সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon

ভালোবাসার ডুয়ার্স/অলক পর্না সেনগুপ্ত ব্যানার্জী

ভালোবাসার ডুয়ার্স
অলক পর্না সেনগুপ্ত ব্যানার্জী
---------------------------------

সকাল আটটায় তড়িঘড়ি মেয়েকে স্কুল বাসে তুলে বাড়ি ফেরার পথে থমকে দাঁড়ায় শ্রাবনী!! “আঃ!! কী সুন্দর!!” আপনমনে বলে ওঠে ও।ডিসেম্বর মাস ঝকঝকে রোদ উঠেছে কয়েকদিন বাদে দূরের নীল পাহাড়টা আজ আরও যেন ঝকঝক করছে, বরফের মুকুট পড়া শৃঙ্গগুলোর নাম জানা নেই ওর তবে সেই মুহূর্তে ওর মনে হয় ঠিক যেন এক গরবিনী রাজকন্যে অলস ভঙ্গিতে শীতের রোদ পোহাচ্ছে।
ডুয়ার্স, এই ডুয়ার্সের মাটিতেই শ্রাবনীর জন্ম, বেড়ে ওঠা। এই পাহাড়, জঙ্গল, চায়ের বাগান, ছোট্ট ছোট্ট জনপদ, খরস্রোতা নদী রোজই ওর চোখে নতুন নতুন রূপে ধরা দেয়। বাবার চাকরির সুবাদে চা বাগানেই ওর জীবনের সবথেকে
সুন্দর সময়
কেটেছে। টিলার ওপর দেবদারু গাছের নীচে দুপুরের রোদে পিঠ দিয়ে নানা রঙের সোয়েটার বুনত মা, ওর অতীত বর্তমানে ডুয়ার্স তেমনি নানা রঙে ভালোবাসার ওম জড়িয়ে আছে। ছোটবেলার সেই ভালোবাসার জনদের সাথে আদিগন্ত ঢেউখেলানো চায়ের বাগান আর দূরের ভূটান পাহাড় ও শ্রাবনীর কাছে সেই মানুষগুলোর মতোই। যাদের সাথে আপনমনে কথা বলেছে কত দিন, আজও বলে।
শ্রাবনী যেখানে থাকে এই ছোট্ট জায়গাটায় বলতে গেলে কোনো নাগরিক সুবিধা নেই। ভাল স্কুল, দোকানপাট, ডাক্তার কিচ্ছু না। মেয়েকে ভোরবেলা কুড়ি কিলোমিটার দূরের স্কুলে পাঠিয়ে সারা দিন টেনশনে থাকে, অসুখ বিসুখ হলেই আতঙ্ক, পার হতে হয় লম্বা পথ। পড়াশোনার জন্য অনেকের মতো শ্রাবনীর ছোটবেলাটা হষ্টেলেই কেটেছে। তবুও যেন ভালোবাসা আরও নিবিড় হয়েছে এই ডুয়ার্সের প্রতি। এর বাইরে বেশিদিন কাটালে হাঁফ ধরে ওর।
ডুয়ার্স শ্রাবনীর কাছে এক বিস্ময়কর ক্যানভাস, যেখানে নানা রঙের প্রকৃতি তো শুধু নয় নানা রঙের মানুষ, তাদের নানা ভাবে জীবন কে যাপন করা, কথা বলার ভাষাও কতরকম। শ্রাবনী অনর্গল কথা বলতে পারে সাদ্রিতে, নেপালিতে। বন্ধু, সহকর্মী সবাই ভিন্ন সংস্কৃতির। কতকিছু শিখছে রোজ বিভিন্ন বহমান সংস্কৃতির কাছ থেকে। কত অভাবে অঅসুবিধের মধ্যেও সমান্তরাল ভাবে বাস করা ওদের। কিন্তু ক্রমশ বদলে যাচ্ছে প্রকৃতি, ধুঁকছে ওর প্রিয় চায়ের বাগানগুলো যাদের কেন্দ্র করেই তো ডুয়ার্স!! চাহিদা গ্ৰাস করেছে শুদ্ধতাকে। না, এর কোনও প্রতিকার শ্রাবনীর করার সামর্থ্য নেই ওর আছে শুধু ভালবাসা, ছোটবেলায় দাদুর বাড়ি যাওয়ার সময় বাবা জায়গা চেনাত, নদী চেনাত, শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে সেবকের রাস্তা শ্রাবনীর আজ ও ভীষণ প্রিয়, বাবা করোনেশন ব্রিজ তৈরির গল্প বলত, আরও কত পুরোনো কথা!! বাবা মা ডুয়ার্সকে চেনাত আর ভালোবাসতে শেখাত। ওই ভালোবাসা টুকুই শ্রাবনীর সম্বল যা শ্রাবনী ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত করতে চায়।
শ্রাবনীর চোখে ওর ডুয়ার্স চিরচেনা আবার চিরনতুন। আজো দূর পাহাড় থেকে বৃষ্টির ছুটে আসা, শীতের কুয়াশা মাখা ভোর কিংবা জঙ্গলে বদলে যাওয়া পাতার রঙ ওর মনে বিস্ময় জাগায়। মনে অন্তঃস্থল থেকে উঠে আসে এক কৃতজ্ঞতা বোধ ডুয়ার্স কে নিজভূমি বলতে পারার জন্য।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri