সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
103.চায়ের নিলাম ব্যবস্থার বিধি সরলীকরণ হোক/গৌতম চক্রবর্তী

103.চায়ের নিলাম ব্যবস্থার বিধি সরলীকরণ হোক/গৌতম চক্রবর্তী

102.এখনো মনে দোলা দেয় চা বলয়ের ফুটবল খেলা/গৌতম চক্রবর্তী

102.এখনো মনে দোলা দেয় চা বলয়ের ফুটবল খেলা/গৌতম চক্রবর্তী

101.বাগিচার প্রান্তিক জনপদগুলির সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা/গৌতম চক্রবর্তী

101.বাগিচার প্রান্তিক জনপদগুলির সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা/গৌতম চক্রবর্তী

100.আদিবাসী জনজীবনের সংস্কৃতিচর্চা (দ্বিতীয় পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী

100.আদিবাসী জনজীবনের সংস্কৃতিচর্চা (দ্বিতীয় পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী

99.আদিবাসী জনজীবনের সংস্কৃতি চর্চা (প্রথম পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী

99.আদিবাসী জনজীবনের সংস্কৃতি চর্চা (প্রথম পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী

98.চা বাগিচাতে গ্রুপ হাসপাতাল একান্তই জরুরি/গৌতম চক্রবর্তী

98.চা বাগিচাতে গ্রুপ হাসপাতাল একান্তই জরুরি/গৌতম চক্রবর্তী

30-September,2024 - Monday ✍️ By- গৌতম চক্রবর্তী 1.18K

সমঝোতার শর্তে বোনাস চুক্তি চা বাগিচার চিরায়ত খেলা/গৌতম চক্রবর্তী

সমঝোতার শর্তে বোনাস চুক্তি চা বাগিচার চিরায়ত খেলা
গৌতম চক্রবর্তী

গত বছরে ২০২৩ সালে একাধিক বাগানে ১৯% হারে বোনাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চা বাগান পরিচালকদের বিভিন্ন সংগঠনের দাবি ছিল এ বছর পাতার উৎপাদন কমেছে। আবহাওয়ার খামখেয়ালে পাতার মানও ভাল হয়নি। তা ছাড়া যে সময় পাতা তোলা শেষ হয় তার চেয়ে এক মাস এগিয়ে চলতি বছর নভেম্বরের পরে পাতা তোলা বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছে চা পর্ষদ। সব মিলিয়ে চা শিল্প সঙ্কটে। সে কারণে গতবারের থেকে কম হারে বোনাস দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। অন্যথায় চা শিল্পের রাজস্বে ক্ষতি হবে, যার প্রভাব পড়বে বাগানে। বোনাস চুক্তি শুরু হওয়ার আগে এটাই ছিল চা বাগিচার মালিকপক্ষের যুক্তি। অন্যদিকে শ্রমিক সংগঠনগুলি উৎপাদন কমে যাওয়ার যুক্তি মানলেও তাদের দাবি ছিল কলকাতা এবং শিলিগুড়ির চা নিলাম কেন্দ্রে চলতি বছরে চা পাতার ভাল দাম মিলেছে। প্রথম ‘ফ্লাশ’ বাজারে আসার পরে খোলা বাজারে চা পাতার দাম হঠাৎ বেড়ে যায়। শ্রমিক নেতাদের দাবি ছিল উৎপাদন খানিক কমলেও চা পাতার দাম বেড়ে যাওয়ায় মুনাফায় টান পড়েনি। তাই বেশ কিছু প্রশ্ন রেখেই ডুয়ার্স-তরাইয়ের চা শ্রমিকদের এ বছরের বোনাস চুক্তি হল। কলকাতাতে বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের দফতরের বৈঠকে মালিক পক্ষের তরফে ১০%-১৪% হারে বোনাস দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। শ্রমিক সংগঠনগুলি ২০% অথবা তার বেশি বোনাসের দাবিতে অনড় ছিল। সকাল থেকে রাত গড়িয়ে যায়। তবুও গভীর রাত পর্যন্তও বোনাসের হার নিশ্চিত হয় নি। স্থির হয়েছিল গত বছরের থেকে তিন শতাংশ কমে, ১৬ শতাংশ হারে চা শ্রমিকেরা এ বার বোনাস পাবেন। রুগ‌্ণ এবং ধুঁকতে থাকা চা বাগানগুলির কী হবে তা স্থির করতে বোনাস বৈঠকে বসেন মালিক এবং শ্রমিকপক্ষ। স্থির হয় রুগ‌্ণ বাগানগুলি ১৩ শতাংশ হারে বোনাস দেবে এবং একেবারেই ধুঁকতে থাকা চা বাগানগুলি ৯ শতাংশ হারে বোনাস দেবে। শ্রমিক সংগঠনগুলি এই চুক্তি মানলেও সাধারণ শ্রমিকেরা তা মানবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেই সঙ্গে বহু চা বাগান পরিচালকেরা বাগানের ক্ষতির যুক্তি দেখিয়ে ১৩ শতাংশ হারে বোনাস দিতে অনড় থাকে। সে বাগানগুলিতে বোনাসের সময় অশান্তি তৈরি হবে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

এই পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ির বন্ধ রায়পুর চা বাগান বিশ্বকর্মা পুজো না করার সিদ্ধান্ত নেয়। জলপাইগুড়ির তিস্তা বাঁধের পাশেই রায়পুর চা বাগান। বাগান ছুঁয়ে সড়ক পথ মিশেছে পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়কে। খবর পেয়ে চলে এলাম রায়পুর চা বাগান মহল্লাতে। দীর্ঘদিন ধরে বাগান বন্ধ। কারখানা চত্বর থেকে কবেই পুজো সরেছে। সাদামাঠা আয়োজন করে একটি শ্রমিক লাইনে চাঁদা তুলে পুজো হয়। এ বার সেই আয়োজনও হয় নি। কথা বললাম জলপাইগুড়ির রায়পুর চা বাগানের প্রাক্তন প্রধান তথা তৃণমূল শ্রমিক নেতা প্রধান হেমব্রমের সাথে। জানালেন, “শ্রমিকরা সবে পকেট থেকে যা পারেন দিয়ে করম পুজো করলেন। পর পর দুটো পুজো কেমন করে করবে শ্রমিকরা”? এই সামর্থ্য বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের নেই। তাই এ বছর বিশ্বকর্মা পুজো হল না রায়পুর চা বাগিচাতে। খোলা বাগানে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী বিশ্বকর্মা পুজোর তোড়জোর হলেও বন্ধ এবং ধুঁকতে থাকা চা বাগানের শ্রমিকেরা ‘স্মৃতি’ নিয়েই পড়ে রইলেন পুজোর দিনগুলিতে। বিশ্বকর্মা পুজোয় ছিল না আলিপুরদুয়ারেরও বন্ধ কয়েকটি চা বাগান। সাধারণত চা বলয়ে বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন থেকেই উৎসব শুরু হয়ে যায়। কিন্তু জলপাইগুড়ি হোক বা আলিপুরদুয়ার, খোলা বাগানের পুজোতেও জৌলুস অনেকটাই ফিকে ছিল এই বছর। একটা সময় বিশ্বকর্মা পুজো মানেই আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন চা বাগানে পেট ভরে সব শ্রমিকের খিচুড়ি খাওয়ার যে রেওয়াজ ছিল, অনেক জায়গায় এখন সেটা কয়েকটা কাটা ফল বিতরণের মধ্যেই থেমে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে পুজো এলেই একের পরে এক চা বাগান বন্ধ হয়ে যায়। তাই শরৎকাল এলেই শ্রমিকদের আশঙ্কাও ভেসে আসে সাদা মেঘের মতো। যার জেরে বিশ্বকর্মা পুজো আসলেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে অনেক চা বাগান শ্রমিকের।


এই পরিস্থিতিতেই ১৯-২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর প্রগতি ময়দানে হল কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের ‘ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া’ সম্মেলন। এ বার ‘ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া’য় ডাক পড়ে ডুয়ার্সের চায়ের। সেখানে চা পর্ষদের স্টলে রাখা হয় ওই পণ্য। ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন সিস্টা-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর কাছ থেকে জানলাম দেশের মোট চা উৎপাদনের বড় অংশের জোগান দেয় ডুয়ার্স। তবে দেড়শো বছর পেরিয়ে গেলেও সেই চা বিদেশে সরাসরি রফতানি হয় না। উৎপাদনকারীরা আক্ষেপের সঙ্গেই বলে থাকেন, ‘‘ডুয়ার্সের চা বিদেশে যায়, তবে অন্য নামে।’’ ওই চা পাতা অন্য এলাকার পাতার সঙ্গে মিলিয়ে বা নাম দিয়ে বহুজাতিক সংস্থাগুলি পরিচয় করায় বলে দাবি। এ বারে সরাসরি বিদেশি সংস্থা বা বিপণন বিশেষজ্ঞেরা ডুয়ার্সের চা প্রস্তুতকারীদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারার সুযোগ করে দিয়েছে ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতি। ওই চায়ের দেড়শো বছর পূর্তির কথা জানিয়ে ‘ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়ায়’ ডুয়ার্সের চা রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়েছে। ডুয়ার্সের চায়ের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে ৬৭টি দেশের প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরা হয় কড়া স্বাদের সিটিসি পাতা, গ্রিন টি, হোয়াইট টি এবং হাতে তৈরি ব্ল্যাক অর্থোডক্স চা পাতা, হাতে তৈরি গ্রিন টি এবং হোয়াইট টি। দিল্লিতে যে চা পাঠানো হল সেগুলি মূলত গিয়েছিল ছোট চা বাগান থেকে। ছোট বাগানের পাতা তুলে চা বানিয়েছে একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী। সার্ধশতবর্ষ ছুঁতে চলেছে ডুয়ার্সের চা। বছর শেষে ডুয়ার্স তথা অবিভক্ত জলপাইগুড়ির চা শিল্পের দেড়শো বছর পূর্তিতে দেশ-বিদেশের চা প্রস্তুতকারী, বিপণনে যুক্ত থাকা সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। ডুয়ার্সের জঙ্গল লাগোয়া হোটেলে ডুয়ার্সের চা নিয়ে আলোচনা শিবিরও হবে। উৎসব-আলোচনার আয়োজনের সঙ্গেই প্রশ্ন উঠেছে দেড়শো বছর পার করলেও ডুয়ার্স চা নিজের পরিচিতি পেল কি! ডুয়ার্সের চা প্যাকেটজাত করে অসম চায়ের নামে বিক্রি হলেও আটকানো সম্ভব হচ্ছে না কেন সে প্রশ্নও উঠেছে।


১৮৭৪-৭৫ সালে অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলায় প্রথম চা বাগানের পত্তন হয়। তার আগে, তরাইয়ে চা বাগান গড়ে উঠেছে। অসম-দার্জিলিঙে চায়ের বাগান হয়েছে আরও আগে। সে সময়ের ব্রিটিশ চা শিল্পপতিরা ডুয়ার্সের আবহাওয়া, জমির ধরন দেখে চা বাগান পত্তনের অনুকূল বলে মনে করেন। জলপাইগুড়ির গজলডোবায় ডুয়ার্স তথা অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার প্রথম চা বাগান গড়ে ওঠে। সে চা বাগান এখন নেই। গজলডোবা এখন পর্যটন কেন্দ্র ‘ভোরের আলো’র জন্য পরিচিত। জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার মিলিয়ে ডুয়ার্সে বর্তমানে চা বাগানের সংখ্যা ১৭২টি। মাঝারি চা বাগান মিলিয়ে এই সংখ্যা দু’শোর বেশি। ক্ষুদ্র চা বাগানের সংখ্যা ডুয়ার্সে ত্রিশ হাজারেরও বেশি। রাজ্যের মোট উৎপাদিত চায়ের ষাট শতাংশেরও বেশি জোগান দেয় ডুয়ার্স। সেই ডুয়ার্সের চা শিল্পের সামনে রয়েছে বড় প্রশ্ন। চা পর্ষদ ডুয়ার্সের চায়ের পৃথক ‘লোগো’ প্রচলন করলেও, তা বহুল পরিচিতি পায়নি। এমনকি, ডুয়ার্সের নামে চা প্যাকেটজাত করার প্রবণতাও কম। ডুয়ার্সের তথা উত্তরবঙ্গের চায়ের অঢেল চাহিদা রয়েছে গুজরাটে। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ কেজি চা পাতা সরাসরি গুজরাতে যায়। গুজরাতের একাধিক সংস্থা ডুয়ার্সে এসে কারখানা থেকে চা কিনে নিয়ে যায়। দেশের একাধিক চা প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘ব্র‍্যান্ড ডুয়ার্স’-এর থেকে চা কেনে। ডুয়ার্সের চা স্বাদে-গন্ধে অন্য রাজ্যের চায়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ডুয়ার্সের চা প্যাকেটে ভরে অন্য নামে বাজারে বিক্রি হয়। সারা দেশে অন্তত ১০ কোটি কেজি চা উদ্বৃত্ত হচ্ছে প্রতি বছর। উদ্বৃত্ত চা বিদেশে রফতানি হয় না। কারণ বেশ কয়েক বছর রফতানি বাড়েনি। উদ্বৃত্ত চায়ের ঠেলায় দেশের বাজারে গড়পড়তা চা পাতার দাম যায় কমে। যার ফলে চা শিল্পে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ধারা যেমন থমকে গিয়েছে, তেমনই নতুন বিনিয়োগও আসছে না।

ডুয়ার্সের চায়ের সার্ধশতবর্ষ পালনের আয়োজন করেছে ক্ষুদ্র চা চাষিরা। ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ডুয়ার্সের চা উৎপাদনের চৌষট্টি শতাংশ জোগান দেয় ছোট চা বাগান। সে কারণে আয়োজন করা হচ্ছে ডুয়ার্স চায়ের দেড়শো বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের। বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর কাছ থেকে জানলাম মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে তিনটি আলোচনাসভা হবে। প্রথমটি ডুয়ার্স চায়ের ইতিহাস নিয়ে, দ্বিতীয় আলোচনায় দেশ-বিদেশের বিপণনকারীরা আসবেন ডুয়ার্স চায়ের ‘ব্র‍্যান্ডিং’ নিয়ে এবং সরকারি কর্তা-সহ চা উৎপাদকদের নিয়ে ডুয়ার্সের চায়ের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে আলোচনা হবে আগামী নভেম্বরের ‘কনক্লেভ’-এ। ডুয়ার্সের চা বিপণনকারীদের আশা, দেড়শো বছর পূর্তির ‘কনক্লেভ’-এ চা প্রস্তুকারী সংস্থার সঙ্গে সরাসরি ‘মৌ’ (মেমোরান্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং) হতে পারে। মরসুমভিত্তিক উৎপাদনে স্বাদ এবং গন্ধের নিরিখে ‘প্রথম ফ্লাশ’-এর কদর বেশি। শীতের সুখা মরসুমের পরে চা পাতা তোলা শুরু হয় মার্চ থেকে। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত চা গাছে যে পাতা আসে সেটা ‘প্রথম ফ্লাশ’। কিন্তু চা পর্ষদের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী গত বছর আট কোটি কেজি চা ‘প্রথম ফ্লাশ’-এ হয়েছিল। এ বছর সেটা কমে হয়ছে প্রায় ছয় কোটি কেজি। অর্থাৎ ‘প্রথম ফ্লাশ’-এর চায়ের উৎপাদন কমেছে প্রায় দু’কোটি কেজি। ‘প্রথম ফ্লাশ’-এর পাতার উৎপাদন যে কমতে চলেছে তা চা মহল আগেই টের পেয়েছিল। প্রতিটি বাগানে পাতার পরিমাণ কম ছিল। আবহাওয়ার খামখেয়ালেই ‘প্রথম ফ্লাশ’-এর এই ক্ষতি বলে দাবি চা শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের। ‘দ্বিতীয় ফ্লাশ’-এর শুরুটা ভাল হলেও উত্তরবঙ্গের চা মহল্লায় নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিতেও ক্ষতি হয়ছে চা পাতার। চা পর্ষদের প্রকাশিত মে মাসের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরে মে মাসে এ রাজ্যে চায়ের উৎপাদন হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি কেজি। গত বছর এই মাসে যা ছিল প্রায় সাড়ে তিন কোটি কেজির মতো। সবচেয়ে বেশি উৎপাদন মার খেয়েছে ডুয়ার্সে, কমেছে প্রায় ৭০ লক্ষ কেজি।


পুরো ‘প্রথম ফ্লাশ’-এ চলতি বছরে রাজ্যে ঘাটতি থেকে গেল অনেকটাই। এ ক্ষেত্রেও সবচেয়ে বেশি মার খেয়েছে ডুয়ার্সের উৎপাদন, প্রায় এক কোটি কেজি। দার্জিলিং চায়ের উৎপাদন কমেছে প্রায় ৩০ লক্ষ কেজি। শীতের পরে ভাল মানের চা পাতা পেতে বৃষ্টি প্রয়োজন। এ বছর বসন্তে বৃষ্টিই হয় নি। বহু কারখানা বন্ধ হয়ে ছিল। মে মাসেই ছোট বাগানের উৎপাদন কমেছে প্রায় ৪০ লক্ষ কেজি। গত বছর দেশে চা পাতা উৎপাদিত হয়েছিল প্রায় ১৩৯ কোটি কেজি। ডুয়ার্স এবং অসমেই উৎপাদন ছিল প্রায় ১১৫ কোটি কেজি। এই চা উদ্বৃত্ত। পর্ষদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে সারা বছর দেশের বাজারে চায়ের যা চাহিদা থাকে তার থেকে অন্তত ১০ কোটি কেজি চা পাতা বেশি উৎপাদিত হয়। অর্থাৎ উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশই উদ্বৃত্ত থাকে। কিন্তু পাশাপাশি সিস্টা সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর মতে, বলেন, বিকল্প চাষের পদ্ধতি প্রয়োগ করলে ভবিষ্যতে চা শিল্পকে বাঁচানো সম্ভব হবে কিনা সে প্রশ্ন থাকছে। চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পাণ্ডের মতে,প্রথম ফ্লাশে বৃষ্টির অভাবে পাতার উৎপাদন মার খেয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে উৎপাদন কমেছে। ক্ষেত্রসমীক্ষা করে ফিরছি। দেখলাম ক্ষুদ্র চা বাগিচাতে কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ জুড়ে প্রায় ৪০ হাজার ক্ষুদ্র চা বাগান রয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই বাগানের থেকেই কয়েক লক্ষ মানুষের রুটিরুজি চলছে বলে। চা বাগানের একাংশ চা চাষী নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। এ ধরনের কীটনাশকের প্রভাব তৈরি চায়ের মধ্যে থেকে যায়। যা প্রতিদিন চায়ের মধ্যে দিয়ে মানুষের শরীরে বিষ হয়ে ঢোকে বলে অভিযোগ। এ কারণে চা পর্ষদ নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তার পরেও একাংশ চা চাষি এই ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করছেন। অল্প কয়েকজন অসৎ চা চাষীর জন্য সামগ্রিক সিস্টেম কি খারাপ হওয়া উচিত? উঠছে প্রশ্ন।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri