সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
24-November,2022 - Thursday ✍️ By- সৌগত ভট্টাচার্য 205

জলের শব্দ

জলের শব্দ
সৌগত ভট্টাচার্য
-----------------------

জলের মর্জি সুমিতা জানে। পাথরের খাঁজ গুলো শরীরের মতোই শ্যাওলা পিছল... আজও শেখেনি কোথায় সাবধানে পা ফেলতে হয়! হাঁটু পর্যন্ত ঠান্ডা জলের স্রোত। জল ঠেলতে হাওয়াই চটির ফিতা ছিঁড়ে যায়, পায়ে সাড় পায় না কোনো। জংলা হাওয়ায় গায়ে কাঁটা লাগে। নদী পেরোনোর সময় মাথা তোলার জো নেই। মুখের সামনে মাথার পিছনে সবুজ জঙ্গল ঢাকা পাহাড়। পিঠে বাঁশের টুকরি ভরা একটা আস্ত ধুপি গাছের বন। ধুপির লাকড়ির শাল গেঁথে যায় সুমিতার পিঠে! নদীর মাঝ বারবার এসে কোমড় ধরে একবার সোজা হয়ে দাঁড়ায়! মাথার ওপর রোদ্দুর। দুই পাহাড়ের মাঝে নদী খরস্রোতা হয়। তারপর যাবতীয় খাঁজ পেরিয়ে অনন্ত সমতল। জলঢাকা নামটার মধ্যে কেমন একটা চোরাস্রোত আছে!  স্টেজ ওয়ান বস্তি এখনো অনেক দূর!

নদীর শব্দে কেন যে রোজ সুরজের কথা মনে পড়ে সুমিতা জানে না!

                        -------

নদীর ওপারেই ভুটান পাহাড়। শীতে নদী পেরোনো সুবিধা। ভুটান থেকে সুমিতা লাকড়ি আনতে যায় বিমলা সুস্মিতা আরো অনেকের সঙ্গে। জঙ্গল যদিও আর আগের মত নেই। ওই দেশের দূরের ফোরলেন কোন মুলুকে যায় সেই রাস্তা সুমিতা জানে না। ফরেস্ট গার্ডদের সঙ্গে নানা ঝামেলা ভাগা নিয়ে লাফরা লেগেই আছে! দুপুরে আবার ফরেস্ট গার্ডদের সঙ্গে খাবার ভাগাভাগি করে খাওয়ার সময় ভূটানের মোবাইল নেটওয়ার্কে গান চালায় ওরা। বিমলার সঙ্গে চিকুমির বিয়েটা শেষ পর্যন্ত হয়নি। সুমিতাকে একবার ফরেস্ট গার্ডরা ওদের চৌকিতে সারাদিন বসিয়ে রেখেছিল। 
সুমিতা ওই দেশের বনচৌকি থেকে জলঢাকা নদীর জলের শব্দ পেয়ে ভেবেছিল কোনো দিন কি আর নদী পেরিয়ে স্টেজ ওয়ান বস্তিতে যেতে পারবে না! সুমিতার গলার কাছে কী যেন একটা দলা পাকিয়ে কান্না পেয়েছিল খুব।

নদীর জলের শব্দে কাঁদতে কাঁদতে সুরজ তামাংএর কথা খুব মনে পড়ছিল তাঁর।

                       ------------

দুই দেশের পাহাড় জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে জলঢাকা নদী চলে যায়--- শীতকাল যেমন যায় শরীর দিয়ে। বিকেলে পিঠের টুকরির ভেতর একটা গোটা ধুপি বনের সঙ্গে কিছুটা বাতাস নিয়ে ভূটান থেকে স্টেজ ওয়ানের বস্তিতে ফেরে সুমিতা। তারপর তাঁর রান্নাঘরে দাউদাউ করে জ্বলে একটা আস্ত জলপাই রঙা বন, জঙ্গল-পোড়া গন্ধ। সুমিতার পায়ের ফোস্কা গুলো জ্বালা করে। জানলার স্বচ্ছ নীল প্লাস্টিক ভেদ করে হাইড্রেল প্রজেক্টের আলো লাগে ওর চোখে। রাত বাড়লে ঠান্ডা বাড়ে। গায়ের জংলা গন্ধ লাগা লেপটাকে ঘাড়ের কাছে গুটিসুটি করে নেয় সুমিতা। একটা একটা করে আলো নিভে অন্ধকার হয়ে যায়। রাত বাড়লে নদীর জলের শব্দ বড় অদূরে হয় আর কান্নার জল হয় খরস্রোতা! 

                     -------------

সুরজের বুকের ভেতর কি কোনও নদী বেঁচে আছে ওর জন্য, আজও? সুমিতা জানে না! জানতে চায় না। 

ঘুমের ভেতর ভেসে আসা কাঠ আঁকড়ে সুমিতা নিজেই আস্ত একটা নদী হয়ে যায় রোজ।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri