দেবীপক্ষ-
'हज़ारों ख़्वाहिशें ऐसी, के हर ख़्वाहिश पे दम निकले'
মনোনীতা চক্রবর্তী
======================================
খুব অশালীনভাবে শালীনকে কি আসলে লেখা যায়? সভ্য আর অসভ্য-এর চলা কি একরকম? ধরুন, একটা বিভাজিকার খাঁজে-খাঁজে আসলে ঠিক কতশত কৃষ্ণনাম থাকে; যার গায়ে আর কোনোও বাতাসই স্পর্শ করে না; সেই বাতাসের কি ওই শরীরকে বিদ্রুপ করে কোনও লাভ হয়?! এ তো নিজের খিল্লি নিজেই করা! সত্যিকারের প্রিয়জনকে কেউ কখনও কোনও অবস্থায় ব্যঙ্গ করে না করতে পারে?! এবারে খুব জানতে ইচ্ছে হচ্ছে খুব শালীনভাবে অশালীনকে ঠিক কীভাবে লেখা যায়? মেয়েটি অথবা ছেলেটির প্রেমের বাগান হেমন্ত থেকে হেমন্তে পাক খেয়ে ঘরে ঢোকার আগেই সব গল্প শেষ হয়ে যায়। রুদ্র, সৌম্য, সিরাজ বা মৃত্তিকা, শ্যামদুলালী, দোলনচাঁপা-এরা সবাই-ই আবার খুঁজে নিতে চায় বা যদি বলি খুঁজে পেতে চায় নিজেদের। কিন্তু কেন বলো তো? এরা কেন ফিরে যায়?! খুব সহজ। আসলে, কোনোভাবেই আর থাকা যায় না বলে। তার মানে কি ওই ছেলেগুলো আর ওই সবগুলো মেয়েই খারাপ?! কিন্তু তা কী-করে হবে; তারা তো অন্তত এখন শ্বাসটুকু নিতে পারছে! এটুকুর জন্যই তো আদরের গায়ে আদর, বুকের ওপর বুক, ঘুমহীনতার কোলে আরও অসংখ্য ঘুমহীনতার আলাপ-বিস্তার!
হিসেবের গল্পে মন হারায়। সে-মন আর ফেরে না। যদিও এসব নেহাতই অভিমানের সারসংক্ষেপ। অতি তুচ্ছও হয়তো-বা! তবে সকলের কাছেই যে তুচ্ছ; তা কিন্তু নয়। ধুলোর সেতার; পাতার এসরাজ; নাভির অন্দরের পাখোয়াজ বাজবে না, তা কি হয়?! এসব সত্যিই বাজে। বাজাতে জানা একটা শিল্প। শিল্পের আস্বাদন ঠিক-ঠিক ভাবে নিতে পারাটাও একটা আর্ট।কেউ না-পারলেও, জমা কষ্ট থাকতেই পারে, অস্বাভাবিক কি? তা তো নয়! কিন্তু এই কষ্টের চেয়েও ভয়াবহ কষ্টের এই যে অসম্মানের পরিস্থিতি জেনেও যখন দিনের পর দিন কাউকে লাগাতার বিদ্রুপ করে যাওয়া এবং তা অন্যজনের নিয়মিতভাবে হজম করা! বোধহয়, সেদিনই আসল পরিচয়টা হয়েই যায়। অথবা যখন পেছন থেকে ছুরি নিয়ে আড়াল থেকে কাউকে পোশাকহীন করার হীন কৌশলে প্রাণপ্রিয় বা প্রাণপ্রিয়াকে অন্যায়ভাবে ঘায়েল করার জন্য মরিয়া হয়ে যায়... এসব প্রতিমুহূর্তে বোধহয় ইনা-মিনা-ডিকা অথবা জর্জ-বব-জ্যাজদের ঝাঁঝরা করে দেয়.. আর তাই অধ্যায় বদল। কন্ত্রাসেপ্টিভের ব্র্যান্ড বদল। একজন প্রেমিক কেন তার প্রেমিকাকে পেল না, মানে প্রেমিকা তার থেকে মুখ ফেরালো অথবা একজন প্রেমিকার থেকে কেন প্রেমিক মুখ সরালো; তা তো শুধু তারাই জানে; বাকি সব ডেট এক্সপায়ার করা রঙিন বেলুন.. লাল-নীল-গোলাপি-সবুজ-হলুদ..
প্রত্যেকটি 'সুন্দর' যেন এক-একটি স্বপ্নের মানব-বন্ধন; যেখানে কোনও 'ডামি'-মানুষের প্রয়োজন নেই.. কখনোই নেই। এরা প্রত্যেকেই কিন্তু থাকতেই চেয়েছিল; ফিরে যেতে নয়...যোজন দুরত্বেও কিন্তু থাকা যায়; কিন্তু সেই জায়গাটা যদি সম্মানের হয়। ভরসার হয়। আসলে কী, 'গ্রহণ' আর 'গ্রাস' এক নয়, আর কোনও অজুহাতও নয়...
রায়না-বায়না-শাবানা অথবা বাবান-সাম্পান-ভাসান এরা প্রত্যেকেই থাকতে এসেছিল কিন্তু কেউই আসলে শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেনি...
গৃহহীন স্বপ্নের হাতে সন্তুর; ফেরি করে সুর,দেবীপক্ষকে ভরিয়ে রাখতে। সুর কেটে যায়। লয় ভেঙে যায়। ছন্দ ল্যুনাটিক যখন, তখন আমরা মাটি ছেনি। দলা পাকাই। একটু-একটু করে গড়ে ওঠে, ভ'রে ওঠে মৃন্ময়ী, নিখুঁত গড়ন তার! তার চোখ-নাক-ঠোঁট-স্তন-যোনি-পায়ের পাতা স্বপ্ন কন্যা হয়ে উঠতে থাকে...
পাগলের মতো সন্তুরের সাথে বেজে ওঠে পাখোয়াজ;
শস্য খেত থেকে পাশের বাড়ির বন্ধ জানালা; গুমোট কান্না উড়ে আসে। আমরা চোখ-কান বন্ধ করে রাখি। অনলাইন-শপিং, শারদ-সংখ্যা, লিভাইসের আউটফিট আর আইভরি শেডে চুলের স্ট্রিপ সাজিয়ে তুলি, সেজেগুজে ফ্রন্ট-ক্যামে লাইভ অনুষ্ঠানে গান-কবিতা-গল্প-কথা নিয়ে বসি, ফুড-পার্লার থেকে খাবার আসে। টিস্যু পেপার হাতে তুলি। কাশের বন দেখলেই দাঁড়িয়ে পড়ি এবং সেলফিতে মন রাখি। আমরা ওসব গুমোট আওয়াজ, চাপা কান্না বা পাশের বাড়ির রোজ নিগৃহীতার দিকে তাকাই না। আমরা দূর থেকে আরও দূরের মেয়েদের জন্য 'নারীবাদী' হয়ে উঠি। আমরা কথায়-কথায় ভুল ধরি। আমরা একজন কৃতী ছাত্রর বাবার পেশা যে কৃষিকাজ বা রিকশা চালানো অথবা দিনমজুর, সে-কথা অবশ্যই উল্লেখ করতে ভুলি না বাকিদেরটা ভুললেও! গমের বাগান, জামের বন, তেঁতুলের অরণ্য তোলপাড় করে আমরা স্টোন-চিপস আর রড দিয়ে নাড়িভুঁড়ি টেনে হিঁচড়ে বের করে উল্লাস করি। বেশি কথা বললে জিভ কেটে দিই এবং তা চোখে দেখে বা না-দেখেও উপভোগ করি। হ্যাঁ, জোড়া হেমন্ত বা বেজোড় বর্ষার ভিতরও যে ভ্রম ও সন্ত্রাস জোড়ালাগা যমজ সন্তানের মতো থাকতে পারে, তা আমরা ভাবনাতেও আনতে চাই না! ত্যাগেরও রংটা যেন কী ছিল?
এরপর ভাড়া করা লোকেদের দিয়ে আরও একটা গ্যাং-রেপ। এনকাউন্টার। পোস্টমর্টেমের রিপোর্টটা দিব্যি বদলে যেতেই পারে... তবু ভালো এসবই আমাদের মেয়েদের জন্যই; তা সে আমি হই, রুমেলা হোক বা আমাদেরই কারও কন্যা-সন্তান; সে-যেই হোক।একটা স্মাইলি রইল, কেমন? বাকিটা আমাদের সমাজ দায়িত্ব নিয়ে আমাদের শিখিয়ে দিয়েছে... 'মেনে নাও; মানিয়ে নাও..'
আসলে কোত্থাও প্রেম-ট্রেম কিছুই নেই। এসবই এক-একটা মোহগ্রস্ত শব্দ...শেষ করবো নিজের কবিতার একটি পঙক্তি দিয়েই, হয়তো-বা এটা অনেক মেয়েরই গোপন উচ্চারণ...
'আমি ধর্ষিত খুব মার্জিতভাবে..'