সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
22.অন্তহীন আকাশের নীচে : অন্তিম পর্ব/দেবপ্রিয়া সরকার

22.অন্তহীন আকাশের নীচে : অন্তিম পর্ব/দেবপ্রিয়া সরকার

21.অন্তহীন আকাশের নীচে-২১/দেবপ্রিয়া সরকার

21.অন্তহীন আকাশের নীচে-২১/দেবপ্রিয়া সরকার

20.অন্তহীন আকাশের নীচে/২০

20.অন্তহীন আকাশের নীচে/২০

19.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৯

19.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৯

18.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৮

18.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৮

17.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৭

17.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৭

16.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৬

16.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৬

15.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৫

15.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৫

14.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৪

14.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৪

13.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৩

13.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৩

12.অন্তহীন আকাশের নীচে/১২

12.অন্তহীন আকাশের নীচে/১২

11.অন্তহীন আকাশের নীচে-/১১

11.অন্তহীন আকাশের নীচে-/১১

10.অন্তহীন আকাশের নীচে/১০

10.অন্তহীন আকাশের নীচে/১০

9.অন্তহীন আকাশের নীচে/৯

9.অন্তহীন আকাশের নীচে/৯

8.অন্তহীন আকাশের নীচে/৮

8.অন্তহীন আকাশের নীচে/৮

7.অন্তহীন আকাশের নীচে/পর্ব ৭

7.অন্তহীন আকাশের নীচে/পর্ব ৭

6.অন্তহীন আকাশের নীচে/৬

6.অন্তহীন আকাশের নীচে/৬

5.অন্তহীন আকাশের নীচে/৫

5.অন্তহীন আকাশের নীচে/৫

4.অন্তহীন আকাশের নীচে/৪

4.অন্তহীন আকাশের নীচে/৪

3.অন্তহীন আকাশের নীচে/৩

3.অন্তহীন আকাশের নীচে/৩

2.অন্তহীন আকাশের নীচে/২

2.অন্তহীন আকাশের নীচে/২

1.অন্তহীন আকাশের নীচে-১

1.অন্তহীন আকাশের নীচে-১

18-February,2023 - Saturday ✍️ By- দেবপ্রিয়া সরকার 487

অন্তহীন আকাশের নীচে/৯

অন্তহীন আকাশের নীচে
পর্ব ৯ 
দেবপ্রিয়া সরকার 
------------------------------

চৈত্র শেষের শান্ত কোপাই। নামমাত্র জলে আঁকিবুঁকি কাটছে গাছগাছালির ছায়া। একটা মাছরাঙা জলের ভেতর মাথা ডুবিয়ে একমনে খাবার খুঁজছে। কয়েকটা ছাতারে পাখি কিচিরমিচির করছে গাছের ডালে। দখিনা হাওয়ার বয়ে আনা আমের মুকুলের গন্ধ ভিক্টরের নাকে এসে লাগছে। বিকেলের বাঁকা রোদ্দুরের নরম আঁচ গায়ে মেখেছে সে। একটা মাঝবয়সী ছাতিমগাছে ঠেস দিয়ে বসে আছে একলা। খানিক দূরে বাউলের আখড়া। ভেসে আসছে গানের কলি, 
“আমার মন যারে চায়, তারে কী কোথায় পাই,
ও মনেরে কী দিয়ে বুঝাই? 
দেখা পাইলে চলে যাইতাম রে-
যাইতাম দুনিয়ার বালাই...”
স্বয়ংদ্যুতির পাঠানো ছবিগুলো অজস্রবার দেখা হয়ে গিয়েছে। দু’একবার ফোনে কথাও হয়েছে তার সঙ্গে। তবুও স্বয়ংদ্যুতি যাবার পর থেকে এক অদ্ভুত মনখারাপ ঘিরে আছে ভিক্টরকে। আজ হঠাৎ করেই সকাল থেকে বারবার মনে পড়ছে মায়ের কথা। মায়ের দিঘির জলের মতো শান্ত চাহনি আর মায়াময় হাসির ছবি ফিরে ফিরে আসছে ভিক্টরের চোখের সামনে। ভিক্টরের বয়স যখন বারো বছর তখন লিভার ক্যান্সার ধরা পড়েছিল তার মা আলপনার। দিল্লি-মুম্বাই ঘুরেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। ভিক্টরের বাবা সমীরণ পেশায় ইঞ্জিনিয়র। কাজ পাগল মানুষ। বরাবরই সংসারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ কম। স্ত্রীর মৃত্যু তাঁকে আরও বেশি করে ঠেলে দিয়েছে বাইরের জগতে। 
উত্তর কলকাতার এক বনেদী পাড়ায় ভিক্টরের জন্ম। দুই কাকার পরিবারের সঙ্গে তারা একই বাড়িতে থাকে। কাকারা ভাল রোজগেরে। কাকা, কাকিমা, খুড়তুতো ভাইবোনেদের নিয়ে তাদের জমজমাট জয়েন্ট ফ্যামিলি। ভিক্টরের মা নেই, বাবা সারাদিন কাজে ব্যস্ত। তাই কিশোর বয়স থেকেই একাকীত্ব ভিক্টরের সঙ্গী। বাড়িতে কোনও কিছুর অভাব না থাকলেও একটা স্নেহের স্পর্শ, আদরের আলিঙ্গন থেকে সবসময় বঞ্চিত রয়ে গিয়েছে সে। কিশোর বয়স থেকেই ভিক্টর বাড়ির অন্য খুদে সদস্যদের সঙ্গে নিজের ফারাকটা অনুভব করতে শিখে গিয়েছিল। তার প্রতি কাকিমাদের শীতল ব্যবহার ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছিল সেটা। সমীরণ তার লেখাপড়া বা খেলাধুলার সরঞ্জাম কিনে দিতে কোনদিন কার্পণ্য করেননি ঠিকই কিন্তু কখনও চেষ্টা করেননি ভিক্টরের মনের খবর রাখার। যত বড় হয়েছে তত বেড়েছে ভিক্টরের একাকীত্ব। একটা বয়সের পর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গ এড়িয়ে চলতে শুরু করেছিল। নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছিল ছোট গন্ডির ভেতর।  
বাড়ির চার দেওয়াল যখন তার কাছে অসহ্য ঠেকছিল তখন ভিক্টর আব্দার করেছিল হস্টেলে যাবার। সমীরণ আপত্তি করেননি। উচ্চমাধ্যমিকের পর পছন্দের বিষয় ইতিহাস নিয়ে সে ভর্তি হয় শান্তিনিকেতনে। কলকাতার ঘিঞ্জি পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসে শান্তিনিকেতন তাকে দিয়েছিল মুক্তির স্বাদ। একঝাঁক তরতাজা তরুণ তরুণীর সংস্পর্শ সজীব করে তোলে ভিক্টরকে । ঠাণ্ডা বাতাসের মতো তার গণ্ডিবদ্ধ যাপনে কখন যেন ঢুকে পড়ে স্বয়ংদ্যুতি। জীবনকে আবার নতুন করে ভালবাসতে ইচ্ছে করে। যদিও ভিক্টর জানে স্বয়ংদ্যুতি উচ্চাকাঙ্ক্ষী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার অনেক বড় বড় স্বপ্ন। তার সেই আকাশ ছোঁয়া স্বপ্নদের ভিড়ে প্রেম-ভালবাসার মতো ছেলেমানুষি সেন্টিমেন্টের কোনও জায়গা নেই। ভিক্টর তার কাছে নিছকই একজন ভাল বন্ধু। তবুও ভিক্টর মন থেকে ভালবাসে স্বয়ংদ্যুতিকে। নিজের সবটুকু অনুভূতি উজার করে আগলে রাখে সেই ভালবাসাকে।
বন্ধু রোহিতের কাছ থেকে নিয়ে আসা গাঁজা ভর্তি সিগারেটে টান দিতে দিতে ঘোরের ভেতর চলে গিয়েছিল ভিক্টর। অনেকদিন পর আজ আবার বেহুঁশ হতে ইচ্ছে করছিল। সম্বিত যখন ফিরল ততক্ষণে সূর্য ডুবে গিয়েছে। সন্ধ্যার মিহি অন্ধকারে ঢেকেছে চারপাশ। নদীর পাড় থেকে চটপট ভিক্টর উঠে পড়ল। সাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকতেই মুখোমুখি হল সুনেত্রার। তার সঙ্গেই ছিল ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র দিদি অন্বেষা সরখেল। ভিক্টরকে দেখে সুনেত্রা বলে উঠল, সারাদিন কোথায় ছিলি? আজ ক্লাসে এলি না কেন? স্যার তোকে খুঁজছিলেন।
ভিক্টর আমতা আমতা করে বলল, ক্লাস করতে ইচ্ছে করছিল না। তাই কোপাইয়ের দিকে গিয়েছিলাম একটু। 
অন্বেষা কিছুক্ষণ ভিক্টরের দিকে চেয়ে থেকে বলল, চোখ দুটো লাল কেন তোর? নেশা করেছিস? 
-ধুস্! কোথায় নেশা? রোহিত একটা সিগারেট দিয়েছিল ওটাই...
 -রোহিতের সিগারেট! সে তো মামুলী জিনিস নয়। ওটায় কী ছিল? গাঁজা? কেন করছিস এসব ভিক্টর? কার জন্যে?  
ঝাঁঝিয়ে উঠল সুনেত্রা। 
-আহা! তোরা না বড্ড রিঅ্যাক্ট করিস। কী এমন করেছি শুনি? আজকে অনেকদিন পর ইচ্ছে হল তাই...
-হঠাৎ এমন ইচ্ছে হবার কারণ?  বিরহ?  তুই ভাল করে জানিস যার জন্যে এসব করছিস তার এতে কিছুই যায় আসে না। 
গম্ভীর গলায় বলল অন্বেষা। 
-তার যায় আসুক বা না আসুক, আমার তো আসে। তোমরা বুঝবে না অন্বেষাদি। 
-হ্যাঁ আমরা কিছুই বুঝব না সব বোঝাবুঝির দায় তো তুই একাই নিয়ে রেখেছিস। ছেড়ে দাও অন্বেষাদি। মরতে দাও ওকে। 
রাগে গজগজ করতে করতে হস্টেলের দিকে পা বাড়াল সুনেত্রা। অন্বেষা দাঁড়িয়ে রইল কিছুক্ষণ। বলল, স্বয়ংদ্যুতিকে যে তুই পাগলের মতো ভালবাসিস সে আমরা সকলেই জানি আর এটাও জানি স্বয়ংদ্যুতি তোকে নিয়ে কী ভাবে। একটা মরীচিকার পেছনে কেন ছুটে মরছিস ভিক্টর? নিজেকে মিথ্যে মায়ায় জড়িয়ে রেখে কী লাভ বল? গ্রো আপ ম্যান! সামনের দিকে তাকা। জীবন অনেক বড়।  
অন্বেষার বলা কথাগুলো তিরের মতো ভিক্টরের বুকে এসে বিঁধছে। ফ্যালফ্যাল করে সে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকল অন্বেষার দিকে।  
-তাড়াতাড়ি হস্টেলে ফিরে ফ্রেশ হয়ে নে। তারপর চলে আয় অনির্বাণ স্যারের কোয়ার্টারের সামনে। ওখানে আজ রাতে ক্যাম্প ফায়ার হবে। সারা রাত জেগে আমরা স্যারের জন্মদিন সেলিব্রেট করব। চলে আয় শিগগির। 
শেষের কথাগুলো বলে অন্বেষা বিদায় নিল। হস্টেলে ফিরে ভিক্টর স্নান ঘরের আয়নার সামনে খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। চেয়ে থাকল নিজের প্রতিবিম্বের দিকে। তিনদিনের না কাটা দাড়ি, তেল-সাবান বিহিন এলোমেলো চুল, লালাচে চোখ দেখতে দেখতে আরেকবার মনে পড়ল মায়ের মুখটা। আচমকা ভীষণ কান্না পেল ভিক্টরের। বুকের ভেতর জমে থাকা কষ্টের লাভাস্রোত যেন বেরিয়ে এল জ্বালামুখ ফাটিয়ে। শাওয়ারের ঠাণ্ডা জলের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল গরম অশ্রুধারা। ভিক্টরের মনের বিষণ্ণতাও যেন ধুয়ে যেতে লাগল জলের সঙ্গে। 
একটা লম্বা স্নানের পর এখন অনেকটা ভাল লাগছে। দাড়ি কামিয়ে পরিষ্কার জামা কাপড় পরে হস্টেলের বাইরে যখন বেরিয়ে এল ভিক্টর তখন আধখানা চাঁদ উঠেছে আকাশে। স্যারের কোয়ার্টারের সামনে বেশ কয়েকজন সিনিয়র এবং জুনিয়র ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে জড়ো হয়েছে তার বন্ধুরাও। কাঠকুটো সাজিয়ে আগুন জ্বালানোর প্রস্তুতি চলছে। দূর থেকে ভিক্টরকে আসতে দেখে এগিয়ে এল অন্বেষা। বলল, এসেছিস? 
ভিক্টর হেসে উত্তর দিল, তোমরা ডাকবে আর আমি আসব না?
ভিক্টরকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে অন্বেষা বলল, এই তো এখন কত্ত ফ্রেশ দেখাচ্ছে! চল ওদিকে সকলে অপেক্ষা করছে তোর জন্যে।
অন্বেষার হাত ধরে ভিক্টর বন্ধুদের দিকে এগিয়ে গেল। সুনেত্রা, রিজওয়ান, অয়ন, রাজদীপ্ত, চয়নিকারা হৈ হৈ করে কাছে টেনে নিল তাকে। কেক কাটার পর ছাত্র ছাত্রীদের অনুরোধে অনির্বাণ স্যার গিটার হাতে নিয়ে গান ধরলেন। সকলেই গলা মেলাল একে একে। জ্বলন্ত আগুনের ধারে বসে বন্ধুদের হাতে হাত রেখে গুনগুন করে উঠল ভিক্টরও। দাউ দাউ আগুনে জ্বলে ছাই হতে থাকল তার নিঃসঙ্গতা। জীবন সত্যিই অনেক বড়। কত মানুষ রয়েছে চারপাশে শুধু চিনে নিতে হয় সঠিক বন্ধুদের। জ্বলন্ত আগুনের ওপাশের পৃথিবীটা ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে আসছে। সব কিছু ছাপিয়ে এই মুহূর্তটাকে বড় আপন বলে মনে হচ্ছে ভিক্টরের।         

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri