদী, নদীর ওপারে ভূটান। বাংলোর কাঠের রেলিং ঘেরা বারান্দায় বসলে চোখের সামনে বিশাল এক ক্যানভাস, ঋতুর বদলে যার রং বদলে যায়। এই কারণে অন্বেষা র খুব প্রিয় জায়গা ওটি। যেমন এই রেস্টুরেন্টের ছাদে আনমনে একলা বসে থাকা। ইদানিং এইসব পার্টি গুলো একঘেয়ে লাগে ওর। ছেলের জন্য ফাঁকা লাগে, চোখের আড়ালেই বড় হয়ে গেল বিকি। মনে পড়ে পুরোনো কথা, বাবা মায়ের জন্য মনখারাপ হয়। একবার দুবার ওরা অন্বেষার কাছে এসেছিলেন, কিন্তু ওদের জীবনের সাথে নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারেনি, অন্বেষাও কখনো সেভাবে চায়নি, আর সরতাজের সময় কোথায় শ্বশুর শাশুড়িকে ফালতু সময় দেওয়ার। বোন প্রাইমারি স্কুলে চাকরি পেয়ে নিজের কলিগকে বিয়ে করে থিতু। দুই বোনের সখ্যতার দিনগুলো ওরা নিজেরাই কোথায় যেন হারিয়ে ফেলেছে।
ছেলের কাছে প্রতি মাসেই যায় অন্বেষা। দিনকয়েক কাটিয়ে আসে। ছেলের সঙ্গ পাওয়ার জন্য যেতে যেতে পাহাড় এখন ওর আত্মীয় হয়ে গেছে। বিকির স্কুলেই কয়েকমাস আগে পরিচয় হয়েছিল বিকির নতুন কেমিস্ট্রি টিচার মিঃ আয়ুষ বিশ্বকর্মার সাথে। বিকিই এক বিকেলে ওর স্যারকে ধরে নিয়ে এল ওর মাম্মার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে। দেখে অবাক হয়েছিল অন্বেষা কারণ গতকাল বিকেলেই ম্যালে মহাকালধামে ওঠার সিঁড়ির ওপর বসে একেই তো দেখেছিল আপনমনে গীটার বাজিয়ে গান করতে!! মরে আসা বিকেলে এক অচেনা গানের বিষন্ন সুর মায়াবী পরিবেশ তৈরি করছিল। অজস্র লোকের ভীড়েও ভদ্রলোকের এমন তন্ময়তা দেখে ওর মনে হয়েছিল সঙ্গীতের সাথে ভদ্রলোক গভীর প্রেমে আবদ্ধ। ছেলের তো স্যারের প্রশংসাই শেষ হচ্ছে না। আয়ুষ বিশ্বকর্মার ফর্সা মুখ লাল হয়ে উঠতে দেখে অন্বেষা থামায় ছেলেকে। তিনজনে মিলে পাহাড়ি পথে হাঁটতে হাঁটতে নানা গল্প হচ্ছিল কথায় কথায় অন্বেষা জানতে পারল আয়ূষের বাড়ি ঘুম থেকে একটু নীচে রিলিং নামে ছোট্ট একটি গ্ৰামে, ও বিক্রমদের হস্টেলেই থাকে। বিক্রমের গানের প্রতি ভালবাসা থেকেই ওর সাথে ভাব হয়ে গেছে, যা এখন ছাত্র শিক্ষক থেকে বেশি বন্ধুত্বের। আয়ুষ বলে “বিক্রম বলেছে আপনিও গান করেন” একটু অবাকই হয় অন্বেষা, বিক্রম ওর গান শুনল কখন? সরতাজ এসবে একদম ই আগ্ৰহহীন। মায়ের ভ্রূভঙ্গি দেখে মিটিমিটি হাসে বিকি, তুমি আপনমনে যখন গান কর আমি শুনেছি। একবার দিদাও বলছিল তুমি ভাল গান করতে। মা ছেলেকে বাংলায় কথা বলতে দেখে অরিন চুপ করেই থাকে, হটাৎ অন্বেষার খেয়াল হতেই “সরি” বলে। “নো নো ম্যাম ইটস ওকে, আমি একটু একটু বুঝি বাংলা কিন্তু বলতে পারি না। বিক্রম বাংলা বলে শুনে ভাল লাগল আমার”
মন্দিরার মনে পড়ে যায় ছেলের সাথে বাংলায় কথা বলা নিয়ে কত অশান্তি করেছে সরতাজ, কিন্তু অন্বেষার এই জিদটা ছিল , ছেলেকে বাংলা ও শেখাবেই। হয়ত সারাক্ষন হিন্দি আর ইংরেজি বলতে বলতে মনে মনে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল।
দূরে পাহাড়ের কোলে টুপ করে ডুবে গেল সূর্য টা। দার্জিলিং এ এখন কী করছে ওর বিকি? আর আয়ুষ ই বা কেমন আছে? ও কি এখন রিলিং এ? কত কথা ভাবছে অন্বেষা, মিসেস অন্বেষা মেহরোত্রা। সরতাজ ওর নিজের জগতেই মশগুল ইদানিং পদমর্যাদায় একটু ছোট আরেক কর্মকর্তার স্ত্রীর সাথে জড়িয়ে নানা রকম কথা শুনেছে মন্দিরা, তবে এ নতুন নয় এর আগেও এমন ছোট বড় ভোগ্যসামগ্ৰী নিপুণ হাতে ভোগ করতে কখনোই অনীহা ছিল না মিঃমেহরোত্রার। অন্বেষা জেনেও পাত্তা দেয়নি। নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত ছিল। আশেপাশে গুনমুগ্ধ অনেক ই ছিল আছেও আর ও জানত সরতাজ প্রবল উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং নিজের পারিবারিক জীবনে এমন কিছু করবে না যা তার কেরিয়ারের উর্ধ্বমুখী গ্ৰাফ কে নামাতে পারে। এবার ও তার অন্যথা হবে না হয়ত, জানে অন্বেষা। কিন্তু এসবের ওপর কেন যেন তীব্র বিরাগ জন্মাচ্ছে ইদানিং।
দেখতে দেখতে অন্বেষার ও বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল আয়ুষের সাথে। প্রায় আড়াই হাজার ফুট ওপরে ওদের ছোট্ট গ্ৰাম রিলিং। আয়ুষদের কমলা বাগান আছে, ইদানিং ওর বাবা হোমস্টের ব্যবসা নিয়ে মেতে আছে। অরিনের পড়াশোনা দার্জিলিং এই। ছবির মত সুন্দর ওদের গ্ৰাম, শান্ত কিন্তু ঝকঝকে, আয়ুষের মুখে এ কথা শুনে অন্বেষা বল ফেলেছিল “তোমার মত ..!!” মৃদু হেসে মুখ নামিয়ে নিয়েছিল আয়ুষ। হটাৎ করে নিজের প্রগলভতায় একটু লজ্জা পেয়ে গিয়েছিল অন্বেষা। এই বন্ধুত্ব অনেক টা কাছাকাছি এনে ফেলেছিল ওদের। বয়সে অনেক টাই ছোট আয়ুষ ওর চেয়ে কিন্তু সেটা কোনো বাধাই ছিল না। ম্যাল থেকে হাঁটতে হাঁটতে ওরা প্রায়ই অচেনা রাস্তায় চলে যেত, সাথে কোনোদিন বিকি থাকত কোনদিন থাকত না। গান শোনাত আয়ুষ, পাহাড়ের নানা লোকগান কখনও ইংরেজি, হিন্দি। ভুলে যাওয়া সুরগুলো আবার মনে পড়ে গিয়েছিল অন্বেষার। কদিন থেকে ফিরে এলেও মনটা পড়ে থাকত ওখানেই। আগে বিভিন্ন ক্লাব পার্টি নিয়ে মেতে থাকলেও কিছুদিন থেকে ওসব একঘেয়ে হয়ে উঠেছে যেন।সময় পেলে একটু এখানে আসে একা বসে আয়ুষের সাথে কাটানো সময় গুলোর কথা ভাবতে ভাল লাগে। ছেলের বোর্ড এক্সামের প্রস্তুতি চলছে তাই দার্জিলিং যাওয়াটাও ঘন ঘন হচ্ছিল মন্দিরার, একদিন ম্যাল থেকে চিড়িয়াখানা যাওয়ার ছায়ামাখানো পথে আয়ুষ আলতো করে চুমু খেয়েছিল অন্বেষার ঠোঁটে। কুলদীপের পর এই প্রথম কোন পুরুষের ঠোঁটের স্পর্শ পেয়েছিল ও। সরতাজের ছোঁয়ায় ভালবাসার চাইতে আগ্ৰাসী এক কাম হামলে পড়ে আজকাল যা মন অবধি পৌঁছনোর আগেই মিলিয়ে যায়। এতদিন এই অনুভূতি অন্বেষার মনেও ছিল না, কিন্তু ভালবাসার এক কষ্টদায়ক আবার ভীষন ভাল লাগার অনুভব কোথা থেকে যে এসে হাজির হল!! আয়ুষের স্পর্শ এক মৃদু অথচ স্থায়ী সুগন্ধের মত জড়িয়ে ধরেছিল অন্বেষা কে। ফিরে এসেও ওর আনমনে থাকা নিয়ে একদিন প্রশ্ন করেছিল সরতাজ “কেয়া বাত হ্যায় ? তবিয়ত তো ঠিক হ্যায় না?” হেসে এড়িয়ে গেছে ও। ছেলের পড়াশোনা নিয়ে খুব একটা ভাবে না ও কারন পড়াশোনায় যথেষ্ট মনোযোগী বিকি। স্কুল টাও ভাল যথেষ্ট। কিন্তু এখন কী ও শুধুই বিকির জন্য যায়? পাহাড়ের অচেনা বাঁকে বসে আয়ুষেরর গান “রেশম ফিরিরি…” কত গল্প , অন্বেষা কে কত অমূল্য সময় ফিরিয়ে দিয়েছে।
হটাৎ ফোন বেজে ওঠে, ওপারে সরতাজ, “ কাঁহা হো?” প্রশ্ন করে অন্বেষা কে । “আমি ভিউ পয়েন্টের টেরেসে” জবাব দেয় ও।“ওয়েট আ মিনিট, আই উইল জয়েন ইউ” ফোনের ও প্রান্ত থেকে ভেসে আসে সরতাজের গলা। অন্বেষা একটু অবাক হয় , সরতাজ এখানে!! একটা সময় ছিল দুজনে দেখা করতে উদগ্ৰীব হয়ে থাকত।তখন সরতাজ জলপাইগুড়ি শহরের পাশেই একটি বাগানে ছিল, এত দায়িত্ব পূর্ণ ও উচ্চপদেও ছিল না। ছোটবেলায় ওর মা মারা যাওয়ায় পর বাবার নতুন সংসারে সরতাজের থাকা হয়নি মোহালিতে দাদু দিদার কাছেই বড় হ ওয়া। ওর এক মামা ছিলেন উত্তরবঙ্গের একটি চা বাগানের ম্যানেজার, সেই সূত্রে ওর চা বাগানে আসা এবং ভালবেসে এখানেই চাকরি নিয়ে থেকে যাওয়া। নিজের পিতৃ মাতৃহীন শৈশব ও ওর বাইরের অ্যাফেয়ার্স বাড়িতে টেনে না আনার অন্যতম কারন। ছেলেকে সময় না দিলেও ছেলে অন্য প্রান ও। সংসারের সর্বময় কর্তৃত্ব অন্বেষার ই। কিন্তু নিজের জীবন নিজের মত করে চালায়।যত দিন গেছে দ্রুত সাফল্য অর্জন করার নেশা পেয়ে বসেছিল ওর। সংসার নিয়ম মেনে চললেও দুজনে বিচ্ছিন্ন দুটো দ্বীপে থাকে আজকাল। আর একাকিত্বের বোধটা ইদানিং অন্বেষার বড় প্রকট মনে হয়। অয়ুষেরর সাহচর্য ভাল লাগে মন্দিরার, আয়ুষ ওকে নিয়ে যেতে চায় ওর গ্ৰাম রিলিং এ। পরীক্ষা দিয়ে বিকি যাবে ওর স্যারের গ্ৰামে । আয়ুষ চাইলেও অন্বেষা যাবে না, আয়ুষের চোখে অন্বেষা ওর জন্যে এক অদ্ভুত আলো খুঁজে পায় কিন্তু সেই আলোকেই ভয় অন্বেষার।
“থাকবে আমাদের গ্ৰামে চিরকাল??” একদিন ফোনে জিজ্ঞাসা করেছিল আয়ুষ।“না তা হয় না আয়ুষ” কী বুঝল জানে না মন্দিরা। “সরি” বলে ফোন কেটে দিয়েছিল আয়ুষ। কিন্তু তারপর অনেক দিন হয়ে গেল আর ফোন করেনি। অন্বেষা কিভাবে বোঝাবে ওই অমূল্য সময় গুলো , একে অন্যের জন্য এই ভীষন সুন্দর এক অনুভূতি স্পর্শ হীন করেই ও বাঁচিয়ে রাখতে চায় মনের গহীনে। রোজকার জীবনের মাঝে তা যদি একঘেয়ে আর ক্লিশে হয়ে যায় তাহলে অন্বেষা যে শূন্য হয়ে যাবে। আয়ুষকে ও পূর্ণ করতে পারবে না।ওর এখনো জীবনের অনেক পথ বাকি। আর বিকিকে একটা ভাঙা পরিবার দিতে চায়না ও। ধুপধাপ আওয়াজ করে বিশালদেহী সরতাজ মেহরোত্রা উঠে এলো টেরেসে…”সারপ্রাইজ অ্যানি!!” অনেক দিন পর এই ডাক অবাক করে অন্বেষা কে!! “ম্যায় দেখ রহা হুঁ কুছদিন সে তুমহারি মুড অফ হ্যায় ইসিলিয়ে সারপ্রাইজ দেনে আ গয়া” মৃদু হাসে অন্বেষা “ তুমি লক্ষ্য করেছ!!!” সরতাজ ও হাসে। অনেক দিন পর একটু সহজ হয়ে দুজনেই কথা বলে যেন। কিছু পরে বাগানের পথে রওনা দেয় সরতাজ-অন্বেষা ফোনে অনর্গল কথা বলতে বলতে ড্রাইভ করে সরতাজ। মন্দিরার গাড়ি পেছনে ড্রাইভার নিয়ে আসছে। আজ বোধহয় পূর্ণিমা, বড় থালার মত চাঁদ উঠেছে। জ্যোৎস্নায় ধুয়ে যাচ্ছে বনভূমি। আয়ুষের কথা মনে পড়ছে আবার, ও ঠিক এমন মায়াবী জ্যোৎস্না হয়ে থাকুক অন্বেষার জীবনে। ফিরতেই হয় যে...ফিরছে অন্বেষা আবার ওর প্রাত্যহিকতায়, এক নতুন ভালবাসার জ্যোৎস্না মেখে।