বাগিচার ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ফিরে দেখা (দ্বিতীয় পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী
বাগিচার ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ফিরে দেখা (দ্বিতীয় পর্ব)
গৌতম চক্রবর্তী
নগদে মজুরি চা শিল্পের শতাব্দী প্রাচীন দস্তুর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চা বাগানগুলিতে নগদে মজুরি দেওয়ার পরিবর্তে শ্রমিকদের টোকেন দেওয়া হত। শ্রমিকরা সেই টোকেন নিয়ে কাছাকাছি হাটে কেনাকাটা করতে পারতেন। বিক্রেতারা পরে সেই টোকেন বাগানে জমা দিয়ে নগদ অর্থ নিয়ে যেতেন। অসমের চা বাগানে তো ছিলই। ডুয়ার্সের চা বাগানেও একসময়ে নিজস্ব মুদ্রা ব্যবস্থা বা টি টোকেনের প্রচলন ছিল। টি টোকেন ঠাঁই নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। অসমের চা বাগানে ধাতুর মুদ্রা প্রচলিত ছিল। তাতে খোদাই করা থাকত বাগানের নাম। ডুয়ার্সের বাগানে অবশ্য ধাতু নয়। কাঠবোর্ডের টোকেন প্রচলিত ছিল। ডুয়ার্সের বানারহাটের কারবালা বাগানে প্রথম এই টোকেন চালু হয়। সেখানে ১৮৯৪ সালে এক আনার টোকেন প্রথম চালু করা হয় যেটির বৈধতা ১৯৪৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে বলে টোকেনে লেখা ছিল। শেষ টোকেন দেওয়া হয় স্বাধীনতার পরে যার মেয়াদ ছিল ১৯৮৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিটি টোকেনের গায়ে ম্যানেজারের স্বাক্ষরের জায়গা সহ আলাদা সিরিয়াল নম্বর খোদাই করা থাকত। বাগানে ওই ধরনের টোকেন চালুর নেপথ্যে যে কারণগুলির কথা উঠে আসে তার মধ্যে অন্যতম হল মুদ্রার ঘাটতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে অ্যালুমিনিয়াম, তামার মতো ধাতুর ব্যবহার বেড়ে যায়। ফলে সেগুলি দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠে। সম্ভবত সেকারণেই ধাতুর খুচরো পয়সার আকাল মেটাতেই বাগানগুলি নিজেরাই টোকেন ব্যবস্থা চালু করে। উত্তরবঙ্গের চা বাগান বিশেষজ্ঞ রামঅবতার শর্মা জানিয়েছিলেন তিনি নিজের চোখেই হিলা ও ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে এই ধরণের মুদ্রা দেখেছিলেন। স্বাধীনতার পরও কিছুদিন এটা প্রচলিত থাকলেও টি টোকেন ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল তখন প্রত্যন্ত এলাকার বাগানে। কলকাতা থেকে নিয়মিত টাকা নিয়ে যাওয়াটা প্রায় অসম্ভব ছিল। বাগানগুলির ওই ইতিহাস কিন্তু সেভাবে সংরক্ষিত নেই।
চা বাগিচাতে অফলাইন এবং অনলাইন বিতর্ক শুরু হয় ২০১৯ সালের বাজেট পেশের পর থেকে। নোট বন্দী যখন হল তখন নগদে মজুরী না ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং এই টানাপোড়েনে জর্জরিত ছিল উত্তরের চা বাগিচা শিল্প। কেন্দ্রীয় বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বছরে এক কোটি টাকার ওপর ওঠালে ২ শতাংশ হারে টিডিএস বা উৎসমূলের কর দিতে হত সেই সময়ে। এখনও সম্ভবত একই নিয়ম প্রচলিত। ফলে চা শিল্পের কাছে ক্যাশলেস মজুরি দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প উপায় থাকতে পারে না। অনলাইন পরিসেবার বাইরে ছোটো, বড়ো চা বাগানগুলির ক্ষেত্রে বার্ষিক শতকরা ২ শতাংশ হারে টিডিএস দেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারি বিজ্ঞপ্তি সত্যিই মালিক সংগঠনগুলির মধ্যে উদবেগ ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল। টিডিএস প্রযোজ্য হলে চা শিল্পের অসুবিধে কোথায় সেটা জানতে চাইলে উত্তরের চা মালিকদের সংগঠনগুলি মোটের ওপর একটি হিসেব পেশ করে জানিয়েছিল একেকটি বাগান বছরে মজুরি বোনাস সহ আরও কিছু খাতে গড়ে ২০ কোটি টাকা খরচ করে। ওই টাকা মজুরি খাতের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকেই ওঠানো হয়। টিডিএস কার্যকর হলে ওই বাবদ ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। কোনো বাগানই এটা হোক তা চাইবে না। টিডিএস যদিও বা ফেরত পাওয়া যায় তবে সেই প্রক্রিয়া বিস্তর জটিল ও সময়সাপেক্ষ। এটা বাগানগুলির কাছে এক ধরনের উৎপাদনের খরচ হিসেবেই প্রতিপন্ন হবে। প্রতি কিলোগ্রাম চায়ের উৎপাদন ব্যয় এর ফলে ৫ টাকা করে বেড়ে যাবে বলেও প্রশাসনকে পাঠানো চিঠিতে টাই জানিয়েছিল। টিডিএস এড়াবার জন্য ধীরে ধীরে চা বাগানগুলি অনলাইন মজুরির দিকে হাঁটতে শুরু করে। কিন্তু বেশিরভাগ বাগানে ব্যাংকের কোন শাখা না থাকার ফলে টাকা তুলতে সমস্যায় পড়েন চা শ্রমিকরা। এর প্রভাব পড়ে বাগান এলাকার অর্থনীতিতে।
তাই বাগান মালিকদের একাংশ দাবি তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকার যদি টিডিএস থেকে চা শিল্পকে অব্যাহতি না দেয় তবে বাগানগুলিতে দ্রুত ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। অনলাইন এবং অফলাইন। ডুয়ার্সের চা বাগানে বর্তমানে দু'রকম পদ্ধতিতে মজুরি দেওয়া চলছে। চা মালিকদের সংগঠন সূত্রের খবর এখনো নগদে মজুরি ব্যবস্থাই বেশিরভাগ বাগানে চালু আছে। তবে কিছু বাগান পুরোদস্তুর অনলাইনে মজুরি চালু করে দিয়েছে। প্রক্রিয়াতে রয়েছে আরও বেশকিছু বাগান। কিছু বাগান অনলাইনে মজুরি দিলেও ওই ব্যবস্থায় পরিকাঠামোগত দূর্বলতা আছে। সেই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট নানা মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। বাগান এলাকায় ব্যাঙ্ক পরিষেবা নিয়ে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ। চা বাগানে ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রসার নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনিক কিংবা ব্যাংকগুলোর সঙ্গে মালিকদের বৈঠক হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সব কিছু জানিয়ে প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। বাগানগুলির শ্রমিকরা তাদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়া মজুরির টাকা ওঠাবে কোথা থেকে এবং কিভাবে তা নিয়ে বড়ো প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিল। এমন পরিস্থিতিতে বাগান মালিকেরা নিজেরাই একাউন্ট মারফত ক্যাশলেস মজুরি প্রদানে এগিয়ে আসে। কিন্তু সেগুলির শতকরা ৯০ শতাংশ গ্রামীণ এবং চা বাগানের মত প্রত্যন্ত এলাকায়। বেশিরভাগ বাগানেই ব্যাংকিং ব্যবস্থা বলতে কিছুই ছিল না এবং এখনো নেই। কাজে গরহাজির থেকে দূরদূরান্তের ব্যাংকের শাখায় গিয়ে কোনো এটিএম কাউন্টার থেকে তারা যদি মজুরি আনতে চলে যায় তবে ক্ষতি শ্রমিক ও বাগান মালিক দুজনেরই। কারণ এতে ন্যুনতম একদিনের কর্মদিবস নষ্ট হবে। চা শ্রমিকদের যৌথ সংগঠন জয়েন্ট ফোরামের অন্যতম আহ্বায়ক মণিকুমার দার্নাল নগদে মজুরী অথবা ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ব্যাবস্থা ইস্যুতে জানিয়েছিলেন ব্যাংকের কোনো সুবিধা না গড়ে তুলে অ্যাকাউন্টে মজুরি প্রদানের মতো কোনো ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করা হলে তা মেনে নেওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই।
বহু বাগান অন লাইনে মজুরি প্রদানের রাস্তাতে হাঁটতে শুরু করে। বাগান পরিচালকরা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন টিডিএস আসার পর তাদের কাছে ক্যাশলেস মজুরি ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। ডিবিআইটিএ-র তৎকালীন সম্পাদক সুমন্ত গুহঠাকুরতার বক্তব্য ছিল সরকার যদি চা শিল্পকে টিডিএস থেকে অব্যাহতি না দেয় তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে অ্যাকাউন্টে মজুরি দেওয়া ছাড়া বাগানগুলির কাছে আর কোনো বিকল্প নেই। ব্যাংকগুলির গ্রাহক সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় তা নিয়ে চা মালিকদের সংগঠন টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার (টাই) ডুয়ার্স শাখার সম্পাদক রামঅবতার শর্মা দিনরাত একাকার করে দিয়েছিলেন। শ্রমিকদেরও অনুরোধ করা হয়েছিল তারা যেন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। এই ধাক্কার পাশাপাশি যে সমস্ত চা বাগানের মজুরি বা অন্য খাতের অ্যাকাউন্ট মারফত অগাস্ট পর্যন্ত ১ কোটি টাকার বেশি তোলা হয়ে গিয়েছে এরপর থেকে অতিরিক্ত টাকা তুললেই তার ওপর ২ শতাংশ হারে টিডিএস কাটা শুরু করতে শুরু করে ব্যাংকগুলি। যার জেরে শ্রমিকদের মজুরি প্রদান নিয়ে সমস্যায় পড়ে বাগানগুলি। পাশাপাশি অশনি সংকেত দেখতে শুরু করে শ্রমিকরা। বানারহাটের দেবপাড়া চা বাগানের শ্রমিক ইউনিয়নগুলি একজোট হয়ে সেখানকার ম্যানেজারকে লিখিতভাবে জানিয়ে দেয় শ্রমিকরা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মজুরি নেবেন না। একইভাবে নাগরাকাটার চ্যাংমারি বাগান থেকে চা বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের একদল প্রতিনিধি বিডিও-র কাছে নগদে মজুরি প্রথা চালু রাখার দাবিতে স্মারকলিপি দেয়। দেবপাড়ার ম্যানেজার প্রসূন চক্রবর্তী জানিয়ে দিয়েছিলেন মজুরি-বোনাসের টাকা টিডিএস দিয়ে উঠিয়ে নগদে দিতে গেলে বাগানগুলি মারাত্মক আর্থিক সংকটের মুখে পড়বে। তহবিলের অভাবে একটা সময় বাগান চালানোই দুষ্কর হয়ে দাঁড়াবে। শ্রমিকদের সমস্যা বুঝলেও তারা নিরুপায়।
মার্চ মাসে বাজেট পেশের পর ২০১৯ এর পুজোর আগেই টিডিএস কাটার কথা জানিয়ে দিল ব্যাঙ্কগুলি। মালিকদের বক্তব্য এর থেকে বাঁচতে একমাত্র রাস্তা শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে মজুরি। ডুয়ার্সের কোনো বাগানেই যেহেতু ব্যাংকিং পরিসেবা নেই তাই ডুয়ার্সের মোগলকাটা, আমবাড়ি, পলাশবাড়ির মতো একাধিক বাগান টিডিএস দিয়েই মজুরির টাকা তোলে। পরে বাগানগুলি কেটে নেওয়া টাকার সমপরিমাণ বাড়তি টাকা জুড়ে তবেই মজুরি দেয়। মোগলকাটা চা বাগানের প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা সাপ্তাহিক মজুরি দিতে লাগে। টাকা তুলতে গেলে ব্যাংকের শাখা জানায় ২ শতাংশ হারে টিডিএস কাটা হবে। ওই বাবদ ৩৪ হাজার টাকা বেরিয়ে যায়। শ্রমিকরা যেহেতু কম নেবে না তাই নিজেদের পকেট থেকে ওই টাকা দিয়ে মজুরি দেওয়া হয়। তবে সভা ডেকে শ্রমিকদের দ্রুত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে সেই নথি জমা দেবার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। দেখা যায় বাগান বাঁচাতে ক্যাশলেস মজুরি ছাড়া আর অন্য কোনো বিকল্প নেই। টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার (টাই) ডুয়ার্স শাখার সম্পাদক রামঅবতার শর্মা শ্রমিকদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানান ব্যাংক অ্যাকাউন্ট মারফত মজুরি দিতে তারা যেন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। টিডিএস ইস্যুতে মালিকদের শীর্ষ সংগঠন কনসালটেটিভ কমিটি অফ প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিসিপিএ)-এর সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহা বলেন, টিডিএস দিতে হলে বাগানগুলির বিপুল অঙ্কের তহবিল আটকে থাকবে। চা শিল্প এমনিতেই নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তহবিল আটকে থাকলে সেই সংকট যে আরও বাড়বে তা বলাই বাহুল্য। টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার (টাই) ডুয়ার্স শাখার সম্পাদক রামঅবতার শর্মা বলেন, টিডিএস-এর থেকে অব্যাহতি চেয়ে সিসিপিএ সরকারের কাছে আবেদন করেছে। যদি আবেদন মঞ্জুর না হয় তবে ক্যাশলেস মজুরিই বিকল্প পথ।
চা মালিক সংগঠন আইটিপিএর সচিব অমিতাংশু চক্রবর্তীর মতে লেনদেনে একশো শতাংশ স্বচ্ছতা থাকা উচিত। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের জেলাশাসকদের চিঠি পাঠিয়েছিলেন চা মালিকদের অন্যতম সংগঠন টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (টাই)। টাই-এর ডুয়ার্স শাখার তৎকালীন সম্পাদক রাম অবতার শর্মা বলেছিলেন তাঁরা টিডিএস থেকে ছাড় চেয়ে কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। তবে তখনও পর্যন্ত কোনো বার্তা আসেনি। আরেকটি সংগঠন ডিবিআইটিএ-র তৎকালীন সম্পাদক সুমন্ত গুহঠাকুরতা জানিয়েছিলেন ‘টিডিএস চালু হলে চা শিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে। তা থেকে বাঁচতে অনলাইনে মজুরি দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না। তাঁদের বক্তব্য ছিল একান্তভাবেই যদি বাগানগুলিকে টিডিএসের আওতায় নিয়ে আসা হয় তবে শ্রমিকদের নগদে মজুরি দেওয়া আর সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিকাঠামো গড়ে না উঠলে মজুরি নিয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্যাশলেস মজুরি চালু করার প্রধান বাধা বাগানগুলিতে ব্যাংকিং ব্যবস্থা না থাকা। সরকার কোনও ব্যবস্থা চালুর কথা ঘোষণা করলে তাদেরই সেই ব্যবস্থার পরিকাঠামো গড়ে তোলার দায়িত্ব। কিন্তু সরকার বাগানগুলিতে ক্যাশলেস ব্যবস্থার পরিকাঠামো গড়ে তোলেনি। উত্তরের চা শিল্পে প্রধানমন্ত্রীর সাধের ডিজিটাল ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল তখনও এবং আছে এখনও। এক্ষেত্রে প্রশাসন যাতে এগিয়ে আসে সেই দাবিও জানিয়েছেন চা শিল্পের মালিক এবং শ্রমিকপক্ষ। তৎকালীন টি-অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার ডুয়ার্স শাখার সম্পাদক রামঅবতার শর্মা এবং ডিবিআইটিএ’র সম্পাদক সঞ্জয় বাগচি উভয়েরই আরো অভিযোগ ছিল আর্থিক সাহায্য দরকার হলেও ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে চা বাগান আলাদা করে কোনও সুবিধা পাচ্ছে না এবং ব্যাংকগুলির কাছ থেকে চা বাগানের প্রয়োজনভিত্তিক ঋণ মিলছে না।
এই পরিস্থিতিতে বাগানে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা শুরু করার পরেই অনলাইন মজুরি চালু করার দাবিতে সরব হয় শ্রমিক সংগঠনগুলো। তাঁদের যুক্তিসঙ্গত দাবি ছিল সমাজের প্রান্তিক মানুষের রুটিরুজির সংস্থানে চা শিল্পকে যাতে টিডিএস থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সেই দাবিতে তারাও কেন্দ্রের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ জয়েন্ট ফোরামের আহ্বায়ক মনিকুমার দারনালও বলেন, সব বাগানে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা শুরু না হওয়া পর্যন্ত অনলাইন মজুরি মানা খুবই কষ্টকর। ক্ষুদ্র চা চাষীদের সর্বভারতীয় সংগঠন সিসটার সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ক্ষুদ্র চা বাগানগুলি ব্যাংকিং ব্যবস্থার অপ্রতুলতা এবং আধারের সমস্যা নিয়ে জেরবার বলে দালালদের উপদ্রব ক্রমশ বাড়ছে। চা মালিকদের অন্যতম সংগঠন টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া অর্থাৎ টাই এর ডুয়ার্স শাখার তৎকালীন সম্পাদক রাম অবতার শর্মা বলেন, এসএলবিসির বৈঠকে বাগানে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা বিস্তার এবং সিএএ এর বৈঠকে পিএফ এবং আধার সংযোগের বিষয়গুলি বাগান মালিকেরা তুলে ধরেছেন। আধারের সঙ্গে পিএফ এর তথ্যের অসঙ্গতি দূর করা ভীষণভাবে প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কিন্তু ২০২১ পর্যন্ত সমস্যা একইপ্রকার থেকে যায়।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴