কবিতার কোনো দেশ হয় না/মাল্যবান মিত্র
কবিতার কোনো দেশ হয় না
মাল্যবান মিত্র
(১)
উদ্বাস্তু
কবিতার কোনো দেশ হয় না, যেমন কবির হয় না—
সে এক অনির্বচনীয় মুখ,
রাত্রির ঘাসে বসে আলোর নক্ষত্র গোনে।
তার নাগরিকত্ব— দু’চোখের মায়া,
তার পাসপোর্ট— অর্ধলেখা চিঠির ধুলোমলিন পৃষ্ঠা।
ভোরবেলার রহস্যময় ঘুঙুর বাজে তার কণ্ঠে,
সে হেঁটে যায়—
আলো না ছায়া, বোঝা যায় না ঠিক।
সে যেখানে দাঁড়ায়,
গাছেরা পাণ্ডুলিপি হয়ে যায়,
জল রূপ নেয় নীরব কবিতায়।
ভাষা নয়—
বুকের গহীনে অনুচ্চারিত কষ্টেই
সে লিখে চলে মেঘ।
যে বাড়ি তার নয়,
সেখানেই সে বাস করে।
যে দেশ তাকে চেনে না,
সেখানেই তার প্রেম—
এক ভুল ঠিকানার মতো
চিরকাল চিঠি হয়ে ফেরে, কবি ও তার কবিতা।
২.
দীর্ঘশ্বাস
কবিতার কোনো নাম নেই,
সে জন্ম নেয় অন্ধকারের ভাঁজে—
একটা ভিজে দেওয়ালে হঠাৎ ফুটে ওঠা শব্দের মতো
অসতর্ক, অথচ স্থায়ী।
তার ঘর নেই, কেবল জানালা—
সেখানে স্বপ্নেরা এসে বসে, পাখির মতো,
আর উড়ে যায়
যখন সকাল তাকে চিনতে পারে না।
সে কারো প্রেমপত্র হয়ে ওঠে না,
হয়ে ওঠে তার ছিঁড়ে যাওয়া খাম,
যেখানে ঠিকানার আগে লেখা থাকে একটি দীর্ঘশ্বাস।
সে চলে—নৌকার মতো, অথচ জলহীন,
সে দাঁড়িয়ে থাকে ছায়ায়,
যদিও তার নিজের নেই কোনো শরীর।
কবিতা হাঁটে,
জুতো তার ভগ্ন চরণামৃত,
চোখে তার অরণ্যের ভাষা।
তাকে তুমি থামাতে পারো না,
সে থামে না—
যেমন থামে না কিছু কান্না আর কবিতা।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴