আমার ইচ্ছেনদীর প্রতি/দেবদত্তা বিশ্বাস
আমার ইচ্ছেনদীর প্রতি
দেবদত্তা বিশ্বাস
প্রিয় ইচ্ছেনদী,
তোমার ইচ্ছে গুলো যাতে নদীর মতো বহতা পায় তাই সেই ছেলেবেলায় তোমায় ভালোবেসে নাম দিয়েছিলাম আমি। কেমন আছো তুমি ইচ্ছেনদী? আমাদের অদেখার এক একটা বছরের সমষ্টি যখন যুগে প্রকাশ পায় তখন তোমার প্রতি আমার স্নেহ সিঞ্চনের বিন্দু বিন্দু জলকণা আকাশ ভাঙা বৃষ্টি হয়ে নামে। আমার অনুমান তুমি সেই জলের তীব্র বেগে তোমার পার্বত্য প্রবাহের গভীর খাঁচে জমে থাকা নুড়ি পাথরের তীব্র বাঁধা অতিক্রম করে একদিন এসে দাঁড়াবে তোমার মোহনায়। মাঝের অনেকটা আঁকাবাঁকা পথে স্মৃতিচিহ্ন হয়ে থাকবে কিছু শ্যাওলা ধরা অতীত। শুনেছি সময় তার সমান্তরাল রাস্তার পদচিহ্ন রেখে যাবে তোমার খুব কাছে পিঠে কোথাও।
ইচ্ছেনদী, সাগরকে ছুঁতে হলে তোমায় যে পেরোতে হবে মাথা তুলে উঁচু হয়ে থাকা ছোটো ছোটো চরার বাধা। সেদিন কোনো এক চরায় দাঁড়িয়ে প্রতীক্ষারত আমার অবয়বে তুমি নিজের বর্তমানকে খুঁজে পাবে। তোমার স্বচ্ছতোয়া জলে আমি হব তোমারই সদবিম্ব। আমার ফেলে আসা অতীতে তখন তোমার জলের আলপনা। তোমার কাছে আমার বড় প্রশ্ন আমাদের ফেলে আসা দিন শুধুই কী স্মৃতি? তোমার বহতার কুলকুল শব্দ আজও যে আমার অন্তরে একই রকমভাবে পাল তুলে দেয়। মোহনার পথ ছেড়ে সাগরের পথে আমি সেদিন বয়ে যাব নিরুদ্দেশে, নতুনের দেশে। তুমি আমার সাথে যাবে তো ইচ্ছেনদী? আমাদের সোনালী অতীতের রঙটুকু নিয়ে সাম্পানের দাঁড় আঁটব আমি। অতীতের মরচে ঝেড়ে সুখস্মৃতিতে কানায় কানায় ভরব জলযান। আমি নতুনের পিয়াসী, আগামীর অনুগামী। দূরে, ওই দেখো দূরে জোয়ার আসছে!
ইতি
তোমার বর্তমান
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴