উড়োচিঠি/সুদীপা দেব
উড়োচিঠি
সুদীপা দেব
তোমার কথা খুব মনে পড়ছে। এখন চৈত্রের এক বিকেল। এই দিনগুলো তোমার মনে আছে? এরকমই কোন একদিন ভীষণ ধুলোঝড়ের বিকেলে তোমাকে দেখেছিলাম ব্যস্ত হয়ে ছুটে সাইকেল চালিয়ে ফিরতে। তোমাকে ওই অবস্থায় দেখে খুব মজা পেয়েছিলাম সেদিন। আজ আর কোন কিছুতেই সেরকম কিছু হয় না। ব্যস্ততার ঝড় ধীরে ধীরে আমাকে তোমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে গ্রাস করে ফেলছে ক্রমাগত। আজকাল মনে হয় জানো, ব্যস্ততাকে এত বেশি আপন করে নিচ্ছি যে আমাদের দু'দন্ড বসে কথা দেওয়া, কথা রাখার সময় নেই । বোধহয় আমরা বড্ড বেশি নিজের কথা ভাবি। ভালো থাকতে চেয়ে অদৃশ্য হাত হাতে রেখে শুধু ছুটছি। কোথায় যে ছুটে যাচ্ছি .....। ইচ্ছে করে ঘড়ির কাঁটা স্তব্ধ করে তোমার সামনে বসে থাকি অনন্তকাল। অনেক কথা বলার আছে, শোনার আছে, এদিকে ওপরওয়ালার কী অভিসন্ধি তা কেই বা জানি। তাঁর ডাক এসে গেলে বশ করা সিংহের মতো লেজ গুটিয়ে সার্কাসের রিং থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
তোমাকে ছেড়ে যেতে হবে ভাবতে বুকে কেমন একটা অস্বস্তি হয়। তবু আমি আগে যেতে চাই। দেখা না হোক কথা না হোক শুধু জানি তুমি আছ। মাঝে মাঝে মনে হয় আমাদের সুন্দর সময়গুলো যদি ফিরে পেতাম। আগের মতোই অপার ভালোবাসায় তোমার কাছে সমর্পিত হতে পারতাম...সেখানে ব্যস্ততার প্রাচীর নেই।
আগামী প্রজন্ম যেন আরো বেশি বেশি ভালো থাকার, ভালোবাসার জিয়ন মন্ত্র শিখে নেয়।
তোমাকে লিখতে লিখতে আমার দু'চোখ ভরে জল কেন আসছে বল তো?
একটা কবিতা দিলাম।
পড়ে জানিও। চিঠি দিও।
গাছ
সুদীপা দেব
মাঝে মাঝে মনেহয়,
চৈত্রের হওয়ায় উড়ে যাওয়া তুলোর মতো উড়িয়ে দিই সেসব কথার ছাড়পত্র।
সাদা সাদা তুলোর মতো ভেসে যাক
দিগন্তের দিকে
খোলা খামে কথা ফুলের বীজ।
নগরে বন্দরে গ্রামে ছড়িয়ে যাবে
কিছু আনকোরা অবিনশ্বর জীবনের টুকরো।
তারপর কোন প্রেমিকের উঠোনে ,
মিশে যাবে মাটিতে
পর্বতে অরণ্যে কিংবা কোন পুকুরের পাড়ে।
মায়া রোদে ধৈর্য্যের রঙ নিয়ে
বুদ্ধশান্তির মতো
জন্ম নেবে সবুজ সবুজ ভালোবাসা গাছ ।
নাম হবে–
উড়োচিঠি।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴