প্রযুক্তি উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে নাকি বলহরিবাবুর অবনমন শুরু হয়েছে।
বাড়িভর্তি নতুন নতুন মডেলের টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন। স্মার্ট ফোন ইত্যাদির আগমনে তাঁর ব্যাংকের ই.এম.আই বিপদসীমার র্উধ্বে!
মাস গেলে মাইনের র্অধেকও পকেটে ঢোকে না। বাড়িতে সবাইকে অনেক অনুনয় বিনয়, রাগা রাগি - ফাটা ফাটি করেও কোনো কাজ হয়নি। ইদানিং নীরবতার আশ্রয় নিয়েছেন। বাড়িতে খুব একটা কথা-বার্তা বলেন টলেন না।
তো, সেদিন শনিবার কী একটা কাজে আটকে গিয়ে বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেল।
শীতের রাত তার ওপর লোডশেডিং। মফঃস্বল শহর, আশেপাশের দোকানপাট বন্ধ। পথঘাট ঘুটঘুটে অন্ধকার। মাথায় হাজার দেনার ভাবনা।
অন্যমনস্ক হয়ে কলিংবেলে হাত দিতে গিয়েও ফিরিয়ে নিলেন। সদর দরজায় দুবার ধাক্কা দিয়ে বুঝলেন শোনবার লোকের অভাব। অতঃপর ছোটছেলে ঝিংগার নাম ধরে কয়েকবার চিৎকার করতে সদর দরজা অর্ধেকটা খুলে একটা কংকালের মাথা বেরিয়ে এসেছিল।
ওরে বাবারে বলে মাটিতে পড়ে যাওয়ার মুখে ঝিংগার মার মোলায়েম গলা শুনলেন,
'ভয় পেয়োনা গো, আমি তোমার প্রিয়দর্শিনী। ফেসিয়াল করেছি তো তাই মুখটা সাদা, চোখে শশার কুঁচি।'
বলহরি বাবুর বডিটা প্রায় ঝিংগার মার পায়ের কাছে পড়ে যাচ্ছিল দেখে ঝিংগার মা তাকে বুকে টেনে নিয়ে আদুরে গলায় বললেন, ভীতু কোথাকার, দুষ্টু ছেলে! ইনভার্টারের ব্যাটারি ডাউন, তাই আলো জ্বলেনি। চিন্তা কোরোনা সোনা, কালই একটা ব্যাটারি লাগিয়ে দেব।
প্রায় অজ্ঞান হতে হতে বলহরি বাবু মনে হল কাজ সারছে। ব্যাটারি মানেই তো সেই বত্রিশ হাজারের ধাক্কা!