কাক-৩/সুকান্ত নাহা
|| কাক ৩ ||
সুকান্ত নাহা
মানুষ মারা যত সহজ
কাক মারা মোটেই ততটা নয়।
হাই তুলতে তুলতে দুটো গরম 'ট্যাবলেট'
অনায়াসে তুমি ছুঁড়ে দিতেই পার
অসহ্যের তলপেট লক্ষ্য করে।
প্রাইম টাইমে টি আর পি বাড়বে শুধু
এছাড়া টুঁ শব্দটিও হবে না কোথাও।
পথ চলতি মানুষজন বড়জোর অপাঙ্গে তাকাবে,
তারপর যে যার রাস্তায় ...
দায় কমবে রাষ্ট্রের বড় সস্তায়।
কে যেন বলেছিল, " একটা কাক মেরে ঝুলিয়ে দাও, বাকিরা এমনিই শুধরে যাবে... "
"ইল্লি আর কি! " ভূশণ্ডিদা রেগে লাল,
"ঝোলাতে হয় ল্যাম্পপোস্টে মানুষ ঝোলা।
শক্তি তো কবেই বলে গেছে, ' মানুষ বড় শস্তা, কেটে, ছড়িয়ে দিলে পারতো...' "
এসব তরজা শুনতে শুনতে পথ হাঁটছি ,
চৌরাস্তায় পৌঁছে শুনি সামনে পথ অবরোধ।
ঝাঁকে ঝাঁকে কাক নাকি প্রতিবাদে সামিল হয়েছে,
মানহানির প্রতিবাদ।
থমকে গেছে ট্রাফিক, জনতার ভীড়-
ডিজিটাল সিগন্যালে লাল আলো
৩৪ সেকেন্ড পার করেও,
কি অদ্ভুত ভাবে থমকে আছে! বদলায় নি রঙ!
নাকি বদলে গেছে ? আমারই চোখে ন্যাবা।
চেয়ে দেখি ভূষণ্ডিদা
তারস্বরে ফেটে পড়ছেন প্রতিবাদে।
সোচ্চারে সমস্বর কাগা সম্প্রদায়।
আর কি আশ্চর্য! এও কি চোখের ভুল? মানুষের মতো দেখতে
কিছু পাগল, তেএঁটে, মুর্খ, গোঁয়ার
ভীড় ঢেলে গুঁড়ি মেরে এগোচ্ছে ব্যারিকেডের দিকে।
আর খুব নিঃশব্দে রাস্তা থেকে সযত্নে খুঁটে নিচ্ছে
প্রতিবাদের বিলুপ্ত, প্রাগৈতিহাসিক ভাষা।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴