আশ্বিনের বাউল/রানা সরকার
আশ্বিনের বাউল
রানা সরকার
তুমি জেগে আছো এখনও আধো জ্যোৎস্নার দূরের এই মুগ্ধ চরাচরে –
এখানে অরণ্যের উপরি আকাশটাকে দৃশ্যত স্পর্শে, দুচোখে ভরে নিয়েছো বুনো জোনাকির আলো ঃ
আঁধারের সংগোপনে মিলিত আজও তুমি রয়েছো ভগ্ন অনুভবে ;
আশ্বিনের মেঘ মিশেছে এসে নিবিড়ে নির্জনতায়, দেহাতি রাত্রি ফেরায় নিঃসঙ্গ কালো।
গ্রামীণ ধূপগুড়ির মফঃস্বলি হাওয়া পুব পাড়ার পান্থ নিবাসকে শীতল রেখেছে মাদলের রাতে –
আশ্বিনের এই নিরুদ্দেশ মেঘ ঝড় শেষে বৃষ্টির অপেক্ষায় জেগেছিল শ্যামাশ্রী প্রহরে –
এখানে সীমিত আঁধার , ভবঘুরে নদীটির মৃদু কলরোল জল্প্রলাপের শব্দে দূরের সমতটে –
এখানেই আঁধার ভাগ হয়, একক বাগানে জ্যোৎস্না হাঁটে ধীরে ।
মেঘ মুলুকের টুকরো আকাশ থেকেছে আনমনা বিষন্ন কোথাও , মুছে দিয়েছে নীল আরণ্যক ছায়া –
ঘন বাদলের রাত এনেছিল দুর্যোগের অশান্ত প্রলাপ , বনস্থলীর উঠোনে জল উৎসব এনেছে মুখর হাওয়া - ,
এই ঝড়ের রাতে আঁধারকে ভাগ করে দিগন্তের অচেনা রেখা , সুখী যাপনের চেনা অভয়া –
উত্তীর্ণ পরবাস , ঝড়ের অনেক পরে কোথাও দূরের মাদল শব্দে ভাসে ক্ষমা ।
পরবাসে শ্রীময়ী জ্যোৎস্না কাঁদে নদী উপকূলে , শব্দে কাঁপে বিলম্বিত রাত –
এখানে দোতারায় কান্না ফেরে , আদুরে জলঢাকার চর জ্যোৎস্নায় জাগে ঘুমের তেপান্তরে –
দরবেশ কালাচাঁদ তারপর এতদিন ফেরেনি শহরে , ফিরে গেছে কামরূপ এক্সপ্রেস দূরের দেহাতে -,
শারদ সকালে শিউলির মৃত ঘ্রাণ সকরুণ ছড়িয়েছে ক্রমে রুগ্ন হতাশ, বিপরীত প্রবাসে ।
ঝড়ের অনেক পরে আশ্বিনের মেঘ ফিরেছে আবার , মেঘ কালো রাত প্রয়াত হয়েছে এক একেকটি প্রহরে –
এখানে শোক সন্ত্রাসে জীবনের কালশুদ্ধি চেয়েছে দরবেশ আকালের দিনে ;
নদী আজ অরণ্যের সঙ্গে মিতালি করেছে ভাঙনের তীরে , অলস দুপুরে মেঘ সঙ্গ নিয়েছে বাউল –
মেঘ ফেরে আকাশের পথে , ছায়াঘন রাত্রির ধূসরে একতারা কেঁদে ওঠে দূরের বনবহলে।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴