সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
27-November,2022 - Sunday ✍️ By- মঞ্জুশ্রী ভাদুড়ী 179

কলহান্তরিতা

কলহান্তরিতা
মঞ্জুশ্রী ভাদুড়ী
---------------------

-আ মরণ , অলক্ষুণে বৃষ্টিটা আর আসার সময় পেল না গা ! সবে জামাকাপড়গুলো কেচে শুকুতে দিয়েচি ।
জামাকাপড়গুলো তুলতে তুলতে গজগজ করে বিশাখা ।
-যখনই কাজের ঝক্কি বাড়ে , তখনই এই  বৃষ্টির বাড়াবাড়ি শুরু হয়ে যায় । আজ এত তাড়া রয়েচে , ডাক্তারখানায় গিয়ে লাইন দিতে হবে , হপ্তায় এই একদিনই মাত্র সেন ডাক্তার বসে। এরই মধ্যে বৃষ্টি একবার  আসচে , একবার যাচ্চে !

চটপট বাকি কাজগুলো সেরে নিয়ে ডাক্তারখানার দিকে এগোয় ও। পৌঁছে মাথায় হাত ! লাইন তো ডাক্তারখানার বাইরের রাস্তা পর্যন্ত পৌঁচেছে। কি লাভ হল এত হাঙ্গামা ক’রে এসে? উপায় আর কি, অগত্যা লাইনেই দাঁড়ায়। খানিকক্ষণ দাঁড়ানোর পর বিনবিনে ঘাম হতে থাকে, পিঠটা কুটকুট করে, বেজায় অস্বস্তি! খটখটে রোদ উঠল তক্ষুণি, আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে সকালে দেখা আকাশের মিশকালো মেঘগুলো বেমালুম উধাও। দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বিশাখা, এখন  যে ভরা শ্রাবণ মাস, কে বলবে! এই বেখেয়ালি বৃষ্টিটা কত যে ভোগাবে!
ঠুকঠুক করে লাইন এগোতে এগোতে ডাক্তারের দরজার কাছাকাছি পৌঁছল অবশেষে। দুয়ারে ওই শয়তান ছোঁড়াটি বসে - যে রাতকে দিন আর দিনকে রাত করে তোলে। ফুড়ুৎ করে লাইনের একে তাকে এদিক সেদিক দিয়ে ডাক্তারবাবুর চেম্বারের ভেতরে চালান ক’রে দেয়। কার্যকারণ  বোঝা যায় না, প্রশ্ন করলে নিয়মকানুনের ফিরিস্তি শোনায়। সেটাকে একটু ভালোমন্দ কথা কইতে যাবে, ঠিক তখনই তুমুল বৃষ্টি নামল। বারান্দায় টিনের  চাল, সেটির ফুটোফাটি দিয়ে এর-ওর গায়ে জল ছিটকে পড়তে লাগল, ফলে লাইন একেবারে ছত্রভঙ্গ!  হতচ্ছাড়া বৃষ্টিটা আর আসার সময় পেল না গো!
বাব্বা ! শেষ পর্যন্ত ডাক্তারের মস্ত ঘরখানায় ঢুকে একটু আরামবোধ করে বিশাখা। ওরা একসাথে পাঁচজন ঢুকেছে, আগের চারজনের হলে ওর ডাক পড়বে। খুব ভালো ডাক্তার! নিশ্চিন্ত হয়ে একটা চেয়ারে বসে থাকে ও।
-বলুন , সমস্যা কি?
-ঘুম হয় না রাতে। 
-ক'টায় রাতের খাবার খান?
-এগারোটা সাড়ে এগারোটা বাজে!
-এত রাতে খান কেন?
-ওই বেনে বউ সিরিয়ালটা দেখি, তারপর হলুদ পাখি আর ময়না এট্টু দেখি, তারপর চন্দনা দেখতে দেখতে ভাতটা বসাই, তারপর----
-এত দেখা যাবে না আজ থেকে। দশটার আগে বিছানায় যাবেন। কিচ্ছু হয়নি আপনার।
বেজায় মন খারাপ করে ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরোল বিশাখা, ডাক্তার কোনও ওষুধই দিল না। সবে বারান্দা থেকে নেমেছে, অমনি মুষলধারে বৃষ্টি! হতভাগা বৃষ্টিটা কি ওকে নাস্তানাবুদ করার জন্যই আজ মরিয়া হয়ে উঠল!

আজ রাত ন'টার মধ্যেই হেঁশেল তুলে দিয়েছে বিশাখা। কত্তা তো অবাক। 
-সে কি গো ! অত তাড়াতাড়ি তুমি ঘুমিয়ে পড়বে? পারবে?
-কেন , তুমি আটটা থেকে নাক ডাকিয়ে ঘুমোতে পারলে আমি দশটা থেকে পারব না কেন শুনি?
সাড়ে ন'টার মধ্যে বিশাখা ওর ছোট্ট চৌকিটায় মশারি টাঙিয়ে শুয়ে পড়েছে, শরীরটা ঠিক রাখা দরকার। কিন্তু খানিকক্ষণ বাদেই অস্বস্তি। অত জোরে পাখা ঘুরছে , হাওয়াই লাগছে না! ভ্যাপসা গরম। জানলার দিকে তাকিয়ে রাগে গা জ্বলে গেল, চাঁদটা ড্যাবড্যাব ক'রে চেয়ে রয়েছে এদিকেই! কিন্তু যার জন্য অপিক্ষে সে কোথায়? বৃষ্টি কই? সে কি আজ আর আসবে না নাকি ?

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri