লখীপাড়া টি গার্ডেন (দ্বিতীয় পর্ব) /গৌতম চক্রবর্তী
লখীপাড়া টি গার্ডেন (দ্বিতীয় পর্ব)
গৌতম চক্রবর্তী
নির্বাচন শেষ। এবারেও বাগিচার সাথে বঞ্চনা করল কেন্দ্রীয় সরকার। আলিপুরদুয়ার চা বাগিচা বলয় থেকে জিতলেন মনোজ টিজ্ঞা এবং জলপাইগুড়ি চা বলয় থেকে জিতলেন ডঃ জয়ন্ত রায়। কিন্তু নামকোয়াস্তে প্রতিমন্ত্রী ছাড়া কিছুই জুটলো না উত্তরের মানুষের যারা দু হাত তুলে ভোট দিলেন বিজেপিকে। আসলে ডুয়ার্সের পাঁচালী এবং গল্প শেষ হবার নয়। পুরোটাই বঞ্চনার ইতিহাস। বসে আছি বানারহাট স্টেশনে। ঝকঝকে তকতকে স্টেশন। প্ল্যাটফর্ম থেকে কয়েক পা এগুতেই দেখি মোগলকাটা যাবার গাড়ি নিয়ে দশাই ওঁরাও হাজির। গাড়িতে বসে ঝাঁকুনি খাচ্ছি। রাস্তার ছালবাকল উঠে গিয়ে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। তোতাপাড়া ছাড়িয়ে মোগলকাটা চা বাগানের বিবর্ণ প্রবেশদ্বার বাঁদিকে রেখে বাগিচার বাবুদের কোয়ার্টার। পরপর তিনটি কাঠের দোতলা অতিক্রম করে পৌঁছে গেলাম চা বাগিচার কোয়ার্টারে। এখানেই রাত্রিযাপন আমাদের। বসার ঘর। সঙ্গে আরো দুটি ঘর থাকা খাওয়ার জন্য। চা বাগানের ফ্যাক্টরীর পাশে ছোট্ট একটু জায়গা জুড়ে মরসুমি ফুলের গাছ লাগিয়ে কোয়ার্টারের সামনে সৌন্দর্য বৃদ্ধির প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। সামনে দিগন্তবিস্তৃত চা বাগান। কোয়ার্টারের সামনেই লিচু গাছ। পাশেই ঝাপড়া দুটি রেইন ট্রি। ডাইনে বাঁইয়ে সেগুন শিরিস গাছ। রাতের বেলা গা ছমছম করে। জ্যোৎস্না রাতে এক অদ্ভুত মাদকতা নিয়ে আসে। লুচি তরকারি আর চা পান সাঙ্গ করে খেয়ে দেয়ে এলাম চা বাগানের হাটে। বিকেলে চা বাগানের হাট দেখার মতো। এক সময়ে ডুয়ার্সে হাট দেখার নেশায় মাঝেমধ্যেই বেরিয়ে পড়তাম। মারুয়ার গন্ধে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। এলোমেলো ঘুরে কোয়ার্টারে ফিরে ডিনার সেরে ক্লান্ত শরীরে লেপমুড়ি দিয়ে ঘুমের দেশে। ঘুম যখন ভাঙলো তখন বাইরে পাখীর মিষ্টি ডাক শোনা যাচ্ছে। বাইরে ঝলমলে রোদ। শীতের তীব্রতা রয়েছে। চাদর মুড়ি দিয়ে বসে ঘন ঘন চা পান করি। আজ ক্ষেত্রসমীক্ষা করতে যাব মোগলকাটার পাশাপাশি কারবালা এবং লখীপাড়া চা বাগিচায়। বানারহাট থেকে লখীপাড়া ফ্যাক্টরি রোড ধরে লখীপাড়া টি গার্ডেন ৩.৯ কিমি। সময় লাগে ৯ মিনিট।
জলপাইগুড়ি সদর মহকুমার ধূপগুড়ি ব্লক এর অন্তর্গত লখিপাড়া টি গার্ডেনটির পরিচালক গোষ্ঠী গুডরিক গ্রুপ লিমিটেড। বাগানটি ডিবিআইটিএ ম্যানেজমেন্ট সংগঠনের সদস্য। সদস্য। বর্তমান কোম্পানি ১৯১৩ সালে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। ১৯৭৮ সালে গুডরিকস গ্রুপ বাগানটির দায়িত্বভার গ্রহণ করে। বাগানে ম্যানেজারিয়াল স্টাফ ৭ জন। বাগানে প্রতিষ্ঠিত ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা বেশ কয়েকটি। এগুলি হলো এনইউপিডব্লিউ, পিটিডব্লিউইউ এবং ডব্লিউবিটিজিইএ। বাগানে স্বীকৃত ট্রেড ইউনিয়ন পিটিডব্লিউইউ। বাগানটির আইনশৃঙ্খলার দিকটি দেখে বানারহাট থানা। লখীপাড়া চা বাগানের আয়তন এবং চাষযোগ্য গ্রস এবং গ্র্যান্ট আবাদিক্ষেত্র ৯১৯.৫৫ হেক্টর। ড্রেন এবং সেচের সুবিধাযুক্ত অঞ্চল ৯১৯.৫৫ হেক্টর। এক্সটেন্ডেড জমির পরিমাণ ৬২৭.৪৭ হেক্টর যেটি চাষযোগ্য উৎপাদন ক্ষেত্র। প্রতি হেক্টর উৎপাদনযোগ্য ড্রেন এবং সেচযুক্ত প্ল্যান্টেশন এরিয়া থেকে প্রতি হেক্টর জমি পিছু ২৭৩৭ কেজি করে চা ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত হয়। লখীপাড়া চা বাগিচার সাব স্টাফ এর সংখ্যা ১১০ জন, করণিক ১৫ জন এবং ক্ল্যারিক্যাল এবং টেকনিক্যাল স্টাফ দুইজন। বাগানে শ্রমিক পরিবারের সংখ্যা ৯৯৮। মোট জনসংখ্যা ৭১৮১। স্থায়ী শ্রমিক ১৩১০ জন। বিগত আর্থিক বছরে অস্থায়ী বিঘা শ্রমিকের প্রয়োজন হয়নি। ফ্যাক্টরিতে নিযুক্ত চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক সংখ্যা ১০৪ জন। ফ্যাক্টরির ক্ল্যারিক্যাল এবং টেকনিক্যাল স্টাফ ৪ জন। বাগানের মোট সাব স্টাফ ১১০ জন, বাগানের ক্ল্যারিক্যাল সাব স্টাফ ১৭ জন, মেডিক্যাল সাব স্টাফ ৪ জন। কর্মরত শ্রমিক ১৫৪৯ এবং শ্রমিক নয় এমন সদস্যদের সংখ্যা ৫৬৩২। বাগিচা পরিভ্রমণকালে গুদামবাবু নাগরিক সংশোধনী আইন নিয়ে এক বেমক্কা প্রশ্ন করলেন। তাঁর প্রশ্ন ছিল জোট রাজনীতিতে এখন এনআরসি এবং সিএএ কি হবে। কপালে গেরুয়া টিকা দেখে মেরুকরণ বুঝলাম এবং সযতনে পাশ কাটালাম। কিন্তু বিষয়টা এবং প্রশ্নটা আমার মগজে গেথে গেল।
উত্তরবঙ্গে চা শ্রমিক রয়েছেন প্রায় সাড়ে চার লক্ষ। পরিবারের বাকিদের নিয়ে সংখ্যাটা প্রায় ১২ লক্ষ। সময়ের পরিবর্তনে এখন চা বাগানের অনেকেই বাইরে কাজ করছে। তবে থাকছে শ্রমিক হিসেবে ঠাকুরদা বা বাবার একসময়ে পাওয়া চা বাগানের কোয়ার্টারেই। এই দখলদারির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে চাইছে বাগানগুলি৷ শ্ৰমিক না হয়েও কেন ঘর দখল করে থাকবেন এই প্রশ্ন চা বাগান মালিকদের। বাইরে কাজ করবে, অথচ বাগানের সমস্ত সুযোগসুবিধা নেবে, তা তো হতে পারে না। এটা কিন্তু বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় প্রতিটি বাগানেই। চা বাগিচা শ্রমিকদের বড় একটা অংশই বাগানে কাজ করে না। বাগানে কম মজুরির জন্য এখন অনেকেই বাইরে কাজ করে। কিন্তু অন্যত্র বাড়ি না থাকায় তারা বাগানে বসবাস করে। একটা সময় ২৪ ঘণ্টার নোটিশে যে কোনও শ্রমিককে বাগানের বাইরে বের করে দিতে পারত চা বাগান কর্তৃপক্ষ যা ছিল শ্রমিকদের কাছে হাট্টা বাহার, যার বিরুদ্ধে ১৯৫৫ সালে ‘জঙ্গি আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল পাহাড় থেকে সমতলে৷ যদিও সেসময় যাঁরা বাগানে থাকতেন তারা হয় শ্রমিক, না হয় শ্রমিক পরিবারের সদস্য। দার্জিলিংয়ের মার্গারেট হোপ চা বাগানে ওই বছরে ২৫ মৃত্যু হয়েছিল ছয় শ্রমিকের। ওই ঘটনার পরই ঠিক হয় বাগান কর্তৃপক্ষ কোনও শ্রমিককে ইচ্ছে করলেও বের করতে পারবে না। তবে যাঁরা শ্রমিক নন অথচ বাগানে থাকবেন তাদের ক্ষেত্রে কী হবে সেই সংক্রান্ত কোনও লিখিত নির্দেশিকা নেই। হাট্টা বাহার’- এর ছায়া পড়ার সম্ভাবনা দেখা যায় ডুয়ার্সের চা বাগানে। এনআরসি আর সিএএ নিয়ে আন্দোলন যখন দানা বাধছিল বছর দুই তিনেক আগে, তখন যারা বাইরে কাজ করেও বাগানে বসবাস করছে এমন মানুষজনকে বাগান থেকে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। দার্জিলিংয়ের সিংতাম চা বাগান কর্তৃপক্ষ এমন বাসিন্দাদের ঘর খালি করে দেওয়ার লিখিত নির্দেশিকা জারি করেছিল। কিছু চা বাগান আবার মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছিল।
প্রত্যেকটি চা বাগান কর্তৃপক্ষ যে একই পথে হাঁটবে তা বুঝতে পেরে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিল চা শ্রমিক সংগঠনের জয়েন্ট ফোরাম। বাপ ঠাকুরদার ভিটেমাটি ছেড়ে এত মানুষ কোথায় যাবেন প্রশ্ন তুলে প্রায় সাত দশকের পুরোনো আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন শ্রমিক নেতারা। সিংতাম চা বাগানের ঘটনাকে হাট্টা বাহার হিসেবে দেখেছিলেন শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতারা। এদের স্ফল্যে উদবুদ্ধ হয়ে বাকি চা বাগানগুলি ঘর খালির প্রক্রিয়া শুরু করলে প্রচুর মানুষ বাস্তুচ্যুত হবেন বলে আশঙ্কা। আসলে শ্রমিক পরিবারের সদস্য হলেই সকলকে সারাজীবন বাগানে কাজ করতে হবে তা তো হতে পারে না। কাউকে উচ্ছেদ করা সঠিক নয়। বাগানে অনেকে ঘর দখল করে ছিলেন। বিভিন্ন সুবিধা নিচ্ছেন বাগান থেকে। তাদের একাধিকবার মৌখিকভাবে ঘর খালি করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। আসলে অন্য সেক্টরের সঙ্গে চা বাগানকে মেলালে চলবে না। তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা হলে সিরিয়াস মুভমেন্ট হবে। তবে দুই পক্ষ আলোচনায় বসলেই সমস্যার সমাধান হবে। প্রশ্নটা হচ্ছে নাগরিক সংশোধনী আইনের খারাপ দিকহল এটাই। বর্তমান সময়ে আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ধর্মীয় মেরুকরণের ভিত্তিতে কিছু কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের ভোট ব্যাংকের স্বার্থে কাজ করে চলেছে। ফলে আগামী দিনে আমাদের দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার তকমাটা বজায় থাকবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ দানা বেধেছে। নাগরিক সংশোধনী আইন হলে আমাদের দেশে এক ধর্মের সঙ্গে আরেক ধর্মের বিরোধ বাড়বে। এই আইন কার্যকর হলে ধর্মে-ধর্মে মারামারি এবং কাটাকাটি বাড়বে। কাজেই নাগরিক সংশোধনী আইন বাতিল করা প্রয়োজন। কারণ আমরা সবাই একসঙ্গে বাঁচতে চাই এবং একসঙ্গে দিনযাপন করতে চাই। আমরা কোন ভেদাভেদ চাই না। সরকার মানুষের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করুক। মানুষ কিন্তু কাজ চায়, ভেদাভেদ চায় না। নাগরিক সংশোধনী আইন এবং নাগরিকপঞ্জী একই মূদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। এই আইন আমাদের দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার জিয়নকাঠিতে আঘাত হানবে এবং গৃহযুদ্ধ বাধাবে।
এলাম ফ্যাক্টরিতে। সিনিয়ার ম্যানেজার খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন এবং হাতে কলমে দেখিয়ে দিলেন চা তৈরির খুটিনাটি। চা বাগানে নিজস্ব চা পাতা উৎপাদনের গড় ৪০-৫০ লাখ কেজি। ফ্যাক্টরিতে নিজস্ব উৎপাদিত চা গড়ে ১৫ লাখ কেজি। বাইরের বাগান থেকে কাঁচা পাতা সংগৃহিত হয় না। মোট বাৎসরিক উৎপাদিত চা ১৫ লাখ কেজি। বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বাগানে ইনঅরগ্যানিক সিটিসি চা উৎপাদিত হয়। বাগানটি ছোটো হলেও চরিত্রগত দিক দিয়ে মানের বাগান। লখিপাড়া চা বাগান অর্থনৈতিক ব্যাপারে ব্যাঙ্কের উপর নির্ভরশীল। লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানের লিজ হোল্ডার গুডরিকস গ্রুপ লিমিটেড। লিজের ভ্যালিডিটির সময়সীমা ২০৬০ সাল। বাগিচায় ব্যক্তিগত ইলেক্ট্রিক মিটার সহ পাকাবাড়ির সংখ্যা ৯১১ টি। বৈদ্যুতিক সংযোগবিহীন শ্রমিক আবাস নেই। মোট শ্রমিক আবাস ৯১১ টি। মোট শ্রমিক ১৫৪৯ জন। বাগানে শতকরা ৬০ শতাংশ শ্রমিক আবাস এবং অন্যান্য বাসগৃহ আছে। পানীয় জলের উৎস ডিপ টিউব ওয়েল। বাগিচাতে সজল ধারা নেই। ডিপ টিউব ওয়েল ২ টি। কুয়ো আছে বেশ কয়েকটি। সহকারি ম্যানেজারের কাছ থেকে জানলাম লখীপাড়া চা বাগানের কর্মীদের অনেকেরই দৃষ্টিশক্তি কম যার প্রভাব পড়ছে বাগানের উৎপাদনশীলতায়। চোখে যারা কম দেখে তাদের বেশিরভাগই মহিলা। তারা সাধারণভাবে চা পাতা তোলা, বাছাই করা ইত্যাদি কাজে যুক্ত থাকেন। তাঁদের ছানির সমস্যা ছিল খুব কম জনের। কিন্তু ৬৫-৭৫ শতাংশের সাধারণ দৃষ্টিশক্তির ক্ষেত্রেই সমস্যা ছিল। শুনলাম একটি এনজিও “ভিশনস্প্রিং” বাগিচাতে কাজ করছে ম্যানেজমেন্টের সহযোগিতায়। চশমা ব্যবহার শুরুর পরে দেখা গিয়েছে তাঁদের উৎপাদনশীলতা ২০%-৩৩% পর্যন্ত বেড়েছে। একথা ঠিক চোখের এই সাধারণ সমস্যা মেটাতে পারলে উৎপাদনশীলতা আরো বাড়বে চা বাগিচায়। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানলাম চশমা ব্যবহার করার পরে তাঁদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকটাই।
লক্ষ্মীপাড়া চা-বাগিচাতে হাসপাতাল আছে। মেল ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৪ টি, ফিমেল ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৪ টা, আইসোলেশন ওয়ার্ড পাঁচটা, মেটারনিটি ওয়ার্ড সাতটা। লক্ষ্মীপাড়া চা বাগিচার হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার আছে। বাগিচায় অ্যাম্বুলেন্স আছে। বাগিচার কাছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। চিকিৎসার জন্য শ্রমিকদের বাগানে অবস্থিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রেফার করা হয়। বাগিচায় আবাসিক এমবিবিএস পাস ডাক্তার আছে। ডাক্তারের নাম এস কে দাস। প্রশিক্ষিত নার্সের সংখ্যা দুজন, মিড ওয়াইভস, কম্পাউন্ডার এবং স্বাস্থ্য সহযোগী আছেন একজন করে। বাগিচায় পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করা হয়। বাগিচার হাসপাতালে কেউ ভর্তি হলে উন্নত সুষম পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হয়। বাগিচায় ওষুধ সরবরাহ হয় স্বাস্থ্য দপ্তরের সহযোগিতাতে । ওষুধের তালিকা স্টক অনুযায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নোটিশ বোর্ডে দেওয়া হয়। উন্নত মানের পথ্য সরবরাহ এবং নিয়মিত ডায়েট চার্ট অনুসরণ করা হয়।
বাগিচায় ৯১ সাল থেকে লেবার ওয়েলফেয়ার অফিসার আছেন। নাম পি মুখার্জি। দুইজন। স্থায়ী ক্রেশের সংখ্যা দুইটি। অস্থায়ী নেই। ক্ৰেশে পর্যাপ্ত জলের ব্যাবস্থা, শৌচালয় আছে। দুধ, বিস্কুট বা পুষ্টিকর খাবার ক্রেশের শিশুদের দেওয়া হয়। পর্যাপ্ত পানীয় জল ক্ৰেশে এবং চা বাগানে সরবরাহ করা হয়। বাগিচায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। বাগিচা সংলগ্ন উচ্চ বিদ্যালয় আছে বাংলা এবং হিন্দী মাধ্যমের। শ্রমিক সন্তানদের বিদ্যালয়ে নেবার জন্য যানবাহনের ব্যাবস্থা হিসাবে একটা বাস আছে। বাগানে বিনোদনমূলক ক্লাব, খেলার মাঠ আছে। লখীপাড়া টি গার্ডেনে নিয়মিত পি এফ বা গ্র্যাচুইটির টাকা জমা হয়। বোনাস চুক্তি অনুযায়ী মিটিয়ে দেওয়া হয়। পি এফ বা গ্র্যাচুইটি বকেয়া থাকে না । শ্রমিকদের মজুরি, রেশন এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা চুক্তি অনুযায়ী দেওয়া হয়।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴