সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon

আমাদের সত্যিকারের ক্যাপ্টেন/স্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আমাদের সত্যিকারের ক্যাপ্টেন
স্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়

রবিবারের সাহিত্য আড্ডা গড়ে তোলার স্তম্ভ ছিল পার্থ, যার হাত ধরে আমরা এক পা দু'পা করে হাঁটতে শুরু করেছিলাম। যাকে আমরা আমাদের অধিনায়ক বা অভিভাবক ভাবতাম।
আড্ডার মূল ভাবনাই তাঁর হাত ধরে।
বাড়িতে এলেই আড্ডা নিয়ে তার সব ভাবনাগুলো আমার সাথে আর বুম্বাদার সাথে ভাগ করে নিত। এই তো সেদিন আমাকে দেখতে এসে কত আনন্দ করে বলছিল, তাতাসির দ্বিতীয় বছর এবার বৌদি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠো, অনেক কাজ বাকি। তোমার লেখাটা আমাকে শোনাও কারেকশন করতে হবে তো তোমার। যখন শোনালাম, বলল, প্রবন্ধ আকারে দিতে চাও নাকি গল্প। আমি বললাম তুমি দেখে দাও যে ভাবে তুমি চাইবে আমি চেষ্টা করব। আমার অত জ্ঞান নেই এই বিষয়ে। সেই প্রাণ খোলা হাসি দিয়ে বলে তোমার হবে। তুমি বার বার পড় দেখবে অনেক নতুন ভাবনা বেরিয়ে আসবে, তারপর আমি আছি তো।।
আজ কোথায় ভাই তুমি? কে আমার এই লেখাটাও দেখে দেবে। কে বলবে "গুড গার্ল, সাব্বাস, দারুণ! এইতো দারুণ হচ্ছে বৌদি, তুমি পারবে। বৌদি তাতাসির জন্মদিন এবার অন্যভাবে করব, তুমি আর দেবাশিসদা মঞ্চের দায়িত্বে থেক। পাবলোটাকে প্রচুর চাপ দেই, খুব ভরসা করি। মধু আলাদা ক্যাটাগরী, দারুণ মেয়ে। অরিন্দিতা মেয়েটাকে আমার একটা কিছু করে দিতে হবে। ছোটো বোন খুব কষ্ট হয় ওর জন্যে, এত ভালোবাসে আড্ডাটাকে। আমাদের আড্ডাটায় প্রত্যেকটা সদস্য ভীষণ আপন গো আমার। তার মধ্যেও এমন কিছু আছে যা কাঁটার মতো বিঁধে, একটা ব্যবস্থা করবো বুঝছ। সাধনটাকে নিয়েও চিন্তা করি রাতে রাতে বাড়ি ফেরে। আড্ডাটার জন্যে পাগলের মতো ছুটে আসে।"
ক্যাপ্টেনকে হারিয়ে ফেললাম সাহিত্য আড্ডা পরিবার। কিন্তু এভাবে কেন?

অনিন্দ্য (পার্থ) আমার পরিবারের এবং আমার খুবই প্রিয় একজন মানুষ। যার সাথে আড্ডা দিতে বসলে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় যে কীভাবে কেটে যেত তা বুঝতেই পারতাম না। বাড়িতে এলে  আমার শ্বশুরমশাই (তুষার বন্দ্যোপাধ্যায়)-এর লেখা নানা কবিতা নিয়ে ওর মতো করে আলোচনা করত। জ্যেঠু ওর লেখার জগতের আইডল ছিল। জ্যেঠু কে নিয়ে নানা ভাবনা চিন্তা ছিল পার্থর। আরো কতকিছু যে ভেবে রেখেছিল লিখতে বসলে শেষ হবার নয়।
অনিন্দ্য সত্যি কথায় এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। সদাই তাঁর চোখে মুখে তৃপ্তির হাসি থাকত। আজ অনেক রহস্য উদ্ঘাটনের মাধ্যমে তাঁকে যেন নতুন রূপে দেখতে পাচ্ছি। তার প্রতি সম্ভ্রম আরো বেড়ে গেছে। কারণ সে সত্যিকারের ক্যাপ্টেন।
একজন উচ্চপদস্থ কর্মচারী হওয়ার দরুন নানান ব্যস্ততার মাঝে পরোপকারিতায় সে নিঃশব্দে দুহাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অনুপ্রেরণার পর্বত এবং দায়িত্বের দিক থেকে সবসময় খুঁটির মতো দাঁড়িয়ে থাকত আড়ালে। বাবা ও মায়ের বড়ো আদরের বাবাই কোনোদিন উচ্চ স্বরে কথা বলেনি। সোমা (বোন) বড়ো আদরের (মনা) যাকে প্রতিদিন মাথায় হাত না বুলিয়ে দিলে চলত না। আজ মনে হয় এই রকম অগাধ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ যার এত প্রতিভা এবং অকল্পনীয় জ্ঞান যা আমরা পেয়েও এই ভাবে হারালাম। সত্যি বলতে দ্বিধা বোধ হচ্ছে না, আমরা অভাগা।
পার্থ...... যার হাত ধরে আমার প্রথম লেখা একটি অনুগল্প স্থান পায় তাতাসি পত্রিকায়। প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা যোগাতো আমার অভিজ্ঞতাকে লেখার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার। আর একই কথা ছিল পার্থর, তুমি লেখ আর বারবার পড়, দেখবা নতুন ভাবনা ফিরে ফিরে আসবে বৌদি। তোমার মধ্যে অনেক গল্প আছে বৌদি তুমি অভিজ্ঞতার মাধ্যমে পেয়েছো। শুধু লিখে যাও, আমি তো আছি ভুল হলে তোমায় বলে দেব। এখন বলতে ইচ্ছে হচ্ছে ভাই ফাঁকি দিয়ে চলে গেলে কীভাবে লেখা শুরু করব। মনে হচ্ছে তোমায় স্মরণ করেই নতুন লেখায় হাত দিতে পারব। কারণ তোমার অনুপ্রেরণা ছাড়া আমি কী পারবো এগোতে? পারবো ভাই? জানি, যেতে চাওনি পরপারে। কারণ অনেক স্বপ্ন সাজিয়ে রেখেছিলে। কিন্তু ঈশ্বরের তোমাকে এই অসময়ে বড়ো প্রয়োজন পড়েছিল তাই তো বোধহয় সময় দিল না তড়িঘড়ি  নিয়ে গেল না ফেরার দেশে।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                          software development company in siliguri,no 1 software
                          development company in siliguri,website designing company
                          in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                          in Siliguri website design company in Siliguri, web
                          development company in Siliguri