বাঘ প্রজননের সফল রূপায়ন বেঙ্গল সাফারিতে
বাঘ প্রজননের সফল রূপায়ন বেঙ্গল সাফারিতে
গৌতম চক্রবর্তী
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
২০১৭ সাল। ভয়ংকর করোনাকাল। প্রথম দফার করোনার দাপটে সারা রাজ্য ব্যতিব্যস্ত। দেশব্যাপী সে বছর লক ডাউন শুরু হলে দেশের সমস্ত চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় জু অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। রাজ্য বনদপ্তর এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারি পার্কও প্রায় তিন মাস ধরে সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বন্ধ ছিল না রয়্যাল বেঙ্গলের প্রেমপর্ব। গল্পটা বলার আগে একটু ফ্ল্যাশ ব্যাকে যাওয়া প্রয়োজন। বেঙ্গল সাফারিতে সেইবছর ডিসেম্বর মাসে যখন চালু হল টাইগার সাফারি সেইসময় রয়েল বেঙ্গল টাইগার শীলা এবং স্নেহাশীসকে নন্দনকানন থেকে কলকাতা চিড়িয়াখানা হয়ে আনা হল বেঙ্গল সাফারিতে। পুরুষ বাঘ স্নেহাশীষ এবং স্ত্রী বাঘের নাম ছিল শীলা। বেঙ্গল টাইগার সাফারিতে দেখা যেত এই দুটি বাঘকে। শুরু হল পরীক্ষানিরীক্ষা। শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারিতে শীলা এবং স্নেহাশীষকে নিয়ে আসার কিছুদিন পরে পার্কের স্বাভাবিক পরিবেশে এদের সফল প্রজননে বেঙ্গল সাফারিতে জন্ম নেয় তিনটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। ২০১৮ সালের ১১ ই মে তিনটি সন্তানের জন্ম দিয়েছিল শীলা। তার মধ্যে একটি সাদা বাঘও ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনজনের নাম রাখে রিকা কিকা এবং ইকা। তিন সন্তানের একটা অ্যালবিনো। জন্মের কিছুদিন পরেই ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যু হয় সবচেয়ে ছোট ইকার। এরপর থেকে কড়া নজরদারিতে রেখে শীলার বাকি দুই সন্তানকে বড় করে তোলা হয়। একটি মারা গেলেও শীলা এবং স্নেহাশীসের দুই সন্তান সুস্থ এবং সফলভাবেই বেঙ্গল সাফারিতে বড় হয়েছে। এই সাফল্যের পরেই বেঙ্গল সাফারিতে প্রজনন কেন্দ্র তৈরি করার ভাবনা আসে রাজ্য সরকারের। সেইমতো বেঙ্গল সাফারির তৎকালীন ডিরেক্টর ধর্মদেও রাই এর প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে ৫ একর জায়গা নির্ধারণ করে ব্রিডিং সেন্টার তৈরীর অনুমতি চেয়ে সেন্ট্রাল জু অথরিটির কাছে আবেদন করা হয়। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে সেন্ট্রাল জু অথরিটি ব্রিডিং সেন্টার তৈরীর জন্য অনুমতি প্রদান করে। রাজ্য সরকারও আর্থিক বরাদ্দ করলে কাজ শুরু হয়।
জঙ্গলের ঘেরাটোপে বাঘ প্রজনন কেন্দ্র
-------------------------------------------------------
বেঙ্গল সাফারিতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ব্রিডিং সেন্টার বা প্রজনন কেন্দ্র তৈরির জন্য সেন্ট্রাল জু অথরিটির অনুমোদন পাওয়ার পর বেঙ্গল সাফারির পেছনেই ৫ একর জায়গায় তৈরি হতে শুরু করে টাইগার ব্রিডিং সেন্টার। আর্থিক বরাদ্দ পাবার পর কাজ শুরু হয়। স্বাভাবিক জঙ্গলের পরিবেশে তৈরি হয় বাঘের প্রজনন কেন্দ্র। শিলিগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে বেঙ্গল সাফারি পার্কের পেছনদিকে গভীর জঙ্গলে ঘেরা অংশে স্থায়ী বাঘ প্রজনন কেন্দ্র তৈরীর অনুমতি দেয় সেন্ট্রাল জু অথরিটি। অনুমোদন মেলার পরে রাজ্যের বনদপ্তর প্রায় এক কোটি ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে ওই কেন্দ্রের পরিকাঠামো তৈরীর প্রক্রিয়া শুরু করে। অভয়ারণ্যের প্রায় সাড়ে চার হেক্টর জঙ্গল এলাকা তার জালি এবং কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা হয়। এই এলাকার মধ্যে আলাদা করে বাঘেদের নাইট শেল্টার তৈরি হয়। চিকিৎসার জন্য অথবা গর্ভধারণের পরে প্রসব এবং শাবকদের বড় হওয়ার জন্য কমবেশি চারটে শেল্টার আস্তানা তৈরির পরিকল্পনা গৃহীত হয়। বেঙ্গল সাফারি পার্কের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা নতুন প্রজনন কেন্দ্রের পরিকাঠামো তৈরীর কাজ দেখভাল করতে শুরু করেন। প্রজনন কেন্দ্রের নথিপত্রে শুধুমাত্র বাঘের উল্লেখ করা হয়। মূলত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রটি করা হলেও প্রয়োজনে চিতাবাঘ প্রজননের জন্য ব্যবহার করার সুযোগও রাখার পরিকল্পনা করা হয়। কাজ শেষ হলেই সেন্ট্রাল জু অথরিটিকে বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়। দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুওলজিক্যাল পার্ক বা দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় দীর্ঘদিন ধরেই স্নো লেপার্ড প্রজনন হচ্ছে। এখান থেকে স্নো লেপার্ড দেশের অন্যান্য চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়। তাই বেঙ্গল সাফারির এই ব্রিডিং সেন্টার সফলভাবে চালু হলে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে বাঘ না থাকার তকমা ঘুচবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এখানে ব্রিডিং করানোর পরে চিড়িয়াখানার প্রয়োজন মিটিয়ে উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে বাঘ ছাড়া যেতে পারে। স্নো লেপার্ড এবং রেড পান্ডার পরে রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর প্রজনন শুরু হলে উত্তরবঙ্গের মুকুটে নতুন পালক যুক্ত হবে।
রিকা কিকার নতুন সঙ্গী বিভান
--------------------------------------------
সেন্ট্রাল জু অথরিটি পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে বাঘ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর অনুমোদন দিলে সেইসময় ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের টাটা স্টিল জুলজিক্যাল পার্ক থেকে সাফারি পার্কে নিয়ে আসা হয় পুরুষ রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিভানকে প্রজননের জন্য। এদের ছাড়াও বাইরে থেকে বাঘ এনে প্রজননের কাজ চলবে বলে বনদপ্তর আধিকারিকরা পরিকল্পনা করেন। আড়াই বছরের স্নেহাশীষকে ক্যাপটিভ ব্রিডিং এর জন্য কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়। তারপরে সাফারি পার্কে রয়েল বেঙ্গল টাইগার সাফারিতে বাঘ ছিল চারটা। তারমধ্যে রিকা এবং কিকার বয়স তখন ছিল মাত্র দেড় বছর। ২০১৯ সালে বিভান এবং শীলাকে নাইট শেল্টারে রেখে নতুন প্রজন্মের শাবককে বাইরে ছাড়া হয়। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এনক্লোজারে ছাড়া হয় বিভান এবং শীলাকে। এরপর থেকেই শীলা এবং বিভানের মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়ানোর জন্য একাধিক প্রচেষ্টা করে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়ার ফলে তাদেরকে একসঙ্গে সাফারিতে ছাড়া হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব বাড়তে থাকে। এদের ছাড়াও বাইরে থেকে বাঘ এনে প্রজননের কাজ চলবে বলে বনদপ্তর আধিকারিকরা পরিকল্পনা করেন। এরপর থেকে বেঙ্গল সাফারিতে শীলার বাকি দুই সন্তান এনক্লোজারে থাকতে শুরু করে। এরই মাঝে বেশ কয়েকবার এই দুই ব্যাঘ্রশাবককে জনসমক্ষে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দুজনের নিরাপত্তা এবং শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। দুজনে আদৌ এনক্লোজারে ঠিকমতো থাকতে পারবে কিনা অথবা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার বিভানের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে কিনা সেসব বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য দুজনকে বেশ কয়েকবার এনক্লোজারে ছেড়ে নজর রাখা হয়। দুজনের স্বভাবে সন্তুষ্ট হয় তাদেরকে জনসমক্ষে আনার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ এবং ইতিমধ্যেই ওয়েস্ট বেঙ্গল জু অথরিটির পক্ষ থেকেও সবুজ সংকেত মিলে যায়।
করোনাকালে খেলার নতুন সঙ্গী পেল কিকা, রিকা
----------------------------------------------------------------------
শীলা, বিভান, রিকা এবং কিকা চারটে বাঘকে একসঙ্গে এনক্লোজারে রাখার পরিকল্পনা করে কর্তৃপক্ষ। এনক্লোজারের ভেতরে দুটো বাড়তি নজরদারি ভ্যান রাখা হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিকল্পনা হয় বেঙ্গল সাফারি পার্কে রয়েল বেঙ্গল বাঘ বিভান এবং শিলার প্রজননের জন্য প্রায় পাঁচ একর এলাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে ক্যাপটিভ ব্রিডিং এর জন্য।এরপর শীলা এবং বিভানের মধ্যে সম্পর্ক আরো নিবিড় হয়। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে শীলা। দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকেই সাফারি পার্কে তৎপরতা বেড়ে যায়। কোনভাবে যাতে পার্কে সংক্রমণ না হয় তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ঠিক সেই সময় শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে ভোর পৌনে ৫টা থেকে ৭টা ২০ মিনিটের মধ্যে তিনটি সুস্থ সন্তানের জন্ম দেয় শীলা। খেলার নতুন সঙ্গী পায় খুদে দুই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার কিকা, রিকা। ভোরের আলো ফোটার আগেই বেঙ্গল সাফারিতে তিনটি ফুটফুটে শাবকের জন্ম দেয় শীলা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে শালুগাড়ার সাফারি পার্ক বন্ধ থাকলেও নতুন অতিথিদের ভূমিষ্ঠ হওয়ায় খবর সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কনজারভেটর অব ফরেস্ট তথা বেঙ্গল সাফারির ডিরেক্টর ধর্মদেও রাই জানান, শীলা তিনটি সুস্থ শাবকের জন্ম দিয়েছে। শাবক তিনটি তাদের মায়ের দুধ পান করেছে। ফলে সবমিলিয়ে বেঙ্গল সাফারি পার্কে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা বেড়ে হল সাতটি। জানানো হয় এরা প্রত্যেকেই হলুদ কালো ডোরাকাটা। আগামী কয়েকমাস এদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তারপর কিকা, রিকার মত এদেরকেও ভিজিটরদের সামনে হাজির করা হবে। সবমিলিয়ে পার্কে রয়েছে তিনটি স্ত্রী রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শীলা, কিকা ও রিকা। এদের মধ্যে কিকা সাদা ডোরাকাটা। শীলার পুরুষসঙ্গী বিভান।
রিকা কিকা সহ তিন খুদেকে নিয়ে শীলার সুখের সংসার
-------------------------------------------------------------------
করোনার সময়কালে কেমন আছে বেঙ্গল সাফারির ব্যাঘ্রকুল জানতে পাড়ি দিয়েছিলাম বেঙ্গল সাফারি। করোনা ভাইরাস এর কারণে সাধারণের জন্য সেই সময় বন্ধ ছিল সাফারি পার্ক। বিশেষ অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছিলাম লেখার রসদ সংগ্রহের জন্য। সমস্ত রকম সাফারি বন্ধ থাকার ফলে পশুরাও তাই ছিল বেজায় খুশি। সেই সময় একটি লেপার্ড সিম্বাকে নিয়ে আসা হয়েছিল বেঙ্গল সাফারি পার্কে। লকডাউনে ছুটির মেজাজে ছিল সে। দেখি নিজের এনক্লোজারে থাকা দড়ি ধরে দোল খাচ্ছে। বাইরে থেকে কে তাকে ডাকছে সেদিকে কোন নজর নেই। আপন-মনে দোল খেতেই ব্যস্ত সে। উত্তরের তীব্র গরমে সেই সময়ে সামার ভ্যাকেশনে মজেছিল শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারি পার্কের খুদে সিম্বা, জেনিফার, রিকা এবং কিকারা। লোকচক্ষুর আড়ালে খেলায় মত্ত ছিল সাফারি পার্কের আদুরেরা। আর তাদের এই কীর্তি দেখে বেজায় খুশি ছিলেন পার্কের কর্তারা। ঠিক যেন টানা স্কুল চলার পর ছুটির মেজাজ। সকালে উঠেই জলকেলি, বরফ নিয়ে খেলা। কেউ আবার খোশমেজাজে আপন-মনে দোলনায় ঝুলে চলেছে। সময়মতো এসে খাবার খেয়ে দে ছুট। ঠিক যেন নিজের শিশুদের সামার ভ্যাকেশনে মজা করতে দেখা যাচ্ছে। বেঙ্গল সাফারি পার্কে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্ম হবার ফলে খুশির হাওয়া ছিল সাফারি পার্কে। সাফারি পার্কে একের পর এক সফল প্রজননের ফলে খুশির হাওয়া ছিল রাজ্য বনদপ্তরেও। করোনা পরিস্থিতিতে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সফল প্রজনন এবং তিনটি সুস্থ শাবকের জন্ম সত্যি আনন্দের খবর। এর আগেও শীলা তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছে। সেই সময় একটি সন্তানকে অনেক চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি। তাই সেবারে শাবকদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। আসলে উত্তরের এই অঞ্চলে দুদিন খুব গরম পড়েছিল। দেখেছিলাম তাই হিমালয়ান ব্ল্যাকবিয়ারদের বরফ দেওয়া হয়েছিল। তারা বরফ পেয়ে বেজায় খুশি। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস কিকা এবং রিকাকে আনন্দে জলকেলিতে মাততে দেখা গেছে। দুই বোনের ভালবাসায় ভরা খুনসুটি দেখে সাফারি কর্তারাও মুগ্ধ। গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত সাফারি পার্কের চারটি হিমালয়ান ব্ল্যাকবিয়ার এর জন্য কর্তৃপক্ষ বরফের ব্যবস্থা করতেই খুশিতে আত্মহারা হয়ে উঠেছিল ড্যাডি, জেনিফার, ধ্রুব এবং ফুরবু। ব্ল্যাকবিয়ারদের মধ্যে ছোট ধ্রুবকে বরফ পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে নিজের এনক্লোজারে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে দেখেছিলাম। তারপর বরফ নিয়ে খেলা শুরু করে দেয়। পার্কের মধ্যে বড় হওয়া এই খুদেদের প্রতিটি মুহূর্তের ছবি তাই আর্কাইভে সংগ্রহ করে রাখার মতো।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴