কুসুমের চিঠি, অনিমেষের প্রতি/সাগরিকা কর্মকার
কুসুমের চিঠি, অনিমেষের প্রতি
সাগরিকা কর্মকার
অনিমেষ,
ভালো আছ তুমি? কয়েকদিন দেরী হয়ে গেল চিঠি লিখতে তোমাকে, সত্যি বলতে কী মনের ছোট ছোট জমিয়ে রাখা কথাগুলো তোমায় জানাতে না পারলে তোমার উপন্যাসের লেখাগুলো অস্পষ্ট হয়ে ওঠে পড়ার সময়। মাথা ব্যথাটা অসহ্য হয়ে যাচ্ছে আজকাল, আর জানোই তো মন খারাপ থাকলে রাতে কিছু খেতে পারি না, ভোরের নামাজ পড়া যখন কানে আসে, ঘুমে বুঁজে আসে দুচোখ।
কী যে বলব, হয়ত 'লেটার বক্সের চিঠির দিকে তোমার চোখই যাবে না.. পড়ে থাকবে সপ্তাহ খানেক.. এ সপ্তাহের কথা পরের সপ্তাহে ... আবার আরও কত চিঠি এভাবেই বছর গড়িয়ে যাবে .. বসন্তের কথা হয়ত পড়বে নতুন বছরে ...।চিঠিটা পড় সময় নিয়ে, তোমার মাধবীর এক আকাশ ভালোবাসা মিশে রয়েছে এতে। তোমার গল্প-উপন্যাসের কোনো নায়িকার সাথে মিল খোঁজ না আমার, খুব সামান্যই আমি, কিন্ত তোমার চোখে খরস্রোতা (স্মিত হাসি ঠোঁটে)। জানি, খুব জানি, এই কাজল কালো চোখদুটো তোমার খুব প্রিয়, ভালোবেসে আলতো করে ছুঁয়েছিলে ...., লজ্জায় তোমার বুকে মুখ গুঁজে ছিলাম, শেষ যবে দেখা হয়েছিল আমাদের। ভালোবেসে যাব তোমায় শেষ শ্বাস ফেলা পর্যন্ত..... পরজন্ম যদি বিশ্বাস কর, তবে সে জন্মেও আমি তোমারি থাকব। একেক সময় খুব রাগ হয় তোমার ওপর, একটু ভালোবেসে সংক্ষেপে ডাকলেই বলবে 'কী বলে ডাকলে আমায়?' মনে হয় সারাটা দিন তোমার পথ চেয়ে থাকি, আর সাঁঝবেলায় খোঁপাটা সুন্দর করে বাঁধি, তোমার আনা বেল ফুলের মালা লাগাব বলে, কিন্ত হা ঈশ্বর, তুমি তো সবটাই জানো। চল না একদিন ঐ দূরে নীলাকাশে দুজনে মিলে ঘুড়ি ওড়াই, দেখি কার সুতো আগে কেটে যায়। ইচ্ছেগুলো বড়ো অদ্ভুত না আমার! হাসবে না বকবে তুমিই জানো, আমি তো মনের কিছু শব্দ বাক্যে পরিণত করে 'Inland letter'এ লিখে পাঠিয়ে দিলাম। তুমি তোমার নিজের জীবনে বেশ ভালোই আছ, ভালো-মন্দে মিশে। জানি নদীর স্রোত কখনও উল্টো দিকে বয়ে চলে না। শুধু মনে রেখ, আমি না ভালো থাকলে তুমিও ভালো থাকবে না কখনও।
ইতি
তোমার মাধবী (কুসুম)
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴