ভূমি আইন মেনেই চা শ্রমিকদের পাট্টা প্রদান হোক (তৃতীয় তথা শেষ পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী
ভূমি আইন মেনেই চা শ্রমিকদের পাট্টা প্রদান হোক
(তৃতীয় তথা শেষ পর্ব)
গৌতম চক্রবর্তী
কেন্দ্রীয় সরকারের আবাস প্রকল্পের টাকা বন্ধ। বাকি ঘটনা সেটা রাজনীতির বিষয়। কেন্দ্রে যে দল ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত তার মতের শরিক যদি কোন রাজ্য সরকার না হয় তাহলে তার যাবতীয় কেন্দ্রীয় অনুদান নানান ছলাকলায় আটকে দিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার সেটা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। কয়েকজন দোষীর জন্য সকলের শাস্তি পাওয়ার বিধান এর আগে মনে হয় স্বাধীনতার পরে হয় নি। এক ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক আবর্তে আমরা ঘুরপাক খাচ্ছি। লোকসভা ভোটে লাভ তোলার আশাতে রাজ্যের শাসকদল জমি এবং বাড়ি তৈরির টাকা দিয়ে নিজেদের জমি শক্ত করতে চাইছে। চা শ্রমিকদের সরাসরি জমির পাট্টা এবং সেই সঙ্গে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিচ্ছে। এককথাতে চা শ্রমিকদের অধিকার দিচ্ছে তৃণমূল সরকার। আমার কাছে এটা কিন্তু সামাজিক বিপ্লব। হ্যা, দেওয়ার পন্থা ও পদ্ধতিতে হতো আইনি নানান নিয়মকানুন ঠিকমতো মানা হচ্ছে না, এরজন্য বিরোধিতা হচ্ছে। বামপন্থী দলের জয়েন্ট ফোরাম নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলছে এটা উদবাস্তূ পাট্টা, যে জমিতে শ্রমিক বসবাস করছে সেই জমিতেই তাদেরকে পাট্টা দিতে হবে। বিষয়টা নিয়ে সরকারি স্তরেও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায় কিনা তা নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে ৩৪ বছরে তোমরা তাহলে করলে টা কি। প্রশ্ন উঠছে চা বাগ্ন থেকেই। কেন্দ্রীয় সরকারের দিক থেকেও চা বাগান নিয়ে কোন সহযোগিতা নেই, চা বাগিচা নিয়ে কোন কথা নেই, বাজেটের কোন ঘোষণাই কার্যকরী হচ্ছে না, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর লোকসভা ভোটে টিকিট না পাওয়াজনিত কারণে আচরণ ও নিরুত্তাপ মনোভাব চা শ্রমিকদের মনে এই ধারণা মজবুত করেছে এরা মুখে যা বলে কাজে তা করে না। বরং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মজুরি নিয়ে নমনীয় মনোভাব, ন্যুনতম মজুরির স্বপক্ষে অর্ডিন্যান্স জারি করা, বাগিচা নিয়ে নিরন্তর ভাবনাচিন্তা করা এবং বারেবারে ছুটে আসা, পাট্টা, চা সুন্দরী এবং পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুবিধা প্রদান, চা বাগিচা অধ্যুষিত স্কুলের বাচ্চাদের বিভিন্ন সরকারি সুবিধা প্রদান বাগিচা অধ্যুষিত অঞ্চলে জমি মজবুত করছে তৃণমূলের। সমস্যা হচ্ছে সুবিধাগুলি শ্রমিকদের কাছে পৌছানোর জন্য যে সৎ এবং আদর্শবান মানুষজন রাজনৈতিক আঙিনাতে প্রয়োজন ছিল তার আজ বরই অভাব চা বাগিচাগুলিতে। ঠক বাছতে গা উজার হয়ে যাবে। ফলে হতভাগ্য শ্রমিকেরা যে তিমিরে সেই তিমিরেই। লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রসমীক্ষাতে এটাই আমার উপলব্ধি।
এই মুহুর্তে প্রয়োজন উত্তরের চা বাগিচা নিয়ে কেন্দ্রীয় শ্রমদপ্তরের উদ্যোগে আলাদা মন্ত্রক। জানিনা মনোজ টিগ্যা চা শ্রমিকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন কিনা। উত্তর পেতে বেশি দেরি নেই। তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দুই তরফের কাছেই কিন্তু সূবর্ণ সুযোগ রাজনৈতিক আকচাআকচি নয়, কাজের মধ্য দিয়ে শ্রিমিকদের মন জয় করা। বিজেপির জলপাইগুড়ির প্রাক্তন সাংসদ জয়ন্ত রায় মতে উদ্বাস্তু পাট্টা দেওয়া হচ্ছে চা শ্রমিকদের। তাঁরা উদ্বাস্তু নাকি! সরাসরি জমি দিতে হবে, পুরো অধিকার দিতে হবে। জয়ন্তবাবুরা বলছেন শুধু, কাজ করছেন না, কিন্তু এটা ঘটনা শুধু শ্রমিক নয়, চা বাগানের জমিতে বসবাসকারী ‘বহিরাগতদের’ও জমির পাট্টা দেবে রাজ্য সরকার। সেই লক্ষ্যে চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা দিতে সমীক্ষা শুরু করতে উত্তরবঙ্গের জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সে সঙ্গে রাজ্যের ভূমি দফতরের নির্দেশ, চা বাগানের জমি ‘দখল’ করে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে রয়েছেন কিন্তু চা শ্রমিক নন, এমন যাঁরা রয়েছেন, তাঁদেরও সমীক্ষায় যুক্ত করতে হবে। এই পরিবারগুলি যদি পাট্টা পাওয়ার সব শর্ত পূরণ করে, তবে তাঁদেরও বাগানের ভিতরে পাট্টা দেবে সরকার। যদিও এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য নিয়ে বেধেছে চাপান-উতোর। এ ভাবে ‘জবরদখলকারীদের’ স্বীকৃতি দেওয়া হলে চা বাগান চলবে কী করে সে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। তবে রাজ্য ভূমি দফতরের তরফে দাবি কোনওভাবেই যাতে পাট্টা দিতে গিয়ে বাগানের স্বাভাবিক কাজকর্মে সমস্যা না হয় তা দেখা হবে। রাজ্যের ভূমি কমিশনার জলপাইগুড়ির প্রাক্তন জেলা সমাহর্তা স্মারকী মহাপাত্র সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে এসেছিলেন। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং দার্জিলিং জেলায় সমীক্ষার কাজ দেখেন, বাগানে যান এবং প্রশাসনের সঙ্গেও বৈঠকও করেন। চা বাগান মালিকদের সঙ্গেও আলোচনা করেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জেনেছিলাম বাগানের শ্রমিক নন, অথচ দীর্ঘদিন অস্থায়ী আস্তানায় বাস করেন এমন মানুষেরাও শর্তসাপেক্ষে পাট্টা পেতে পারেন। তবে কোনওভাবেই পাট্টা দিতে গিয়ে যাতে চা বাগান চালানোয় সমস্যা না হয় দেখা হবে। চা শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে অবসরপ্রাপ্ত এবং যাঁরা অবসরের মুখে তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এবার তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে চা বাগানের জমিতে বসবাসকারী কিন্তু শ্রমিক নন এমন পরিবারকেও।
জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের ভূমি দফতরের এক কর্তার কথায়, “এটি একটি প্রক্রিয়া। ধাপে ধাপে সকলেই পাট্টা পাবেন। সকলে বলতে যাঁদের চা বাগানে আবাসনে থাকার সুযোগ নেই। প্রাথমিক সমীক্ষায় ভূমি দফতর দেখেছে বহু চা বাগানের খালি পড়ে থাকা জমিতে কলোনি তৈরি হয়েছে। অন্তত এক থেকে দেড়শ পরিবারের বসবাস। সে পরিবারগুলিকেও পাট্টা দেবে সরকার। খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে যাতে পাট্টা দেওয়ার জন্য জমি নিয়ে নিলে চা বাগান চালাতে কোনও সমস্যা না হয়। ভূমি সংস্কার দফতরের ওই কর্তার কথায়, “কোনও বাগানে যদি প্রয়োজনীয় জমি পাওয়া না যায়, তা হলে সে বাগানের শ্রমিক বা বসবাসকারীকে পাশের কোনও বাগানের বা লাগোয়া এলাকার জমিতে পাট্টা দেওয়া হবে। চা উৎপাদনে সমস্যা হয় এমন কোনও পদক্ষেপ হবে না।” চা বাগান মালিকপক্ষ আপাতত ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে। সরকারিভাবে এই বার্তা জানানোর অপেক্ষা করছেন। বাগানদের একটি পরিচালক সংগঠনের তরফে আইনজীবী এবং প্রাক্তন বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। চা শ্রমিকদের শুধু জমির পাট্টাই নয়, সেই জমিতে বাড়ি বানানোর জন্য অর্থও দেবে রাজ্য সরকার। চা বলয় প্রধান আলিপুরদুয়ারে তাঁর সরকারের নতুন এই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুরদুয়ার শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে নিজের হাতে তিনি ৩১ টি প্রকল্পে ৩৯ জন উপভোক্তাকে সরকারি পরিষেবা তুলে দেন, যাঁদের মধ্যে দশ জন চা শ্রমিকের হাতে তুলে দেন জমির পাট্টা। সেই সভাতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন তাঁর উত্তরবঙ্গ সফরের এই পর্বে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলা ছাড়াও শিলিগুড়ি মিলিয়ে প্রায় তেরো হাজার জমির পাট্টা বিলি হবে, যার মধ্যে আলিপুরদুয়ার জেলাতেই রয়েছে ছ’হাজারের উপরে পাট্টা। সেই সভাতে মুখ্যমন্ত্রী জানান প্রত্যেক শ্রমিককে চা বাগানের পাট্টা দেওয়া হবে। সেই লক্ষ্যে অনেক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে এবং কাজ চলছে। চা সুন্দরী না দিয়ে যে জমিতে পাট্টা দেওয়া হচ্ছে সেখানে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকাও পাট্টার সঙ্গে দিয়ে দেবে সরকার। তা হলে শ্রমিকেরা ঘর বানিয়ে নেবেন। এই ঘোষণার মাধ্যমে চা শ্রমিকদের মন জয় করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আবাসন দফতর সূত্রের খবর, চা সুন্দরী প্রকল্পে ‘টু বিএইচকে’ এর এক-একটি আবাসন গড়তে খরচ হয়েছে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। আর মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত প্রকল্পে খরচ হবে মাত্র দেড় লক্ষ্য টাকা।
মাদারিহাটের বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার বক্তব্য আসলে আবাস যোজনায় একটি বাড়ি তৈরি করতে কেন্দ্রীয় সরকার এই এক লক্ষ ২০ হাজার টাকাই বরাদ্দ করে। এ বার কেন্দ্রের টাকায় চা শ্রমিকদের বাড়ি বানিয়ে রাজ্য সরকার নিজের নামে প্রচার করবে। এখানেই বেধেছে গোল। দেখা যাচ্ছে কেন্দ্র আবাসের কোন টাকাই দিচ্ছে না। অথচ কেন্দ্রীয় সহায়তা প্রকল্পে আবাসনের সুযোগ কিন্তু আছে চা বাগিচাতে। তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার বা টি বোর্ড এতদিন কি করছিল? রাজ্যসভার সদস্য তথা তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক পাল্টা তাই সঠিকভাবেই প্রশ্ন তুলেছেন আবাসের সরকারি নিয়মেই বলা রয়েছে ব্যক্তিগতভাবে কারও বাড়ি বা ঘর বানাতে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া যায়। রাজ্য সরকার সে নিয়মের বাইরে যাচ্ছে না। এ ঘর রাজ্য সরকার নিজের অর্থে বানাবে। দার্জিলিং পাহাড়ের চা বাগানের জমিতেও দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারীদের শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন জিটিএ চিফ এগজিকিউটিভ অনীত থাপা। বিভিন্ন আলোচনার মধ্যে জমির পাট্টার বিষয়টিও ছিল। নবান্নের শীর্ষস্তর থেকে অনীতকে জানানো হয় খুব দ্রুত বাগান ধরে ধরে সমীক্ষা শেষ হলেই পাট্টা বিতরণের ব্যবস্থা চালু করা হবে। অনীত পাহাড়ের ডিআই ফান্ডের জমি এবং সিঙ্কোনা চা বাগানের জমির অধিকারের প্রসঙ্গও সরকারকে জানান। পাহাড়ে বিভিন্ন প্রান্তে ‘প্রজাপাট্টা’ দেওয়ার সরকারি ঘোষণার প্রচার করা হয়। জিটিএ সূত্রের খবর, দার্জিলিং এবং কালিম্পং পাহাড়ে অধিকাংশ জমির অধিকার মালিকদের নেই। বেশিরভাগ জমিই চা বাগান, বন দফতর, ডিআই ফান্ড বা সরকারি ডেভেলপমেন্ট ল্যান্ড হিসাবে চিহ্নিত। প্রায় পাঁচ দশক থেকে দাবি উঠলেও তা কার্যকর হয়নি। হাতে গোনা কয়েকজন পাট্টা বা জমির অধিকারের কাগজ পেয়েছেন। পাহাড়ের ৮৭ টি বড় চা বাগান, সুবিশাল এলাকায় ছড়িয়ে থাকা সিঙ্কোনা বাগানের শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি তুলেছেন। প্রতি ভোটের আগে জমির পাট্টার আশ্বাস রাজনৈতিক দলগুলি পাহাড়ে দিয়ে থাকে। মিরিক পুরসভা ভোটে জমির পাট্টার আশ্বাস দিয়েই কার্যত পাহাড়ে কোনও পুরসভায় প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল।
কিছুদিনের মধ্যে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা। তার আগে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা পাট্টার বিষয়টি নিয়ে প্রচারে নেমেছে। তবে সমীক্ষার নামেই পাট্টা বিতরণ আটকে না থাকে, সেই কটাক্ষও করেছেন প্রাক্তন জিটিএ প্রধান বিনয় তামাং, হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড। তবে চা বাগানে পাট্টার সমস্যা মেটাতে বাগান মালিকদের সঙ্গে ‘মুখোমুখি’ আলোচনার নীতি নিয়েছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। দার্জিলিং বা জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের দাবি, এক-একটি চা বাগানের প্রেক্ষিত এক-এক রকম। সে কারণে সার্বিক আলোচনা না করে ‘একের সঙ্গে এক’ ভিত্তিতে মুখোমুখি আলোচনা হচ্ছে। তাতে সুফলই মিলছে বলে দাবি প্রশাসনের। গত ডিসেম্বরে বানারহাটের প্রশাসনিক সভা থেকে চা বাগানের পাট্টা বিলি দ্রুত সারতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সভার পরে চা শ্রমিকদের আবাসনের জমিতেই পাট্টা বিলির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সে মতো সমীক্ষা শুরু হয়েছে। পাল্টা বিজেপি দাবি করেছে পাট্টা নয়, জমির মালিকানা দিতে হবে শ্রমিকদের। সম্প্রতি তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ শ্রমিক নেতা রাজেশ লাকড়া দল ছাড়ার ঘোষণা করে দাবি করেছিলেন, চা শ্রমিকদের উদ্বাস্তু পাট্টা দেওয়া হচ্ছে, যা অপমানজনক। বেশ কিছু বাগানে সমীক্ষায় বাধাও আসে। কার্শিয়াঙের গিদ্দাপাহাড়ের সার্কিট হাউসে বাগানের জমি নিয়ে বৈঠক ডাকে জিটিএ। সেখানে জিটিএ প্রধান অনীত থাপা, জিটিএ এবং ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকেরা ছাড়াও শাসক ও বিরোধী বিভিন্ন চা শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ছিলেন। পাহাড়ের চা বাগানে শ্রমিক পরিবারগুলি যে জমিতে রয়েছেন, সেটারই পাট্টা দেওয়ার ব্যবস্থার জন্য সরকারকে জানানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। টানা আলোচনায় ঠিক হয় নতুন করে কোথাও জমিতে পাট্টা দিয়ে শ্রমিকদের বসানোয় আপত্তি থাকবে। সঙ্গে শ্রমিক কৃষি জমির পাট্টাও রয়েছে। সেই জায়গা থেকে শ্রমিকেরা যে কলোনি বা বস্তিতে ঘর করে আছেন সেটিরই পাট্টা দেওয়া হোক। এই দাবিই প্রথম থেকে তোলা হয়েছিল। হামরো পার্টি, জিএনএলএফ, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা, বামেদের সংগঠনের সদস্যরাও একই দাবির কথা বলেন। অনীত থাপাও এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। পরে অনীত বলেন চা শ্রমিকদের জমির অধিকার কারও ব্যক্তিগত অধিকার বা বিষয় নয়। এটা পাহাড়ের আমাদের সার্বিক জাতির বিষয়। সকলকে মিলে এ জন্য কাজ করার কথা আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম। সর্বসম্মতিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত ধরেই সরকারকে এগনোর জন্য বলা হবে।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴