সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
17-December,2022 - Saturday ✍️ By- নবনীতা সরকার 206

সাফল্য

সাফল্য
নবনীতা
^^^^^^

নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ায় মিনিট পনেরো৷ ট্রেনে উঠে গুছিয়ে বসার জন্য সময়টা যথেষ্ট ৷ তাই খুব একটা তাড়াহুড়ো করল না সুমনা। ধীরে সুস্থে ট্রেনের কামরায় উঠে নিজের জায়গায় লাগেজ গুছিয়ে চুপচাপ জানলা ঘেষে বসল৷ চার ঘন্টা এখন নিশ্চিত জার্নি ৷ জানলা গলে বাইরের দিকে চোখ গেল ৷ অক্টোবরের প্রায় শেষ ৷ পুজোটা এবার একটু দেরিতেই ৷ কাল পঞ্চমী ৷ পুজোর ছুটি মায়ের সাথেই কাটায় প্রতিবার ৷ মালদায় ৷ এবারেও তাই করবে ৷ মালদার ইংলিশবাজারে সুমনাদের পৈত্রিক ভিটে ৷ সেখানে মা থাকে। বোনের বিয়ে দিয়েছে বহুদিন হল ৷ ঘোরতর সংসারী বোন প্রয়োজন না পড়লে বাড়ি আসে না ৷ ভাই বিয়ে করে আলাদা হয়েছে আজ পাঁচ বছর হল ৷ সুমনা আগে মায়ের কাছেই থাকত ৷ যতদিন সে স্কুলে শিক্ষকতা করত ৷ আজ সাত বছর হল কলেজ সার্ভিস কমিশন দিয়ে শিলিগুড়ি কলেজে চাকরি পেয়েছে ৷ তারপর সেখানে বাড়িভাড়া নিয়ে একাই থাকে৷ মাকে অনেকবার নিয়ে যেতে চেয়েছে। মা রাজি হয়নি।
কামরার সব সিটই প্রায় খালি। শুধু আর এ সি সিটে বসে আছেন বয়স্ক এক দম্পতি৷ তাদের দিকে তাকাতেই মৃদু হাসি বিনিময় হল ৷ বেশি কথা বলার অভ্যেসটা একদমই রপ্ত করতে পারেনি সুমনা এত বছর শিক্ষকতা করেও৷ তাই একটা গল্পের বই খুলে বসে যায় যে কোনো জার্নিতেই ৷ ট্রেন চলতে শুরু করলে এখানেও তাই করবে ভাবছিল৷ এমন সময় হুড়মুড় করে তাদের কামরায় ঢুকে পড়ল একটি পরিবার ৷ দুজন অল্প বয়সি মহিলা , দুজন পুরুষ , একজন বয়স্কা মহিলা আর দুটি বাচ্চা ৷ অত্যন্ত রুচিহীন সাজপোশাকে ও অমার্জিত আচরণে পরিবারটি সিট দখলে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ৷ নিজের মতো করে থাকার অভ্যেস এতটাই তৈরি হয়ে গ্যছে সুমনার এখন যে এমন পরিবেশে ভীষণ অস্বস্তি বোধ হয়।
পরিবারের লোকগুলো এমনই আজব যে সুমনার বা কামরার উল্টো দিকে বসে থাকা দুজন মানুষের কোন অস্তিত্বই যেন তারা টের পাচ্ছে না ৷ সুমনার সাজপোশাক বরাবরই খুব সাধারণ এবং মার্জিত। বাইরের আবরণে যারা মানুষকে বিচার করে তারা কখনই তাকে দর দেবে না। এই পরিবারটিও তেমনই ৷ সুমনাকে কোণঠাসা করে তারা হাত পা ছড়িয়ে এমনভাবে বসল যে সুমনা উঠে যেতে বাধ্য হল ৷ দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়াল ক্ষণেকের স্বস্তি পেতে ৷ ভাবল লোকগুলি একটু গুছিয়ে নিক তারপর না হয় যাওয়া যাবে৷ ট্রেন একটু গতি নিলে সুমনা ফিরে এল একটু গম্ভীর হয়ে বই খুলে বসল নিজের জায়গায়৷
টুকরো যে কথাগুলো কানে ভেসে আসছিল তা থেকে যে কেউ ধারনা করতে পারবে যে নিছক একটি ব্যবসায়ী পরিবার এটি৷ কাঁচা পয়সা হয়ত বেশ আছে অথবা হয়ত হঠাৎ বড়লোক তাই কেমন যেন একটা আলগা চটক হাবেভাবে৷ বিয়ে বা কোন অনুষ্ঠান উপলক্ষে কলকাতা যাচ্ছে বোধহয়৷ জমকালো জামাকাপড় ও চাকচিক্যের আতিশয্যে শিক্ষিত আচরণ ঢাকা পড়ে গেছে। তাতে অবশ্য পরিবারটির কারো কোনো আক্ষেপ আছে বলে মনে হল না।
ট্রেনটি এখন যথেষ্ট গতি তুলেছে৷ কোথাও লেট না করলে একটার মধ্যেই ঢুকে যাবে হয়ত ৷আর কোনো স্টেশনে খুব বেশি সময় থামাথামি নেই ৷ একবারে মালদা। বেলা বাড়তে রোদ আর গরম দুটোই বাড়ে।
সুমনার ঠিক পাশে প্রায় গা ঘেষে বসে বয়স্কা মহিলাটি ৷ তার পাশে পরিবারের পুরুষ দুজন ৷ সুমনার উল্টো দিকে জানলার পাশে বাচ্চা দুটি আর তাদের পাশে ঐ দুজন অল্পবয়সি মহিলা ৷ হয়তবা বাচ্চাগুলোর মায়েরা
পরিবারের বয়স্কা মহিলাটি সুমনাকে নিয়ে পড়ে হঠাৎই। দু একবার চোখে চোখ পড়তেই খুব একটা অস্বস্তিতে পড়ে সুমনা ৷ মহিলা একটা কাষ্ঠল হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করে - " কোথায় যাওয়া হচ্ছে?
নিতান্তই ভদ্রতার খাতিরে সুমনা উত্তর দেয় ৷ মহিলাটির বোধহয় সময় কাটানোর এটাই পন্থা৷ না হলে সুমনা যে বই পড়ছে সে বিষয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ ই থাকবে না কেনো ! একটু পরেই আবার প্রশ্ন ৷ এবার একটু দুঃসাহসী বয়স্কা মহিলাটি। - "বাড়িতে কে কে আছে?" সুমনার অস্বস্তি শুরু হল ৷ খুব সামান্য হেসে সংক্ষপে জানায় সে ৷ এরপর প্রায় সাথে সাথেই প্রশ্ন এল "তা বিয়ে করেছ তুমি?" সুমনার খুব রাগ হয়৷ প্রথম পরিচয়ে কারো সাথে কেউ যে এসব ব্যাপারে কথা বলতে পারে, তা তার ধারনার বাইরে ছিল৷ কথা না বলে মুখ ঘুরিয়ে নেয় জানলার বাইরে৷ সবার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে সে তো বাধ্য নয়৷ মহিলাটি বোধহয় এতে একটু অপমানিত বোধ করে৷ তাই সামনে বসা খুব সম্ভব তার দুই ছেলের বউয়ের উদ্দেশে খুব ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে থাকে ..."আমার যখন বিয়ে হয় তখন আমার বয়স আটারোও হয়নি ৷ খুব সুন্দর ছিলাম কিনা শ্বশুরের দেখে খুব পছন্দ হয়েছিল ৷ তখনই পারলে আমাকে নিয়ে চলে আসে ৷ কিন্তু বাবা মার খুব শখ ছিল বড় করে বিয়ে দেবে মেয়ের ৷ তাই...." বলে একটু থামল মহিলা৷ সামনের অল্পবয়সী বউ দুটির মুখে কোনো কথা নেই৷ সুমনা তাদের দিকে এক ঝলক চোখ বুলিয়ে বুঝল এ গল্পে তাদের কোনো আগ্রহ নেই৷ হয়ত বা আগেও বহুবার শুনেছে এসব ৷ মনে মনে হাসল সে। হায়রে মানুষ! একটু পরে একটা পান মুখে গুজে আবার একা একাই বকতে শুরু করল মহিলাটি " বছর ঘুরতে না ঘুরতেই দিনু এল৷ তারপর তনু তারপর মিনু , তিন তিনটে বাচ্চাকে একা হাতে সামলে বড় করেছি৷ আজ সেই মিনুর মেয়ের বিয়ে৷ ভাবা যায়! মিনুকেও না আমি আঠারো হতে হতে বিয়ে দিয়েছিলাম৷ তাই তো আজ নাতনির বিয়ে দেখে যেতে পারছি৷ উপরে গিয়ে তোমাদের বাবাকে কৈফিয়ত দিতে হবে না আমাকে?"
মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে যায় সুমনার। মনে মনে ভাবে বেশিরভাগ মানুষের জীবনের সব সার্থকতাই শুধু বিয়ে সংসার বাচ্চা মানুষ করা এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে৷ আর কিছুই যেন করার নেই জীবনে৷ সুমনা বিয়ে করতে চাইত না ছোট থেকেই৷ বিয়ে হলও না আর৷ অনেকে অনেক কিছু ভাবে৷ বলেও৷ কিন্তু সুমনা কাউকে বোঝাতে পারে না যে সেও জীবনে খারাপ নেই৷ স্কুল-কলেজে পড়িয়ে এত টাকা রোজগার করে, মাকে নিয়ে বছরে বছরে বড় বড় জায়গায় ডাক্তার দেখিয়ে, কত কত তীর্থ দর্শন করিয়ে, বোনের বিয়ে দিয়ে, ভাইয়ের ব্যবসা দাঁড় করিয়ে সেও তো নিজের মতো করে জীবনকে চালিয়ে এসেছে এত কটা দিন। এসবের মধ্যে কি জীবনের কোনো সার্থকতাই নেই? নিজের জন্য কবে কি করেছে সে ? করতে চায়ও নি কখনও৷ ভাই বোনেরাও বলেনি কোনোদিন৷ ওদের সুখেই নিজের সুখ খোঁজে সুমনা চিরটাকাল৷ এসব কি মানুষ হিসেবে , পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে কিছুই সাফল্য নয়? মা বিয়ের কথা বলে বলে হয়রান হয়ে ইদানীং চুপ করে গ্যছে৷ চল্লিশ বছর বয়স হয়ে গেছে তার। গত ষোল সতেরো বছরের সংগ্রামী জীবনের ছাপ পড়েছে চোখে মুখে। খুব আহামরি দেখতে সে কোনোকালেই ছিল না৷ তার উপর বয়স ও শ্রম ন্যূনতম লাবণ্যটুকুও কেড়ে নিয়েছে এখন। হয়ত তাই আর চাইলেও তেমন বিয়ে হবে না তার ৷ কিন্তু তাতে সত্যিই কি কিছু এসে যায় সুমনার? এই কথাটা কিছুতেই বোঝাতে পারে না সে কাউকেই৷
ট্রেন থামল হিরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে৷ আর কিছুক্ষণ , তারপরই এই অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে মুক্তি, ভাবল সুমনা। এমন সময় একটি অল্পবয়সী ছেলে এল সুমনাদের কামরায়। এসে সুমনার পাশে বসা বয়স্কা মহিলাকে পিসি বলে সম্বোধন করে প্রণাম করল ৷ খুব গদগদ হয়ে মহিলাটি সামনে বসে থাকা তার ছেলের বউদেরকে বলল ... "এই দ্যখো এ হল গিয়ে আমার দাদার ছেলে ৷কতবার না তোমাদের গল্প করেছি ওর কথা ... খুব পড়াশোনা করা ছেলে হ্যাঁ ৷ কিন্তু কোনো ঘ্যাম নেই। বড়দের খুব সম্মান করতে শিখেছে ৷ বিলেত থেকে ফিরেও দেখ কেমন মাটির মানুষ ৷ কত্ত বড় চাকরি নিয়ে দেশে ফিরেছে জানো ! তোমাদের কারো বিয়েতে আসতেই পারে নি ৷ মুন্নির বিয়েতে তাই যাবেই ৷" এতগুলো কথা একসাথে বলে থামল মহিলা৷ সুমনার মনে হল কথাগুলো যেন তাকে শুনিয়েই বলা হল ৷ ভাবটা এমন টাকা-পয়সা-শিক্ষা কোনো কিছুর কমতি নেই তার পরিবারে সেটা সবাই বুঝে নিক ৷ ছেলেটির আওয়াজ বিশেষ পাওয়া যাচ্ছে না ৷ সুমনার খুব ইচ্ছে হল ছেলেটিকে আর কামরার বাকিদের মুখের অভিব্যক্তি দেখার৷ সামান্য ঘাড় ঘুরিয়ে দ্যখে ছেলেটিকে সুমনা ৷ বছর ছাব্বিশ/সাতাশের সুদর্শন যুবক ৷ একটু রোগাটে গড়ন৷ মহিলার প্রায় কোল ঘেষে বসে আছে ৷ সুমনার সাথে হঠাৎই দৃষ্টি বিনিময় হতেই ছেলেটির চোখে যেন বিদ্যুৎ খেলে যায় ৷ চকিতে উঠে দাঁড়ায় ছেলেটি ৷ সুমনার দিকে তাকিয়ে হাসিহাসি মুখে এগিয়ে আসে৷ ধুপ করে একটা প্রণাম করে সুমনাকে৷ ঘটনার আকস্মিকতায় অবাক হয় সুমনা সহ কামরার বাকি সবাই ৷
- " দিদিমণি আমাকে চিনতে পারছেন ? আমি দীপক ৷ দীপক পাল ৷ ক্লাস সেভেনের সেই ছেলেটি যে একবার আপনাকে বাথরুমের সামনে কলার খোসা রেখে ফেলে দিয়েছিল ৷ আপনি দশদিন স্কুলে আসতে পারেননি ৷ আর তারপর এসেও আমায় কিছুই বলেন নি , উল্টে আমাদের দুষ্টু ছেলেদের গ্রুপটাকে আপনি স্পেশাল অ্যাটেনশন দিতে শুরু করেছিলেন ৷ আপনার চেষ্টায়ই তো ধীরে ধীরে আমরা বদলাতে শুরু করলাম ৷ মনে পড়ে দিদিমণি ?আপনার জন্যই আজ আমরা সবাই সাফল্যের মুখ দেখেছি ৷ আমরা তো ভেবেও ছিলাম একবার আপনার সাথে দেখা করতে যাব সবাই মিলে ৷ আপনার ফোন নম্বরটা যদি দেন দিদিমণি ...."
আচমকা সম্বিত ফেরে সুমনার ৷ কামরার সবকটা চোখ যেন তার দিকেই গেঁথে আছে ৷ বয়স্কা মহিলাটির থমথমে মুখে ভীষণ একটা অবিশ্বাসী ভাব ফুটে উঠেছে ৷ দূরে বসে থাকা দম্পতির চোখে সম্ভ্রমের দৃষ্টি দেখতে পায় সুমনা ৷ অল্পবয়সী মহিলা দুজনও কেমন যেন অবাক হয়ে তাকে দেখছে ৷ আচ্ছা ওরা সুমনাকে ঠিক কী ভেবেছিল ? আর যাই ভাবুক কোনো বিলাতফেরত ছেলের প্রাক্তন শিক্ষিকা নিশ্চই ভাবেনি ৷
- "আপনি শুনেছি এখন শিলিগুড়ি কলেজে আছেন ৷ সব খোঁজ নেওয়া হয়ে গ্যছে আমাদের ৷ কলেজে চলে যাব ঠিক একদিন আমরা সবাই কিন্তু ..."
চিবুকটা ছুঁয়ে একটা চুমু খায় সুমনা ৷" ভালো থাকো" ... হাত তুলে আশীর্বাদ জানায় ৷
-" শুধু কলেজে কেনো ? বাড়িতেও এসো ৷ আমন্ত্রণ রইল ৷ এই নাও আমার মোবাইল নম্বর ৷ একটু ফোন করে এস শুধু "একটা সাদা কাগজ এগিয়ে দেয় ছেলেটির দিকে সুমনা ৷
দীপক পাল ৷ হ্যাঁ মনে পড়ছে ৷চাকরি জীবনের ঠিক প্রথম বছর পেয়েছিল এই ছেলেটিকে ৷ তখন এরা ক্লাস এইট ৷ এদের কল্যানেই তো পা মচকে পড়েছিল সুমনা দশদিন ৷ উফ্ সে কি অবস্থা ! একে ভুলবে কেমন করে সে ? তবে ছেলেগুলি বড় অদ্ভুত ছিল ৷ ঐ দশদিন বাজার করা , রেশন আনা , দোকান করা সব করে দিয়েছিল ওরা পালা করে ৷ অবশ্য তারপর থেকে সুমনাও খুব খেটেছিল ছেলেগুলির পেছনে ৷ একটা জেদ চেপে গিয়েছিল ওদের ভালো করার ৷ অবশেষে মাধ্যমিকে ও উচ্চমাধ্যমিকে জেলায় খুব সাফল্য পেয়েছিল ওরা ৷ কতদিন আগের কথা তবু সব পরিষ্কার মনে পড়ে গেল সুমনার ৷
ট্রেন মালদা স্টেশনে ঢুকছে ৷ লাগেজগুলো গোছাতে লাগত সুমনা ৷ হাত লাগালো ছেলেটিও ৷
-"চলুন দিদিমণি আমি এগিয়ে দিচ্ছি ৷ "
- না না থাক্ থাক্ ৷
কোনো বারণ শুনল না ছেলেটি ৷
-"ট্রেন এখানে পনেরো মিনিট দাঁড়াবে ততক্ষনে আপনাকে ভিড়টুকু পার করে দিয়ে আসতে পারব আশাকরি ৷ এটুকু করতে দিন দিদিমণি৷ কত ঋণ যে জমে আছে আপনার কাছে ..."
চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এল আচমকাই সুমনার৷ এত শ্রদ্ধা, এত ভালোবাসা এখনও বেঁচে আছে যে মানুষের মনে সে তো তার নিজের হাতে গড়া ছাত্র ৷ তারপরেও কি সে সফল নয়?
কামরার সবাইকে একমুখ হাসি দিয়ে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে আসে সুমনা ৷ পেছনে ভারি ব্যাগ হাতে তার তৈরি সফল অনুগত ছাত্রটি ৷ এমন কত কত ছাত্র না জানি তার শিক্ষার সুধারসে আজ সাফল্যের মুখ দেখেছে ৷ তবু কি সে সামাজিক সাফল্যের মানদন্ডে পুরোপুরি উতরে যেতে পেরেছে? এ সমাজ তো নির্দিষ্ট করেই রেখেছে কোন্ মানুষ সফল কোন্ মানুষ বিফল ৷ মনে মনে হাসল সুমনা ৷ একটি মানুষ যেমন আর একটা মানুষের থেকে আলাদা , তেমনই তাদের জীবনে সাফল্যের সংজ্ঞাগুলোও আলাদা ৷ যে মানুষ জীবনকে যে আঙ্গিকে দেখতে ভালোবাসে তার কাছে সাফল্য সেভাবেই তো আসে ৷ আর সেই প্রেক্ষিতে দেখতে গেলে তার জীবনও যথেষ্ট সফল। অন্তত তার কাছে ...সমাজ , সংসার , মানুষজন যাই ভাবুক না কেন।
সুমনা ভিড় ঠেলে এগিয়ে চলে সামনের দিকে৷ পেছনে পড়ে থাকে সাফল্যের বিভিন্ন সংজ্ঞায় মন্ডিত বিরাট এক পৃথিবী৷

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri