Hell- Mate/মিলি ভট্টাচাৰ্য
Hell- Mate
মিলি ভট্টাচাৰ্য
ও মশাই, আরে ও মশাই ---
আর মশাই, মশাই তখন উর্দ্ধশ্বাসে
পাই পাই সাঁই সাঁই করে সাইকেলে ছুটছেন অপিসের দিকে l অপিসে এখন খুব কড়াকড়ি l বায়োমেট্রিকে টিপ ছাপ দিয়েই তবে এন্ট্রি একদম দশটায় l
বয়স তো পঞ্চাশ পেরোলো, অতো জোরে আর পা চলে না প্যাডেলে, কপালটা মন্দ হলে যা হয়, আর কিl ডাল, লাউ ঘন্ট, বড়া ভাজা দিয়ে এক থালা ভাত সাপটে একটু মুখ শুদ্ধি মুখে দিয়েছে মাত্র! অমনি শান্তা এসে
মুদি দোকানের এক লম্বা ফর্দা ধরিয়ে দিল, একবার চোখ বুলিয়ে
জামার পকেটে পুরে নিল বিশ্বনাথ, হেলমেট টা হাতে নিল জাপ্টে, অন্য হাতে অপিসের ব্যাগ l
এই হেলমেট প্রায়ই ঘরে পড়ে থাকে, ব্যাগ নিয়ে বিশ্বনাথ নেমে যায় দোতলা থেকে নিচে, তারপর
করুণ মিহিসুরে হাঁক ডাক দেয় ---
শান তা আ ----
শান্তা বুঝে যায় তার অবলাকান্তের কান্ড, রান্নাঘরের ডাসটারে হাত মুছতে মুছতে রাগে গজগজ করতে করতে নেমে আসে নিচে, অপোজিট বাড়ির ঝিমলি দেখে আর হাসে, ওদের নতুন দাম্পত্য জীবনে এখনও রোমান্স থরোথরো, পানসে নয় এমন!
শান্তার মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে ঐ মিহি স্বরের ডাক শুনে ব্যালকনি থেকে ঝপাং করে হেলমেট টা নিচে ফেলে দিতে, সুন্দরী ঝিমলি কে দেখে নিজেকে সংযত রাখে!
এই মধ্য চল্লিশে শান্তা একটু
পৃথুলা, হাঁটুতে, গোড়ালিতে একটা উটকো ব্যথা জ্বালায় মাঝে মাঝে l
কিন্তু, বিশ্বনাথ আজ টনটনে, হেলমেট, অপিসের ব্যাগ সমস্ত গুছিয়ে গটগট করে নেমে গেল সিঁড়ি দিয়েl না, হাতে আজ যথেষ্ট সময়, ঠিক সময়ে পৌঁছে যাব অপিসে দশটার আগেই, ক্যাশ সেকশন এর নিখিল কে একটু tight দিতে হবে l রোজ দশটার আগে এসে দাঁত কেলিয়ে ওর গুডমর্নিং বলা বের করছি!
বছর বারো র পুরোনো দোস্ত
হমারা বাজাজ এ স্টার্ট -----
বাড়ি থেকে মিনিট পাঁচেক যেতেই
ঘড় ঘড় ঘড় ঘড় ------
স্কুটার টাল খেয়ে বেসামাল!
হা ভগবান!!
এই শীতেও বিশ্বনাথের কপালে ঘাম, স্কুটার টা তমালের দোকানে রেখে ছুট লাগালো বাড়ির দিকে l
শান্তা, শান্তা ---- অধের্য চাপ কলিং বেলে!
শান্তা আঁতকে ওঠে, ব্যালকনিতে ছুটে যায় l দেখে তার অবলাকান্ত কে l
গ্যারাজের চাবি টা দাও শিগগির -- --
কোনো প্রশ্ন না করে শান্তা ছুঁড়ে দেয় চাবি l
গ্যারেজে ঢুকেই মেয়ে মুনাই এর লেডিজ সাইকেল টা বাগিয়ে নেয়, তারপর, পাই পাই সাঁই সাঁই অপিসের দিকে ------
আরে ও মশাই ---
আরে দাদা ---
আরে বিশ্বনাথ ----
থামো থামো
না না, থামার সময় নেই, অপিসের তাড়া,,
আরে নতুন ট্রাফিক আইন নাকি?
কী বলেন?
তোমার মাথায় হেলমেট কেন?
আঁ?
আঁ না হাঁ!
দশটা বাজতে পাঁচ, অপিসে পৌঁছে তেরছা চোখে নিখিল কে দেখে গুডমর্নিং, মুখে জয়ীর হাসি,
মাথা থেকে হেলমেট খুলে পেটের মধ্যে গুবগুবিয়ে ওঠে হাসি l
ভাগ্যিস শান্তা খেয়াল করেনি, আর মুনাই তো স্কুলে l দেখলেই চিত্তির হতো! কে জানে রাস্তায় কেউ ভিডিও করেনি তো???
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴