চতুর্যামের স্পর্শটুকু নিও/শ্যামলী সেনগুপ্ত
চতুর্যামের স্পর্শটুকু নিও
শ্যামলী সেনগুপ্ত
------------------------------
চিরসখা হে,
চতুর্যামের প্রথম যামেই দেখা তোমার সঙ্গে।
কাগজ দিয়ে নৌকো বানাই
খেটোধুতি,বৈঠা হাতে মধুমাঝি সাজি
এ-দেশ সে-দেশ ঘুরতে ঘুরতে
নৌকো যখন ঘরের ঘাটে লাগে
তখন বুঝি,মনের মাঝে আঁকা আছে
ঘরের একটি ছবি।
তখন বয়েস সবে চোদ্দ হল
পড়ার বইয়ের আড়াল করে
চোখেরবালির বিনোদিনী
লাগছে যেন ভালো...
মধুমাঝির নৌকো এখন ঘাটেই বাঁধা থাকে
লাবণ্যর ভূত ভর করেছে তাকে
চোখের তারায় অমিত রায়ের ছবি
রডোডেনড্রনগুচ্ছ...উদ্ধত যত
শাখার শিখরে দোলে
যার যা লিখন ভালে
কেমন করে কাটাই তুমিই বল
দুই দুগুণে চার করে
দু'হাত এক হল...
দুপুর এখন গড়িয়ে যাচ্ছে
ভর সন্ধ্যার দিকে
চারুলতায় মন মজেছে
কমলাও নয় ফিকে
অনন্ত গান এমনইভাবেই বাজে
বুকের ভেতর স্ত্রীর পত্র পথ নিয়েছে খুঁজে...
আমিও বসি কাগজ-কলম নিয়ে
ঠিক তখুনি মেঠোপথটি দিয়ে
রাঙা ঘোড়ায় চেপে আমার খোকা আসে
তোমার শ্বেত-শ্মশ্রু সাজে শরত আকাশে
তৃতীয় যামে ঠাঁই নিয়েছি কবি
মনের মাঝে এখনো সেই ভবি
ভুলতে আর পারছে কোথায় বল...
সহসা কেমন কুমু মনে হল
নিজেকে--আজ ভাঙছি টুকরো করে
এ কি দ্বিধা!
কি যে দ্বন্দ্ব বেঁধেছ তার জুড়ে
এস্রাজের ছড় তো তোমার হাতে
যেমন বাঁধো, তেমনই তো ঘটে।
চতুর্যামের ঘাটের ধারে হঠাত যেন খুকি
অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছি‐‐‐
চিরসখা গো, পথ কি আছে বাকি?
ইতি
তোমার শেষ জীবনের গেহ
শ্যামলী'র স্পর্শটুকু নিও।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴