শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ
শালসিঁড়ি -৮
বিমল দেবনাথ
----------------------
বিকাশ আর অংশু মর্নিং ওয়াক করে ঘরে ঢোকে। যে দিন বিকাশ বাড়িতে থাকে অংশুকে সূর্য দেখায়। তা নাহলে অংশু বড় অলস। অংশুর উপর অপরূপার আদর একটু বেশীই- বিকাশ জানে। তাই যখন সময় পায় অংশুকে ওর এনার্জি দিতে চায়। অপরূপা যোগা শেষ করে ফ্রেস হয়ে রান্না ঘরে আসে। মিঠুদি রান্না ঘরে সকালের খাওয়া রেডি করতে ব্যস্ত। বিকাশ ও অংশু ফ্রেস হয়ে ডাইনিং টেবিলে এসে বসে। অপরূপা রান্নাঘর তদারকি করে অংশুর পাশে এসে বসে। বিকাশ বাড়ি থাকলে সকালের চা ওরা এক সাথে খায়। সকালের চায়ের টেবিল ওদের প্ল্যানিং টেবিল। বিকাশ রাতের শেষ ফোন নিয়ে তবেই শুতে যায়। এই অভ্যাস ওর স্লিপিং পিল। না হলে ঘুম আসে না। তাই সকালের চা পর্বটা ওদের প্ল্যানিং পর্ব। বিকাশের এমনিতে কোন সাধারণ ছুটির দিন নেই। বিভিন্ন কাজের শৃঙ্খলে সব সময় বাঁধা থাকে। বিকাশের কাজের সাথে সম্পর্ক মাটি আর মূলের মত। বাড়িতে থাকলেও অফিসের কাজ করে। অংশু, বিকাশের এই ব্যবহারে অপরূপা অভ্যস্ত। রসায়নে সাম্মানিক স্নাতক অপরূপা’র বিকাশের সাথে সম্পর্কের রসায়ন খুব সুন্দর। গাছের বাকলের সাথে মজ্জার মত। বিকাশের মনে হয় রাত জাগা রানি-চাপ গাছের ফুলের গন্ধ অপরূপার গায়ে লেপ্টে আছে। অপরূপা অংশুর পাশে এসে বসার পর থেকে ঘরটা চাপ ফুলের গন্ধে ভরে উঠে। মিঠুদি চা- বিস্কুট সার্ভ করে।
অপরূপা বলে - কি গো মাধুরীরা যে বনে গেল সব ঠিক ছিল। খবর নিয়েছ?
ও-হো ভুলে গেছি। দাঁড়াও, ফোন করছি। - বিকাশ উত্তর দেয়।
মাস দুয়েক হলো বিকাশ পাশের জেলার অন্য বনের দায়িত্ব নিয়েছে। অপরূপা জানে বিকাশ কোন বনের দায়িত্ব নতুন করে নিলে প্রথম কয়েক মাস ও নাওয়া-খাওয়া ভুলে যায়।
অপরূপার বিয়ের পর ঘটে যাওয়া একটা ঘটনার কথা এখনো মনে পড়ে। ওদের বিয়ের পর প্রথম বিবাহবার্ষিকীর মাস খানেক আগে নতুন বনের দায়িত্ব পায়। স্মরণীয় দিনটিতে সব সহকর্মীদের নিয়ে একটা পার্টির আয়োজন করা হয় সরকারী ঘরে। বনের ভিতরে কর্মচারীদের ঘরগুলোর ছবি এখনো মনে পড়ে অপরূপার। ঘরগুলো না একতলা না দোতলা। কাঠের বাংলো-বাড়ি কয়েকটি যে অপরূপা একদম দেখেনি তা নয়। অপরূপার বাবার সাথে ব্যবসার প্রসার ও প্রসিদ্ধতার জন্য কিছু বনকর্তার সাথে সখ্যতা ছিল। সেই সুবাদে শহরের কাছে একটি দোতলা বন বাংলোতে বাবা-মা’র সাথে থেকেছিল এক রাত। তবে এই ঘরগুলো একদমই বন বাংলোর মতো নয়। কর্মচারীদের জন্য বরাদ্ধ ঘরগুলো অর্ধেক তলা। কাঠের খুঁটি বা ইটের গাঁথনির উপর কাঠের পাটাতন, কাঠের দেওয়াল আর ঢেউ-খেলানো টিনের ছাউনি। অর্ধেক তলার চড়াই উঠতে হয় কাঠের সিঁড়ি দিয়ে। অবশ্য বনবাংলোগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এখনো ঐতিহ্য ধরে রেখে একই রকম আছে। কিন্তু কর্মচারীদের ঘরগুলো আস্তে আস্তে পরিবর্তন হচ্ছে। তবে এই ঘরগুলোতে শুধু কর্মচারীরা যে থাকত তা কিন্তু নয়। কর্মচারিদের সাথে থাকত গিরগিটি-সাপ-তক্ষক কত কী। সন্ধে হলেই তক্ষকগুলো ট-ক্কে ট-ক্কে করে ডাকত তীব্র স্বরে। সেই শব্দ এখনো অপরূপার কানে বাজে। অনেকে এই ঘরগুলোকে পাটাই-ঘরও বলত। সেই রকম একটি ঘরে এসে হাজির হয়েছিল দুপক্ষেরই বাবা মা, আর দুষ্ট-মিষ্টি শ্যালিকা। গভীর বনে সবুজের সমুদ্রে পাখিদের কথা-কলির সাথে মিশে গিয়েছিল অতি আপন জনের মধুর গুঞ্জন। সকাল থেকেই অপরূপা ছিল ফুলের মতো হালকা। সন্ধে হতেই অনুষ্ঠান জমে উঠতে থাকে। এতদিন অফিস চত্তরে যাদের সাথে পরিচয় হয়ে উঠেনি অপরূপার তাদের সাথে আজ সম্পর্ক হতে থাকে। ফুলটুসি, মৌটুসি, বুলবুলি, টুনটুনি ইত্যদি কচিকাঁচাদের সাথে মিশে অপরূপা বেশ আহ্লাদিত হয়ে উঠে। ও ভাবে বনের সব মেয়েদের নাম কী পাখির নাম হয়! আবার বড়দের নাম শুনেও অপরূপা অবাক হয়। কারণ বড় শহরের ব্যবসায়ীর মেয়ে হওয়ায় নিজের পড়াশুনা ছাড়া এই বিষয়ে কোন ধারণা ছিল না। যেমন বন ও বনের মানুষের নাম - এতোয়া সোমরা বুধুয়া বিফাই শনিচারোয়া কাইলা মাইলা জেঠা ইত্যাদি। পরে অবশ্য যোগেনদার বৌ’র কাছে নামের অর্থ জেনে রোমাঞ্চিত হয়েছিল। অপরূপা তার বয়সের বড়, বিকাশের সব অধস্তন সহকর্মীদের কখনো নাম ধরে ডাকে না। যোগেনদার বৌ বলছিল - যে রবিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন - সে এতোয়া, যে সোমবারে জন্মেছেন সে সোমরা যে মঙ্গল বারে জন্মেছেন সে মংরা যে বুধ বারে জন্মেছেন সে বুধুয়া, যে বৃহস্পতি বারে জন্মেছেন সে বিফাই যে শনিবারে জন্মেছেন সে শনিচারোয়া ইত্যাদি ইতাদি- অপরূপার জানা বৈশাখী চৈতালিদের মতো। আলাপচরিতায় ফুলটুসির মায়ের সাথে বেশ ঘনিষ্ঠতা ও সখ্যতা গড়ে উঠে অপরূপার। বনের গভীরে ২০-২৫ টি কর্মচারী আবাস স্থল, বিকাশের অফিস চত্তর যেন ছোট্ট একটা গ্রাম। সেই গ্রামে যুবতী অপরূপা যেন আদরের চড়ুই পাখি। সারাদিন কল কল কিচিরমিচির। অপরূপার কাছে প্রশাসনিক শ্রেণিবদ্ধতার কোন গণ্ডি ছিলনা। ও সবার আদরের হয়ে উঠেছিল। ফুলটুসির মা অপরূপার কানে কানে বলে - জানো, জেঠার বৌ তিন তিনটি বাচ্ছা মেয়েকে রেখে আর একটা লোকের সাথে পালাই গেছে। মেয়েগুলার কী হবে বল।
অপরূপার চোখ তখন সন্দেহে তেঁতুল পাতা।
ফুলটুসির মা বলে – অপু, এতে শেষ নেই-গো। বনের এই ছোট ছোট কম্পাউন্ডে কত কী ঘটনা ঘটে। ঐ যে বিফাই কে দেখছ, ঐযে ওর বৌ। ওটা কিন্তু ওর বৌ নয়। ঐ যে বড় দুইটা ছেলেকে রেখে ওর বউ আর একটা লোকের সাথে চলে গেছে। আর এই বৌ’টা ঐ তিনটি মেয়ে নিয়ে আইসে ঢুকে বিফাই-এর ঘরে।
অপরূপার চোখ তখন পাহাড়ি নদীর বুক জমে ওঠা ন্যাড়া ডিম্ব-দ্বীপ। অপরূপা বুঝতেই পারেনা ও কখন কী ভাবে সবার কাছে অপরূপা থেকে অপু হয়ে ওঠে। নদী বুকের ভেসে ওঠা ডিম্ব-দ্বীপের মতো বিস্ফারিত চোখে বিকাশকে দেখে। ওর বোন তখন গান ধরে –
এসো শ্যমল সুন্দর …
এবং হাত ধরে বিকাশকে টেনে আনে, দিদিকে টেনে আনে কেক কাটার জন্য।
ঠিক তখন বিকাশের এক অধস্তন অফিসার বিকাশকে কিছু একটা বলল। বিকাশের ব্যবহারে কোন পরিবর্তন ঘটল না। খবরটি যেন খরস্রোতা পাহাড়ি নদীতে ঝরে পড়া একটি নুড়ি। কোন শব্দই হল না। অপরূপা বিকাশের মনের এই স্রোতের পুরো খবর তখনো পায়নি। ওরা দুজনে একসাথে কেক কাটে সবাই কেক খায়…
বিকাশ সবাইকে অবাক করে বলে - তোমরা আনন্দ কর। খাওয়া-দাওয়া কর। আমরা এখন নাইট ডিউটিতে যাব।
এই বলে সব সহকর্মীদের নিয়ে বেরিয়ে যায়। অপরূপাকে কিছু বলেনি, ওর বাবা মাকে কিছু বলেনি, বোনকে কিছু বলেনি - সোজা বেরিয়ে গেল মানুষটা। সারা রাত ঘরে এল না! অপরূপার সেই ব্যথা এখন মনে পড়লে বুকের ভিতর চিন চিন করে … মনে ময়না কাঁটা বেঁধে।
হ্যালো - কে ময়ূখ। কেমন আছ।
…
কাল ঘোরা কেমন হল।
…
মাঝে মধ্যে শালসিঁড়ির কাছে আসবে। তোমার মন ভালো থাকবে, পড়াশুনা ভালো হবে।
…
আরে সে ঠিক আছে। কাকুর সাথে নতুন বনে ঘুরবে ক্ষণ। তোমার বাবা মা কোথায়?
…
অপূর্ব, কিরে কোন অসুবিধা হয়নি তো।
…
সেতো করবেই - শোন, প্রতিটি মানুষের বুকের ভিতর একটু ফাঁকা জায়গা রাখতে হয় তাদের প্রিয় মানুষের জন্য। তোদের জন্য সেই ফাঁকা জায়গা আমার বুকে এখন বাঁচিয়ে রেখেছি। তুই স্বীকার না করলেও ময়ূখ মাধুরী স্বীকার করে আর সেই জায়গায় ওরা খেলা করে।
…
আরে না না সে হবে কেন। তবে তোর বুকের সব জায়গা তো বেচে দিয়েছিস।
…
হ্যালো … মাধুরী। বিকাশ ফোন ছেড়ে দিল?
…
ঠিক। ট্রান্সফার হওয়ার পর একদম সময় পাচ্ছি না। আমার খুব ভাল লাগছে তুমি রমেশ মাহুতের কথা মনে রেখেছ। সে অনেক কাণ্ড। পরে সাক্ষাতে বলব।
অপরূপা জিজ্ঞাসা করে - মাধুরী কী বলল?
রমেশ - মাহুতের খবর নিচ্ছিল।
অপরূপা বলে - মাধুরী ময়ূখ কী বন পাগল বল।
বিকাশ বলে - শুধু কি মাধুরী ময়ূখ, তুমি কি কম বন পাগল। তুমি, তুমি না হলে আমি কি আমি হতে পারতাম…
অপরূপার মনে পড়ে - জীবনের প্রথম বিবাহবার্ষিকীর রাত তার একা কেটেছে। দিনের আলো ফোটার পর কাঁচা কাঠের লগ ভর্তি ট্রাক ধরে এনে ঘরে ফিরেছিল সেই দিন। ফ্রেস হতেই অপরূপা এক কাপ লাল চা দেয় বিকাশকে।
বিকাশ বলে- খুব খারাপ লাগছে বুঝলে। এক জন অপরাধীকেও ধরতে পারলাম না অল্পের জন্য। অপরূপার মনে হল বিকাশ যেন একটা শিশু। চায়ের কাপ রেখে অপরূপার বুকে মাথা এলিয়ে দেয়। অপরূপার মনে হয় ওর বুকটা যেন প্রশান্ত মহাসাগর। সেই সাগরে হিমালয় থেকেও বড় কোন সমস্যা, বড় কোন কষ্টকে ডুবিয়ে রাখতে পারে। বিকাশকে শান্তি দিতে পারে। অপরূপা বিকাশের মাথাটা বুকে চেপে ধরে বিকাশের চুলে হাত বুলাতে থাকে। অপরূপার মনে হয় বিকাশ যেন ঘুমিয়ে পড়ছে … ঠিক তখনই ডোর বেল বেজে ওঠে। ডিং- ডং ডিং- ডং কী বিশ্রী …
বিকাশ চট করে উঠে গিয়ে শোনে যে সকালের টিম দুই জন আসামী ধরে এনে অফিসে রেখেছে। বিকাশ সেই যে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় আর সারা দিন ঘরে আসে না। দিন যায় সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা যায় রাত্রি নামে কিন্তু বিকাশ ঘরে আসে না। খবর নিয়ে জানতে পারে - একজন আসামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। আর তাকে চিকিৎসা করানো, কোর্টে জমা দেওয়া ইত্যদি কাজ শেষ করে জেলা শহর থেকে ফিরতে দেরি হবে।
বিকাশের মা বলে - সব-ই কি ওকে করতে হবে। আরও তো অফিসার আছে। অপরূপা মা, বিকাশকে সামলাও। না হলে তোমার কপালে সুখ আসবে না।
অপরূপার মনে পড়ে - বিকাশ বলেছিল, জান অপরূপা, শাল গাছ প্রথমে মূলকে মাটির ভিতর প্রবেশ করায়, তারপর পাতা ছড়ায়। যখনই কোথাও যাবে প্রথমে মূলকে বসতে দেবে, তারপর দেখবে পাতা গজাবে, ফুল ফুটবে। তাই প্রথমে সব কাজ নিজেকে করতে হয়। নিজের জ্ঞান ইচ্ছা উদ্দেশ্য ব্যক্তিত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে। অপরূপার মনে পড়ে, বিয়ের পর প্রথম সমুদ্রে সফরের কথা। সমুদ্র- সৈকতে সমুদ্রের গর্জনের মতো, সমুদ্রের ঢেউ-এর মতো আনন্দ উচ্ছলে ডুবে থাকত বিকাশ, বলত-
অপরূপা, প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করো। জীবনটা ক্রিকেট খেলায় ব্যাটসম্যানের মতো। বাইশ গজে একদম একা - স্টোক নেওয়ার সময়। তাই কখনো বড় রানের কথা ভাববে না। প্রতিটি স্ট্রোকের কথা প্রতিটি মুহূর্তের কথা ভাববে। দেখবে অনেক বড় বড় ইনিংস খেলে দিতে পারবে। আনন্দ পাবে। এই রকম কত টুকরো টুকরো ঘটনা অপরূপাকে সাহায্য করেছে বিকাশকে চিনতে এবং বিকাশেকে সাহায্য করেছে অপরূপাকে চিনতে। যেমন গাছের ফুল পাতা বাকল দেখে গাছ চেনা যায় সেই রকম। তবে অচেনাকে চেনার আনন্দ থাকতে হবে মনে। অপরূপা বুঝতে পারে এখন বিকাশ প্রতিটি মুহূর্তকে সঠিক ভাবেই ব্যবহার করবে।
অপরূপা মা’কে আশ্বস্ত করে বলে- আমি আছি তো ওর পাশে, তুমি চিন্তা করো না। অপরূপাও এখন আর চিন্তা করে না। বিকাশের জীবন স্রোত এখন ওর জানা। তাই ভেসে যাবার ভয় করে না, ডুবে যাবার ভয় করে না…
অংশু বলে – বাবা নতুন জায়গায় কি কাজের খুব চাপ, তুমি যে অনেক দিন পর এলে।
বিকাশ বলে - কাজের চাপ নয়। কাজের পদ্ধতি বন সংরক্ষণমুখি করে সাজানো গোছানোর চাপ আছে।
অংশু বলে – বাবা বুঝলাম না।
বিকাশ বলে – তুমি এখন ঠিক বুঝবে না। বড় হলে নিজে নিজে ঠিক বুঝতে পারবে। অপরূপা ভাবে - সেই দিন ও নিজেই তো বিকাশকে বুঝতে পারেনি। মনে মনে অনেক রাগ হয়েছিল। বনকাঠালের কোয়ার মত। কিন্তু বাবা মা শ্বশুর শাশুড়ি’র সামনে কিছু বলেনি। খুব কষ্ট হচ্ছিল মনের ভিতরে। অভিমানে কথা বলেনি অনেকক্ষণ। পরিস্থিতি সাধারণ করতে জুঁই বলে -
বিকাশদা তোমরা কাঠের গাড়ি কী করে ধরলে।
বিকাশ বলে- আর বলো না। আমরা আধ-ঘন্টা গাড়িতে গিয়ে তারপর রাতের অন্ধকারের আলোতে প্রায় এক ঘন্টা হাঁটার পর দেখতে পাই যে একটা ট্রাক বনের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। অন্ধকারে জেঠা একটা জলের নালায় ঝপাৎ করে পড়ে যায়। আর তক্ষনি টর্চের আলো জ্বলে উঠে। কাঠচোরেরা সব বনের ভিতর পড়ি-মরি করে পালিয়ে যায়। রাতের অন্ধকারে টর্চের আলোয় বনের ভিতরে খুঁজে পাওয়া গেল না। আমরা গাড়িটি নিয়ে ফিরে এলাম অফিসে।
জুঁই - তারপর।
- ভোররাতে অন্য স্টাফদের দিয়ে একটা টিম করে বললাম – শোন চোরেদের একটা ট্র্যাপে ফেলে এসেছি। গাড়ির নম্বরটা দেখ- এটা বাইরের গাড়ি। তাই ড্রাইভার ও তার সহকারী দিনের বেলায় বন থেকে বেরিয়ে বাইরে যাবার চেষ্টা করবে। তারা তো জানে আমরা ওদের দেখিনি, তাদের চিনতে পরবো না।
জুঁই বলে- তাই তো! তোমরা তো ওদেরকে দেখনি। তা হলে ওদের ধরলে কি করে?
-আমি আমার অফিসারদের একটা মন্ত্র দিয়েছিলাম। সেই মন্ত্রে কাজ হয়ে গেছে।
জুঁই বলে - কী সেই কথা বল না, আর হেঁয়ালি করো না।
অপরূপা এসে জুঁই ও বিকাশের মাঝে বসে।
বিকাশ বলে - পায়ের জুতো।
জুঁই ও অপরূপা হাসিতে ফেটে পরে। হাসতে হাসতে ওদের পেটে খিল ধরে যায়।
বিকাশ বলে – অত হাসির কী আছে। এটা হচ্ছে বনগোয়েন্দা বুদ্ধি…
অংশু বলে – বাবা তোমার আর একটা ফোন বাজছে।
বিকাশ বলে - মাধুরী রাখছি। বাই।
অপরূপা বলে - চা-টা শান্তি করে খাবে তার উপায় নেই।
বিকাশ বলে - হ্যালো… … …
মাধুরী আমাকে এক্ষুনি বেরুতে হবে। গলাকাটা-তে গাউর বেরিয়েছে। এক জন মহিলাকে আহত করেছে। পাবলিক এজিটেশন হচ্ছে। স্টাফরা সামলাতে পারছে না। আমি বেরুচ্ছি…
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴