নিভৃত বসন্তে
নিভৃত বসন্তে
রানা সরকার
~~~~~~~~
চিরশ্রী,তোমাকে পাঠিয়েছি আমি নিজবাসের এই দূরের পুরনো ছবি, এই জনপদ ছেড়ে তুমি আজ রয়েছ একা-
এই বসন্ত বেলায় স্থলভুবনের প্রিয়বৃক্ষের ছায়ায় দাঁড়িয়েছি,চেনা আখরের সুদূরে এখন সেজে আছ তুমি -
এখানে বন্দি বাসিনীরা আজও ঘরবাড়ি সাজিয়ে রেখেছে তোমার, হাওয়ায় মাতানো রাত সবুজের দেশে ;
নৈঃশব্দ্যের প্রহরে কখনো চেনা আকাশের মেঘ দ্রুত ছড়ায় নিচে অন্ধ কুহেলিকা।
যাপনের স্মৃতিচিহ্ন নিঃশেষিত হয়েছে এখানে, পরবাসে নিয়েছ গড়ে শুধুমাত্র কাঙ্খিত জীবন তোমার -
নবীন বসন্ত তবু ফিরে আসে, না বলা কিছু কথা বহুকাল বন্দি আজ ছায়ারোদে মিশেছে গভীরে -
বসন্তের মিলিত বাতাসে ঋতুস্নাত দুপুর ছুঁয়েছে এখানে একা, এই মৌন দিগন্তে -
এখানে বসন্তের রূপসী আবহে অচেনা কোকিল নিশ্চুপ উড়ে আসে থেমে যায় সুলগ্ন উড়ান তার।
পাহাড়ি ঢলে একদিন নদীরেখা সু-সমান থেকেছে এখানে, ভাঙনের স্রোত ভাসিয়েছে দূরে আশ্রিত জীবনের ছবি -
এ আমারি স্বগতোক্তি, বোধের সন্তাপে চাই না ফেরাতে তোমাকে আমি পাখিদের নিশ্চিত দেশে -
রুক্ষ সানুদেশে শীত নামে, বসন্ত থাকে না দূরে নিভৃতে বন্দি যেমন ঋতু পরবের দিন অচেনা প্রদেশে -
এখানে অপেক্ষায় অনাগত বসন্তের উতলা ভুবন, রূপসঙ্গী তোমার সেজে আছে আজও জীবন আরোহী।
আগুন দুপুরে ছড়িয়েছে আজ পলাশের রঙ, থেমেছে এসে পাখিদের দূরের উড়ান -
জেগে আছে আজও জলপ্লাবনের ঢেউ, নকশি রেখায় প্রবাহের চিহ্ন শুকায় বালুকাবেলায় -,
ছায়ারোদে পাখিরাও খুঁজতে এসেছে আজ খড়কুটো জেগে, আছে অরণ্যের উদাস পরাণ -
দীর্ঘ যাপনের স্মৃতি ফেরে তোমার মুক্ত পরবাসে, বসন্তের মালাখানি আজও ফিরি হয় বনদেশের উতলমেলায়।
চেনা গন্ধে এসেছে প্রিয় বসন্ত আজ, জোনাকির সাঁঝবাতি খুঁজে ফেরে আঁধারের বুক -
পাখিরাও ফিরে গেছে বনবিতানের কোলে, একাকি উদাস এক সেগুনের বনে-
ঘন বিষাদের ছায়ায় এখানে বৃষ্টি নামে, দূরের কোথাও তুমি ভিজে আছ, ভিজে আছে বাতিঘর প্রদোষের দেশে ..
ঋতু বসন্তের দিনে জেগে ওঠে ছায়াপথ, ফিরেছে অসুখের কথায় অনুভবী সুজনের মুখ।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴