সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
24-November,2022 - Thursday ✍️ By- সৌগত ভট্টাচার্য 182

বাদলবন

বাদলবন
সৌগত ভট্টাচার্য
০০০০০০০০০০

-- মেঘ কোথায় গেল? সকাল থেকে মেঘকে দেখছি না!
--- কেন! মেঘ আকাশে!
--- আকাশের মেঘ না!
--- তাহলে?
--- মেঘ মানে কৃষ্ণচূড়া!
--- আচ্ছা তোকে কৃষ্ণচূড়া বলে ডাকে রাধাচূড়া নাকি রাধা!
--- না, ছুটি বলে।
--- কিসের ছুটি গরমের? হা হা হা!
--- ছুটি যে কিসের….
--- হুম
--- তুই মেঘকে দেখতে পাচ্ছিস কি? 
--- দেখছি না তো!
--- আরেকটু উঁচু হয়ে দেখনা লক্ষ্মীটি!
--- আমি আর কী ভাবে উঁচু হব বল! ডাল পালা নিয়ে এইতো আমি… তাও যদি শালের মত লম্বা হতাম!
--- অমলতাসকে একবার বল না ও মেঘকে দেখতে পায় কী না, ও তো অনেক লম্বা!
--- অমলতাস এখনো ঘুমিয়ে আছে।
--- আজ সকাল থেকে মেঘের কোনো খবর পাস নি তুই? পাখিরা আসেনি? হাওয়া আসেনি কৃষ্ণচূড়ার গন্ধ নিয়ে?
--- না, পাইনি জন্যই তো দুশ্চিন্তা হচ্ছে। খবর পেলে কি আর তোকে বিরক্ত করতাম!
--- দ্যাখ রাধা বৃষ্টি নামবে বলে মেঘলা হয়ে আছে জঙ্গল... তাই হয়ত দেখা যাচ্ছে না কৃষ্ণচূড়াকে!
---- মেঘের ভেতর মেঘ কি হারায়?
--- নদীর ওপারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, শব্দ পাচ্ছিস?
--- পাচ্ছি! আমার আজ এসব শব্দটব্দ ভালো লাগছে না রে জারুল! ঘ্যানঘ্যান করিস না! যেটা বলছি পারলে সেটা কর!
--- আচ্ছা আচ্ছা, অমলতাসকে বলছি!
--- আমি খোঁজ নিতে পারলে কাউকে বলতাম না... আমার শিকড় মাটির অনেক গভীরে... নড়াচড়ার উপায় নেই… সারা শরীরে কত ফুল, পোকাও…
                         
                          *****

--- অমলতাস বলল, দূরে মানুষের দল বড় কালো গাড়ি নিয়ে এসেছে আজকেও, রাস্তা বানানোর গাড়ি।
--- আমাদের জঙ্গলের ভেতর রাস্তা?
--- সে তো মানুষরা কবে থেকেই রাস্তা বানাচ্ছে গাছ কেটে, শেকড় উপড়ে,!
---- আমি জানতামই না ... তাই দিনরাত জঙ্গল জুড়ে এত শব্দ! তাই পাখিরা আসেনি হয়ত খবর দিতে! 
--- হবে হয়ত। ওসব ভেবে কাজ নেই, যা, তুই কাজ সেরে নে!
---- মেঘের একটা খবর পেলেই কাজে হাত দেব। সব কাজই বাকি। রান্নাবাড়া ফুল ফোটানো পাতা ঝরানো!
--- আচ্ছা গাড়িগুলো থেকে একটা কেমন যেন শব্দ আসছে রে রাধা... শুনতে পাচ্ছিস?
--- হ্যাঁ পাচ্ছি জারুল, পাচ্ছ! করাত দিয়ে বুকের পাঁজর চেরার শব্দ...

                        *****

---- আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টি জল আমাদের জঙ্গলের পাতার স্পর্শ পাওয়ার আগে, মেঘ আমাকে স্পর্শ করত... মেঘের কোনো শরীর নেই শুধুই ছায়া।
--- হুম, বড় মায়াবী ছিল কৃষ্ণচূড়া!
--- মেঘের জন্য কষ্টের চেয়ে মায়া ছিল বেশি!মায়া যে মায়া আজও বৃষ্টি হয়ে ঝরে!
--- হুম... 
--- সন্ধের একটু আগে কৃষ্ণচূড়া মানে মেঘের লম্বা কালো ছায়া পড়ত আমার সারা শরীর জুড়ে... 
--- তারপর!
--- তারপর দুটো ছায়া মিশে যেত সন্ধ্যার বাদলবনে...
--- তারপর?
--- রাত নামলে মেঘ আমাকে ছুটি বলে ডাকত!

                      *******

---- আচ্ছা অমলতাস দ্যাখ... 
--- আবার কি দেখব বল?
---- রাধাচূড়ার সামনে কি করছে মানুষের দল?
---- আমাদের জঙ্গলে নতুন ঝকঝকে রাস্তা হয়েছে দেখছিস না? 
--- সে তো দেখছি
---রাধাচূড়ার গোড়া পাকা করে শান বাঁধিয়ে দিচ্ছে!
--- কেন?
--- মানুষকেই জিজ্ঞেস কর! 
--- সব সময় ইয়ার্কি মারিস না। রাধাচূড়ার গায়ে চৌকো মতো ওটা কি লাগানো, বল না!
---তুই ও সব কথায় ন্যাকামো করিস না।
--- ওটা কি?
--- ওটাকে মানুষ সাইনবোর্ড বলে। তাঁরা নিজের কৃতিত্ব লিখে রাখে সাইনবোর্ডে…. জঙ্গল কেটে রাস্তা হলে মানুষ রাস্তার নাম দেয়, নিচে খোদাই করে নিজের নামও লেখে। 
--- তাই বলে রাধাচূড়ার শরীরে গজাল দিয়ে সাইনবোর্ড লাগাচ্ছে!
--- মানুষকে না বলার ক্ষমতা গাছেদের নেই। গাছের ভাষা মানুষ বোঝে না! 
---সাইনবোর্ডে কী নাম দিয়েছে রে মানুষ এই রাস্তাটার?
--- কৃষ্ণচূড়া সরণী।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri