সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon

ঝিনুক

ঝিনুক
পার্থ সারথি চক্রবর্তী
^^^^^^^^^^^^^

এক এক করে অনেকেই চলে গেলেন। বিশেষ করে একটু বয়স্করা। কি যে এক মারণ রোগ এল,কিছুই বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। সবাই যেন জেরবার হয়ে যাচ্ছে। সব যেন তছনছ করে দিল। গ্রামের যারা মাথা ছিল, নানা বিপদ আপদে যারা সবার পাশে দাঁড়াত, পরামর্শ দিত; তারা ধীরে ধীরে স্বর্গতঃ হলেন। কিভাবে যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে, ভেবে পাওয়া যাচ্ছে না। এসব ভাবতে ভাবতে কুল কিনারা পায় না বঙ্কিম। এ'দিকে তারও তো ভাঁড়ে মা ভবানী। বাগান বন্ধ হয়ে আছে আজ প্রায় তিন মাস। মাঝে দুই মাসে যেটুকু কাজ হয়েছিল, তার টাকাও পুরোটা হাতে পায় নি। আসলে মালিকপক্ষও কিছুটা বেকায়দায়। প্রসেস করে মাল পাঠাতে পারেনি অনেকটাই। প্যাকেজিংও বাকি আছে বেশ কিছু। এমন অবস্থায় তাদেরও পুরো দোষ দেওয়া যায় না। মাঝে মাঝে মনে হয়, বঙ্কিমের ধৈর্যের বাঁধ বোধহয় ভেঙে যাবে। কিন্তু আগাগোড়া বাবার কাছে পাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষাটা ভুলতে পারে না কখনো। আর হয়তো পারবেও না। ওর যোগ্য দোসর হয়েছে রতি। বঙ্কিমের স্ত্রী। এমন মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়াটা সত্যিই ভাগ্যের। নইলে কি আর অবলীলায় বিয়ের সব গয়নাগাটি বঙ্কিমের হাতে তুলে দেয়!
বলে ' বিক্রি করে যা পাও, তা দিয়ে দরিদ্র মানুষগুলোকে সাহায্য করো'।
.......................
এদিকে মেয়েটার জন্য কিছু বইপত্র কিনতে হয়, সেটাও কিনতে পারছে না। ঝিনুকের বয়স পাঁচ বছর হতে চলেছে। একটা স্কুলে দিয়েছিল, সেও তো বন্ধ হয়ে আছে। পড়াশোনাও তেমন কিছু শিখছে না। বরং দুষ্টুমি বেড়েছে ঢের। বঙ্কিম অবশ্য এতকিছু ভাবে না।
'সাইকেল নিয়ে এই সাতসকালে কোথায় চললে' ?
রতির ডাকে ঘুরে তাকায় বঙ্কিম ' ওই শেরপা পাড়ায়। শুনলাম দু'জন নাকি খুব অসুস্থ'।
' কিছু খেয়ে যাও। কতক্ষণে ফিরবে, তার ঠিক আছে? '
' না না! দেরি করা ঠিক হবে না' বলেই প্যাডেল মারতে থাকে বঙ্কিম।
বেলা গড়িয়ে গেল। ঝিনুক খেয়ে শুয়েছে। রতি ঠায় বসে আছে বঙ্কিমের অপেক্ষায়। প্রায় চারটা নাগাদ বঙ্কিম বাড়ি ফিরল। বিধ্বস্ত, ক্লান্ত হয়ে। কলতলায় স্নান সেরে বারান্দায় এসে খেতে বসল। মুখটা এখনো থমথমে। রতির জিজ্ঞাসায় উত্তর দিল
' দেরি হয়ে গিয়েছিল হাসপাতালে নিয়ে যেতে। ফলে বাঁচান যায় নি ভদ্রলোককে। মাত্র বাহান্ন বছর বয়স, শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল খুব'।
' আর আরেকজন কেমন আছে? '
ওনার স্ত্রীকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। একটু ভাল'।
সন্ধ্যাবেলায় খোঁজ নিতে আবার হাসপাতাল গেল বঙ্কিম। ফেরার পথে বস্তির বাড়িগুলোতে কয়েকদিনের জন্য চাল, ডাল, তেল, নুন, আলু দিয়ে এল। তারপর চৌরাস্তার মোড়ে যাদের পেল, সকলকে সচেতন করার চেষ্টা করল। কিভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে, কয়েকজনকে সামনে পেয়ে সেটা বোঝানোর চেষ্টা করল।
রতির সঙ্গে প্রতিদিনের মতো আজ আর বিশেষ কথাবার্তা বলল না। রতি বুঝতে পারল যে আজ বঙ্কিম খুব পরিশ্রান্ত। মাথার চুলগুলো যেন একটু বেশিই সাদা লাগছে। রতি বুঝতে পারে, চিন্তা আর উদ্বেগই চুল পাকিয়ে দিচ্ছে বঙ্কিমের।
....................
ড.ঝিনুক প্রতিহার। দারুণ জনপ্রিয় এক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। প্রচুর নামডাক, জনপ্রিয়তা। গ্রামে গ্রামে, বস্তিতে বস্তিতে নিয়মিত শিবির করছেন তিনি। তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে হাতেনাতে। ছোঁয়াচে বা স্বাস্থ্য বিষয়ক অজ্ঞতাহেতু হওয়া রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক কমে গেছে। ড.প্রতিহার সবার চোখের মণি।
হঠাৎ ঘুম ভাঙল বঙ্কিমের। দেখল, পাশে শুয়ে আছে ঝিনুক।
ঝিনুক বড় হচ্ছে।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri